নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এথিনি মিনার্ভা ও একটি স্বপ্ন

এথিনি মিনার্ভা

চির উন্নত মম শির

এথিনি মিনার্ভা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ওপেট ফন্ট জিহাদ ও কিছু পর্যালোচনা

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:০৬

যারা আল্লামা মাসঊদ আযহার (দা:বা:) এর জ্বালাময়ী কিছু ভাষণ শুনে...
মাওলানা আসেম ওমর (দা:বা:) এর ঈমানদীপ্ত কিছু বই পড়ে,
শুধু জিহাদ /আর ক্বিতাল নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন, তাদের জন্য ও আমার জন্য কিছু পর্যালোচন..

শায়েখ আবু মুস'আব আল সুরী (আল্লাহ
তাঁকে মুক্ত করুন) তাঁর "গ্লোবাল
ইসলামিক রেজিস্টেন্স কল"
বইতে লেখেন-
"... 'ওপেন ফ্রন্ট জিহাদ' হল জিহাদের
সেই পদ্ধতি যেখানে মুজাহিদীন
ভূমি দখল করার জন্য শত্রুর
সাথে সরাসরি যুদ্ধ করে থাকেন। যার
উদ্দেশ্য হল, শত্রুমুক্ত
ভূমিতে ইসলামী শাসন
প্রতিষ্ঠা করা।" [শায়খ
কথাগুলো এভাবে বলেন নি, আমি একটু
সহজ করে লিখলাম আর কী]
কিছুদূর পর শায়খ লিখেন, "ওপেন ফ্রন্ট
জিহাদে সাফল্য লাভের জন্য কিছু
অত্যাবশ্যকীয় পূর্বশর্ত আছে। এ
শর্তগুলো পূরণ করতে না পারলে,
ব্যর্থতার সমূহ সম্ভাবনা আছে। এই
পূর্বশর্তগুলোকে মোটামুটি ৩
শ্রেনীতে ভাগ করা যায়।
ক. ভৌগলিক পূর্বশর্ত; খ. জনসংখ্যাগত
পূর্বশর্ত; গ. রাজনৈতিক পূর্বশর্ত।
(ক. ভৌগলিক পূর্বশর্ত সমূহ)
১. যে ভূমিতে ওপেন ফ্রন্ট জিহাদ
করা হবে, সেটি বিস্তীর্ণ
এলাকা হতে হবে।
২. বৈচিত্রপূর্ণ ও প্রতিবেশী দেশের
সাথে দীর্ঘ বর্ডার বিশিষ্ট হতে হবে।
৩. এমন ভূমি হতে হবে, যা অবরোধ
করা দুঃসাধ্য হবে।
৪. এতে রুক্ষ পার্বত্য এলাকা, বন-জঙ্গল
কিংবা এ জাতীয় ভৌগলিক ক্ষেত্র
থাকতে হবে যা শত্রুকে (গেরিলা)
আক্রমণের লক্ষ্যে পরিণত করা সহজ হয়।
৫. ভূমিটি পানি ও খাদ্য সমৃদ্ধ হতে হবে,
যেন দীর্ঘকালীন অবরোধেও
টিকে থাকা যায়।
(খ. জনসংখ্যাগত পূর্বশর্ত সমূহ)
৬. ভূমিটি লোকবহুল হতে হবে। যেন এই
বিপুল জনস্রোতের
সাথে মিশে থাকা যায়।
৭. এ ভূমির যুবকদের শত্রুর মোকাবেলায়
দৃঢ়পদ ও যুদ্ধে বীরত্বের জন্য
খ্যাতি থাকতে হবে।
৮. সেই ভূমিতে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র
মওজুদ থাকতে হবে।
(গ. রাজনৈতিক পূর্বশর্ত সমূহ)
৯. এক যুগের মত লম্বা সময় যুদ্ধ
চালিয়ে যাওয়ার মত রাজনৈতিক
প্রেরণা থাকতে হবে। নাহলে মানুষ
বসে পড়বে, এবং যুদ্ধে ক্লান্ত
হয়ে পড়বে, এবং নিয়তির
কাছে নিজেদের সপে দিবে। ..."


এখানে কোন ঈমানি শর্ত নেই,শুধু বাহ্যিক সামর্থের কথাই ওস্তাদ বলেছেন।

ধরে নিলাম আমাদের দেশে যে বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠী (!!) ক্বিতাল করতে প্রবল আগ্রহী(!!) তারা আমল আখলাখের দিক দিয়ে একদম ফাস্ট ক্লাস। তারা জীবনে তাহাজ্জুদ কাযা করে নি, জীবনে জামাতে নামায কাযা করে নি, জীবনে কোন রোজা বাদ দেয় নি, সারাক্ষণ আল্লার জিকিরে মশগুল, বেগানা নারীদের দিকে তাদের চোখ কখনো যায় নি। সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধে তারাই আছে ন সর্বাগ্রে... তবুও
ওপেন ফন্ট জিহাদের জন্য শায়েখের উল্লেখিত শর্তগুলো একেবারেই আবশ্যক।

তা নাহলে "ওয়া ঈদ্দুলাহুম মাসত্বাততুহুম মিন ক্বুওয়ার "হক বোধয় আদায় হবেনা।
আসুন শায়েখের উল্লেখিত শর্ত অনুযায়ী বাংলার ভূমি কতটুকু ওপেন ফন্ট জিহাদের উপযোগী । আমার বিশ্লেষণই চূড়ান্ত নয়, বরং আপনিও আপনার যোক্তিক বিশ্লেষণ তুলে ধরতে পারেন। তাতে উভয়েরই ফায়দা। ( ক&&- ভৌগোলিক পূর্বশর্ত)
*পয়েন্ট ১--যে ভূমিতে ওপেন ফন্ট জিহাদ হবে, সেটি বিস্তির্ণ হতে হবে..
বিশ্লেষণ :: আপনারা সবাই জানেন বাংলাদেশের আয়তন (ক্ষেত্রফল) -১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলো বা ৫৫,৫৫০ ব,মা
যেই দেশের প্রতি বর্গ কিমি তে বাস করে ১০৫৫ জন (Wikipedia)

ভূমিটি বিস্তৃর্ণ নয় বরং খুন সংকীর্ণ।
*পয়েন্ট ২- বৈচিত্র্যপূর্ণ ও প্রতিবেশীদের সাথে দীর্ঘ বর্ডার থাকতে হবে...
বিশ্লেষণ : হ্যাঁ বাংলাদেশ যে কত বৈচিত্র্যময় তার তো শেষ নেই। তবে শায়েখ যেই বৈচিত্রের কথা বলেছেন তা বাংলাদেশে কতটুকু রয়েছে তা আপনারাই ভালো জানেনে।
এবার আসি দীর্ঘ বর্ড়ার নিয়ে, বাংলাদেশের সাথে সবচেয়ে দীর্ঘ বর্ড়ার হল ভারতের সাথে,ভারত - বাংলাদেশ সীমান্তের মোট দৈর্ঘ্য ৪,০৯৬.৭০
কিলোমিটার (২,৫৪৬ মাইল)।(wiki)
যা খুবই কম ও সংকীর্ণ....

*পয়েন্ট ৩::এমন ভূমি হতে হবে যা অবরোধ করা দু:সাধ্য।

বিশ্লেষণ :: আমার মতে বাংলাদেশ অবরোধ করা খুবই সহজ। সবদিকেই কুফফার শক্তি। বাংলার অর্থনীতি, রাজনীতি, সংস্কৃতি সবই ভারত দাদা নিয়ন্ত্রিত । এক তিস্তার পানি বন্ধ করে দিয়ে মমতার মত এক বেটি, সবুজ বাংলাকে মরুভূমির স্বাদ পায়িয়ে দিল।
তাই একমাত্র বোকা না হলে সবারই বুঝে আসবে বাংলাদেশ অবরোধ করা কত চালের সংক্ষিপ্ত খেলা...

*পয়েন্ট ৪::এতে রুক্ষ পার্বত্য এলাকা, বন-জঙ্গল
কিংবা এ জাতীয় ভৌগলিক ক্ষেত্র
থাকতে হবে যা শত্রুকে (গেরিলা)
আক্রমণের লক্ষ্যে পরিণত করা সহজ হয়।

বিশ্লেষণ :: বাংলাদেশে রুক্ষ পার্বত্য এলাকা বা বলাঞ্চল খুব সংকীর্ণ, পার্বত্য এলাকা বলতে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান, সিলেট, মৌলভীবাজারের কিছু এলাকা রয়েছে যার বেশির ভাগ অংশই খ্রিষ্টান মিশনারি ও উপজাতি উগ্রবাদীদের দখলে যা আপনারা সকলেই জানেন।

বনাঞ্চল বলতে সুন্দরবনকেই যুদ্ধোপযোগী ধরা যাই যার বেশির ভাগটাই বনদস্যু ও নৌবাহিনীর দখলে। সুতরাং এসব জায়গাতে বসে গেরিলা আক্রমণ তো দূরের কথা ডিফেন্স
সামলানোই দায় হয়ে পড়বে।

পয়েন্ট ৫:: ভূমিটি পানি ও খাদ্য সমৃদ্ধ হতে হবে,
যেন দীর্ঘকালীন অবরোধেও
টিকে থাকা যায়।

বিশ্লেষণ :: মাশাল্লা বাংলাদেশের পানির অভাব নেই। কোন দেশ চাইলে আমরা পানি ধারও দিতে পারি। প্রতি বছর বন্যা তো আমাদের আশীর্বাদ..
তবে কথা হল খাদ্য নিয়ে। বাংলাদেশে ধান সবচে ভালো উৎপন্ন হয়।আর আমরা এখন খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণ ( আওয়ামী তথ্য) যদিও অনেকেই না খেয়ে জীবন যাপন করে। বর্তমানে বাংলাদেশে উৎপাদিত ধান দিয়ে ৩ কোটি ৪০ লক্ষ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হয়, তবু ও আমাদের দেশের ৪১.৩ পার্সেন্ট মানুষ দারিদ্রসীমা নিচে বাস করছে, (প,প,স-৫ম, +wiki)। তারপরও প্রতিবছর ভারত থেকে আমাদের নানা কৃষিজাত দ্রব্যাতি আমদানি করতে হয়। এমাতবস্থায় যুদ্ধ বা এরকম কোন অবস্থা দেশের ১৫ কোটি মানুষের মাঝে হাহাকার ফেলে দেবে, যা সোমালিয়ার দুর্ভিক্ষকেও অতিক্রম করে যাবে। তারপরও আপনার মতামত ভিন্ন হতে পারে.. সেটা আপনি বলতে পারেন। যদি কিছু শিখতে পারি...

(খ&&& জনসংখ্যাগত পূর্বশর্ত)
পয়েন্ট ৬:: ভূমিটি লোকবহুল হতে হবে। যেন এই
বিপুল জনস্রোতের
সাথে মিশে থাকা যায়।

বিশ্লেষণ : জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ পৃথিবীর ৮ম অবস্থানে। আর মুসলিম বিশ্বে দ্বিতীয়। মাশাল্লা খুব গর্বের বিষয় তাইনা!! কিন্তু এই জনসংখ্যার মাঝে জিহাদিদের জন্য কি পজেটিব ধারণা আদও রয়েছে??? আপনি লুকিয়ে থাকবেন?? এটা আপনার উপরই ছেড়ে দিলাম, যাদের হিন্দি ইংলিশ গান শুনলে ঘুমে ধরে না, যে দেশের মানুষ মোল্লা মৌলভীদের টিটকারি করে পৈশাচিক মজা পায়..
একটু ভেবে দেখবেন!!

পয়েন্ট৭::এ ভূমির যুবকদের শত্রুর মোকাবেলায়
দৃঢ়পদ ও যুদ্ধে বীরত্বের জন্য
খ্যাতি থাকতে হবে।

বিশ্লেষণ : বাংলার যুবাদের খ্যাতি কুখ্যাতি সবই আছে। তবে ৪৭,৫২,৭১,৯০ সাব কুছ মাজিকা কিচ্ছা বান গায়া, আব ৬ এপ্রিল ৫ মের কানধরে পালিয়ে যাওয়া যুবাদের দেখে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।

পয়েন্ট৮:: সেই ভূমিতে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র
মওজুদ থাকতে হবে।

বিশ্লেষণ : লেখা বড় হয়ে যাচ্ছে, তবে এতটুকু বলতে চাই, বাংলাদেশে যুদ্ধাস্ত্র হিসাবে এখন আইক্কায়ালা বাঁশ ছাড়া কিছু নাই। তবুও যে হারে বাঁশ শেষ হয়ে যাচ্ছে কিছুদিন পর সেটাও পাবেন বলে মনে হয়না।
(গ&&&-রাজনৈতিক পূর্বশর্ত)
*পয়েন্ট ৯:: এক যুগের মত লম্বা সময় যুদ্ধ
চালিয়ে যাওয়ার মত রাজনৈতিক
প্রেরণা থাকতে হবে। নাহলে মানুষ
বসে পড়বে, এবং যুদ্ধে ক্লান্ত
হয়ে পড়বে, এবং নিয়তির
কাছে নিজেদের সপে দিবে।

বিশ্লেষণ : আমাদের দেশে যারা হক্ব পথে রাজনীতি করছেন, তাদের তো আমাদের কম্বল মুজাহিদ রা চোখেই দেখতে পারেনা। কুফফার বলে আখ্যা দেয়। কিন্তু এই জ্ঞানী ভাইরা এটা জানেনা যে, ওপেন ফন্ট জিহাদের জন্য কিছু রাজনৈতিক শর্তও রয়েছে।, আর যারা এই রাজনৈতিক পূর্বশর্ত পূরণে সকল লোভ লালসা হিংসা বিদ্বেশের উপরে উঠে কাজ করে যাচ্ছে তাদেরকে এমন কোন খারাপ ট্যাগ নেই যা সহ্য করতে হচ্ছেনা।

অবশেষে এতটুকু আপনিও বলবেন বাংলার জনগণ মাত্র একমাস ককটেল ফুটিয়ে যায়, জল কামানের আঘাতে তারা বেহুঁশ হয়ে পড়ে, ফাঁকা গুলির আওয়াজে দৌড়ে পালায় তাদের কাছ থেকে আপনি কিভাবে ১ যুগ যুদ্ধ চালিয়ে যাবার আশা করছেন।


পরিশেষে এতটুকুই বলব, আল্লামা মাসউদ আযহার প্রায় জায়গাতেই বলেন, জিহাদ কিৎনা আজিম আমল হ্যায়..


আবার বলে থাকেন সিয়াসি ময়দান ও কৌ ছোটা আমল নেহি হ্যায়, ইয়েতো আজিম আমল হ্যায় ""

সিয়াসাত বা রাজনীতিকে আল্লামা মাসউদ আযহার ছোট করে দেখেন নি। কেননা তিনি এর গুরুত্বটা বোঝেন।

তিনি আরো বলেন, আমার গাল ওলামাদের সেই জুতার জন্য প্রস্তুত যা এসলার জন্য পেটাবে আমাকে।

কিন্তু হায় আফসোস, আজকে যারা এসলার ময়দানে, সিয়াসী ময়দানে অবিরত লড়াই করে একদল বিচক্ষণ যোগ্য, সাহসী,লড়াকু মুজাহিদ তৈরির কাজ করে যাচ্ছেন, ওলামায়ে দেওবন্দকে আসন লোভী বলছেন তারা, মোল্লা ওমরের অনুসারী নয়, ওসামার অনুসারী নয়, আল্লামা আযহারের অনুসারী নয়।
আমার মতে আপনাদের উগ্রতা পরিহার করে, সকল বাতিল পন্থিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো উচিত।


আল্লাহ আমাদের তৌফিক দাও।আমার প্রাণের ভাইদের এক দেহে আবদ্ধ করে দাও।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.