নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।
প্রচলিত লোককথা
সেবার ইদুল-ফিতরের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি গেলাম। ইদের কয়েকদিন আগের কথা। কয়েকজন বন্ধুর সাথে ঘোরাঘুরি ও আড্ডা শেষে বাড়িতে পৌঁছুলাম রাত বারটার দিকে। এসে দেখি আমার মেয়ে ঐশী, ভাগ্নি পলী, ভাতিজা শাকিল ও ছোটো ভাইয়ের বউ লুৎফা একটা রুমে বাতি নিভিয়ে অন্ধকারে জড়ো হয়ে মোবাইলে রেকর্ড করা ভূত-এফএম-এর গল্প শুনছে। আমি ওদের সাথে যোগ দিই। কয়েক মিনিট শুনবার পর বলি, ‘চলো, আজ আমি নিজেই তোমাদেরকে ভূতের গল্প বলবো, যেগুলো আমার জীবনে ঘটেছিল।’ এ কথা বলতেই সবাই কলকলিয়ে লাফিয়ে উঠে আমার ঘরে চলে এলো। আমি এক-একটা গল্প বলি, ওরা ভয়ে একে অপরের সাথে আরো লেপ্টে বসে। ‘এগুলো কবে ঘটেছিল আপনার জীবনে? আপনি বেঁচে গেলেন কীভাবে?’ আমি বলি, ‘এগুলো আমার জীবনে ঘটে নি, এগুলো হলো একেকটা বানানো গল্প।’ ওরা অবাক হয়ে বলে, ‘ইয়া আল্লাহ, আপনি এত্ত ভূতের গল্প বানাতে পারেন!’ এরপর আমার ঘরে ভূতের গল্প বলার জমজমাট আড্ডা শুরু হলো। পলী, ঐশী এবং লুৎফা একটার পর একটা গল্প বলছে, সবাই শুনছে মুগ্ধ হয়ে। এমন সময়ে ভাতিজা শাকিল ফ্লোর নিয়ে বললো, ‘আমিও একটা ভূতের গল্প বলবো।’
‘বলো, বলো।’
ভাতিজা খুব উৎসাহ নিয়ে বলতে লাগলো, ‘একদিন আমরা তিন বন্ধু গভীর রাতে মেলা থেকে ফিরছিলাম। দোহারপুরীর কুমার বাড়ি ও চোরামন সাধুর বাড়ির ঘন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে আসলাম। কিন্তু আমরা কোনো ভূত দেখি নাই।’ ক্লাস নাইনে পড়ুয়া ভাতিজার ভূতের গল্প শুনে হাসতে হাসতে আমাদের দম ফাটার অবস্থা হলো।
২০০৫ বা ২০০৬ সালের দিকে আমার বাবার কাছে একটা অলৌকিক ঘটনার কথা শুনে তার উপর ভিত্তি করে ‘চৈতিবিবির দিঘি’ নামে একটা গল্প লিখেছিলাম এ গল্পের ভেতরে 'চৈতিবিবির গল্প'টি আছে। আলাদা একটা পোস্টও দেয়া হয়েছিল, যা এখন খুঁজে পেলাম না। গল্পটি লিখবার পর মনে হয়েছিল বাবা গল্পটি ঠিক এভাবে বলেন নি; কিন্তু কীভাবে বলেছিলেন তাও মনে করতে পারছিলাম না। ভূতের আড্ডা যেদিন বসলো, তার ক’দিন পর বাবার কাছ থেকে সেই পুরোনো গল্পটি পুনর্বার শুনলাম।
এ গল্পটি আমার বাবা ছোটোবেলায় তাঁর বাবার কাছে শুনেছিলেন; তাঁর বাবা (আমার দাদা) তাঁর ছোটোবেলায় তাঁর দাদার কাছে শুনেছিলেন, যিনি তাঁদের ছোটোবেলায় তাঁদের দাদাদের কাছে এটি শুনেছিলেন বলে জানা যায়। আদতে এটি কবে ঘটেছিল তার কোনো সঠিক হিসাব কারো কাছে নেই।
আমাদের গ্রামের পশ্চিমে গাজীরটেক, তারও পশ্চিমে গভীর বনজঙ্গলে ছাওয়া দোহারপুরী। দোহারপুরীর রাহীম চুকদার একবার একটা বিশাল দিঘি খনন করেছিলেন। আশ্বিনে বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর দিঘি খনন শুরু হয়; প্রতিদিন শত শত কোদালি উদয়াস্ত মাটি কেটে সেই দিঘি খনন করতে লাগলো। দিঘির তলদেশ গভীর থেকে গভীরতর হতে থাকে। কিন্তু আশ্চর্য, দিঘির তলায় কোনো পানির আভাস নেই। এখানে-সেখানে অল্প কয়েক হাত কূয়া খনন করলেই ডগডগিয়ে পানি উঠতে থাকে, অথচ রাহীম চুকদারের দিঘির তলদেশ যেন শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে। তিনি খুব চিন্তিত হলেন। রহস্য কী? এ কোনো গভীর বিপদের আলামত নয় তো! একদিন রাতে তিনি স্বপ্ন দেখলেন- তাঁর একমাত্র পুত্রবধূ ধান-দূর্বা দিয়ে দিঘিতে সাত পাঁক ঘুরে বর দান করলেই পাতাল থেকে পানি উঠে দিঘি ভরে যাবে। স্বপ্নের কথা শুনে পুত্রবধূ বর দানে রাজি হলো।
একদিন নিরালা দুপুরে পুত্রবধূ ধান ও দূর্বার বর নিয়ে শুকনো দিঘিতে নামলো। দিঘির চারকোনায় ঘুরে সাত পাঁক পুরো করতেই প্রবল বেগে পাতাল থেকে পানি উঠতে থাকলো, এবং চোখের পলকে সুবিশাল দিঘি কানায় কানায় ভরে উঠলো। কিন্তু হায়, পুত্রবধূ দিঘির গভীর তলদেশে হারিয়ে গেলো।
পুত্রবধূর একটা দেড় বছরের পুত্রসন্তান ছিল। একদিন বাড়ির এক ভৃত্য দুপুরবেলায় দিঘির পাড়ে এসেই চমকে উঠলো- দিঘির পানিতে পা ডুবিয়ে পাড়ে বসে পুত্রকে দুধ খাওয়াচ্ছে পানিতে ডুবে যাওয়া পুত্রবধূ। হায় হায় রব ছড়িয়ে পড়লো চারদিকে। এবং কিছুদিন পর পরই অনেকের চোখে এ দৃশ্য ধরা পড়তে থাকলো। এমনই একদিন দুধ খাওয়ানোর সময় রাহীম চুকদারের ছেলে তার স্ত্রীকে দেখে সবেগে বুকে জড়িয়ে ধরে। স্ত্রীকে সে কিছুতেই যেতে দেবে না। কিন্তু তার ফিরে না গিয়ে উপায় নেই। তার ‘মহাজন' তাকে দূর থেকে সর্বদা নিয়ন্ত্রণ করছে। এক সময় জোরজবরদস্তি করে স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে পানিতে ডুব দিল। এরপর আর কোনোদিন তাকে দেখা যায় নি।
***
এবার আমার গল্পটি দেখুন নীচে। এটি আমার লৌকিক রহস্য; অথবা অলৌকিক উপন্যাসের অংশবিশেষ; সেই দীর্ঘ অংশটি কেউ পড়তে চাইলে কুটিমিয়ার যাত্রাদর্শন লিংকটি ওপেন করুন।
চৈতিবিবির দিঘি
দু গাঁয়ের মাঝখানে আধমাইল দীর্ঘ চক। চক পার হয়ে গ্রামের শুরুতে রাস্তার উত্তর ধারে প্রকাণ্ড এক বটগাছ– অসংখ্য শেকড়-বাকড় আর নোয়ানো শাখা-প্রশাখায় ঢাকা তলাভূমি তার উত্তরে বহুদূর অব্দি বিস্তৃত, তারও উত্তরে যে বিশাল ও গভীর এক দিঘি, তার নাম চৈতিবিবির দিঘি।
বটগাছটি দিনের বেলায় রাখাল ছেলেদের, ক্লান্ত কৃষকগণের ও শ্রান্ত পথিকদের মনোরম বিশ্রামস্থল। রাত্রিবেলায় দূর থেকে আবছা অন্ধকারে এটিকে আকাশছোঁয়া এক পাহাড়ের মতো মনে হয়– বুকের ভিতর কেমন এক ভয় জাগে। তাই সাঁঝের পর সচরাচর এ গাছের নীচ দিয়ে কেউ হাঁটে না।
রাত-বিরাতে এ বটগাছের কাছে আসতেই গা ছমছম করে ওঠে। রাতের বটগাছকে তো মানুষ এমনিতেই ভয় পায়– কিন্তু এ গাছটিকে ভয় পাবার পেছনে গভীর রহস্য আছে। এ গাছের কাছে আসলেই বহু যুগ ধরে শুনে আসা এক ভয়ঙ্কর কাহিনি সবার মনে পড়ে যায়।
চৈতিবিবির দিঘির পাড়ে এ বটগাছটা দাঁড়িয়ে, এজন্য মানুষের মুখে মুখে ফিরতে ফিরতে এর নাম চৈতিবিবির বটগাছ হয়ে গেছে। এর পশ্চিমে জঙ্গল-ছাওয়া যে বিশাল পোড়ো ভিটেটি রয়েছে, ওটি বহু যুগ আগে এক জমিদার বাড়ি ছিল।
প্রায় একশত বছর আগে জমিদার হারান শেখ এই দিঘি খনন করেছিলেন। প্রতিদিন ১০০ জন করে কামলা মাটি কাটতো এই দিঘিতে, পুরো ১০০ দিন একটানা মাটি কাটার পর এতই গহিন ও বিশাল হয় এই দিঘি যে এর পাড়ে এসে দাঁড়ালে ভয়ে বুক কেঁপে উঠতো।
এই দিঘির একটি মাত্র শান-বাঁধানো ঘাট ছিল। সেই ঘাটে সখীগণকে নিয়ে গোসল করার অধিকার ছিল মাত্র একজনের- সে হলো জমিদারের পুত্রবধূ চৈতিবিবি।
জমিদারের একমাত্র পুত্র মরন শেখের তিনটি বিয়ে দেয়া হয়েছিল, কিন্তু কারো গর্ভেই কোনো সন্তানাদি জন্মালো না। বংশ রক্ষার্থে অগত্যা জমিদারপুত্রের চতুর্থ বিয়ে দেয়া হয় চৈতিবিবির সাথে এবং আল্লাহ্র অসীম ফজিলতে বিয়ের প্রথম রাতেই চৈতিবিবি গর্ভবতী হয়। এই শুভ সংবাদে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হয়ে জমিদার মহোদয় মহা ধুমধামে সাত গ্রামের মানুষজনকে দাওয়াত করে খাওয়ান।
চৈতিবিবির একটি লুলা পুত্রসন্তান হয়। জমিদার পরিবারে দুঃখের অন্ত থাকে না, তাঁদের দুঃখের সাথে গ্রামবাসীরাও কেঁদে আকুল হয়- বিধাতার কী নিষ্ঠুর রহস্য!
দিনে দিনে লুলা পুত্র বড় হতে থাকে। টেনে টেনে হামাগুড়ি দেয়- তা দেখে চৈতিবিবি অঝোর ধারায় চোখের পানি ফেলে। আস্তে আস্তে আরো বড় হয়- ভাঙ্গা পায়ে অতি কষ্টে লুলা ছেলে হাঁটে।
একদিন ভরদুপুরে দিঘির ঘাটে চৈতিবিবির লাশ ভাসতে দেখা গেলো। সারা গাঁয়ে কান্নার রোল উঠলো। সেই কান্না থামে না।
এরপর বহু আশ্চর্য ঘটনা ঘটতে লাগলো। প্রায় দুপুরেই দেখা যায় লুলা শিশুটি পাকা ঘাটের কিনারে বসে পা দুলিয়ে খিলখিল করে হাসছে– একদম একাকী। কেউ তাকে ওখানে নিয়ে যায়, নাকি সে একা একা যায়, কেউ তা জানে না, বুঝতেও পারে না।
দুপুরে ঘাটে পানি আনতে গিয়ে জমিদার বাড়ির এক চাকরানি একদিন ‘ও-মাগো’ বলে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারালো। জ্ঞান ফিরলে সে জানালো, সে নাকি ঘাটের কিনারে চৈতিবিবিকে লুলাকে কোলে নিয়ে বসে থাকতে দেখেছে। খুশিতে ডগমগ লুলা পা দুলিয়ে মায়ের বুকে দুধ খাচ্ছিল আর মাঝে মাঝেই খিলখিল করে হেসে উঠছিল।
এটা তার দেখার ভুল। চৈতিবিবি মারা গেছে মাস ছয়েক আগে- সে কোথা থেকে আসবে?
এরূপ আরো অনেকে চৈতিবিবিকে দেখতে লাগলো, সে সাঁতার কেটে দিঘির এ পাড় থেকে ও পাড়ে যায়, মাঝখানে চিৎ হয়ে ভেসে থাকে। ঘাটে বসে লুলাকে গোসল করায়। এসব কথা জমিদারের কানে যায়, কিন্তু তিনি তা শুনে বিরক্ত হোন- এ কখনো হয়? শেরেকি কথা। অবশ্য এ-ও তিনি ভাবেন– চৈতিবিবিকে গাঁয়ের মানুষ খুব ভালোবাসতো, তার অস্বাভাবিক মৃত্যু তার প্রতি মানুষের সহানুভূতি আরো বাড়িয়ে দিয়েছে, দিঘির কাছে এলেই চৈতিবিবির কথা তাদের খুব করে মনে পড়ে যায়, ফলে দৃষ্টিভ্রম হয়। জমিদার অবশ্য এ-ও জানেন, তিনি তাঁর এই পুত্রবধূটিকে অসম্ভব ভালোবাসতেন এই কথাটি সবারই জানা, চৈতিবিবির কথা পেড়ে জমিদার মহোদয়ের সুনজর পাওয়ারও একটা প্রয়াস থাকতে পারে।
এর মাস খানেক পরই অত্যাশ্চর্য ঘটনাটি ঘটলো। জমিদার মহোদয় দুপুরে পুকুরের পাড়ে বটের ছায়ায় হাঁটাহাঁটি করছিলেন। হঠাৎ তাঁর কানে এক শিশুর খিলখিল হাসির শব্দ ভেসে আসে। উৎসুক হয়ে সামনে এগিয়ে যান- ঘাটের পাড়ে দাঁড়াতেই তিনি বিস্ময়ে রুদ্ধবাক হয়ে যান– তাঁর দু চোখ বিশাল বিস্ফারিত হয়ে ঘাটের কিনারে স্থির হয়– বেণি খোলা, এলোচুল তার, পানিতে অর্ধনিমজ্জিত দুই পা, কোলের ওপর লুলাকে বসিয়ে স্তন্যপান করাচ্ছে চৈতিবিবি, ঘাড়খানি বাম দিকে ঘোরানো, তার ভীষণ হাস্যোজ্জ্বল মুখটি ঈষৎ দেখা যায়, মাঝে মাঝে লুলার গালে সে টুসি মারে, খিলখিল হাসিতে সে ফেটে পড়ে- এ কী অবিশ্বাস্য দৃশ্য দেখতে পাচ্ছেন জমিদার মহোদয়! অবিশ্বাস্য! অবিশ্বাস্য!
বউমা!
ঘোরের মধ্যেই তিনি অস্ফুট স্বরে ডেকে উঠলেন। আর সঙ্গে সঙ্গে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায় চৈতিবিবি, তার হাসিমুখ স্তিমিত হয়, সন্তর্পণে লুলাকে কোল হতে নামিয়ে পাথরের সিঁড়িতে তাকে বসায়, তারপর ধীরে ধীরে সাঁতরে দিঘির মাঝখানে চলে যায়– জমিদার এক দৃষ্টিতে কিংকর্তব্যবিমূঢ়ের মতো তাকিয়ে থাকেন– চেয়ে চেয়ে দেখেন, দিঘির মাঝখানে গিয়ে চৈতিবিবি থামলো, আবার তার দিকে ফিরে তাকালো, তারপর টুপ করে একটা ডুব দিল, মাথার চুল পানিতে ভেসে থাকতে দেখা গেলো কিছুক্ষণ, শাড়ির আঁচলখানিও আরো কিছুক্ষণ দেখা গেলো, তারপর আর কিছুই দেখা গেলো না।
জমিদারের ঘোর কাটে, কিন্তু তাঁর হতবিহ্বল কণ্ঠে বাক ফোটে না। এ কী অবিশ্বাস্য ঘটনা! তিনি দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে আসেন। মায়ের জায়গায় বসে লুলা মায়ের চলে যাওয়ার পথের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। জমিদার তাকে কোলে তুলে নেন, হন্তদন্ত হয়ে ঘরে ফিরে আসেন, কিন্তু কাউকে কিছুই খুলে বলেন না। এ ছেলে কীভাবে দিঘির ঘাটে যায়? সারা বাড়ি ভর্তি কত মানুষজন, এ ছেলে কখন কীভাবে পানির এত কাছে গিয়ে বসে? কেউ কি দেখে না? তিনি আশ্চর্য হয়ে ভাবেন, আর এক নিদারুণ ভয়ে তাঁর বুক কেঁপে উঠতে থাকে।
এ ঘটনার পর জমিদার হারান শেখ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাকরুদ্ধই ছিলেন। তাঁর মুখে যেমন ভাষা ফোটে নি, চৈতিবিবিকেও আর কোনোদিন ঘাটে বসে লুলাকে দুধ খাওয়াতে দেখা যায় নি।
কিন্তু চৈতিবিবিকে দেখার বাসনা মানুষের তীব্র হতে থাকে। তারা ভিড় করে দিঘির পাড়ে এসে বসতো, ঝিম দাঁড়িয়ে থাকতো। অনেক দূরের মানুষও অনেক সময় এসে পাড়ে দাঁড়িয়ে একধ্যানে অপেক্ষা করতো, যদিই বা চৈতিবিবিকে একবারের জন্য দেখতে পায়।
চৈতিবিবিকে দেখার বাসনা আর কখনোই মানুষের পূরণ হলো না এবং কালক্রমে মানুষের মুখে মুখে ফিরতে ফিরতে এক সময় দিঘির নামটি হয়ে যায় চৈতিবিবির দিঘি। দিঘির পাড়ের বটগাছটির বয়স দিঘির বয়সের চেয়ে বছর কুড়ি কমই হবে এবং এটাকেও মানুষ একদা চৈতিবিবির বটগাছ নামে ডাকতে থাকে।
২০০৫/২০০৬
২০ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৩১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: জি শেরজা তপন ভাই, আপনি ঠিকই ধরেছেন। ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
২| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: অজ্ঞতা খুবই খারাপ।
জ্ঞান। শুধু জ্ঞানই পারে মানুষকে অজ্ঞতা থেকে আলোতে নিয়ে যেতে।
৩| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৩:১৫
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: ভালো হয়েছে লেখা । পুরোটা পড়লাম । এমন উপকথা সারা বিশ্বব্যাপী ছড়ানো ছিটানো রয়েছে । লিখতে থাকুন .।
২০ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৪:৪১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: পুরোটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ সাখাওয়াত হোসেন বাবন ভাই। শুভেচ্ছা।
৪| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৩:২৩
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: অদ্ভ্যূত সুন্দর ভাললাগা অতিপ্রাকৃতিক গল্প!!
২০ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৪:৪২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আশা করি ভালো আছেন। বেশ কিছুদিন পরে ব্লগে দেখছি আপনাকে। যাই হোক, পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ মল্লিক ভাই। শুভেচ্ছা।
৫| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২০
বাকপ্রবাস বলেছেন: দিঘীর মতো লম্বা পোষ্ট, পড়তে ভালও লাগছে এদিকে আবার অপিষে কাজও চলছে, তায় টেনে টেনে পড়েছি
২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:১৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমার পোস্ট মানেই সুদীর্ঘ নদীর মতো লম্বা লম্বার আর কী দেখছেন, যদিও ইদানীং পোস্ট খাটো করার চেষ্টা করছি।
টেনে টেনে হলেও পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রিয় বাকপ্রবাস।
৬| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের উত্তর না দিয়ে ভালো করেছেন।
৭| ২১ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:১৪
কাছের-মানুষ বলেছেন: চমৎকার হয়েছে, ভূত এফএম আমিও একসময় অনেক শুনতাম, দারুন লাগত!
আগে বিনোধনের অভাব ছিল, মরুব্বীরা আগে বিভিন্ন গল্প বলত, আমাদের এলাকায় এটাকে কিচ্ছা বলত! আমিও অনেক ভূতের কিচ্ছা শুনেছিলাম আমার আব্বার কাছ থেকে, তিনি আবার শুনেছেন তার কোন মরুব্বীদের থেকে, কারেন্ট চলে গেলে মুরুব্বিদের কাছে আবদার করতাম এগুলো শোনার জন্য! এই কালচার এখনো একেবারেই চলে গেছে বোধ হয়!
২২ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:০৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমার কাছে তো মনে হয়, কোনো কালেই বিনোদনের অভাব ছিল না, তবে, বিনোদনের ধরন ভিন্ন ছিল। দিনে দিনে বিনোদনের ধরন চেঞ্জ ও আপগ্রেডেড হতে থাকে। আমাদের এলাকায় সিনেমা ছিল না ছোটোবেলায়। যাত্রাপালা দেখার জন্য আমাদের উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। পরে যখন সিনেমা এলো, সেই উত্তেজনা আরো কয়েকগুণ বেড়ে গেল। কিছুদিন পর পর এখানে সেখানে গ্রাম্য মেলা হতো, চড়ক গাছ, পুতুল নাচসহ কত কিছু।
সন্ধ্যায় দুয়ারে পাটি বিছিয়ে কিসসার আসর বসতো। সেই কিসসা চলতে থাকতো রাতভর, শেষ হতো ভোরের দিকে। একেকটা কিসসা মানে একেকটা বড়ো উপন্যাস, বা যাত্রাপালা। কিসসার সাথে আবার দোহারীরা গান ধরতো কিসসা-কথকের সাথে।
মাঝে মাঝেই বসতো ভূতের কাহিনির আড্ডা। সবাই নিজ নিজ ভূত দেখার গল্প বলতো। আমার কুটিমিয়া সিরিজের প্রায় সব গল্পই সেই কিসসার আসর, কিংবা লোকমুখে শোনা কাহিনি নিয়ে লেখা; দু-একটা ঘটনা আমার নিজ জীবনে ঘটে যাওয়া কাহিনি অবলম্বনে লেখা।
চরম সত্য কথা যেটা বলেছেন তা হলো, সেই কালচার এখন আর নেই। তবে আমি সেই শৈশবকে খুব মিস করি।
সুন্দর কমেন্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ কাছের-মানুষ।
৮| ২১ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:৪৬
রানার ব্লগ বলেছেন: আমি একটা জিনিস বুঝি না বড় পুরানা কোন দিঘী জাতীয় সব কিছুর সাথে এমন হাস্যকর কিছু গল্প লেগে আছে । আপনার এমন গল্প আমাদের দেশে একটা পুরানা দিঘী আছে তার সাথে আছে । কাহিনী প্রায় একি । শুধু পাত্র পাত্রির নাম আলাদা ।
২২ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:০৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আসলে এসব গল্প লোকমুখেই সৃষ্টি হয়েছিল। তবে কবে সৃষ্টি হয়েছিল, তার কোনো হদিস পাওয়া যায় না। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় গল্প পরিবাহিত ও প্রচারিত হয়েছে। গল্পের রূপান্তরও ঘটেছে।
পোস্ট পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ রানা ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:২৯
শেরজা তপন বলেছেন: আরেগটুকু আপনার আব্বার কাছ থেকে শোনা আর পরেরটুকু সেই ঘটনা অবলম্বনে আপনার ভাবরচনা?