নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানব মঙ্গল আমার একান্ত কাম্য

মহাজাগতিক চিন্তা

একদা সনেট কবি ছিলাম, ফরিদ আহমদ চৌধুরী ছিলাম, এখন সব হারিয়ে মহাচিন্তায় মহাজাগতিক চিন্তা হয়েছি। ভালবাসা চাই ব্লগারদের, দোয়া চাই মডুর।

মহাজাগতিক চিন্তা › বিস্তারিত পোস্টঃ

শৈশব স্মৃতি- পলায়ন এবং প্রতিরোধ

১১ ই মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪২



কি দোষ করেছি, মনে নাই। আব্বা পিটানোর জন্য লাঠি নিয়ে তাড়া করলেন। ঘরের জানালায় একটা রড ছিলো না। আমি সেই ফাঁকে পলায়ন করলাম। আব্বার থেকে দূরত্ব বেড়ে যাওয়ায় তিনি তাড়া করে আর ধরতে পারলেন না। তিনি বেশ হাঁফিয়ে উঠে থেমে গেলেন। তারপর দাঁড়িয়ে বললেন, এই এদিকে আয় কইলাম, নইলে ভালো হবে না। আমি বললাম, আপনার কাছে গেলেই বা কি ভালো হবে? পিটাবেন তো আচ্ছা রকমে। আব্বা বললেন, তুই দোষ করবি, আর আমি পিটাব না? আমি বললাম, পারলে তো পিটাবেন? তিনি বললেন, কতক্ষণ পালিয়ে থাকবি? আমি বললাম, আপনি মারবেন না এটা বুঝা পর্যন্ত আর আপনার কাছে যাচ্ছি না। আব্বা বললেন, ঠিক আছে মারব না। এবার কাছে আয়। আমি বললাম আপনার হাতে লাঠি থাকতে আমি আপনার কাছে যাই কেমন করে? আব্বা লাঠি ফেলে দিয়ে বললেন, এবার কাছে আয়। আমি বললাম, লাঠি তো আপনার কাছেই আছে; কাজেই আমি আপনার কাছে যাচ্ছি না। লাঠিটা আগে অনেক দূরে ফেলে দিয়ে আসেন তারপর আপনার কাছে যাব। আব্বা, লাঠি অনেক দূরে ফেলে দিয়ে আসলেন। তারপর থেকে তিনি আমাকে পিটাবার জন্য তাড়া করাই ছেড়ে দিলেন।

পিটুনিকে ভয় পেতাম বলে পিটুনি যেন খেতে না হয় সেভাবে চলার চেষ্টা করতাম। অবশেষে রেজাল্ট ভালো হয়ে ক্লাশ ক্যাপ্টিন হয়ে গেলাম। পড়তাম টিপু সুলতান রোডে অবস্থিত গ্রাজুয়েটস উচ্চ বিদ্যালয়ে। ক্যাপ্টিন হিসাবে দায়িত্ব ছিল কেউ দুষ্টামি করলে তাদের রোল নাম্বার লিখে রাখা এবং স্যার আসলে তাঁদের নিকট সে রোল নম্বর জমা দেওয়া। সেকালে স্যারেরা ছাত্রদেরকে শাসন করার জন্য পিটাতেন। তো ক্লাশের ধেড়ে ছাত্ররা বলল, আমাদের রোল কিন্তু লিখতে পারবি না। আমি বললাম, কেন? এক ধেড়ে ছাত্র বলল, কেন টেন বুঝি না। আমার নাম লিখলে তুই মাইর খাবি। আমি বললাম, তুই আমাকে মারতে পারবি? আমি তাকে শাসানোর কারণ, আমার ছোট খাট একটা দল ছিল। সে বলল, তুই কেরে তোদের ফাস্ট বেঞ্চের সব গুলারে চ্যালেঞ্জ। আমরা সবাই ছিলাম আকারে বেশ ছোট, আর সে ছিল অনেক ধেড়ে বালক। আমাদের বেঞ্চের পিচ্চি আনোয়ার বলল, দোস্ত চ্যালেঞ্জ গ্রহণ কর; আমরাই জিতব। বেঞ্চের ছয় জনের তিন জন বলল, তারা মাইরপিটে নাই। আমি বললাম, তিনজনে জিতব কেমন করে? আনোয়ার বলল, আমি ওর হাত পেঁচিয়ে ধরব। তুই ওর চাপায় ঘুষি মারবি, আর দেলোয়ার ওর পিঠে কনি মারবে। আমি বললাম, ঠিক আছে রাজি। স্কুল ছুটির পর ক্লাশের সবাই স্কুলের পিছনে চলে গেলাম। পরিকল্পনা মত কাজ হলো। ধেড়েটাকে তিন জনে মিলে সাইজ করে দিলাম। তারপর আর কোন সহপাঠি আমার আনুগত্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেনি।

এরপর একতাই বল, রচনা পড়লাম। যার প্রাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা আগেই হয়েছে। তারপর থেকে আমার একটা দল ছিল এবং আছে। আব্বার মৃত্যুর পর মেঝভাই বললেন, আমি তোমাকে সম্পত্তির কোন ভাগ দেব না। আমি বললাম, আপনাকে আমাকে সম্পত্তির কোন ভাগ দিতে হবে না। কারণ আমার ভাগের সম্পত্তি আমি নিয়ে নেব। তারপর আমি যখন আমার সম্পত্তি নিলাম তখন সবচেয়ে ভালোটাই নিলাম। তথাপি ভাইদের সাথে আমার সম্পর্ক চমৎকার আছে। কারণ কারো সাথে মন্দ আচরন করা আমার চরিত্র বিরোধী।

মন্তব্য ২৯ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:৪০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি ফার্স্ট হইসেন।

১১ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:৫৬

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: সেটা কি আর সাধে হয়েছি? মাইরের ভয়ে পড়া রেডি করতে গিয়েই তো অবশেষে সেটা হতেই হলো।

২| ১১ ই মে, ২০২৩ রাত ৯:০৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: শুধু ক্লাসে ফার্স্ট না।

১১ ই মে, ২০২৩ রাত ৯:১৯

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: আপনার ইঙ্গিত বুঝে খুশী হলাম।

৩| ১১ ই মে, ২০২৩ রাত ৯:১৩

কামাল১৮ বলেছেন: তখন ভালোই লজিক জানতেন।ধর্মের প্রভাবে সব ভুলে বসে আছেন।ধর্ম পরিবার বা ছেলে মেয়েদের মৃদু প্রহার করার অনুমতি দেয়।কিন্তু জাতিসংঘ দেয় না।এটাকে দন্ডনীয় অপরাধ মনেকরে।আর এতে করে ছেলে মেয়েরা ভালোও হয় না।সেআপনি জীবনদিয়ে উপলব্ধি করেছেন।
এই যে ভালো জমিগুলো আপনি নিলেন এটা কি ভালো আচরন হলো।নিজের ভুলটা কেউ বুঝতে পারে না।এখন যেমন পাড়ায় পাড়য় কিশোর গ্যাং আছে এমন একটা দল কি আপনার ছিলো।

১১ ই মে, ২০২৩ রাত ৯:১৮

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: আপনি যখন পৈতৃক সম্পত্তি ভাগ করে না দিয়ে নিজের দখলে রাখতে চাইবেন। তখন আপনার সাথে কি করা উচিত? সে দিবে সেই আশায় বসে থাকলে তো আর সম্পত্তি পাওয়া হবে না। আমারা সবাই ভদ্র ছেলে ছিলাম। কেউ আমাদের ঘাড় মটকাতে আসলে তাদের ঘাড়টা মটকে দিতাম। এরচেয়ে বেশী কিছু না।

৪| ১১ ই মে, ২০২৩ রাত ৯:৩৬

শায়মা বলেছেন: হুম পালোয়ান ছিলে ভাইয়া স্কুলে...... :D

১১ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:০৭

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: আমি স্কুল পলায়ন করতাম না। কারণ আমার শিক্ষকগণ তাঁদের শিক্ষার প্রতি আমাকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছেন।

৫| ১১ ই মে, ২০২৩ রাত ৯:৫৭

মনিরা সুলতানা বলেছেন: যাক এই সুযোগে সবার স্কুল জীবনের ক্যারিশমা পড়ার সুযোগ হইলো।

১১ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:০৯

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: মডু হয়তো ব্লগের একঘেয়েমি দূর করতে স্মৃতি চারণের আয়োজন করেছেন। এরপর তাঁর উদ্দৌগ সফল হলেই হলো।

৬| ১১ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:২৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: মহাজাগতিক চিন্তা,





জাগতিক স্মৃতিচারণ! শৈশব কালটা আসলেই মজার।
বেশ পোংটা ছিলেন মনে হচ্ছে।

৪ নম্বরে শায়মার মন্তব্যে আপনাকে "পালোয়ান" বলা হয়েছে! আর আপনি প্রতিমন্তব্যে বললেন , "আমি স্কুল পলায়ন করতাম না।"
কোথায় "পালোয়ান" আর কোথায় "পলায়ন" !!!!! :| এটাই জব্বর হৈছে...... :P

১১ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:৩৭

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: পালোয়ান এবং পলায়ন প্রায় কাছাকাছি শব্দ সেজন্য মনে হয় আই মিস্টেক হইছে। আমি খুবই নিরিহ ছিলাম। সেজন্য স্যারগণ খুব স্নেহ করতেন। তবে দুষ্টদেরকে দমন করতে স্বচেষ্ট থাকতাম এই আর কি! মা বলতেন, দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন। মায়ের কথা রাখতে গিয়ে কিছু একটা করতে হতো।

৭| ১১ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:৪১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমিও একটা শৈশবের ঘটনা লিখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সবাই হাসাহাসি করবে তাই লেখা থেকে বিরত থাকলাম।

১১ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:৪৩

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: মডু আপনার স্মৃতিকথা অবশ্যই আশা করে।

৮| ১১ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:৫১

কামাল১৮ বলেছেন: আপনারা ভালো ছেলে হলে আপনাদের তারা কেন ঘাড় মটকাতে আসতো।তবে কি আপনাদের এলাকার লোক সব পাগল ছিলো।ভালো এলাকায় বাস করতেন।ভালো ছেলেদের ঘাড় মটকে দেয়।

১১ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:৫৮

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: শিশুদের বোধ-বুদ্ধি কম থাকে। ওরা এমনি এমনিও অনেক কিছু করে ফেলে।

৯| ১১ ই মে, ২০২৩ রাত ১১:০৫

শেরজা তপন বলেছেন:
আপনার আব্বার পিটুনি ছেড়ে দেয়ার গল্পটা ব্যাতিক্রম ছিল। এর পরে নিশ্চয়ই বাপ-বেটার সম্পর্কটা মধুর ছিল?
@ সাড়ে চুয়াত্তুর- ব্লগারদের হাসাহাসিতে আপনি কি বিব্রত বোধ করেন? এটাতে আপনিতো মজা পাবার কথা। লিখে ফেলুন- পরে যা হয় দেখা যাবে।

১১ ই মে, ২০২৩ রাত ১১:০৯

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: আমাদের পরিবারের সবার সাথে সবার সম্পর্ক মধুর। আমরা ঝগড়া করলেও সৌজন্যের সাথে করি।

১০| ১২ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১২:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: অনেকেই শৈশব সৃতি লিখছেন।
আপনাদের লেখা পড়ে আমার নিজেরও কিছু লিখতে ইচ্ছা করছে। অথচ আমি দীর্ঘদিন ধরে ফ্রন্ট পেজ ব্যানে আছি। মডারেটর সাহেব হয়তো ভুলের গেছেন।

যে অন্যায় করে সে ভুলে যায়। কিন্তু যার সাথে অন্যায় করা হয় সে কোনো দিন ভুলতে পারে না।

১২ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৫:০৩

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: দেখা যাক যদি মডুর মনে পড়ে।

১১| ১২ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৩:২৩

চারাগাছ বলেছেন:
আপনাদের বয়সী মানুষদের স্মৃতিচারণ পড়তে ভালো লাগে।
ভালো লিখেছেন।

১২ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৫:০৫

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: সুনাম করেছেন। জেনে খুব ভালো লাগলো। আপনার চারাগাছ বেড়ে উঠুক সেই কামনা করি।

১২| ১৩ ই মে, ২০২৩ দুপুর ২:০৪

শাওন আহমাদ বলেছেন: আব্বা আমাদের মারলে, আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মার খেতাম; কারণ দৌড় দেবার সাহস আমাদের ছিলো না। মাঝেমধ্যে দাদী এসে ছাড়িয়ে নিতেন অন্যথায় আব্বা যে পর্যত পারতেন মারতেই থাকতেন।
বুদ্ধিমান আনোয়ার ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ আছে?

১৩ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:১৫

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: আনোয়ার যে এখন কোথায় আছে সেটা আমার জানা নেই।

১৩| ১৩ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৫

শায়মা বলেছেন: ৬. ১১ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:২৮০

আহমেদ জী এস বলেছেন: মহাজাগতিক চিন্তা,





জাগতিক স্মৃতিচারণ! শৈশব কালটা আসলেই মজার।
বেশ পোংটা ছিলেন মনে হচ্ছে।

৪ নম্বরে শায়মার মন্তব্যে আপনাকে "পালোয়ান" বলা হয়েছে! আর আপনি প্রতিমন্তব্যে বললেন , "আমি স্কুল পলায়ন করতাম না।"
কোথায় "পালোয়ান" আর কোথায় "পলায়ন" !!!!! :| এটাই জব্বর হৈছে...... :P
১১ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:৩৭০

লেখক বলেছেন: পালোয়ান এবং পলায়ন প্রায় কাছাকাছি শব্দ সেজন্য মনে হয় আই মিস্টেক হইছে। আমি খুবই নিরিহ ছিলাম। সেজন্য স্যারগণ খুব স্নেহ করতেন। তবে দুষ্টদেরকে দমন করতে স্বচেষ্ট থাকতাম এই আর কি! মা বলতেন, দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন। মায়ের কথা রাখতে গিয়ে কিছু একটা করতে হতো।





হা হা হা এইবারে এক খানা পোস্ট লেখো - পালোয়ান যখন পলায়ন করেন ......... না ....... :)

১৩ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:২০

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: এঘটনায় পলায়নও ছিল। চালস ডি রোজারিও আমাদের সাথে মার কাওয়ার পর তার বন্ধু ইব্রাহীম। আমাকে একা চ্যলেঞ্জ দিয়ে বসে। আমিও বিজয়ের জোশে রাজি হয়ে যাই। অথচ এত্ত বড় একটা ঢ়েড়ে বালকের সাথে আমার একা মার পিট করতে যাওয়া বোকামী ছিল। তারপর যখন দেখলাম আমি মার দিচ্ছি কম খাচ্ছি বেশী। তখন আমি রণে ভঙ্গ দেই।

১৪| ১৩ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৫:২২

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: দেখা যাক যদি মডুর মনে পড়ে।

মডুর উপর আস্থা ভরসা নেই বললেই চলে।

১৩ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:২১

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: কিন্তু মডু আপনার উপর ক্ষুব্ধ হলো কেন?

১৫| ০৮ ই জুলাই, ২০২৩ ভোর ৬:৩১

খায়রুল আহসান বলেছেন: একতাই বল এর উপর আপনার সেই ছোট্ট বয়সে ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা লাভের কাহিনীটি পড়ে বেশ ভালো লাগল। আর ফার্স্ট বয় কি করে পালোয়ান আর পলায়নকে গুলিয়ে ফেললো, সে কথাটাই ভাবছি। :)
আপনার সনেট চর্চা কি এখনও অব্যাহত রয়েছে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.