নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।
রীতু আরাশিগে - ১ম পর্ব
রীতু আরাশিগে - ২য় পর্ব
মাত্র কিছুক্ষণ জেনারেল ভাবলেন। তারপর কন্ডাক্টিং অফিসারকে নিজের ইচ্ছের কথাটি জানালেন।
শ্রীলংকায় বটগাছের সংখ্যা কেমন তা জেনারেলের জানা নেই। তাঁর ইচ্ছে ছিল একটা বটবৃক্ষের চারা রোপণ করবেন। কিন্তু বটবৃক্ষ কেন, অদূরে কোথাও কোনো নার্সারির সন্ধান না পাওয়ায় অন্য কোনো গাছের চারা সংগ্রহ করাও সম্ভব হলো না।
তীক্ষ্ণ প্রত্যুৎপন্নমতি কন্ডাক্টিং অফিসার ত্বরিত জেনারেলকে সঙ্গে নিয়ে শহর ছেড়ে গ্রামের দিকে এলেন। স্থানীয় এক লোকের সাহায্যে রাস্তার ধার থেকে একটা অজানা চারাগাছ উত্তোলন করলেন।
‘আমি এটা কোথায় রোপণ করতে পারি?’ জেনারেল জিজ্ঞাসা করেন কন্ডাক্টিং অফিসারকে।
‘মাতুগামা সবচাইতে উপযুক্ত স্থান হয়’, কন্ডাক্টিং অফিসার বলেন। ‘কিন্তু সেখানে এটা রোপণ করবার জন্য কোনো পতিত জায়গা খুঁজে পাওয়া যাবে না।’
জেনারেল আর কিছু বলেন না। চারাটি সমেত গাড়িতে উঠে কলম্বোর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করতে বলেন।
মাতুগামা থেকে বের হয়ে মিনিট দশেক গাড়ি চালাবার পর রাস্তার একধারে একটা ফাঁকা জায়গা পাওয়া যায়। সেখানে গাড়ি থামাতে বললেন জেনারেল।
‘আমি যদি ঐ মাঠের এক কোনায় এই চারাগাছটি রোপণ করি তাহলে কেমন হয়?’ জেনারেল জিজ্ঞাসা করেন।
‘উত্তম প্রস্তাব। আমার মনে হয় এটা পতিত জায়গা। এখানে আগামী পঞ্চাশ বছরেও বসতি গড়ে উঠবার কোনো সম্ভাবনা নেই।’ কন্ডাক্টিং অফিসার বলেন।
‘তাহলে অনুগ্রহ করে এখানে এটা রোপণ করবার ব্যবস্থা করুন।’
গ্রামবাসীদের সহায়তায় অজানা বৃক্ষের চারাটি ওখানে রোপণ করে কলম্বোর উদ্দেশ্যে পুনরায় গাড়িতে উঠে বসলেন।
সমস্ত রাস্তা অত্যন্ত করুণ নীরবতার মধ্য দিয়ে পার করে নিজ কক্ষে ফেরত এলেন জেনারেল। বিমানবন্দরে যাওয়ার আগে আরো ঘণ্টা দুয়েক সময় অবশিষ্ট আছে। ইচ্ছে করলে তিনি শহরে বেরোতে পারেন। কিন্তু বেরোবেন না। ঘোরাঘুরির অভ্যাস তাঁর আগে ছিল। তাঁর ছেলেমেয়েরা যখন ছোটো ছিল স্ত্রীসহ তাদের নিয়ে তিনি প্রচুর ঘুরতে বেরোতেন। প্রায় বছর খানেক ভোগান্তির পর যে বছর রীতুর ক্যান্সারে মৃত্যু হলো মূলত সে-বছর থেকেই তিনি অনেক গুটিয়ে গেছেন— বহুদিন পর্যন্ত তাঁর কেবলই মনে পড়তো, তিনি গোসল সেরে বাইরে বেরিয়েছেন, রীতু দৌড়ে ছুটে এসে তাঁর শরীর শুঁকছে আর বলছে, ‘আব্বু, তোমার শরীরে কী যে ঘ্রাণ! এত ঘ্রাণ কি সাবানে হয়? আমার হয় না কেন?’
রীতুর মৃত্যুর পরের বছর যখন তাঁদের ছেলেটাও চলন্ত বাসের তলায় পিষ্ট হয়ে মারা গেলো— তার পর থেকে তিনি অন্তরে অন্তরে ধু-ধু মরুভূমি হয়ে আছেন। তাঁর কিছুই ভালো লাগে না। ছোটো একটা মেয়েকে দত্তক নিয়েছেন। মেয়েটির আসল নাম পালটে তার নাম রেখেছেন রীতু আরাশিগে। রীতু আরাশিগে খুব অদ্ভুত মেয়ে। রীতুর মতোই বড্ড জেদি। সে দিনে দিনে এতটা জেদি ও বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে যে মাঝে মাঝেই উঁচু স্বরে চেঁচিয়ে বলে ওঠে, ‘আমার নাম রীতু আরাশিগে রেখেছো কেন, আমার নাম রেহানা।’
জেনারেলের তন্দ্রা ছুটে যায়। আসলে রীতু আরাশিগে কখনোই বলে নি, ‘আমার নাম রীতু আরাশিগে রেখেছো কেন, আমার নাম রেহানা।’ এ কথাটি তিনি তন্দ্রার মধ্যে স্বপ্নে শুনেছেন।
তিনি আজকাল খুব নিষ্ঠুরও হয়ে উঠেছেন। ই-মেইল, ফোন, ইত্যাদি কত সুবিধাদি আছে, অথচ দেশে একবারও ফোন করেন নি— এ কথা মনে হতেই তাঁর মন খুব খারাপ হয়ে যায়। হঠাৎ বোধোদয় হয়, হাতের কাছেই টেলিফোন; তিনি ডায়াল করতে থাকেন।
জেনারেলের স্ত্রী অপর প্রান্ত থেকে বলে ওঠেন, ‘কী ব্যাপার, এত ঘন ঘন ফোন করছো কেন? এরই মধ্যে দু বার হয়ে গেলো। খুব খারাপ লাগছে?’
‘না না, খারাপ লাগছে না। রীতু আরাশিগের হাতে দাও। ওর জন্য কী কী আনবো জেনে নিই।’
‘রীতু আরাশিগে কে?’
‘ঐ যে আমাদের দত্তক মেয়েটা!’
‘তুমি যে কী! রীতু আরাশিগে সেই কবে চলে গেছে না? আর ওর নাম তো রীতু আরাশিগে ছিল না, ওর নাম ছিল আরিশেগা। এখনো তুমি ওর কথা মনে রেখেছো? এসব কথা কেন তুমি এত মনে করো? এসব ভাবতে ভাবতেই তুমি শেষ হয়ে গেলে। তুমি আর ফোন করো না লক্ষ্মীটি, চোখ বন্ধ করে সারাক্ষণ শুধু আল্লাহ্র নাম জপবে, বুঝেছো? তবেই দেখবে তোমার ঠিক সামনে আমি দাঁড়িয়ে আছি।’
জেনারেলের আজকাল যেন কিছুই মনে থাকে না। তাঁর কি মাথায় কিছু ঘটেছে? তাঁর হাতে সর্বদাই একটা মোবাইল থাকে। বাসা থেকে স্ত্রী ফোন করেন, এখান থেকে তিনি। প্রতিদিনই তিনি দু-একবার করে স্ত্রীর সাথে কথা বলছেন, কিন্তু এখন তাঁর সেসব কিছুই মনে পড়ছে না। তাঁর কী হয়েছে? মাতুগামায় গেলেন, আরাশিগেকে খুঁজলেন, চারা রোপণ করলেন, সব মনে পড়ে, কিন্তু তারপরেও মনে হচ্ছে তাঁর মাথায় সবকিছু জট পাকিয়ে আসছে। মদ্যপান করলে মানুষের এমন হয়, নিজে যদিও জীবনে একফোঁটা মদ চেখে দেখেন নি। তিনি ভেবেই পাচ্ছেন না তাঁর এরূপ স্মৃতিভ্রম হচ্ছে কেন। তিনি কি খুবই ক্লান্ত?
অতিসত্বর বিশ্রাম নেয়া দরকার। জেনারেল মনে মনে ভাবেন।
দরজায় টোকা দিয়ে কন্ডাক্টিং অফিসার কক্ষে প্রবেশ করেন। বলেন, ‘স্যার, আপনার জন্য কি সামান্য চা-নাস্তার ব্যবস্থা করবো?’
‘নো নো ইয়াং ম্যান, আরেকটু পরে তো ডিনারই করবো। তুমি বরং একটু বসো, তোমাকে আমি একটা কাজ দিতে চাই, আশা করি হাসিমুখে তা করবে।’
‘নিশ্চয়ই। নিশ্চয়ই স্যার। দয়া করে আপনার কাজের কথাটি আমাকে বলুন।’
‘আজ যেখানে আমি চারাটি রোপণ করে এলাম, তুমি আরেকবার সেখানে যাবে। আমি এ কাগজটায় লিখে দিচ্ছি, একটা বোর্ডের উপর সুন্দর করে এ কথাগুলো লিখাবে। তারপর গাছটির গোড়ার সন্নিকটে বোর্ডটা পুঁতে দিবে। আর এজন্য যাবতীয় খরচ বাবদ তোমাকে সামান্য এই রুপি ক’টা দিচ্ছি।’
‘আমি সবই করবো, স্যার, এগুলো সুসম্পন্ন করতে পারাটা আমার জন্য অনেক আনন্দের হবে, তবে এ সামান্য কাজটুকুর জন্য আমি কোনো রুপি গ্রহণ করতে রাজি নই, প্রিয় মহোদয়।’
‘অবশ্যই তুমি রুপি গ্রহণ করবে।’
‘কিন্তু এ তো প্রচুর রুপি!’
‘খরচের পর যা অবশিষ্ট থাকবে তা দিয়ে তুমি চকোলেট খাবে, প্রিয় বালক, কেমন? তোমরা তো বিশ্ববিখ্যাত চকোলেট প্রস্তুত করো, তাই না?’
‘জি স্যার। আপনাকে বলছি, আমার চেয়ে আমার স্ত্রীই চকোলেট অধিক পছন্দ করেন।’
‘আমার ভুল হয়ে গেছে, আমার উচিত ছিল তোমার স্ত্রীর জন্য একটা উপহার প্রদান করা।’
‘স্যার, এ আপনার অসামান্য বদান্যতা যে আপনি এতখানি সৌজন্য প্রকাশ করছেন। আমি অবশ্যই অখরচকৃত সবগুলো রুপি দিয়ে ব্যাগভর্তি চকোলেট কিনে আমার স্ত্রীর জন্য নিয়ে যাব, তাঁকে বলবো এক বাংলাদেশি সহৃদয় ও মহৎ জেনারেল এগুলো তোমার জন্য উপঢৌকন স্বরূপ পাঠিয়েছেন। তাতে আমার স্ত্রী যে কী পরিমাণ আহ্লাদিত হয়ে উঠবেন তা আপনাকে আমি বোঝাতে পারবো না।’
‘তোমাকে বাছা আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
‘দেশে ফেরত গিয়ে অবশ্যই ম্যাডামকে আমার সালাম ও শুভেচ্ছা জানাবেন।’
‘তুমিও তোমার স্ত্রীকে আমার ভালোবাসা আর মমতা পৌঁছে দিও।’
‘অবশ্যই, স্যার।’
‘একবার আমার দেশে তোমার বউকে নিয়ে বেড়াতে এসো। বাংলাদেশ পৃথিবীর সুন্দরতম দেশগুলোর একটি, যেমন তোমার দেশটিকেও আমার আমৃত্য ভালো লাগবে।’
‘সুজলা-সুফলা শস্যশ্যামলা আপনার বাংলাদেশ, আমি এ কথা জানি, স্যার। আপনারা বীরের জাতি। মাতৃভাষার দাবিতে শহীদ-হওয়া জাতি আপনারা। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য হাসিমুখে আত্মাহুতি দেয়া জাতি আপনারা। এমন একটি দেশের মানুষের সঙ্গে আমি কিছুদিন কাটালাম, এ আমার সারা জনমের গৌরবোজ্জ্বল প্রাপ্তি। আপনার দেশে ভ্রমণে যাবার সুযোগ পেলে স্বর্গলাভের চেয়েও তা হবে শ্রেয়তর। অবশ্যই যাব এবং আপনার আতিথেয়তা গ্রহণ করবো।’
বিমান উড্ডয়নের পর জেনারেল লক্ষ করেন তাঁর পকেটে একটুকরো কাগজ পড়ে আছে। ওটা বের করে এনে চোখের সামনে ধরেন :
One Arachchige, My Beloved Daughter
Once I Met Her Here.
এখানে একদিন আরাশিগে নামক একটা মেয়ের সাথে দেখা হয়েছিল
যে ছিল আমার প্রিয়তমা কন্যার মতো।
কন্ডাক্টিং অফিসারের হাতে কি কাগজের টুকরোটা দেয়া হয় নি? ভালো করে চোখ বোলান তিনি। না, ভুল দেখেছেন। এটাতে সেই অফিসারের ঠিকানা লেখা রয়েছে। ঠিকানা লেখার জন্য আগে ছোটো নোটবই ব্যবহার করতেন। আজকাল ছোটো ছোটো কাগজের টুকরো ও ভিজিটিং কার্ড দিয়ে মানিব্যাগ ভরে ফেলেন। ভুলবশত মানিব্যাগ থেকে মাঝেমধ্যে টাকা ঝরে পড়ে যায়, ঠিকানাও।
জেনারেল হাতের কাগজটা তাঁর মানিব্যাগে পুরে রাখলেন।
২০ জুন ২০০৪
* কালের চিহ্ন, একুশে বইমেলা ২০১৬
কালের চিহ্ন ডাউনলোড করার লিংক
২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৫০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ বাকপ্রবাস। ব্লগে এত লম্বা লেখা পড়ার ধৈর্য খুব কম ব্লগারেরই আছে। তারপরও আপনিসহ বেশ কয়েকজন ব্লগার এ সুদীর্ঘ গল্পটি পড়েছেন। এতে আমি আপ্লুত এবং আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
শুভেচ্ছা রইল।
২| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৪৯
বিজন রয় বলেছেন: আপনার লেখা পড়ার সময় কোথাও থামতে হয় না। আমি থামতে চাই।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:২২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার লেখা পড়ার সময় কোথাও থামতে হয় না। এ রে রে!!! আসমানে চড়ে লাফাইতে ইচ্ছে করছে যে!! অনেক ধন্যবাদ কবি বিজন রয়।
৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:০৬
:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: সুন্দর । পরে বাকি পর্বগুলো পড়বো।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:২৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ হাসু মামা এই পর্ব পড়ার জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
৪| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:১১
সিগন্যাস বলেছেন: মিলল না আর আরাশিগের দেখা । মন খারাপ হয়ে গেলো । বাস্তবতা এমনই ।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:২৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হ্যাঁ, ঐটা একটা বিরাট আকুতি ছিল, কিন্তু মনের আশা পূর্ণ হলো না।
ধন্যবাদ সিগন্যাস। শুভেচ্ছা রইল।
৫| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:২৭
বিজন রয় বলেছেন: লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ বাকপ্রবাস। ব্লগে এত লম্বা লেখা পড়ার ধৈর্য খুব কম ব্লগারেরই আছে।
আমিও কিন্তু তিনটি পর্বই পড়েছি।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: লেখক বলেছেন: আপনিসহ বেশ কয়েকজন ব্লগার এ সুদীর্ঘ গল্পটি পড়েছেন। এতে আমি আপ্লুত এবং আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
এটা জেনেই তো ঐ কথাটা লিখেছি
যাঁরা কমেন্ট করেছেন সবাই পড়েছেন। সবার কাছেই কৃতজ্ঞ।
ধন্যবাদ কবি আবার আসার জন্য।
৬| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:৩১
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শ্রদ্ধেয় মান্যবরেষু,
গতকালই এক হিসাবে আসল কমেন্ট করেছি। যেহেতু শেষ পর্ব, তেমন কিছু আর বলার নেই। মেজরের জন্য সমবেদনা। আর লেখক যেহেতু চরিত্রটি নিপুণ ভাবে ফুঁটিয়ে তুলেছেন, যেখানে গল্পটি শেষ হলেও আরাশিগের সাক্ষাত না পাওয়াটা পাঠকের হৃদয়ে একটি শূন্যতার তৈরী হল। এই অপূর্ণতাই বোধহয় গল্পটিকে এতটা আকর্ষণীয় করলো । একরাশ মুগ্ধতা জানাই লেখককে। ++
রইল অম্তরের বিনম্রা শ্রদ্ধাও।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ইদের ছুটি চলছে আমার, সেই সাথে ব্লগেও ছুটি চলছে, তাই ব্লগারের উপস্থিতি যেমন কম, পোস্টের সংখ্যাও কম। সকালে একটা লেখা পোস্ট করলে সন্ধ্যা পার হয়ে যায় ১ম পাতা পার হতে। এই সুযোগে আমিও চলে গেলাম আমার প্রথম ব্লগ লাইফে, যখন প্রতিদিনই অধুনার ফেইসবুকের মতো ঘন ঘন পোস্ট পাবলিশ করতাম। একটা নিয়ম ছিল, এক পোস্ট থেকে আরেক পোস্টের গ্যাপ ৩০ মিনিট হতে হবে। অনেক সময় একটা পোস্ট দেয়ার পর ৩০ মিনিট আর পার হতো না তখন মনে হতো ব্লগ ছাড়া জীবন চলেই না
গল্পটি শেষ হলেও আরাশিগের সাক্ষাত না পাওয়াটা পাঠকের হৃদয়ে একটি শূন্যতার তৈরী হল। এই অপূর্ণতাই বোধহয় গল্পটিকে এতটা আকর্ষণীয় করলো। গল্পের আবেদন ও মাধুর্যের দিকটা খুব নিখুঁতভাবে চিহ্নিত করেছেন। আপনার খুব অল্প লেখাই আমি পড়েছি, আপনার হাত খুব পরিণত, তেমনই আপনার কমেন্টপগুলো খুব বিদগ্ধ। ভালো লাগলো।
অনেক ধন্যবাদ পদাতিক চৌধুরি।
আবারও সকৃতজ্ঞ ধন্যবাদ।
৭| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:২০
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: আপনার লেখার হাত খুবই ভালো, আমি এর আগে আপনার বিশেষ লেখা এভাবে পড়িনি, দুঃখিত। এখন নিয়মিত পড়বো, আপনি লিখুন, গল্পের প্লট সবার কাছে থাকে না - যা থাকে আওলা ঝাওলা, আপনার কাছে গল্পের প্লট আছে - আপনার লেখা উচিত নিজের জন্য আপনার ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য আর আমাদের জন্যও । ধন্যবাদ সুন্দর লেখা উপহার দেওয়ার জন্য ।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৫১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ঠাকুর মাহমুদ, অনেক ধন্যবাদ আমার এ লেখাটা বিশেষ ভাবে পড়ার জন্য। ব্লগে আমি বেশ পুরোনো। এক সময় রাতদিন ব্লগে কাটালেও গত ৩/৪ বছর বেশ অনিয়মিত ছিলাম। ফলে নতুন ব্লগারদের সাথে তেমন ইন্টার্যাকশন হয় নি। এখন নিয়মিত হওয়ার চেষ্টা করছি, আশা করি আপনাদের অনেকের সাথেই নিয়মিত মত বিনিময় হবে।
প্রেরণাদায়ক মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
ভালো থাকবেন।
৮| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০০
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: সাপ্তাহিক যায় যায় দিনে মাঝে মাঝে লিখতাম, গালাগালি সম্পন্ন চিঠি আসতো যায় যায় দিন অফিসে, তারা আবার আমার কাছে রিপোষ্ট করতো, আমিও প্রচন্ড ব্যাস্ত থাকি কাজের জন্য - একটু ভালো থাকার জন্য, ১৬-০৮-২০১৮ দেশের বাইরে গেছি ফিরেছি গতরাত ২৫-০৮-২০১৮ এই হচ্ছে জীবন । আপনার প্রতিও রইলো কৃতজ্ঞতা - ভালো থাকবেন ।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: লেখক সৃষ্টির জন্য এ দেশে সফিক রেহমানের অবদান অনেক। তাঁর যায় যায় দিন বিশেষ সংখ্যা ও মৌচাকের ঢিল-এ ঐ সময়ে যারা লিখতেন, তাদের অনেকেই এখন ভালো অবস্থানে আছেন।
লেখালেখি তো আমাদের প্রফেশন না, মনের আনন্দে বা কষ্টে ভেন্টিলেট করার জন্য লিখি। যত ব্যস্ততাই থাক না কেন, লেখা একজন লেখককে টানবেই।
আপনি সেই 'যায় যায় দিন' যুগের লেখক জেনে ভালো লাগছে। যতটুকুই সময় পান, লিখুন।
ভালোবাসা রইল।
৯| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:২০
আহমেদ জী এস বলেছেন: সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই ,
একটানে পড়ার মতো করে লিখেছেন । তিন তিনটা পর্বই এএএএএএকটানে পড়ে গেছি ।
একটি হঠাৎ গড়ে ওঠা আপত্য স্নেহ কি করে মানবিক এক অবসেশানে পরিনত হতে পারে, অনবদ্য লেখনীর জোরে তা যেমন
শ্রীলংকার চড়াই উৎরাই প্রকৃতির মতোই লেখার বাঁকে বাঁকে সন্মোহনী দৃশ্যের মতো ধরা পড়েছে তেমনি পাঠককে কিছুক্ষনের জন্যে হলেও তা সন্মোহিত করে রাখতে যথেষ্ট ।
২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার কমেন্টটা সবার পড়েই দিলাম (অবশ্য রাজীব নুর ভাই আছেন এর পর ) এটা আমার জন্য বিরাট আনন্দের যে কয়েকজন বিদগ্ধ ব্লগার আমার এ দীর্ঘ লেখাটি এএএএএএকটানে পড়ে গেছেন। মাঝে মাঝে যখন নিজের সব লেখাকে অলেখা এবং পানসে মনে হয়, তখন এমন কিছু কমেন্ট নিজেকে ঘুরে দাঁড়াবার জন্য টনিক হিসাবে কাজ করে। আবার লেখার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় আহমেদ জী এস ভাই। কেবলই ঋণ বেড়ে যাচ্ছে।
শুভেচ্ছা রইল।
১০| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:১৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
এটা একটু বেশী করুণ হয়ে গেছে; ২য় অংশ পড়া হয়নি; মনে হয়, পড়তে হবে।
২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:২৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: নিজের গল্প নিজের কাছে ভালো লাগে- এটা শুনলে খুব আদেখলাপনার মতো লাগে। কিন্তু আমার লেখা আমি সময় পেলেই পড়ি, মূলত এডিট করার জন্য। বেশিরভাগ সময়ই আগের লেখাগুলোকে আর ভালো লেখা মনে হয় না, কিন্তু তা সত্ত্বেও আমার নিজের কিছু গল্পই আমাকে খুব বিমর্ষ করে তোলে এবং অবাক হই- এটা আমার লেখা তো! এ লেখাটার বিশেষ কিছু অংশ পড়ার সময় আমার চোখে পানি চলে আসে। গল্পের সাথে সত্যতা এতটুকুই যে একবার আমি শ্রীলংকায় গিয়েছিলাম। আমরা বিভিন্ন বুথে যেয়ে টেলিফোনও করেছি। আমাদের কথা ওরা না বোঝায় বা ওদের কথা আমরা বুঝি নি বলে ইন্টারপ্রিটারের সাহায্য নিতে হয়েছে। কোনো এক জায়গায় রীতু আরাশিগে নামের একটা বাচ্চা মেয়েকেও দেখেছিলাম। কিন্তু এর বাইরে কোনো ঘটনা নেই। তবু এ গল্পটা পড়ে মুগ্ধ হই নিজেই, আবার চোখও ভিজে আসে।
ধন্যবাদ চাঁদগাজী ভাই গল্পটা পড়ার জন্য।
১১| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:৫৮
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ভাল লাগলো গল্প।
সময় করে আগের পূর্বগুলো পড়ার ইচ্ছা রইল।
২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৩২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেকদিন পর ব্যস্ত ব্লগার মোঃ মাইদুল সরকারকে ব্লগে দেখছি। ভালো লাগছে। এ পর্ব পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
১২| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:৩৩
সোহানী বলেছেন: হাতে সময়ের মারাত্বক টানাটানি। তাই কোনভাবেই কারো লিখার গভীরে যেতে পারছি না। তাই আপাতত: শুধু জানান দিয়ে গেলাম। সময় সুযোগ বুঝে সবগুলো পড়ে মন্তব্য করবো।
২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৩১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: জানান যে দিয়ে গেলেন, এতেও অশেষ আন্তরিকতার চিহ্ন প্রকাশ করে গেলেন। এ ব্যাপারটা খুব আনন্দের এবং ভালো লাগার।
ভালো থাকবেন আপু। শুভেচ্ছা সব সময়ের জন্য।
১৩| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৫০
করুণাধারা বলেছেন: ব্যস্ততার কারণে মন্তব্য করতে দেরি হল, কিন্তু আমি তিনটি পর্বই প্রকাশের সাথে সাথে পড়েছি, এক পর্বের পরে অধীর আগ্রহের সাথে পরের পর্বে অপেক্ষা করেছি। আপনার গল্প বলার ভঙ্গি ভালো লাগলো। প্রতিটি চরিত্রকে বাস্তবসম্মত মনে হয়েছে, যদিও শেষে এসে মেজরের ছেলে ও মেয়ের মৃত্যু এবং রীতু আরাশিগের সাথে দেখা না হওয়া- এটা পড়ে কষ্ট পেয়েছি।
"কালের চিহ্ন"র জন্য শুভ কামনা রইল।
২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৩০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এটা জেনে ভালো লাগছে যে প্রতিটা পর্বের পরই পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করেছেন। আমার জন্য দারুণ উৎসাহব্যঞ্জক কথা। পরের কথাগুলোও আমাকে অনেক আপ্লুত করলো।
অনেক অনেক ধন্যবাদ করুণাধারা। শুভেচ্ছা রইল।
১৪| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:২১
নীলপরি বলেছেন: ভালো লাগলো ।তবে মন খারাপ হয়ে গেলো ।
++++
২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:২৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ নীলপরি। শুভেচ্ছা।
১৫| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: শপথ আমরা জন্মের পর থেকে নিতে নিতেই বড়ো হই। অথচ—মৃত্যুর দুয়ারে পা রেখেও আমরা বেমালুম ভুলে যাই শপথ নেয়ার অর্থ কী? ভুলে যাই নিয়ম কানুনের কারণটাও! আবার পাশের বাড়ির কুকুরটাকে ঠিক ঠিক প্রতিদিন দেখা যায়, মালিকের হুকুম— কুকুরটি নীতির সঙ্গে রোজ রাতে পালন করছে।
২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কুকুর কি মালিকের কাছে কোনো শপথ গ্রহণ করে- নিজের জীবনকে বিপন্ন করে হলেও সে মালিকের জীবন রক্ষা করবে?
১৬| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৪
জাহিদ অনিক বলেছেন:
তিনটাই পড়া হলো-
আহা রীতু আরাশিগে----
নয়-ছয় এর মন্তব্য ভালো লাগলো।
শুভ সন্ধ্যা
২৮ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৫৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ৩টা পর্ব পড়ে ফেলেছেন জেনে খুব ভালো লাগছে। এত দীর্ঘ গল্প পড়ার এতজন পাঠক থাকবে তা অবশ্য আমি ভাবি নি।
ধন্যবাদ জাহিদ অনিক। শুভেচ্ছা।
১৭| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:০১
ঢাকার লোক বলেছেন: আমিও একজন যে পর্ব ৩ টিই পড়েছি ব্লগে আসার পরপরই ! লেখা সুন্দর এবং সাবলীল, তবে গল্পটা বেশি করুন হয়ে গেছে ! জেনারেলের জন্য দুঃখ হচ্ছে , আচ্ছা দুনিয়াতে কত কিছুইতো ঘটে, কোনোভাবে ঘটনাক্রমে এয়ারপোর্টের কোনো কফিশপে আশিগের সাথে দেখা হয়ে যেতে পারতো না ?
২৮ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:১২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ ঢাকার লোক তিনটা পর্বই পড়ার জন্য।
হ্যাঁ, দুনিয়াতে অনেক কিছুই ঘটে। কোনো ভাবে তাদের আবার দেখা হয়ে যাওয়া যেমন একটা সম্ভাবনা মাত্র, দেখা না হওয়াও একটা সম্ভাবনার মধ্যেই পড়ে।
গল্পটা করুণ, স্বীকার করি। এ গল্পটা পড়ার পর আমার নিজেরও চোখ ভিজে আসে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
১৮| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:০৪
ঢাকার লোক বলেছেন: আমিও একজন যে পর্ব ৩ টিই পড়েছি ব্লগে আসার পরপরই ! লেখা সুন্দর এবং সাবলীল, তবে গল্পটা বেশি করুন হয়ে গেছে ! জেনারেলের জন্য দুঃখ হচ্ছে , আচ্ছা দুনিয়াতে কত কিছুইতো ঘটে, কোনোভাবে ঘটনাক্রমে এয়ারপোর্টের কোনো কফিশপে আরাশিগের সাথে দেখা হয়ে যেতে পারতো না ?
২৮ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:১৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
১৯| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৩:১৭
চঞ্চল হরিণী বলেছেন: অফলাইনেই গল্পটা পড়েছিলাম। খুব করুণ ভালো লেগেছিলো। 'আরাশিগে' নামটা আমার কাছে কিম্ভূত নয় বরং সুন্দর লেগেছে। শ্রীলঙ্কা সম্পর্কে আরও কিছু জানার কৌতূহল বেড়েছে। কিন্তু মন্তব্য করতে পারিনি কারণ লগইন করতে পারিনি। আপনার কাছে একটা পরামর্শ চাই। আমি আমার ব্লগের পাসওয়ার্ড ভুলে গেছি। এখন ল্যাপটপে অটো সেভ থাকা পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে পারি কিন্তু অন্য কোন ডিভাইস দিয়ে লগইন করতে পারি না। কয়েকবার সহযোগিতা অংশে সমস্যা জানিয়ে টেক্সট করেছি, কিন্তু বার্তাটি গ্রহণই হয় না। এখন কি করতে পারি অনুগ্রহ করে একটা পরামর্শ দিন, সোনাবীজ ভাই। অগ্রিম ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা ।
২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: পাসওয়ার্ড পুনরুদ্ধারের জন্য 'পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?' বক্স অনুসরণ করুন। ইমেইল অ্যাড্রেস ভুলে যান নি তো?
বর্তমান পাসওয়ার্ড যে ল্যাপটপে আছে, ব্রাউজারের টুলস থেকে অপশনস মেনুতে যান। প্রাইভেসি এন্ড সিকুরিটি ক্লিক করুন।
এরপর সেভড লগিন-এ ক্লিক করলে ল্যাপটপে যেখানে যত পাসওয়ার্ড সেইভ করা আছে সব উঠে আসবে। আপনার ব্লগের নিকের বিপরীতে যেটা আছে ওটাই আপনার পাসওয়ার্ড।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৩৩
বাকপ্রবাস বলেছেন: খুব সুন্দর ছিল। সবগুলো পর্ব পড়লাম।