নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
>>পর্দা না করলে আপত্তি নেই, কিন্তু পর্দাহীনতার পক্ষে দলীল দেবেন না >>>
পাপের কিছু স্তর রয়েছে। যেমন, না জেনে পাপ করা এক ধরনের পাপ, আবার জেনেশুনে পাপ করা মারাত্মক পাপ। কিন্তু এর চেয়েও খতরনাক পাপ হচ্ছে, আমি যা করছি, তাকে বৈধ বানানোর জন্য দলীল খুঁজতে উঠেপড়ে লাগা। যে কোনো কিছুর বিনিময়ে, যে কোনো ব্যাখ্যায় আমার কর্মকে জায়েয বানিয়েই ক্লান্ত হওয়া।
নারীদের মুখমন্ডল কি পর্দার অন্তর্ভূক্ত, এটা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। হাল জামানার অনেক স্কলার হাত এর সাথে নারীর মুখমন্ডলকেও হিজাবের আওতামুক্ত ঘোষণা করছেন। তাঁরা আল কোর’আনে পর্দা সংক্রান্ত একটি আয়াতে ব্যবহৃত “ﺧﻤﺎﺭ” শব্দের বিশ্লেষণ করতঃ বলছেন- আরবের লোকেরা খিমার বলতে বুঝায়, যে কাপড়ের দ্বারা মাথা এবং বুকদেশ ঢাকা হয়। সুতরাং এই আয়াতের মাধ্যমে কোনোভাবেই চেহারা আবৃত করা ফরয ঘোষণা করা যাবে না। অথচ অত্যন্ত আফসুসের বিষয়, তাঁরা যদি এই (সুরা নুরের) আয়াতেরই প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আলোকপাত করতেন, তাহলে বিষয়টা পানির মতো স্বচ্ছ হয়ে যেতো।
■আসুন দেখি “খিমার” সংক্রান্ত আয়াত এবং হাদীসের আলোকে তদানীন্তন পরিস্থিতি।
মহান আল্লাহ বলেনঃ
ﻭﻟﻴﻀﺮﺑﻦ ﺑﺨﻤﺮﻫﻦ ﻋﻠﻰ ﺟﻴﻮﺑﻬﻦ
তরজমা : তারা যেন গ্রীবা ও বক্ষদেশ মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে। ... (সূরা নূর : ৩১ )
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন,
ﻳﺮﺣﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﻧﺴﺎﺀ ﺍﻟﻤﻬﺎﺟﺮﺍﺕ ﺍﻷﻭﻝ، ﻟﻤﺎ ﺃﻧﺰﻝ ﺍﻟﻠﻪ : ﻭﻟﻴﻀﺮﺑﻦ ﺑﺨﻤﺮﻫﻦ ﻋﻠﻰ ﺟﻴﻮﺑﻬﻦ ﺷﻘﻘﻦ ﻣﻮﺭﻃﻬﻦ ﻓﺎﺧﺘﻤﺮﻥ ﺑﻬﺎ .
অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা প্রথম শ্রেণীর মুহাজির নারীদের প্রতি দয়া করুন। আল্লাহ তাআলা যখন
ﻭﻟﻴﻀﺮﺑﻦ ﺑﺨﻤﺮﻫﻦ ﻋﻠﻰ ﺟﻴﻮﺑﻬﻦ
আয়াত নাযিল করলেন তখন তারা নিজেদের চাদর ছিঁড়ে তা দ্বারা নিজেদেরকে আবৃত করেছিলেন।-সহীহ বুখারী ২/৭০০
●উপরোক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী রাহ. বলেন-‘ফাখতামারনা’ অর্থ তারা মুখমন্ডল আবৃত করেছেন।-ফাতহুল বারী ৮/৩৪৭
আল্লামা আইনী রাহ. বলেন-‘ফাখতামারনা বিহা’ অর্থাৎ যে চাদর তারা ছিঁড়ে ফেলেছিলেন তা দিয়ে নিজেদের মুখমন্ডল আবৃত করলেন। (উমদাতুল কারী ১৯/৯২)
●আল্লামা শানকীতী রাহ. বলেন, এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, উপরোক্ত মহিলা সাহাবীগণ বুঝতে পেরেছিলেন যে, এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে মুখমন্ডল আবৃত করারও আদেশ করেছেন। তাই তারা আল্লাহ তাআলার আদেশ পালনার্থে নিজেদের চাদর ছিঁড়ে তা দিয়ে মুখমন্ডল আবৃত করেছেন।
এছাড়াও আল কোর’আনের সুরা আহযাবের 33, 53, 59 নম্বর আয়াতের তাফসীরে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) ব্যাখ্যা দেখতে পারেন।(ফাতহুল বারী 8/54, 76, 114)
সুরা নূরের 31 নম্বর আয়াতের তাফসীরে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) এর ব্যাখ্যা দেখতে পারেন। (তাফসীরে তাবারী 18/118)
আল্লামা ইবনে সীরিন সহ মুজাহিদগণের ব্যাখ্যা দেখতে পারেন।
●●●মুখমন্ডল আবৃত করার স্বপক্ষে হাদিসঃ●●●
(1)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
ইহরাম গ্রহণকারী নারী যেন নেকাব ও হাতমোজা পরিধান না করে। (সহীহ বুখারী 4/63, হাদীস : 1838)
কাযী আবু বকর ইবনে আরাবী বলেন, নারীর জন্য বোরকা দ্বারা মুখমন্ডল আবৃত রাখা ফরয। তবে হজ্বের সময়টুকু এর ব্যতিক্রম। কেননা, এই সময় তারা ওড়নাটা চেহারার উপর ঝুলিয়ে দিবে, চেহারার সাথে মিলিয়ে রাখবে না। পরপুরুষ থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখবে এবং পুরুষরাও তাদের থেকে দূরে থাকবে। (তাযকিরাতুল আহওয়াযী 4/56)
(2)
. হযরত আয়েশা রা. ইফ্কের দীর্ঘ হাদীসে বলেছেন-আমি আমার স্থানে বসে ছিলাম একসময় আমার চোখ দুটি নিদ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ল এবং আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। সফওয়ান ইবনে মুয়াত্তাল আসসুলামী ছিল বাহিনীর পিছনে আগমনকারী। সে যখন আমার অবস্থানস্থলের নিকট পৌছল তখন একজন ঘুমন্ত মানুষের আকৃতি দেখতে পেল। এরপর সে আমার নিকট এলে আমাকে চিনে ফেলল। কারণ পর্দা বিধান অবতীর্ণ হওয়ার আগে সে আমাকে দেখেছিল। সে তখন ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন বলে ওঠে, যার দরুণ আমি ঘুম থেকে জেগে উঠি এবং ওড়না দিয়ে নিজেকে আবৃত করে ফেলি।
অন্য রেওয়ায়েতে আছে, আমি ওড়না দিয়ে আমার চেহারা ঢেকে ফেলি।-সহীহ বুখারী 5/320; সহীহ মুসলিম, হাদীস : 2770; জামে তিরমিযী, হাদীস : 3179।
(3)
উম্মুল মুমিনীন উম্মে সালামা রা. বলেন, আমি একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ছিলাম। উম্মুল মুমিনীন মায়মুনা রা.ও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এমন সময় আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম উপস্থিত হলেন। এটি ছিল পর্দা বিধানের পরের ঘটনা। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা তার সামনে থেকে সরে যাও। আমরা বললাম, তিনি তো অন্ধ, আমাদেরকে দেখছেন না?! তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরাও কি অন্ধ? তোমরা কি তাকে দেখছ না?-সুনানে আবু দাউদ 4/361, হাদীস : 4112; জামে তিরমিযী 5/102, হাদীস : 2779; মুসনাদে আহমাদ 6/296; শরহুল মুসলিম, নববী 10/97; ফাতহুল বারী 9/248।
(4)
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন, আমরা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ইহরাম অবস্থায় ছিলাম তখন আমাদের পাশ দিয়ে অনেক কাফেলা অতিক্রম করত। তারা যখন আমাদের সামনাসামনি চলে আসত তখন আমাদের সকলেই চেহারার ওপর ওড়না টেনে দিতাম। তারা চলে গেলে আবার তা সরিয়ে নিতাম।-মুসনাদে আহমাদ 6/30; ইবনে মাজাহ, হাদীস: 2935
▪এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, পরপুরুষের সামনে চেহারা ঢেকে রাখা আবশ্যক।
(5)
আসমা বিনতে আবু বকর রা. বলেন, আমরা পুরুষদের সামনে মুখমন্ডল আবৃত করে রাখতাম। ...-মুসতাদরাকে হাকেম 1/454
▪এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, সাহাবা-যুগের সাধারণ মহিলারাও গায়র মাহরাম পুরুষ থেকে নিজেদের চেহারা আবৃত করতেন। কারণ আসমা বিনতে আবি বকর রা. এখানে বহুবচন ব্যবহার করেছেন। যা প্রমাণ করে উম্মুল মুমিনগণ ছাড়া অন্য নারীরাও তাদের মুখমন্ডল আবৃত রাখতেন।
(6)
ফাতিমা বিনতে মুনযির রাহ. বলেন, আমরা আসমা বিনতে আবু বকর রা.-এর সাথে ইহরাম অবস্থায় থাকাকালে আমাদের মুখমন্ডল ঢেকে রাখতাম।-মুয়াত্তা, ইমাম মালেক 1/328; মুসতাদরাকে হাকেম 1/454।
■এছাড়াও আরো অনেক সরাসরি কিংবা ইঙ্গিতপূর্ণ হাদিস রয়েছে, যার মাধ্যমে পরিষ্কার বুঝা যায়, নারীর চেহারা অবশ্যই পর্দার আওতাধীন এবং ফরয।
☆অতএব, আপনি পর্দা করতে/করাতে না চাইলে আপত্তি নেই; স্বাধীনতা উপভোগ করুন। কিন্তু পর্দাহীনতার পক্ষে দলীল বানাবেন না।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪৬
নতুন বলেছেন: হে নবী! তোমার স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মু’মিনদের নারীদেরকে বলে দাও তারা যেন তাদের চাদরের প্রান্ত তাদের ওপর টেনে নেয়।১১০ এটি অধিকতর উপযোগী পদ্ধতি, যাতে তাদেরকে চিনে নেয়া যায় এবং কষ্ট না দেয়া হয়।১১১ আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়। ( সূরা আহযাব আয়াত ৫৯)
এই আয়াতে আল্লাহ বলছেন যে এমন ভাবে পদা` করতে যাতে তাদের চেনা যায়....
উপরের ছবিতে কিভাবে আপনি চিনতে পারবেন????????
নিচের ছবিতে নারীদের পদা` হয়েছে এবং চেনা যাচ্ছে.... এটা কি উপরের আয়াতের অনুসরন করা হয়নি কি??