নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হঠাৎ করে দুনিয়াটা বিষাদময় হয়ে উঠে। কিছুই ভাল লাগে নাহ। এর কারণটা আমি আজও বের করতে পারলাম না।

ইরফান এইচ সায়েম

ইরফান এইচ সায়েম › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রকৃতির এক অপার সৃষ্টি \'রিছাং ঝর্ণা\'

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৮

আমাদের দেশের প্রাকৃতিক ঝর্ণার কথা বলতে গেলে প্রথমেই কক্সবাজারের হিমছড়ি আর মৌলভীবাজারের মাধবকুণ্ডের কথা সবার আগে চলে আসে। তবে এ দুটো ঝর্ণা ছাড়াও আরও কিছু সুন্দর সুন্দর ঝর্ণা রয়েছে। একটু সাহসী আর দুর্গম পথ পাড়ি দেওয়ার অভিজ্ঞতা থাকলে আপনিও উপভোগ করতে পারেন প্রকৃতির এসব অকৃত্রিম সৌন্দর্য।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার অন্যতম পর্যটন স্পট ‘রিছাং ঝর্ণা’। এর অন্য নাম ‘তেরাং তৈকালাই’। এ ঝর্ণা দর্শনীয় স্থান হিসেবে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করার মত না। যার সৌন্দর্যের বিচারে উপেক্ষিত নয় এ ঝর্ণা।

২০০৩ সালের দিকে এটি সবার নজরে আসে এবং পরিচিতি লাভ করে এ ঝর্ণাটি। এই ঝর্ণার পার্শবর্তী এলাকায় কোন গ্রাম ছিল না কিন্তু এখন কিছু পরিবাবের দেখা পাওয়া যায়। জুম চাষের সুবাদে এই ঝর্ণা সবার নজরে আসে।

রিছাং ঝর্ণা শব্দটি খাগড়াছড়ির মারমা সম্প্রদায়ের ভাষা থেকে এসেছে। মারমা ভাষায় ‘রিই’ শব্দের অর্থ পানি এবং ‘ছাং’ এর অর্থ কোন কিছু থেকে লাফিয়ে পড়া। অর্থাৎ রিছাং এর বঙ্গানুবাদ করা হলে, উচুস্থান হতে জলরাশির লাফিয়ে পড়াকে বুঝাবে।

জেলা শহর থেকে ঝর্ণা স্থলের দূরত্ব ১৭ কি. মি. প্রায়। আর আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র হতে ৪ কি.মি. পশ্চিমে মূল রাস্তা থেকে উত্তরে গেলেই ঝর্ণার কলধ্বণি শুনতে পাবেন। চলার পথে পাবেন গভীর পাহাড়ে সারি সারি সবুজ গাছের স্নিগ্ধ বাতাস, ফুলের সুভাসে ভরে যাবে আপনার হৃদয় মন্দির, সবুজের সমারোহ যেন শেষই হতে চাইবে না। রকমারি বৃক্ষ রাশির খেলায় যেন মন হারিয়ে যাবে দারুণ রোমাঞ্চকর। প্রকৃতির এক অপার সৃষ্টি 'রিছাং ঝর্ণা'

প্রকৃতি এই রিছাং ঝর্ণার চারপাশের পরিবেশ এমন সব সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ করে রেখেছে যা দেখে আপনি মুগ্ধ না হয়ে পারবেন না। যেদিকে চোখ যায় দেখবেন শুধু সবুজ আর নীলচে পাহাড়। পাহাড়ের পায়ে পাখির কলকাকলি প্রতিফলিত হয়ে দারুণ এক আমেজের সৃষ্টি করে। সেই সঙ্গে একরাশ বাতাস এসে আপনার মনকে মাতোয়ারা করে দিয়ে যাবে। ঝর্ণায় পৌছার একটু আগে শেষ একটা পাহাড় নামতে হয়। পাহাড়টা বেশ ঢালু। নামার সময় তেমন কোন কষ্ট না হলেও ঝর্ণা থেকে ফিরে উঠার সময় ঠিকই বলবেন, ‘এত উচু কেরে!’ সেটি পার হলেই পাবেন বিশাল এক সিঁড়ি, আনুমানিক ২০০-২৫০ টার মত ধাপ। সেই সিঁড়িটি বেয়ে নিচে নামতে নামতে ঝর্ণার শন শন শব্দ শুনতে পাবেন। সিঁড়িটি শেষ হতে না হতেই ঝর্ণাটার দেখা পেয়ে যাবেন।

ঝর্ণাতে পৌঁছানের জন্য পুরোটা পথ আপনি গাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন না। ঝর্ণার কিছু আগে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে যেতে হবে। পাহাড়ী পথটা মোটেও আরামদায়ক নয়। আপনাকে একটি বাঁশের লাঠি নিয়ে নিতে হবে তাতে পরিশ্রম কম হবে। লাল মাটির পথ মাড়াতে মাড়াতে বুঝতে পারবেন পাহাড়ী জীবন কতটা কষ্টকর। এছাড়া, আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র থেকে হেটে ঝর্ণাতে পৌঁছাতে সময় লাগবে ৪৫/৫০ মিনিটের মত। হাঁটতে হাঁটতে একসময় কানে ভেসে আসবে গমগম করে পানি পড়ার শব্দ। বুঝতে পারবেন এসে পরেছেন রিছাং ঝর্ণার কাছে।

দৃষ্টিনন্দন সে ঝর্ণা। সত্যিই সৌন্দর্যের আধার এ ঝর্ণা যেন প্রকৃতির এক অপার সৃষ্টি। পাহাড়ের প্রায় ১০০ ফুট উপর হতে ঝর্ণার পানি নিচে পড়ছে। নিচে পড়ার পর তা আবার আরও ১০০ ফুট পাথরের ওপর গড়িয়ে নেমে আসে সমতলে। উপর হতে নেমে আসা স্ফটিক-স্বচ্ছ জলরাশি নির্ঝরের স্বপ্নের মতো অবিরাম প্রবাহমান। পাহাড়ের কোল ঘেষে পাথরের উপর দিয়ে পানি নিচে পড়ার ফলে একটি পিচ্ছিল পথের সৃষ্টি হয়েছে। আপনি একটু সাহসী হলেই সেই পানির স্রোতের সাথে নিচে নেমে আসতে পারেন। মেতে উঠতে পারেন জলকেলিতে।

যেভাবে যেতে হবে : খাগড়াছড়ি শহর হতে চান্দেরগাড়ি বা পাবলিক বাসে করে যেতে হবে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে। সেখান থেকে হেটে কিংবা মোটরবাইকে করে যেতে হবে সরাসরি রিছাং ঝর্ণায়। হেটে ঝর্ণাতে পৌঁছাতে সময় লাগবে ৪৫/৫০ মিনিটের মত।

মূল আকর্ষণ : ঝর্ণায় গোসল করতে পারবেন। ঝর্ণার পানি যাওয়ার পথে আপনি স্লিপ করতে পারবেন। মনোমুগ্ধকর পরিবেশ উপভোগ করতে পারবেন।

সাবধানতা : ঝর্ণার বেশি কাছাকাছি গেলে খুব সাবধানে যেতে হবে, কারণ তা অত্যাধিক পিচ্ছিল। পিচ্ছিলের কারণে প্রায় সময় পর্যটক পা পিছলে পড়ে গিয়ে আহত হয়ে ফিরে গেছেন। আশপাশে ভাল কোন খাবার দোকান কিংবা পানির ব্যবস্থা নেই। তাই খাবার এবং পানির ব্যবস্থা করে নিয়ে যাবেন।

ব্যবস্থাপনা : বর্তমানে রিছাং ঝর্ণা খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। এই ঝর্ণার সার্বিক সংরক্ষণ ও পর্যবেক্ষণের জন্য কোন লোক নিয়োগ করা হয়নি এখনো। তবে এর উন্নয়নের জন্য জেলা পরিষদ থেকে সিঁড়ি তৈরি করা হয়েছে।

উৎস : Click This Link

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৩

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: বর্ণনা ভাল লেগেছে।

০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:১২

ইরফান এইচ সায়েম বলেছেন: ধন্যবাদ..।

২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:২৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আমি গিয়েছিলাম কয়েকবছের আগে।
ঝর্না দেখতে খাবার নিয়ে যাওয়ার কোন দরকার নেই, ওখানে বসে খেয়েদেয়ে যায়গাটাকে অনেকেই নোংড়া করে রেখে এসেছে। সেই কাজ আমরা নাহয় নাইবা করলাম।

০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:১৪

ইরফান এইচ সায়েম বলেছেন: হুম..

৩| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৬

অপ্রকাশিত ৩ বলেছেন: Onek shundor :)

০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:১৫

ইরফান এইচ সায়েম বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.