নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সামু তে সময়ক্ষেপণ করি, অতি জানাশোনার ভিড়ে নিজের স্বল্পকায় জ্ঞান আজিকে সার্থক বলিয়া বোধোদয় হইতেছে। পড়াশুনা আইন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর, ঢাবি।

মার্কো পোলো

মার্কো পোলো › বিস্তারিত পোস্টঃ

পণ্য ও সেবা কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হলে আপনি কি করবেন?

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৩৯


কোন পণ্য ও সেবা কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হলে কি করবেন? ভোক্তা হিসেবে আপনার অধিকার রক্ষিত হচ্ছে কি? আপনার ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘিত হলে কোথায়, কিভাবে অভিযোগ করবেন? অভিযোগ প্রমাণিত হলে যে পরিমাণ আর্থিক জরিমানা করা হবে, তার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারী ভোক্তাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হয়। সুতরাং জেনে নিন এখনই।

ধরুন, আপনি একটি রেস্তোরাঁ থেকে খাবার কিনলেন, সঙ্গে কোমল পানীয়। যে পানীয়টি আপনি কিনলেন, তার দাম রাখা হয়েছে ৫০ টাকা। অথচ রেস্তোরাঁর বাইরে এই কোমল পানীয়টির দাম ২৫ টাকা। আপনি কিছুক্ষণ দোকানির সঙ্গে বাকবিতণ্ডা করলেন কিন্তু কোনো লাভ হলো না। ৫০ টাকা দিয়েই আপনাকে পানীয়টি কিনতে হলো।

আবার ধরুন আপনি একটি সুপারস্টোর থেকে পাঁচ কেজির আটা কিনলেন। কেনার পর দেখা গেল আটার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। কিন্তু সুপারস্টোরের লোকেরা সেই জিনিস ফিরিয়ে নিল না বরং আপনার সঙ্গে খারাপ আচরণ করল।

এই রকম ঘটনা আমাদের জীবনে নিয়মিত ঘটেই চলছে। প্রতিনিয়ত আমরা যারা ক্রেতা বা ভোক্তা তারা হয়রানির শিকার হচ্ছি।

অনেকেই গল্পের সময় বলে যে, বিদেশে এমন ঘটনা ঘটলে সরকারিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বাংলাদেশে এসবের জন্য কোনো প্রতিকার নেই। কথাটি কিন্তু একদমই ভুল। বাংলাদেশে আমার-আপনার মতো ক্রেতাদের জন্য ভোক্তা অধিকার আইন নামে একটি আইন আছে।
আমরা অনেকেই এই ব্যাপারে সঠিক তথ্য জানি না।
ভোক্তা অধিকার আইনটি ২০০৯ সালে আমাদের দেশে চালু হয়েছে। এই আইনটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে-

১. ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও উন্নয়ন।

২. ভোক্তা অধিকারবিরোধী কার্য প্রতিরোধ।

৩. ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘনজনিত অভিযোগ নিষ্পত্তি।

৪. নিরাপদ পণ্য বা সেবা পাওয়ার ব্যবস্থা।

৫. কোনো পণ্য বা সেবা ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তাকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা।

৬. পণ্য বা সেবা ক্রয়ে প্রতারণা রোধ।

৭. ভোক্তা অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি।

♦ভোক্তা আসলে কে?

ভোক্তা আসলে আমার-আপনার মতো সাধারণ মানুষই, যারা টাকা দিয়ে কোনো জিনিস বা সেবা কিনে থাকি তারাই হচ্ছি ভোক্তা। আপনি যদি কোনো জিনিস বাকিতে, বা কিস্তিতেও কিনে থাকেন তবুও আপনি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের আওতাভুক্ত হবেন।

♦ভোক্তা হিসেবে আপনি কোন কোন ব্যাপারে সুবিধা ও নালিশ করতে পারবেন?

১. নির্ধারিত মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে কোনো পণ্য, ওষুধ বা সেবা বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করলে।

২. জেনে শুনে ভেজাল মিশ্রিত পণ্য বা ওষুধ বিক্রি বা বিক্রির প্রস্তাব করা হলে।

৩. স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিকারক দ্রব্য মিশ্রিত কোনো খাদ্য পণ্য বিক্রি বা বিক্রির প্রস্তাব করলে।

৪. মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করা হলে।

৫. ওজনে কারচুপি, বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্রে কারচুপি, পরিমাপে কারচুপি, দৈর্ঘ্য পরিমাপক ফিতা বা অন্য কিছুতে কারচুপি করা হলে।

৬. কোনো নকল পণ্য বা ওষুধ প্রস্তুত বা উৎপাদন করা হলে।

৭. মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বা ওষুধ বিক্রি বা বিক্রির প্রস্তাব করলে।

৮. নিষিদ্ধঘোষিত কোনো কাজ করা যাতে সেবাগ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে।

৯. অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ করা।

১০. অবহেলা, দায়িত্বহীনতা দ্বারা সেবাগ্রহীতার অর্থ বা স্বাস্থ্যহানি ঘটানো।

১১. কোনো পণ্য মোড়কাবদ্ধভাবে বিক্রয় করার এবং মোড়কের গায়ে পণ্যের উপাদান, সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রিমূল্য, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, ইত্যাদি লিপিবদ্ধ করার বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করা।

১২. আইনানুগ বাধ্যবাধকতা অমান্য করে দোকান বা প্রতিষ্ঠানের সহজে দৃশ্যমান কোনো স্থানে পণ্যের মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করা হলে।

♦ভোক্তা হিসেবে কিভাবে প্রতিকার চাইবেন?

খুব সহজে আপনি প্রতিকার চাইতে পারেন।

♣যেখানে অভিযোগ দায়ের করবেন

* মহাপরিচালক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ১ কারওয়ান বাজার (টিসিবি ভবন-৮ম তলা) ঢাকা, ফ্যাক্সঃ +8802 8189426

* উপ পরিচালক, রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, শ্রীরামপুর, রাজশাহী, ফ্যাক্সঃ +8807 21772774

* উপ পরিচালক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, টিসিবি ভবন, বন্দরটিলা, চট্টগ্রাম, ফ্যাক্সঃ +8803 12868989

* উপ পরিচালক, বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মহিলা ক্লাব ভবন, বরিশাল, ফ্যাক্সঃ +8804 3162042

* উপ পরিচালক, খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, টিসিবি ভবন, শিববাড়ী মোড়, খুলনা, ফ্যাক্সঃ +880 41724682

* উপ পরিচালক, সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, সিলেট, ফ্যাক্সঃ +8808 21728695

* উপ পরিচালক, রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিউ ইঞ্জিনিয়ারিং পাড়া, রংপুর, ফ্যাক্সঃ +8805 215569192

* প্রত্যেক জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট

* জাতীয় ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্র, টিসিবি ভবন, ৮ম তলা, ১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর: http://www.dncrp.gov.bd
ইমেল: [email protected]

♣অভিযোগ দায়েরের সময়সীমাঃ

→কারণ উদ্ভব হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ দায়ের করতে হবে।

♣যেভাবে অভিযোগ দায়ের করতে হবেঃ

* অভিযোগ অবশ্যই লিখিত হতে হবে।
* ফ্যাক্স, ই-মেইল, ওয়েব সাইট, ইত্যাদি ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে, বা;
* অন্য কোন উপায়ে;
*অভিযোগকারী তাঁর পূর্ণাঙ্গ নাম, পিতা ও মাতার নাম, ঠিকানা, ফোন, ফ্যাক্স ও ই-মেইল নম্বর (যদি থাকে) এবং পেশা উল্লেখ করবেন।
* অভিযোগের সাথে প্রমাণ হিসেবে ভাউচার/ক্রয় রশিদ এবং ক্ষেত্র বিশেষে ক্রয়কৃত পণ্যের নমুনা প্রদান করতে হবে।
* বাজারের কোন পণ্য বা সেবা পণ্যের ব্যাপারে তথ্য প্রদান অভিযোগ হিসেবে গণ্য হবে না। ভোক্তা নিজে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে অভিযোগ দায়ের করতে হবে।

→প্রাথমিক তদন্ত করবে ভোক্তা অধিদপ্তর এবং তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে করা হবে মামলা। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যে পরিমাণ আর্থিক জরিমানা করা হবে, তার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারী ভোক্তাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হয়।

♦ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের সাজা

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে পণ্যে ভেজাল বা নকল পণ্য উৎপাদন বা বিক্রি করলে কিংবা বিক্রির সময় ওজন বা মাপে কারচুপি করলে এক থেকে তিন বছর কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান করা হয়েছে। এ ছাড়া মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বা অন্য যে কোনো পণ্য বিক্রি বা বিক্রির প্রস্তাব করলে অনূর্ধ্ব এক বছর কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড হওয়ারও বিধান রয়েছে। তা ছাড়া মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয় এমন কোনো পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ করলে দুই বছর কারাদণ্ড এবং অনধিক দুই লাখ টাকা জরিমানা, মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের প্রতারিত করলে এক বছর কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, পণ্য বিক্রয়কারীর পরিমাপক যন্ত্র বা বাটখারা প্রকৃত ওজনের চেয়ে কম হলে এক বছরের কারাদণ্ড কিংবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, পণ্যের মোড়কের গায়ে ওজন, পরিমাণ, উৎপাদন এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। এ নিয়ম মানা না হলে এক বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, দোকানে কোনো দৃশ্যমান স্থানে পণ্যের মূল্যের তালিকা ঝুলিয়ে রাখতে হবে; এ নিয়ম না মানলে এক বছর কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বা তাঁর ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা কিংবা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা বা তাঁদের ক্ষমতাপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা প্রশাসনিক ব্যবস্থায় জরিমানা আরোপ, ব্যবসার লাইসেন্স বাতিল বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম সাময়িক বা স্থায়ীভাবে স্থগিত করতে পারবেন।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৮

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: দারুন পোস্ট ।


অনেকেরই কাজে আসবে।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৯

মার্কো পোলো বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।।

২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৩৯

নতুন বলেছেন: খুবই ভাল জিনিস... সবার জানা থাকা ভালো।

কিন্তু জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর: http://www.dncrp.gov.bd
ইমেল: [email protected]


সরকারী অধিদপ্তরের ইমেইল ইয়াহু কেন?

আর ফ্যাক্স দিলে হবেনা। বত`মানে ইমেইল এবং ফেসবুক পেজ, হোটাসএপপ নম্বর থাকা দরকার।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:০১

মার্কো পোলো বলেছেন: এটা শুধুমাত্র অভিযোগ গ্রহনের জন্য। অফিসিয়াল ইমেইল [email protected]

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৩| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১৭

অভি ১২৩৪ বলেছেন: বর্তমান যুগ অনলাইনের যুগ । আর এই অনলাইন যুগে সবচেয়ে বেশী ক্রেতা ও বিক্রেতার সমাগম হয় অনলাইন প্লাটফর্মগুলোতে । এমনি একটি আকর্ষণীয় অনলাইন প্লাটফর্ম হচ্ছে সেবা বিনিময় / Sheba Binimoy , যেখানে আপনি আপনার পণ্য বা সেবা খুব সহজেই বিনামূল্যে বিজ্ঞাপন দিয়ে আপনার ব্যবসার প্রচার ও প্রসার করতে পারবেন। পাশপাশি , নিতে পারবেন এক পণ্যের সাথে অন্য পণ্যর বিনিময় বা Exchange সেবা। তাই পণ্য বা সেবার বিক্রয় বৃদ্ধি বা বিনিময় করতে ভিজিট করুন আজই ঃ https://shebabinimoy.com/

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.