নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

just simple

ফাহিম বদরুল হাসান

just simple

ফাহিম বদরুল হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি ফেসবুকীয় ভালবাসা, বিয়ে, অতঃপর….

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:১৮


বছর তিনেক আগে ফ্রান্সে বসবাসরত জনৈক ভ্রাতার ফেসবুকে এক ভগিনীর সহিত পরিচিত হইয়াছিল। গতানুগতিক হাই-হ্যালো দিয়ে শুরু হইয়া ধীরে ধীরে চ্যাটিং পিরিওড দীর্ঘ হইতে থাকিল। কয়েক মাস যাবত একে অপরকে জানাজানি করিতে থাকিলেন। কয়েক মাসে উভয়ে ফেসবুক চ্যাট হইতে স্কাইপ, হোয়াটস আপ সহ আরো অনেক ভিডিও টেলি-কথনে উন্নিত হইলেন।
মেট্রিক পাশ না করিলেও স্নাতক পড়ুয়া অর্ধাঙ্গীনী পাইয়া ভ্রাতা বেশ পুলকিত থাকিতেন। ম্যাসেজের আকর্ষণীয় ভাষা, কথার ফাঁকে ফাঁকে ইংরেজি শব্দের ব্যবহার, ফোন করিয়া ঘুম হইতে জাগাইয়া দেওয়া, কাজের জন্য তাগিদ দেওয়া, অধিক শ্রমের কারণে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে ধৈর্যের পরামর্শ দেওয়া, কী খাইলেন না খাইলেন খবর নেওয়া, পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া ইত্যাদি বিষয়ে মহীয়সীর হস্তক্ষেপ চিন্তা করিয়া ভ্রাতা তো পাগলপ্রায়। যেন কাহারো প্রার্থনায় তিনি খোদার শ্রেষ্ঠ উপহার হাতের নাগালে পাইয়াছেন! পরিচিতি অনেকের সহিত হবু বধূর বিভিন্ন গুণাগুণ গর্বের সহিত বলিয়া বেড়াইতেন। শুনিয়া কেহ অগোচরে মজা নিত, কেহ বা বাহবা দিত।
এইভাবে কয়েক মাস চলিবার পর একসময় ভ্রাতা স্বদেশে গিয়া অনেক জমকালো আয়োজনে নিকাহ করিয়া, আপনালয়ে ব্যাপক উৎফুল্লতার সহিত মাস দেড়েক অবস্থান করিলেন। আইফেলের দেশে প্রত্যাবর্তণ করিবার পূর্বে উচ্চশিক্ষার স্বার্থে শিক্ষিত বধূকে আবার তার বাবার বাড়িতে থাকিবার সিদ্ধান্ত দিয়া আসিলেন।

ফ্রান্সে ফিরিবার পর কয়েকদিন বেশ আনন্দেই কাটিল। কেহ গৃহে আসিলে তাহার বিবাহ-ওয়ালিমার ভিডিও দেখাইয়া অনেক তৃপ্ত হইতেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে ধীরে ধীরে ভ্রাতার জীবনে পরিবর্তন আসিতে থাকিলো, পূর্বের ন্যায় বধূর প্রশংসার ফুলঝুরি নাই, নাই সেই উচ্ছ্বাস! ছুটির দিনে শুইয়া শুইয়া এখন আর বিয়ের ভিডিও দেখেন না। ঘন্টার পর ঘন্টা টেলিফোনে কথা নাই, স্কাইপের ভিডিও কলও উদাও। পরে জানা গেল, স্বর্গীয় সুখের সংসারে নরকের দহন। ভ্রাতার ডিভোর্স হইয়া গিয়াছে!
ছাড়াছাড়ির খবর শুনিয়া উনার সহিত সাক্ষাত করিতে গেলাম। শুনিলাম, তাহার সম্পর্কের আদিগন্ত। বলিলেন- “ ভাই! আমি অনেক বড় ভুল করেছি। দূর থেকে মানুষ চেনা যায় না ভাই। যেই মেয়েটি বিয়ের আগে আমাদের বাড়ির হাঁস-মুরগীর খবর নিত, সেই মেয়েটি বিয়ের পর আমার অসুস্থ মাকে দেখতে যাওয়া দূরে থাক, ফোন করে একটা খবর পর্যন্ত নেয়ার সময় নেই। আগে যে মেয়েটা পরামর্শ দিত, ভাই-বোনকে কোথায় কীভাবে সেট করা যায়, সেই মেয়েটি এখন বলে- আমি কেন ওদের ঘানি টানছি। অনেক ধৈর্য ধরেছি ভাই, কিন্তু যেদিন শুনলাম,আমার মা’কে গালাগালি করে, বাবা-মাকে আমার উপার্জনের খোঁটা দেয়, আর পারি নি।”

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.