নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইরাজ আহমেদ

শুরু হল পথচলা

ইরাজ আহমেদ

লেখালেখি ব্যাপারটা আমার কখনই আসেনি। কিন্তু না আসলে চেষ্টা করা যাবে না কে বলেছে ......।

ইরাজ আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমিয়াখুম বিজয়ের গল্প - বান্দরবান ভ্রমণ প্রথম পর্ব

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৫৬

সামুতে এটা আমার প্রথম লিখা। এর আগে কিছু ট্যুর দিলেও জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় ট্যুর ছিল বান্দরবান ট্যুর। চিন্তার অতীত কয়েকটা দিনের বর্ণনা পর্বে পর্বে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।



টার্ম ফাইনাল পরীক্ষার মাঝেই সিদ্ধান্ত নেয়া ছিল যে পরীক্ষার পর ঘুরতে যাব। পরীক্ষা শেষের সাথে সাথেই ঠিক করে ফেললাম এবার গন্তব্য সিলেট। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও নেয়া হল। ইচ্ছা জাফলং, মাধবকুণ্ড, হাম হাম, শ্রীমঙ্গল কোন কিছুই বাদ দেয়া হবে না। সবার কাছেই পর্যাপ্ত টাকা থাকলে টাঙ্গুয়ার হাওড় ও দেখে আসা হবে। দিন টা ছিল সম্ভবত জানুয়ারীর ২৫ তারিখ। প্রতিদিনের সন্ধ্যার আড্ডায় গিয়েছি। হঠাৎ দেখি ইমন আর তৌহিদ কথা বলতে বলতে আসল। কথার বিষয় হচ্ছে আমিয়াখুম ঝর্না। সেদিন বিকালে তারা সামুতে আবিষ্কার করেছে আমিয়াখুম নামে বান্দরবানে একটা ঝর্না আছে এবং দেখতে নাকি খুব সুন্দর। প্রস্তাব রাখল সিলেট বাদ দিয়ে বান্দরবান যাওয়ার। বান্দরবান যাওয়ার ইচ্ছা ছিল অনেকদিন থেকেই। তাই এক কথায় রাজি হয়ে গেলাম। হাতে সময় এবং টাকা দুইটাই যেহেতু আছে এটাই যাওয়ার আদর্শ সময়। এভাবেই সিলেট ট্যুর মুহূর্তের মাঝে বান্দরবান ট্যুর এ পরিণত হল। এখন আলোচনার বিষয় কে কে যাব। আগে যাওয়ার কথা ছিল যাদের তাদের সবাইকে জিজ্ঞেস করা হল। তাদের মাঝে একজনের আরেকদলের সাথে বান্দরবান যাওয়ার প্ল্যান থাকায় বাকি রইলাম ছয়জন। আমি, ইমন, তৌহিদ, মারুফ, সালভি, সৌরভ। পরে আর দুজন আমাদের সাথে যোগ দিল। কামরুল এবং রাশেদ ভাই।



ঠিক করা হল ২৯ তারিখ রাতের ট্রেনে চট্টগ্রাম যাওয়া হবে। পরদিন সকালে বান্দরবান। কিন্তু তিনদিন আগে ট্রেন এর টিকেট কাটতে গিয়ে দেখি টিকেট নাই। কি আর করার বাসেই যাব ঠিক করলাম। সরাসরি বান্দরবানের টিকেট কেটে ফেললাম সেদিন ই। বাস হচ্ছে শ্যামলী। সায়দাবাদ থেকে ছাড়বে ১১.১৫ তে।



অবশেষে এল সেই অতি কাঙ্ক্ষিত দিনটি। ২৯ জানুয়ারী রাত ৯ টার দিকেই বেরিয়ে পরলাম সবাই। সবাই ১০.৩০ টার মাঝেই হাজির হল। রাশেদ ভাই কে দেখলাম সেই প্রথম। বাকি সবাইকে তো আগে থেকেই চিনি। বাস ছাড়তে ছাড়তে ১২ টা বেজে গেল। বাসে দেখি আমাদের ভার্সিটির জুনিয়র একটি গ্রুপ ও যাচ্ছে বান্দরবান। ওদের ও গন্তব্য আমিয়াখুম। রাতের বাস জার্নিও উপভোগ্য লাগল সবার হইচই এ। ঘুম তেমন হল না। অবশ্য আগের দিন ১৩ ঘণ্টা ঘুমিয়েছিলাম। তার একটা প্রভাব ও ছিল।



বাস সকালে বান্দরবান ঢোকার সাথে সাথেই বুঝলাম আমাদের যাত্রা সার্থক হতে চলেছে। পাহাড়ি রাস্তা গুলো ছিল দেখার মত। আশেপাশে ছোট ছোট পাহাড়। তার মাঝ দিয়ে আঁকাবাঁকা রাস্তা। নামার আগেই শুনলাম খারাপ সংবাদ। বান্দরবানে সেদিন নাকি হরতাল, সকল যানবাহন বন্ধ! যাই হোক সেজন্য তো থেমে গেলে চলবেনা। রাশেদ ভাই আর কামরুল গেল যাওয়ার কি বন্দোবস্ত করা যায় দেখতে। খাওয়া দাওয়া সারতে সারতেই চান্দের গাড়ি একটা জোগাড় হয়ে গেল। ভাড়া ৫০০০ টাকা। যাত্রী আমরা ১৪ জনের দুইটা গ্রুপ। রাশেদ ভাই বলল কেউ জিজ্ঞেস করলে বলতে আমরা মিলনছড়ি যাচ্ছি। মিলনছড়ি জায়গাটা অবশ্য কথায় শেষ পর্যন্ত জানা হয়নি। কিছুদুর হেঁটে আমরা চান্দেরগাড়িতে উঠলাম। হরতালটা শাপেবর হয়েছিল। বাস এ থানচি গেলে চান্দের গাড়ির ভ্রমন টাই মিস হত। বাস থেকে আশেপাশের সব কিছু দেখা যায় না ভালমত।







বান্দরবান শহরে

























থানচি যাওয়ার পথে





অতঃপর বান্দরবানের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেখতে দুপুর নাগাদ থানচি পৌঁছে গেলাম। থানচি যাওয়ার পথেই গাইড সাদেক ভাই আমাদের সাথে যোগ দিয়েছিল। সাদেক ভাই একজন চরম মানুষ, খুবই রসিক। থানচি পোঁছে খাওয়াদাওয়া সেরে রওনা দিতে দিতে হয়ে গেল বিকাল।











থানচি







































থানচি থেকে তিন্দুর পথে









হালকা ফটোগ্রাফি

কার্টেসীঃ কামরুল



এবার টার্গেট রেমাক্রি। নৌকা ভাড়া করা হল। ভাড়া হল ৩৫০০ টাকা। আপ ডাউন ভাড়া ৪০০০-৪৫০০ হলেও শুধু যদি নিয়ে যায় ভাড়া একটু বেশি ই পড়ে। যাই হোক রওনা হয়ে গেলাম। এর চেয়ে রোমাঞ্চকর নৌকা ভ্রমণ সম্ভব কিনা আমার জানা নাই। একি সাথে উপলব্ধি করলাম মানুষ কেন বান্দরবানে বারবার যায়। এই সৌন্দর্যের বর্ণনা দেয়া অসম্ভব। দুপাশে পাহাড়, মাঝখান দিয়ে সাপের মত একেবেকে বয়ে গেছে নদী। সাঙ্গু নদী ধরে এগিয়ে গেলাম রেমাক্রির পথে। নদীতে পানি কম থাকায় অনেক জায়গায় হেঁটে পার হতে হল। পানি ভীষণ ঠাণ্ডা। যাই হোক রাত হয়ে যাওয়ায় সেদিন রেমাক্রি পোঁছাতে পারলাম না। রাত কাটাতে হল তিন্দুতে। ওখানে থাকা খাওয়ার বন্দোবস্ত আছে। সেদিন রাতে পাহাড়ি মুরগি খেতে হয়েছিল, এত শক্ত যে ছেড়া যায় না দাঁত দিয়ে টেনে। তখন ও বুঝিনি পরের কয়েকদিন ওই মুরগি ই অমৃত মনে হবে। তিন্দুতে থাকার খরচ জনপ্রতি ১০০ টাকা এবং খাওয়া প্রতি বেলায় ১০০ টাকা করে।



সেদিন রাতে টের পেলাম পাহাড়ি এলাকার ঠাণ্ডা কি জিনিস। ফুলহাতা গেঞ্জির উপর ফুলহাতা শার্ট, তার উপর জ্যাকেট, এর উপর ওদের দেয়া পাতলা কম্বল। তারপর ও শীত মানে না। কয়েকজন তো ঠাণ্ডায় ঘুমাতেই পারল না। আমার ও ভোররাতেই ঘুম ভেঙ্গে গেল। কি আর করার কার্ড খেলে বাকিরাত পার করে দিলাম। বান্দরবানে আমাদের প্রথম দিন কাটল এভাবেই।



পরবর্তী অভিযানের কাহিনী আসছে দ্বিতীয় পর্বে। লিঙ্ক নিচে দিয়ে দেয়া হবে।



সকল পর্বের লিঙ্কঃ Click This Link

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:১৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: স্বাগতম ব্লগে!

২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৪৭

ইরাজ আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৩| ০৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:১১

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: পরের পর্বে যাচ্ছি। পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে।

৪| ০৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:৩৭

ইরাজ আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ B-)

৫| ২৬ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:৪৮

সাজিদ ঢাকা বলেছেন: পোষ্টে ++++ সাদেক ভাই চিকনা চাকনা হলেও অনেক কাজের মানুষ, পারে না এমন কোন কাজ নেই , ,

২৬ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:১৮

ইরাজ আহমেদ বলেছেন: সাদেক ভাই বস। বান্দরবান লং ট্যুর দিলে সাদেক ভাই এর চেয়ে ভাল কেউ নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.