![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি এখন ভিন্ন মানুষ অন্যভাবে কথা বলি কথার ভেতর অনেক কথা লুকিয়ে ফেলি, কথার সাথে আমার এখন তুমুল খেলা...
মানুষের জীবন বড়ই ক্ষণস্থায়ী। ছোট্ট এ জীবনে আপন স্বার্থ পূরণের মাঝেই কেউ কেউ খুঁজে পায় স্বার্থকতা। স্বার্থের জন্য ভুলে যায় অতীত। বিসর্জন দেয় বিবেক-কৃতজ্ঞতা বোধ। উপকারীর বুকে ছুড়ি চালাতেও কেউ কেউ কুন্ঠিত হয় না। আমাদের আশেপাশেই আছে এরকম বিশ্বাসঘাতক-নিমকহারাম প্রকৃতির লোকজন। ইতিহাসে তাদের নাম হয়তো কখনো ঠাই পাবে না। তবে ইতিহাস বলে, নিমকহারাম আর বিশ্বাসঘাতকদের পরিণতি হয় ভয়াবহ।
ইতিহাসের এমনই এক অমর চরিত্র মীরজাফর। যার সম্পূর্ণ নাম মীর জাফর আলী খান। তিনি ছিলেন বাংলার এক পুতুল নবাব।
মীরজাফর প্রথমে নবাব সিরাজদ্দৌলার একজন অমাত্য ছিল। ব্যক্তিগত সম্পর্কে সে ছিল নবাব সিরাজউদ্দৌলার খালু। নবাব সিরাজদ্দৌলার শাসনামলে মীরজাফর ছিল তাঁর প্রধান সেনাপতি।
মীর জাফর প্রথম জীবনে নবাব আলীবর্দী খানের কাছে পালিত হয়। উচ্চবংশীয় মুসলমান সন্তান হওয়ায় নবাব তাকে খুব স্নেহ করতেন। নবাব তার বৈমাত্রেয় বোন শাহ খানমকে বিয়ে দেন মীর জাফরের সঙ্গে। মারাঠা যুদ্ধে শৌর্য-বীর্যে মীর জাফর বেশ সুনাম অর্জন করে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে সে ছিল খুব ক্ষমতালোভী এবং চালবাজ।
নবাব আলীবর্দী খান তার দৌহিত্র সিরাজউদ্দৌলাকে বাংলার নবাব করায় ক্ষুব্ধ হয় মীর জাফর। তাই সে প্রধান সেনাপতি হয়েও কখনোই সিরাজউদ্দৌলাকে নবাব হিসেবে মেনে নিতে পারে নি।
আতাউল্লাহর সঙ্গে আঁতাত করে বাংলা দখলের ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে গেলে নবাব তাকে পদচ্যুত করেন। কিন্তু পরে ক্ষমা করে দেন। ১৭৫৬ সালে আলীবর্দী খানের মৃত্যুর পর নবাব সিরাজউদ্দৌলা তাকে পুনরায় সেনাপতি পদে বহাল রাখেন।
মীর জাফর কে নবাব না করায় সে সব সময় চেয়েছে বাংলার নবাবের পতন। তাই বিশ্বাসঘাতকতা করে সে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রবার্ট ক্লাইভ এর সাথে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়, এবং পলাশীর যুদ্ধে তার কারণেই ব্রিটিশদের হাতে সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ঘটে। এই যুদ্ধের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মীরজাফরকে নবাবের মসনদে অধিষ্ঠিত করে।
১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে ইংরেজ বেনিয়াদের সঙ্গে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার সৈন্যদের লড়াই হয়। এই যুদ্ধে নবাবের পক্ষে স্বাধীনতা রক্ষার লড়াইয়ে প্রধান সেনাপতি ছিল মীরজাফর আলী খান। তার সঙ্গে ছিলেন মীর মদন আর মোহনলাল। মীর মদন আর মোহনলাল ইংরেজদের বিরুদ্ধে বীর বিক্রমে লড়াই করে পরাজিত হন। আর যুদ্ধের ময়দানে পঞ্চাশ হাজার সৈন্য নিয়ে পুতুলের মতো নিরব দাঁড়িয়ে থেকে প্রধান সেনাপতি মীরজাফর আলী খান ও তার দোসররা ধূর্ত ইংরেজ বেনিয়া লর্ড ক্লাইভের হাতে বাংলার শাসন ক্ষমতা তুলে দেয়। পরাজিত হন বাংলা, বিহার উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা। মুষ্টিমেয় ইংরেজ শাসক, বিশ্বাসঘাতকদের সহায়তায় বাংলায় তাদের শাসন ক্ষমতা পোক্ত করে এবং সোয়া দুইশ’ বছর এদেশ শাসন করে। সেই থেকেই মীরজাফরের নাম বিশ্বাসঘাতকতার রূপক হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
মীরজাফর একটা মানুষরূপী কালসাপ।
মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতার জন্য তার নামটি বিশ্বাসঘাতকের প্রতিশব্দ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। একটু খেয়াল করলেই দেখা যায় বাংলাদেশে মীরজাফর নামে কারো নাম রাখা হয় না।
সুচতুর লর্ড ক্লাইভ যুদ্ধের পর মীর জাফরকে সিংহাসনে বসায় ঠিকই কিন্তু ক্ষমতা রাখে নিজের হাতে। কিছুদিন পর তার ইংরেজ প্রভুরা এ বিশ্বাসঘাতককে বিশ্বাস করতে পারে না। এ বিশ্বাসঘাতককে তারা ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়। ইংরেজরা ভাবে, যে ব্যক্তি সামান্য ক্ষমতার লোভে তার দেশ ও জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে তারা সাত সাগর তের নদীর ওপার থেকে এসে তাকে বিশ্বাস করবে কোন ভরসায় ?
নবাবী চলে যাওয়ার পর মীর জাফর আলী খান দারুণ অর্থ কষ্টে পরে। কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয় সে। রোগের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে এক তান্ত্রিকের পরামর্শে হিন্দু দেবী মূর্তির পা ধুয়া পানি খাওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। বেঈমান হয়ে কুষ্ঠরোগে শয্যাশায়ী অবস্থায় মারা যায় এ বিশ্বাসঘাতক।
ষড়যন্ত্র আর বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে নিজের জন্মভূমিকে যে বিদেশি শত্রুর হাতে তুলে দিয়েছিল তার পরিণতি ভাল হয়নি। এ ঘটনা থেকে এই শিক্ষাই পাওয়া যায়, দেশ ও জাতির সাথে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করে এ দুনিয়াতেই তাদের শাস্তি পেতে হয়। আর পরকালের অনন্ত শাস্তি তো তাদের পেতেই হবে।
২| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৩৪
ক্ষয়রোগ বলেছেন: ধন্যবাদ , মুছে দিলাম ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪২
সি এস আহমেদ বলেছেন: পোস্ট টি দুবার এসেছে।