![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জমিজমাকে কেন্দ্র করে যেকোনো সময় বিরোধ দেখা দিতে পারে। গ্রামে প্রায়ই দেখা যায় জমিজমাকে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের মধ্যে, এমনকি এক গ্রামের সাথে অন্য গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে রূপ নেয় (উদাহরণস্বরূপ উপরের ছবিটি এটির উৎকৃষ্ট প্রমাণ বহন করে)। আবার অনেক সময় দেখা যায়, নিজের কেনা জমি অন্য কেউ দখল করে মালিকানা দাবি করছে কিংবা জাল দলিল তৈরি করে জমির দখল নিতে চায়। আদালতে মিথ্যা মামলাও ঠুকে দেয়। কিন্তু একটু সচেতন হলেই এ ঝামেলা থেকে অনেকটাই রক্ষা পাওয়া সম্ভব। সে জন্য জানা থাকতে হবে জমি নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে কীভাবে প্রতিকার পাবেন।
ফৌজদারি প্রতিকার-
জমি দখলকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিলে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার চাইতে পারেন। এ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার চাইতে হবে প্রথম শ্রেণীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে। আর এ মামলা করতে হবে বেদখল হয়ে গেলে কিংবা বেদখল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়ার দুই মাসের মধ্যে। কোনো মামলা করলে ম্যাজিস্ট্রেট প্রতিপক্ষের ওপর সমন জারি করবেন। পরবর্তী সময়ে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনবেন এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে সম্পত্তির দখলদার কে তা নির্ধারণ করবেন। প্রয়োজনে সরেজমিনে তদন্তের আদেশ দিতে পারেন পুলিশকে। তাদের দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রকৃত দখলদার কে, সে বিষয়ে রায় দেবেন। তবে ১৪৫ ধারায় প্রতিকার চাইতে গেলে এখানে স্বত্ব বা মালিকানা দাবি করা যাবে না। এর মাধ্যমে শুধু প্রকৃত দখলদার নির্ণয় করার জন্য প্রতিকার চাওয়া যাবে।
দেওয়ানী প্রতিকার-
মালিকানা দাবি করবেন যেভাবে-
জমির মালিকানা বা স্বত্ব দাবির জন্য দেওয়ানি আদালতের আশ্রয় নিতে হবে। জমি অবৈধভাবে দখলচ্যুত হলে দখল পুনরুদ্ধারের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৮ ও ৯ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার পেতে পারেন। এ আইনের ৮ ধারা অনুযায়ী জমির মালিক নির্ধারিত পদ্ধতিতে জমিটি পুনরুদ্ধার করার জন্য প্রতিকার চাইতে পারেন। তবে এ ধারা অনুযায়ী, দখলচ্যুত ব্যক্তিকে জমিতে তাঁর স্বত্ব বা মালিকানা আছে কিংবা মালিকানার দাবি রয়েছে, তার ঘোষণা চাইতে হবে। না হলে এ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার পাওয়া সম্ভব হয় না। ৮ ধারার স্বত্ব প্রমাণসহ মামলা করার ক্ষেত্রে বেদখল হওয়ার পর থেকে ১২ বছরের মধ্যে মামলা করার সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের মামলাকে সাধারণত স্বত্ব সাব্যস্ত খাস দখলের মামলা বলা হয়।
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার চাইতে হলে মালিকানা প্রমাণের দরকার নেই। শুধু জমি থেকে দখলচ্যুত হয়েছেন—এটি প্রমাণ করলেই চলবে। ৯ ধারায় উল্লেখ আছে, যদি কোনো ব্যক্তি বেদখল হন, তবে তিনি বা তাঁর মাধ্যমে দাবিদার কোনো ব্যক্তি মোকদ্দমার মাধ্যমে এর দখল পুনরুদ্ধার করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে যেসব দিক বিবেচনা করা হয়, সেগুলো হলো—বাদী অর্থাৎ যিনি প্রতিকার দাবি করেছেন, তিনি জমিটি দখল করে আসছিলেন কি না; বিবাদী তাঁকে জোরপূর্বক বেদখল করেছেন কি না; বিবাদী বেআইনিভাবে জমিতে প্রবেশ করেছেন কি না।
তবে বাদীকে অবশ্যই বেদখল হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে মামলা করতে হবে। অন্যথায় এ ধারায় মামলা করার অধিকার হারাতে হবে তাঁকে। তবে সরকারের বিরুদ্ধে এ ধারায় প্রতিকার চাওয়া যাবে না।
কোথায় ও কীভাবে আইনের আশ্রয় নেবেন-
জমিজমার মালিকানা নিয়ে প্রতিকারের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট এখতিয়ারাধীন আদালতে মামলা করতে হবে। মামলার মূল্যমান চার লাখ টাকার কম হলে সহকারী জজ আদালতে এবং চার লাখের বেশি হলে অসীম এখতিয়ার পর্যন্ত যুগ্ম জেলা জজ আদালতে প্রতিকার চাইতে হবে। মামলা দায়ের করতে হবে আইনজীবীর মাধ্যমে। মালিকানাসহ দখলের প্রতিকার চাইলে জমির মূল্য বাবদ অ্যাড-ভ্যালোরেম (মূল্যানুপাতে) কোর্ট ফি দিতে হবে। ৯ ধারা অনুযায়ী শুধু দখলের জন্য প্রতিকার চাইলে সম্পত্তির মূল্য অনুসারে যে কোর্ট ফি তার অর্ধেক, অর্থাৎ অ্যাড-ভ্যালোরেম কোর্ট ফির অর্ধেক পরিমাণ কোর্ট ফি দিতে হবে। জমির মালিকানাসহ দখল কিংবা শুধু দখল চেয়ে প্রতিকারের ক্ষেত্রে যদি বাদী মনে করেন, তাঁর জমিটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে, তাহলে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চাইতে পারেন পৃথক আবেদনের মাধ্যমে।
(ছবিঃ ইন্টারনেট)
১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:০৫
মার্কো পোলো বলেছেন:
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
শুভকামনা রইলো।
২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৩৮
রিমন সাঁই বলেছেন: আইনের প্রতি আমার যথেষ্ঠ সম্মান ও আস্থা আছে। তবে, এর সাথে ক্ষমতা ও অর্থ/টাকা থাকা লাগে; শুধু আইন দিয়ে কিছু হয় না।(আমার নিজেস্ব অভিজ্ঞতা) টাকা ছাড়া আইন নড়ে না।
আপনার লেখার প্রতি আমার যথেষ্ঠ সম্মান আছে, প্রয়োজনীয় তথ্য এটা।
১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:০৮
মার্কো পোলো বলেছেন:
টাকা সবকিছুকে গ্রাস করে ফেলছে। তবুও লোকজন এখনও আইনের মাধ্যমে সুষ্ঠু প্রতিকার পাচ্ছে।
ধন্যবাদ।
৩| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৩৩
প্রামানিক বলেছেন: জমি একবার বেদখল হয়ে গেলে সেটা উদ্ধার করা যে কত কষ্টের কাজ সেটা যে একবার ভুগেছে সেই জানে। আমার জানা মতে বৈধ কাগজ পত্র থাকার পরও বেদখল হয়ে যাওয়া জমির রায় পায় নাই, দখলকৃত মস্তানরাই দখলবলে কোর্ট থেকে রায় নিয়েছে। মস্তানদের দখলের কাছে বৈধ কাগজপত্রের কোন দামই নাই। দখল করা জমির জন্য কেস করে লাভ হয় না, মাস্তানদের ভয়ে কেউ স্বাক্ষীও দিতে চায় না। বরঞ্চ বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে দখল যাতে না হয় সেই দিকে সতর্ক থাকাটাই ভালো।
১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:১৯
মার্কো পোলো বলেছেন:
আসলে জমিজমা সংক্রান্ত মামলা-মোকাদ্দমা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। একবার মামলা হলে সেটি নিষ্পত্তি করতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। মামলাজট, কিছু এডভোকেটদের ইচ্ছাকৃত বিলম্ব করানোর কারণে মোকাদ্দমা নিষ্পত্তিতে সময় লাগে বেশি। দলিলপত্র ঠিকঠাক থাকলে রায় বিপক্ষে যাওয়ার কথা নয়। সাক্ষী পর্যায়ক্রমে পাওয়া গেলে মোকাদ্দমা দ্রুত নিষ্পত্তি করা যায়।
ধন্যবাদ প্রামাণিক ভাই।
৪| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:১৮
জাহিদ ২০১০ বলেছেন: জমি দখলের সময় ৬ মাসের উপর ৭—৮ বছর হয়ে গেলে কিভাবে উদ্ধার করতে হয়?? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব
১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৩
মার্কো পোলো বলেছেন:
মোকাদ্দমার কারণ উদ্ভবের সময় পার হয়ে গেলে তামাদি আইন, ১৯০৮ এর ৫ ধারা অনুযায়ী আদালতে মোকাদ্দমা বিলম্ব হওয়ার যথেষ্ট কারণ দেখিয়ে আবেদন করতে হবে। আদালত যদি কারণগুলো যুক্তিসংগত মনে করে তাহলে বিলম্ব মওকুফ করে মোকাদ্দমা করার আদেশ দিতে পারে। অন্যথায় বিলম্ব করলে উদ্ধার করা সম্ভব নয়।
ধন্যবাদ।
৫| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৬
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: দরকারি পোষ্ট। ধন্যবাদ
১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৫
মার্কো পোলো বলেছেন:
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
৬| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৪৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
৩৬% লোকের কোন জমি নেই; ভুমিহীনরা নিজকে জাতির অংশ ভাবার মত সাহসী নন।
বসুন্ধরা ও আফতাব গোস্ঠী ঢাকায়, মৌলানা ব্রাদার্স, আলম ব্রাদার্স চট্টগ্রামের মানুষের জমি ডাকাতী করে নিয়ে গেছে; সেখানে তো কেহ লাঠিয়াল পাঠায় না; গ্রামের বেকুবেরা মারামরি করে প্রাণ দেয়।
১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৪৯
মার্কো পোলো বলেছেন:
শহরে ভূমিদস্যুরা জমি দখল করে বাটপারি কায়দায়, লোকজন বুঝে উঠার আগেই জমি দখল করা শেষ। তাদের লাঠিয়াল বাহিনীর দরকার পড়ে না। গ্রামের লোকজন অতিমাত্রায় হুজুগে প্রকৃতির, তারা শারীরিক শক্তি প্রদর্শনকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। যেখানে লাভ-ক্ষতি ভাবার সময় তাদের থাকে না।
৭| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:০৮
কালীদাস বলেছেন: আমরা যেধরণের অসভ্য জমিজমার ব্যাপারে, দুইচারটা লাশ পড়ার আগে আইনি ব্যাপারে কেউ খোঁজ নেয় না সেটাও খুনের মামলার আসামী থেকে নাম খালাস পাবার জন্য।
১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৩১
মার্কো পোলো বলেছেন:
ঠিক বলেছেন। জীবনের চেয়ে জমিজমার মূল্য বেশি দেই, যার কারণে খুন হোক আর মারামারি লাগুক সেই সম্ভাব্য পরিণতি মেনে নিতে হয়।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:০৬
আলী আজম গওহর বলেছেন: দরকারি তথ্য বটে। জেনে রাখলাম।ধন্যবাদ মার্কো পোলো ভাই।