নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা : শব্দেই দৃশ্য, শব্দেই অনুভূতি [email protected]

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই

দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুটি গল্পকণিকা

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৪৩


১। এক গৃহিণী ও একটি পরগাছার গল্প

একবার এক সুপ্রাচীন আম্রবৃক্ষের শাখায় একটা পরগাছা জন্মালো। ওটি দেখতে অদ্ভুত সুন্দর। বাড়ির গৃহিণী রোজ সকালে পরগাছার গায়ে পানি ছিটিয়ে দেয়। পরগাছাটি মা মা বলে হেসে ওঠে, আর ঝুলে পড়ে পাতা নাড়িয়ে গৃহিণীর গা ছুঁয়ে দেয়।
একদিন গৃহিণীর অসুখ হলো এবং এক রাতে সে মারা গেলো। কেউ খেয়াল করলো না পরগাছাটিও নীরবে শুকিয়ে ঝরে গেলো।

২৯ জুন ২০১৬

কৃতজ্ঞতা : স্বপ্নচারী গ্রানমা। ফেইসবুকে তাঁর একটা স্টেটাসে কমেন্ট করতে গিয়ে এটি লেখা হয়ে গেলো। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সবিনয়ে বলছি, কিছু গল্প থাকে যা শুধু গল্পই, যার কোনো অন্তর্নিহিত রহস্য বা ভাবার্থ নেই। এটিও সেরকম কিছু।



২। একটি শাদা কবুতর

ধাপারি খালের মুখে আড়িয়াল বিলে আমাদের বোরো জমি ছিল। একবার ধান কাটা শেষ হলে রোদ পড়ার পর আমি আর নীশু খেতের আইলে গিয়ে দাঁড়ালাম। অমনি কোথা থেকে উড়ে এলো একঝাঁক লম্বা ঠোঁট ও পা-ওয়ালা সারস পাখি। ওরা গজ-ঢঙে হাঁটছিল আর মাটির বুক থেকে ধানের দানা কুড়িয়ে খাচ্ছিল। মাঝে মাঝে আনন্দিত চোখে আমাদের দেখছিল। সোনার জমিনে থোকা থোকা শাদা বিন্দুর মতো সারস পাখিরা বিচরণ করছিল। আমি আর নীশু খুব অবাক হয়ে ওদের দেখছিলাম। চোখের পলকে সারসগুলো ঘুঘু হয়ে গেলো। ঘুট-ঘুট-ঘুট্টস শব্দে ওরা ধান খুঁটতে লাগলো। আমাদের চোখ বিস্ময়ে ছানাবড়া হতে থাকে। আমরা একে অপরের দিকে তাকিয়ে বিমূঢ় হয়ে যাই। হঠাৎ ডানা ঝাড়া দিয়ে সবগুলো ঘুঘু একসঙ্গে উড়ে গেলো এবং আমাদের মাথার উপর দিয়ে একপাক ঘুরে আবার মাটিতে নেমে এলো। এ কী দেখছি আমরা! স্বপ্ন নয় তো? সারা খেত জুড়ে বাক-বাকুম করে চরে বেড়াচ্ছে একঝাঁক শাদা কবুতর। দেখতে দেখতে খুব মধুর সুরে ওরা গান গেয়ে উঠলো এবং গান গাইতে গাইতে উড়ে গেলো আর আমাদের সামনে একটি সুন্দর পালক রেখে গেলো। পালকটিতে অমরাবতীর সুগন্ধি মাখানো ছিল। আমি নীশুর চুলে পালকটি গুঁজে দিলাম। নীশু স্বর্গীয় হাসিতে আমার বুক ভরে দিল।

সন্ধ্যার কিছু আগে আমরা বাড়ির দিকে পথ ধরলাম। আমি আগে, ছোটো ছোটো পায়ে নীশু আমার পেছনে হাঁটছিল। ও কখনো আমার হাত ধরে হাঁটে; আমি কখনো-বা পেছনে তাকিয়ে নীশুকে দেখছিলাম। নীশু আমার আদরের ছোটোবোন।
একবার পেছনে তাকিয়ে দেখি নীশু নেই।
নীশু!
নীশু!
আমি নীশুকে ডাকতে থাকি। চারদিকে তাকাই। কোথাও নীশু নেই। হঠাৎ আকাশ থেকে কবুতরের শাদা পালকটি আমার সামনে ঝরে পড়ে; আমি উর্ধ্বে তাকিয়ে দেখি একটি শাদা কবুতর উড়ে যাচ্ছে, দূর অসীমের দিকে।
পালকটি তুলে নিয়ে আমি বুকের গভীরে গেঁথে রাখি।

৫ জুলাই ২০১৬


ফুটনোটঃ এসব গল্পকণিকায় পাঠকেরা কোনো অর্থ খুঁজে পাবেন না; আদতে কোনো সিরিয়াস বা হাল্কা ভাবার্থ সন্নিবিষ্ট করে এগুলো লেখা হচ্ছে না; মাথায় যা আসে তাই লেখা।
তবে, লেখক নিশ্চয়ই কিছু একটা উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই এসব লিখছে।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৫৯

অপ্‌সরা বলেছেন: আমি দুইটারই অর্থ খুঁজে পেয়েছি ভাইয়া!

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:২৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অভিনন্দন, বুবু।

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:০১

নিয়াম বলেছেন: অদ্ভুত কিছু লিখতে হলে কল্পনার জগৎটা হওয়া চাই মহাশূন্যে। নতুন রূপে ব্যতিক্রম কিছু। আপনিও মহাশূন্যের কাছাকাছি আছেন বোধহয়

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:২৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বিরাট কমপ্লিমেন্ট। অনেক ধন্যবাদ নিয়াম।

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:০৭

সুমন কর বলেছেন: ছোট কিন্তু মন ছুঁয়ে গেল। দারুণ।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:০৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন ভাই। শুভেচ্ছা।

৪| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


"ফুটনোটঃ এসব গল্পকণিকায় পাঠকেরা কোনো অর্থ খুঁজে পাবেন না; আদতে কোনো সিরিয়াস বা হাল্কা ভাবার্থ সন্নিবিষ্ট করে এগুলো লেখা হচ্ছে না; মাথায় যা আসে তাই লেখা।
তবে, লেখক নিশ্চয়ই কিছু একটা উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই এসব লিখছে। "

-ফুটনোট না দিলে, শুধু লেখা পড়ে, আমি লেখককে সাধারণ লেখকই ভাবতাম; ফুটনোট পড়ে বুঝলাম যে, লেখক অসাধারণ।
আগামী দিনগুলোতে ফুটনোট টাকে ছোট করে লিখবেন, "ফুটনোট: আমি অসাধারণ লেখক", ঝামেলা কমুক!

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:১১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হাহাহাহাহাহাহাহা। আপনি খুব সূক্ষ্ম রসবোধের অধিকারী।

শুভেচ্ছা।

৫| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



এ যুগের ঈশপের জন্য বলছি, পরগাছায় পানি দেয়ার দরকার হয় না; সেজন্যই সে পরগাছা।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: চারাগাছের গোড়ায় পানি দেয়ার মতো এ পানি ছিটানো নয়। স্নেহ বা ভালোবাসা থেকে কোনো কারণ ছাড়াই গাছগাছালির গায়ে কৃষানি মায়েরা পানি ছিটিয়ে থাকতে পারে। কিংবা, অজ্ঞানতাবশতও কেউ কেউ এটা করতে পারে। এটা সে হিসাবে ধরা যেতে পারে।

অনেক ধন্যবাদ প্রিয় চাঁদ্গাজী।

৬| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২৬

কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: লেখাতেই কুপোকাত, অর্থ খুঁজে আর কী হবে ! তবে ভাবতে ভাল লাগছে এমন করে ।

চমৎকার কণিকা ।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৩৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার। শুভেচ্ছা।

৭| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৩

পুলহ বলেছেন: কিছু গল্প থাকে যা শুধু গল্পই, যার কোনো অন্তর্নিহিত রহস্য বা ভাবার্থ নেই..."-- বাহ খুব সুন্দর বলেছেন তো !
২য় গল্পটা খুবই চমৎকার। তবে লেখার ঢঙ্গটা একটু ছাড়া ছাড়া/ আনিউজুয়াল মনে হলো আমার কাছে; এটা কি লেখক ইন্টেনশনালি করেছেন?
শুভকামনা জানবেন ভাই!

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৩৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এভাবেই লেখা হয়ে গেছে। ভালো লেখার চেষ্টা তো যে কারোরই থাকে, সেরকম হয়ে ওঠে নি।

ধন্যবাদ পুলহ। শুভেচ্ছা।

৮| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৩৮

আমি তুমি আমরা বলেছেন: প্রথম গল্পটা অসাধারণ। দ্বিতীয়টা বুঝলাম না।

পোস্টে চতুর্থ ভাল লাগা :)

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৩৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এটার ভিতরে একটা করুণ বাস্তবতা লুকিয়ে আছে। থাক, সেটা খুব কষ্টের, তাই বলছি না ভাই।

শুভেচ্ছা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.