নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

just simple

ফাহিম বদরুল হাসান

just simple

ফাহিম বদরুল হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

Sorry Aleppo: আবেগ তো মরে গেছে সেই কবে!

০৪ ঠা মে, ২০১৬ রাত ২:৫৯


ছবিগুলো ফ্রান্সের Saint Ouen এরিয়া থেকে নেয়া। স্হানটি আমার বাসা হতে মাইল তিনেক দূরত্বে। ইউরোপের বরফপড়া শীত থেকে চামড়া পোড়া রোদ- টেম্পোরারি তাবু টাঙিয়ে একেকটি পরিবারের বসবাস।

ক’বছর ধরে ফ্রান্সে বিশেষত প্যারিসে এরকম নতুন কিছু চিত্র ভেসে উঠছে। মসজিদের ফটকে ভিক্ষুকদের ব্যপক ভিড়। গাড়ি সিগন্যালে থামলেই ভিক্ষুকের ভোঁ দৌড়। ট্রেন-স্টেশনে বাচ্চা কোলে থালা সামনে বোরখা পরা কোনো নারী। মার্কেটের মধ্য দিয়ে হাটছে, হঠাত বিশ-পঁচিশ বছরের হিজাবি স্বামীহারা কোনো বধূ। যুবক থেকে যুবতী, ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা থেকে কোলের শিশু- সর্বস্তরের ভিক্ষুক।

বাঙলাদেশের অধিকাংশ ভিক্ষুক হাতে থালা নিয়ে “ইয়া আল্লাহ/আলহামদুলিল্লাহ” ইত্যাদি দুএকটা শব্দ/বাক্য ছাড়া কিছুই বলে না । কিন্তু এসব ভিখারী! হাতে পাসপোর্ট, কারো হাতে আরবি কিছু একটা লিখিত প্লেকার্ড নিয়ে আরবিতে অনর্গল বলেই যাচ্ছে, বুকে দাগকাটা কিছু বাক্য:
-ساهموا في سبيل الله
يا اخوان المسلمين! نحن إخوانكم و إخوتكم تصدقوا ترحموا
(আল্লাহর রাস্তায় দান করুন/ হে মুসলিম ভাইয়েরা, আমরা আপনাদের ভাই/ বোন, সাদকা করুন, রহম করুন ইত্যাদি)।

ফ্রান্সে এরকম ভিক্ষাবৃত্তি কয়েক বছর আগেও তেমন ছিল না। কিছু রোমানিয়ান উপজাতি আর ছিটেফোঁটা মাতাল ভিক্ষুক ছিল। এখন একেকটা মসজিদের ফকট যেন ফকিরহাট, রাস্তার মোড় যেন ফকিরাপুল।

কেন আজ ফ্রান্সের মতো উন্নত বিশ্বে এতো ভিক্ষুক? এরা কারা হঠাত ভিক্ষুকে পরিণত হল? উত্তর তাদের হাতের প্ল্যা-কার্ড আর পাসপোর্ট দিচ্ছে।

সিরিয়া, মিশর, লিবিয়ার উদ্বাস্তু। এরা একসময় আপনালয়ে আপনজন নিয়ে সুখেই ছিল। হয়তো স্বপ্নেও ভাবেনি, তারা কখনো হাত পেতে খেতে হবে। কিন্তু সভ্যতার কী নির্মম পরিহাস, সুন্দর পৃথিবীর গড়ার তাগিদে এদেরকে তছনছ করে দেয়া হয়েছে! তারা আজ গৃহহীন, ধনহীন, জনহীন। সভ্যতার ছোঁয়ায় আজ কারো সন্তান রেখে স্ত্রী নিহত, কারো স্ত্রী রেখে স্বামী নিহত। কারো নাবালক ভাই রেখে মা-বাবা নিহত। জীবন বাঁচাতে আজ ফ্রান্সের গলিতে গলিতে। দু-লুকমা খাবারের জন্য হাত বাড়িয়ে রাস্তায় ঠায় দাঁড়িয়ে।

তবে আশার কথা হচ্ছে, ভেসে আসা এসব মুসলিমদের অশ্রু সেই কবে শেষ হয়ে। দু-তিন বছরে এদের পরিবর্তনে আমাদের অনুভূতিও পরিবর্তিত হয়ে গেছে। এদের দেখে এখন আর কষ্ট হয় না। এখনো রাস্তায় বসবাস করলেও এদের চোখেমুখে ভয়-ভীতি নেই। ভিক্ষাবৃত্তি করলেও নিরাশা নেই।
রিভেন্জের ছাপ স্পষ্ট দেখা যায়। ভুখা নাঙ্গা শিশুদের চেহারা যেন ধামাকাদার একেকটা ককটেল।
মনে হয়, এদের অশ্রুগুলো সাগরে পরিণত না হয়ে বরং জমে গিয়ে লবনের পাহাড় হওয়ার পথে, যাতে ধাক্কা লেগে অচিরেই তথাকথিত সভ্যতার টাইটানিক অতল গহ্বরে নিমজ্জিত হবে।

নতুন করে “আলেপ্পো জ্বলছে” হ্যাশট্যাগ দিয়ে শতশত নারী-শিশুদের নির্মম ছবির সাথে রোনাজারি যারা করছেন, আল্লাহ তাদের ক্রন্দন শুনুন। কিন্তু মনে রাখা দরকার, এটা তো বিক্ষিপ্ত ঘটনা নয়। প্রায় দুই যুগ ধরে চলা সিরিয়াল কিলিং মিশনের এক এপিসোডের কয়েকটি ঝলক।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মে, ২০১৬ রাত ৩:২৭

মহা সমন্বয় বলেছেন: কিন্তু তাদের ক্রদন শুনার মত কেউ কি আছে???

১৪ ই মে, ২০১৬ রাত ৮:২৯

ফাহিম বদরুল হাসান বলেছেন: মানবজাতি বধির।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.