নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।
শত্রু মিত্র অচিহ্নিত রেখে সুন্দরবন রক্ষার আংশিক কর্ম পরিকল্পনা, রাজনৈতিক আন্দোলন না করে শুধু সামাজিক দায়বদ্ধতার খাতিরে আংশিক কর্ম তৎপরতা কোনই কাজে আসবে না। কেন? বটম লাইন গুলো উল্লেখ করাই এই আলোচনায় ঢুকার প্রয়াস।
সুন্দরবনের শত্রূঃ
১। স্যালাইন পেনিট্রেশনঃ
১ক। ফারাক্কা বাঁধঃ ১৯৭৪-৭৫ এ পরীক্ষা মূলক এবং স্থায়ীভাবে চালু থেকেই শুষ্ক মৌসুমে স্বাদু পানির হঠাত এবং একচেটিয়া প্রত্যাহারের কারনে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বড় আকারে সাগরের লোনা পানির আগ্রাসন শুরু হয়, এতে করে প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বনে সাধু এবং লবনাক্ত পানির আসা যাওয়ার মিথস্ক্রিয়া নস্ট হতে শুরু করে। একদিকে নদীর স্বাদু পানির উচ্চতা এবং চাপ হ্রাস পায় অন্যদিকে লোনা পানি স্থল ভাগের অভ্যন্তরে বহু দূর পর্যন্ত প্রবেশ করে (স্যালাইন পেনিট্রেশন)।
১খ। ভারতীয় বাঁধ এবং পানি প্রত্যাহার ব্যবস্থাপনাঃ
সময়ের সাথে গঙ্গা সহ অন্য ৫৩ টি অভিন্ন এবং আন্তর্জাতিক নদী শাখা নদী এবং কানেক্টেড খাল গুলোতে ভারত বাঁধ এবং পানি প্রত্যাহার ব্যবস্থাপনা এগিয়ে নেয়ার সাথে সাথে স্যালাইন পেনিট্রেশন শুধু বেড়েছেই।
১গ। গঙ্গা- কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পঃ
কৃষির জন্য অত্যন্ত ভালো পদক্ষেপ হলেও শুকনা মৌসুমে গঙ্গার অবশিষ্ট সামান্য পানির উল্লেখযোগ্য আবারো সেচ প্রকল্পে পুনসঞ্চালন শুর হলে স্যালাইন পেনিট্রেশন আরো বাড়তে শুরু করে।
২। স্বাদু পানির প্রবাহে ভয়াবহ দূষণ এবং ভারী ধাতুর বিপর্যয়কর উপস্থিতিঃ
ভয়ঙ্কর ভারী ধাতুর সাধু পানি ম্যানগ্রোভে কি কি সমস্যা তৈরি করছে তা গবেষণার দাবি রাখে
মাত্রাতিকরিক্ত স্যালাইন পেনিট্রেশনের কারনে সুন্দরবনের উদ্ভিদ এবং প্রাণীকুল এমনিতেই দীর্ঘ শুষ্ক মৌসুমে হাফিয়ে উঠে এবং বর্ষায় নদীর সাধু পানির উচ্চতা বাড়লে কিছুটা দম নেয়! তার উপর পানিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি নদ-নদীর জলজ এবং বনের উদ্ভিজ্জ বাস্তুসংস্থানের ওপর মারাত্মক প্রভাবের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভারত এবং বাংলাদেশের শিল্প, শহুরে এবং হিউম্যান ওয়েস্ট এর কারনে সৃষ্ট ভয়ঙ্কর পানি দূষণে নদীতে শত গুণ বেশি ভারি ধাতুর উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। সুন্দরবনে ব্যাপক হারে গাছ গাছালি বিভিন্ন রোগ আক্রান্ত (আগা মরা সহ) যা এর সাথে সম্পৃক্ত হতে পারে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে পায়রা নদীতে ক্রোমিয়াম, আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম ও সিসা রয়েছে যথাক্রমে ৪৫, ১২, দশমিক ৭২ ও ২৫ মিলিগ্রাম। করতোয়ায় ক্রোমিয়াম, আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম ও সিসার মাত্রা যথাক্রমে ১০৯, ২৫, ১ দশমিক ২ ও ৫৮ মিলিগ্রাম। পদ্মা নদীতে ক্রোমিয়াম রয়েছে ৯৭ ও সিসা ১৭ মিলিগ্রাম।
উল্লেখ্য পরিবেশ অধিদপ্তর সুপেয় পানিতে আর্সেনিক, ক্রোমিয়াম ও সিসার মানমাত্রা নির্ধারণ করেছে দশমিক শূন্য ৫ মিলিগ্রাম। আর ক্যাডমিয়ামের গ্রহণযোগ্য মানমাত্রা নির্ধারণ করেছে দশমিক শূন্য শূন্য ৫ মিলিগ্রাম। অথচ এর বহুগুণ বেশি (১০০ গুণের বেশি) রয়েছে বাংলাদেশের সুপেয় পানির সবচেয়ে বড় উত্স নদীগুলোয়। আর শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে পরিশোধনের পর নির্গত তরলের ক্ষেত্রে আর্সেনিকের মাত্রা দশমিক শূন্য ৫, ক্রোমিয়াম ১, ক্যাডমিয়াম দশমিক ৫ ও সিসার মানমাত্রা ১ মিলিগ্রািম নির্ধারণ করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এছাড়া সেচভূমির জন্য সিসার গ্রহণযোগ্য মাত্রা দশমিক ১, ক্রোমিয়ামের ১, ক্যাডমিয়ামের দশমিক ৫ ও আর্সেনিকের দশমিক ২ মিলিগ্রাম। কিন্তু অধিকাংশ নদ-নদীর পানিতেই এসব ধাতুর উপস্থিতি নির্ধারিত মাত্রার অনেক বেশি ।
সামনের দিনে আরো ভয়ঙ্কর দূষণের মুখে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ গাছ গুলো কি কি রোগে আক্রান্ত হবে তা গবেষণার দাবি রাখে। যতই গাছ মরছে, ততই বাড়ছে লূটেরাদের ফরেস্ট পেনিট্রেশন!
৩। পাঁচ তারা লূটেরা চক্রঃ *ঢাকার মাফিয়া-*স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতি বাজ, *দুর্নিতিবাজ প্রশাসন- *বনজীবিদের লোভী অংশ এবং *সুন্দরবনের স্থানীয় দস্যু চক্র গুলোঃ বাঘ সুন্দরবনের খাদ্য শৃঙ্খলের সর্বোচ্চ স্তরে অবস্থান করায় এই পাঁচ শ্রেণীর লূটেরা সবসময়ই বাঘ মেরে সুন্দরবনে মানব পেনিট্রেশন সহজ করতে চেয়েছে। এতে করে বাঘের চামড়া পাচারকারী সময়ে সময়ে বাঘ মেরেছে, হরিণ শিকারি যখন তখন নিরীহ হরিণ মেরে মিট এবং লেদার পাচার করেছে, লোভী মৌয়ালরা (বংশ পরম্পরায় নয়) বেশি মৌচাক কেটেছে (নৌকার দাগ দেয়া অংশের পানিতে ডুবার মত দুর্ণিতি সহায়ক ব্যবস্থার সুবাদে), জেলে বেশি মাছ এবং রেণু আহরণ করেছে, কাঠুরে বেশি কাঠ কেটেছে এবং দস্যুরা পাচার করেছে। বনবিভাগের লোকেরা প্রতিটি ক্ষেত্রে বখরা পেয়েছে, খুলনা বরিশাল বিভাগের/ সিটির নেতারা সরাসরি এই লূটেরা ব্যবসা গুলো ওউন করেছে।
বাঘ হত্যার পিছনের রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা
এই পাঁচ তারা চক্রের উচ্চ ধাপে যেহেতু মেয়র সহ বৃহত্তর খুলনা এবং বরিশাল বিভাগের রাজনৈতিক দলের নেতারা রয়েছে, তাই তাদের আইডেন্টিফাইড না রেখে সুন্দরবন রক্ষার কোন প্রচেস্টা কাজে আসবে না। চোর তারাই, তারাই বনে আগুন দিয়ে পরিষ্কার করে ধানের জমি এবং আবাসন ব্যবসা চালাচ্ছে।
এই দুর্বিনীত মাফিয়া দস্যূ চক্র চিহ্নিত না করে, শাস্তি না দিয়ে, রাজনৈতিক এবং আইনগত দিক থেকে প্রতিহত না করে কিংবা একই রাজনৈতিক বলয়ে তাদের উপস্থিতির কারনে রাজনৈতিক আন্দোলনে না গিয়ে রাজধানী কেন্দ্রিক সামাজিকপদক্ষেপে সুন্দরবন টিকানো যাবে না।
চিংড়ীর রেণু সংগ্রহ সুন্দরবনের জলজ পরিবেশের ভয়াবহ ক্ষতি করছে!
৪। চিংড়ীর রেণুঃ সুন্দরবন উপকূলীয় নদ-নদীতে বাগদা চিংড়ির পোনা ও গলদার রেণু আহরণের জন্য অবাধে ব্যবহার হচ্ছে নিষিদ্ধ নেট জাল। ক্ষুদ্র ফাঁসযুক্ত এ জাল দিয়ে একটি বাগদা বা গলদা চিংড়ির পোনা ও রেণু সংগ্রহ করতে অন্তত ৪৬২ প্রজাতির মাছের ডিম, পোনা ও প্লাংকটন নষ্ট হয়। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে সুন্দরবনসহ উপকূলীয় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মত্স্যসম্পদ ও জীববৈচিত্র্য। বাংলাদেশ মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, খুলনার কয়রা ও পাইকগাছাসহ আশপাশে একটি বাগদা পোনা আহরণে ১১৯টি চিংড়ি প্রজাতির পোনা, ৩১২টি জুপ্লাংকটন প্রজাতি ও ৩১টি সাদা মাছ প্রজাতির পোনা নষ্ট হয়। এছাড়া সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটসহ অন্যান্য উপকূলীয় এলাকায় একটি পোনা ধরতে গিয়ে ৪৬টি চিংড়ি প্রজাতি, ৩৫টি জুপ্লাংকটন প্রজাতি ও ১১টি সাদা মাছ প্রজাতির পোনা ধ্বংস হচ্ছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য ও মত্স্যসম্পদ দুটিই ধ্বংস হচ্ছে। রেণু সংগ্রহে বিষাক্ত ক্যামিক্যাল ব্যবহারের নজিরও রয়েছে। রেণু আহরণ সুন্দরবনে মানুষের প্রবেশ মাত্রাতিরিক্ত করেছে এবং প্রাণী চক্রকে সংকটাপন্ন করেছে।
চাষ না করে ওয়াইল্ড সোর্স থেকে মধু আহরণ, চাষ না করে মৎস্য আহরণ বা নিধন, পাখি শিকার, সুন্দরবন সহ অন্যান্য প্রাকৃতিক বন থেকে মধু, মোম, চিংড়ী পোনা, বাঘ এবং হরিনের চামড়া, মিট সহ অনেক অনেক উদ্ভিদ্য এবং প্রাণীজ সম্পদ আহরণের ন্যাচারাল এবং প্রাচীন ব্যাপারগুলো আমাদের ওয়াল্ড লাইফ, জৈব বৈচিত্র, মৎস্য প্রজনন এবং পরাগায়নের মত মৌলিক ব্যাপার গুলোকে বিষিয়ে তুলছে।গত ২-৩ দশকে বিশেষ জাল এবং বিষাক্ত ক্যামিক্যাল দিয়ে চিংড়ির রেণু সংগ্রহ করার প্রাণঘাতী পদ্ধতি সুন্দরবনের অপূরণীয় ক্ষতি করেছে।
অত্যন্ত ভয়ের কথা হোল, উল্লেখিত পাঁচ চক্রের যার পর নাই অবারিত সম্পদ লুণ্ঠন এবং রেণু সংগ্রহ অব্যহত থাকলে আশে পাশের এলাকায় কোন ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র না থাকলেও শুধু রাজনৈতিক দুর্বিত্তায়িত প্রাণীজ-জলজ-বনজ সম্পদ আহরণ ভিত্তিক অগ্রসরমান ফরেস্ট পেনিট্রেশন এবং এতদসম্পর্কিত অনাচারে এমনিতেই ২০-৩০ বছরের মধ্যে সুন্দরবন হারিয়ে সাধারণ উদ্যান যাবে।
৫। মংলা বন্দরের রিমেইক এবং কয়লা মাস ট্রান্সপোর্টেশন ভিত্তিক প্রস্তাবিত পায়রা বন্দরঃ
সুন্দরবন ঘিরে ১৫০ শিল্প প্রকল্প
সুন্দরবন ধংস প্রচেষ্টায় নতুন প্রাণ দিয়েছে মংলা বন্দরের এলপিজি ভিত্তিক রি-মেইক (সরকার রান্নার গ্যাস সরবারহ থেকে সরে এসে বেসরকারি এলপিজির বাজার উন্মুক্ত করতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে)। এতদিন বিপিসি এবং ৬টা বেসরকারি কোম্পানি সীমিত আকারে তাদের মংলা এবং চট্রগ্রাম ভিত্তিক নিজস্ব ছোট ছোট এলপিজি টার্মিনালের মধ্যমে আমদানি করছে তবে দেশি কোম্পানি গুলো মংলা ভিত্তিক এল পি জি হাব তৈরির মহা পরিকল্পনায় আছে, বিদেশী LPG giant LAUGFS(Srilanka) এবং TOTAL GAZ (France) ও এই পরিকল্পনায় রয়েছে। এখানে বটম লাইন হচ্ছে মংলায় স্থাপনা যত বাড়বে, সুন্দরবনে পেনিট্রেশন তত বাড়বে এবং নৌ চলাচলের কারনে প্রানীকূলের নাইট লাইফ ততই বিপর্যস্ত হবে। উল্লেখ্য মংলা কোনভাবেই একটি সমদ্রু বন্দর হবার যোগ্যতা রাখে না। অন্যদিকে মূল নৌ রুট গুলো একের পর এক সিল্টেড আপ হয়ে যাবার কারনে এবং বালু তোলা ভিত্তিক অপরিকল্পিত ড্রেজিং এর কারনে নতুন নতুন নৌ রুট তৈরি হচ্ছে, অর্থাৎ অনেক বেশি অভ্যন্তরীণ রুটে পণ্য পরিবহন হচ্ছে এতে সুন্দরবনের স্বাভাবিকতা নস্ট হচ্ছে।
কয়লার মাস ট্রান্সপোর্টেশনের জন্য পায়রায় নতুন বন্দর পরিকল্পনা সুন্দরবনের জন্য নতুন আঘাত। উপরোল্লিখিত রাজনৈতিক নেতৃত্বে পাঁচ চক্রের লোকেরাই ভূমি দস্যু হিসেবে নতুন করে আবির্ভুত হয়েছে। রামপালে ভয়ংকর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভূমি অধিগ্রহণ এদের হাতেই। দেখা যাচ্ছে সুন্দরবন ঘিরে ১৫০ শিল্প প্রকল্প! বন এবং পরিবেশ মন্ত্রীকে এই ব্যাপারে সহনীয়ই মনে হচ্ছে কেননা সুন্দরবনের পাশের এলাকার লোক হয়ে দুর্বিত্ত অংশের নেতৃত্বে তিনিও অগ্রসর একজন।
অর্থাৎ আবাসন এবং কৃষি চাপের পাশাপাশি সুন্দরবনকে এখন ২টি বৃহৎ বন্দরের অনুকূলে গড়ে উঠা শিল্পের চাপও নিতে হবে।
উল্লেখ্য গলাচিপা নদীর (কুয়াকাটা) পশ্চিমের এলাকাকে সুন্দরবনের প্রাণ বৈচিত্র এবং পাথরঘাটার প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন খেত্রের রক্ষা কবচ বিবেচনা করে এই এলাকাকে বিদ্যুৎ এবং বন্দর অবকাঠামো , বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান সম্পর্কিত সম্ভাব্য ক্রস ড্যাম সহ সকল ম্যান মেইড স্থাপনা কিংবা নদী শাসনের বাইরে রাখার দাবি জোরালো করা দরকার। তাই প্রস্তাবিত পায়রা বন্দরকে পায়রার মোহনা থেকে সরিয়ে গলাচিপার মোহনায় স্থানান্তর এর দাবি জানাই। এতে শিল্পের পেনিট্রেশন অবকাঠামো গত ভাবে অনুন্নত বরিশাল-পটুয়াখালি-গলাচিপা-ভোলায় অবারিত হবে।
৬। ভারতীয় কয়লার সম্ভাব্য বাজার এবং কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রঃ ১৩২০ মেগাওয়াটের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র যে সুন্দরবনের সমূহ ক্ষতি (শব্দ পানি বায়ু co2 so2) সহ যাবতীয় দূষণ, ভারী ধাতু/হাই পারটিক্যাল নিঃসরণ, পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি, ঢেউ, মাস কোল ট্রান্সপোর্টেশন, প্রাণীকুলের নাইট লাইফ ক্ষতিগ্রস্ত করা, বনে ব্যাপক হিউম্যান পেনিট্রেশন ইত্যাদি) করবে তা নিয়ে বাংলাদেশের তরুণ গবেষক এবং এক্সপার্ট গণ সবাই একমত। বাংলাদেশে অন্য কোন বিষয়ে এত উচ্চ মান গবেষণা এবং ইন্টেলেকচুয়াল মুভ চোখে পড়ে না। সময় সাক্ষী থাকবে যে, বর্তমান সরকার তার নিজ দেশের নাগরিকের এই সব ইন্টেলেকচুয়াল ইফর্টকে অসম্মান করে একটি অস্পষ্ট আর্থিক চুক্তি এবং লোকদেখানো ভূয়া ইটিপীর মাধ্যমে সুন্দরবনেরই একটি সাবেক অংশে প্রাণ এবং পরিবেশের শত্রু কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, অথচ এই কেন্দ্র দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের আরো পূর্বে সরানোর স্কোপ আছে।
তবে যেহেতু কয়লার মাস ট্রান্সপোর্টেশনের জন্য সুন্দরবনের একেবারে নিকটস্থ পায়রায় একটি বন্দরই পরিকল্পনা করা হয়েছে, বুঝা যাচ্ছে রামপাল একটি সাক্সেস পাইলট হয়ে উঠলে এখানে আরো বেশি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে উঠতে পারে।
উল্লেখ্য বাংলাদেশ পাওয়ার সিস্টেম মাষ্টার প্ল্যান ২০১০ এবং ২০১৬ তে যেসব বিকল্প জ্বলানি ভিত্তিক বিদ্যুতের কথা বলা হয়েছে (এল এন জি, নিউক্লিয়ার, উইন্ড, সোলার) তা দুর্বল এবং অগণতান্ত্রিক সরকার কাঠামো, দুর্বল আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং অতি দুর্নিতির কারনে সময়মত প্রস্তুত হবে না, তাই কয়লার উপর একচেটিয়া চাপ আসবে। আর ভয় এটাই যে নিজের ৬৫০০০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুতের জন্য ভারতের নিজেরই যেখানে মান্সম্পন্ন কয়লা নেই (মাত্র ৪ টা ভারতীয় খনিতে আমাদের বড় পুকুরিয়ার মানের কয়লা আছে), ফলে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ উপকূল হয়ে উঠতে পারে, নিন্ম মানের ভারতীয় কয়লার এক বিশাল বাজার। এটাই হবে সুন্দরবন ধংসের শেষ পেরেক।
সংক্ষেপে প্রাকৃতিক এবং জলবায়ু জনিত বিপর্যয়ের বাইরে সুন্দরবন ২ ধরনের মহা নির্যাতন ভোগ করছে। একটি রাজনৈতিক ভাবে মটিভেটেড শিল্প এবং লুন্ঠন চক্র, অপরটি ভয়ংকর সব পদ্ধতিতে বনজীবিদের অবারিত সম্পদ আহরণ।
বন রক্ষার বিভিন্ন দিক
ক। বনজীবিদের বিকল্প কর্মসংস্থানঃ
অবারিত প্রাকৃতিক উৎস থেকে অনিয়ন্ত্রিত কৃষি ও মৎস্য সম্পদ আহরণ গ্রামীণ কর্মসংস্থানেরআদিম উপায় হলেও জলবায়ু পরিবর্তন এবং অনিয়ন্ত্রিত হিউম্যান ইন্টারভেনশন এর কারনে প্রাণ এবং পরিবেশ এর চরম বিপর্জয়ের ঝুকির উপর দাঁড়িয়ে আমাদের আজ কর্মসংস্থানের সেসব মধ্যমকে পুনরায় ভাবনায় আনতে হবে।
বন বাঁচাতে সবার আগে বনজীবিদের বাঁচাতে হবে।পৃথিবীর সবচাইতে ঘনবসতিপূর্ন দেশে কৃষি পন্য উৎপাদন পুরোপুরি প্রকৃতির উপর ছেড়ে না দিয়ে, পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিক চাষাবাদ ভিত্তিক করে তুলে প্রাকৃতিক কৃষি ও মৎস্য সম্পদের উৎসগুলোকে রক্ষায় মনোযোগী হতে হবে।
বনজীবিদের বিকল্প কর্মসংস্থান বন বাঁচানোর ১ম পর্যায়।
খ। রাজনৈতিক মাফিয়াদের সনাক্ত করণ, আইনগত ভাবে প্রতিহত করন, এদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আন্দোলনে যাওয়া।তবে বনজীবিদের অর্থনৈতিক ভাবে প্রচণ্ড অভাবী কিংবা প্রান্তিক সমাজে রেখে এই পর্যায় ফলদায়ক হবে না।
গ। ৩য় পর্যায় হোল সকল নৌরুট সরানো, হিউম্যান পেনিট্রেশন (সম্পদ আহরণ হোক কিংবা পর্যটন) রোধ। অতিমাত্রার নিয়ন্ত্রিত পর্যটন বাস্তবায়নের ব্যাপারটা একেবারেই অনালোচিত। আমরা বাঘের আলোকচিত্র চাই না। বাঘের আন ডিস্টারবড, নিরাপদ এবং স্বাভাবিক স্থল এবং জলজ বিচরণ চাই, হরিণের বিস্তারে বনের গাছ সংরক্ষণের নিশ্চয়তা চাই।
ঘ। ৪র্থ পর্যায় হোল প্রাণঘাতি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা পোর্ট সরানো এবং মংলা বন্দরের প্রধান রুটকে চলাচলের উপযোগী করে সুন্দরবনের ভিতরের জালিকার নদীর অন্য সকল রুটের বাণিজ্যিক ব্যবহার বন্ধ করা । অন্যথায় এক থেকে দুই দশকের ব্যবধানে সুন্দরবনের আশেপাশের এলাকায় বায়ু, শব্দ এবং পানি দূষণে, পানি এবং বায়ুর তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে ম্যানগ্রোভ এবং প্রাণী সুরক্ষার লেয়ার গুলো নষ্ট হয়ে পড়বে। বাঘ এই লেয়ারের উচ্চ স্তরে অবস্থান করছে। বাঘ শেষ হলে সুন্দরবন এর সম্পদ লূটে পুটে খাওয়া সহজ হবে।
বাঘ-হরিণ, কুমির-নদী, সুন্দরী-গোলপাতা, বানর-পাখপাখলি এবং অন্য হাজারো প্রাণের আধার ব্যতীত সুন্দরবনের দৃশ্যত কোন মানব মিত্র নেই। সরাসরি দলীয় ব্যানারে সুন্দরবন রক্ষার মেনিফেস্টো দিতে অস্বীকার করা, ভারতের অবৈধ পরিকল্পনার অনুকূলে ইতস্তত করা এবং সুন্দরবনের রক্ষার জন্য রাজনৈতিক আন্দোলনে না যাওয়া (সামাজিক আন্দোলন নয়) ক্ষমতা বলয় ও এর জোট এবং এর বাইরে সকল বাম-ডান-মধ্যপন্থী-জাতীয়তাবাদী সকল রাজনৈতিক দল সুন্দরবনের সরাসরি শত্রু এবং বন লুণ্ঠনকারী হিসেবে বিবেচিত। এটাই চরম বাস্তবতা। চারিদিকে জঘন্য সব মানব শত্রু রেখে এই বাস্তবতায় সুন্দরবন কতদিন টিকে, এই আশঙ্কাকে মূখ্য বিবেচ্য করে বন রক্ষার টপ টু বটম সমন্বিত মহা কর্ম পরিকল্পনা চাই (রাষ্ট্রীয়) যার প্রতি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ঐক্যমত্ত এবং দৃঢ় অঙ্গীকার থাকবে।
সুন্দর বন সুন্দর থাকুক, বাংলাদেশের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা টেকসই হোক!
২| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:০৬
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: অসাধারণ তথ্যপুর্ণ ও গঠন মুলক লিখা লিখা । সুন্দরান ধংসের প্রকুত কারণগুলি ও এর পিছনে দায়ীদের চিহ্নিত করে যে সমস্ত কথা বলা হয়েছে তা সবিশেষ গুরুত্বের দাবী রাখে । শুধু ১৪ কিলোমিটার দুরে রাখলেই যে সুন্দরবন বাচানো যাবে তা নয় । শত শত মাইল দুরে থেকেো যে সুন্দর বনের অনেক বেশী ক্ষতি করা যায় তা ফুটে উঠেছে লিখাটিতে । এর জন্য প্রয়োজন সমন্বিত প্রচেষ্টা , লিখকের এ বক্তব্যের সাথে সম্পুর্ণ একমত । শুধু রাজধানীতে বসে কাগজের পাতায় অনুগল্প অনুকবিতার মাধ্যমে কিছু সমালোচনামুলক লিখা লিখে একে রক্ষা করা যাবেনা । সুন্দরবনের হাজার হাজার টন সুন্দরী কাঠের লাকরী যদি দেশের দক্ষিনাঞ্চলের শহর গুলিতে রান্নার জ্বালানী হিসাবে ব্যাবহার করা হয় তাহলে লিখকের কথা অনুযায়ী ২০ /৩০ বছরের মধ্যে সুন্দরবন এমনিতেই বৃক্ষশুন্য হয়ে যাবে । তাই বনখেকো বিষয়গুলির বিকল্প ্উপায় উদ্ভাবন ও বনখেকো মানুষগুলিকে বিকল্প কর্মে নিয়োগ করে সেই সাথে বন্যপ্রাণী , উদ্ভিদ ও জলাধারকে বনের উপযোগী করে রাখাই হবে সুন্দরবন রক্ষা কবচ । লেখকের এসমস্ত গঠনমুলক বক্তব্যের সাথে সহমত ।
ভাল লাগল লিখাটি , শুভেচ্ছা জানবেন । লিখাটিকে প্রিয়তে নিয়ে গেলাম ।
১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৪৯
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: সুন্দরবনের হাজার হাজার টন সুন্দরী কাঠের লাকরী যদি দেশের দক্ষিনাঞ্চলের শহর গুলিতে রান্নার জ্বালানী হিসাবে ব্যাবহার করা হয় তাহলে .।.।.।। ২০ /৩০ বছরের মধ্যে সুন্দরবন এমনিতেই বৃক্ষশুন্য হয়ে যাবে । তাই বনখেকো বিষয়গুলির বিকল্প ্উপায় উদ্ভাবন ও বনখেকো মানুষগুলিকে বিকল্প কর্মে নিয়োগ করে সেই সাথে বন্যপ্রাণী , উদ্ভিদ ও জলাধারকে বনের উপযোগী করে রাখাই হবে সুন্দরবন রক্ষা কবচ ।
১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৮
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আমার ব্লগে স্বাগতম।
৩| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:২৯
জুন বলেছেন: আমরা একটি সর্বগ্রাসী জাতি, আমাদের আপাদমস্তক সীমাহীন লালসা। কোন কিছুর কন্সিকোয়েন্স নিয়ে শিক্ষিত,অল্প শিক্ষিত, ধনী দরিদ্র কারোই মাথা ব্যাথা নেই।
১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৪৪
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: কোন কিছুর কন্সিকোয়েন্স নিয়ে শিক্ষিত,অল্প শিক্ষিত, ধনী দরিদ্র কারোই মাথা ব্যাথা নেই।
৪| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৯
অদৃশ্য বলেছেন:
জুন আপুর সাথে সাথে আমিও বলতে চাই... '' আমরা একটি সর্বগ্রাসী জাতি, আমাদের আপাদমস্তক সীমাহীন লালসা '' এবং মাত্রাতিরিক্ত হিংসা ও প্রতি-হিংসা পরায়ণ...
চমৎকার পোষ্ট... দারুনভাবেই সুন্দরবনের জন্য ক্ষতিকর বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন... স্থানীয় রাজনৈতিক শক্তি, মাফিয়া ও প্রশাসনই সম্ভবত সুন্দরবনের সব থেকে বেশি ক্ষতি করেছে এ যাবৎকাল...
শুভকামনা...
১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৫
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: স্থানীয় রাজনৈতিক শক্তি, মাফিয়া ও প্রশাসনই সম্ভবত সুন্দরবনের সব থেকে বেশি ক্ষতি করেছে এ যাবৎকাল. সহমত।
এদের প্রতিহত করাই প্রথম কাজ, রাজনৈতিক আন্দোলনে না গিয়ে শুধু সচেতনতা ভিত্তিক সামাজিক আন্দোলন কাজ করবে না। সামাজিক আন্দোলনে শত্রু মিত্র আইডেন্টিফাই হচ্ছে না। যারা ব্যক্তিগত ভাবে আন্দোলন করছেন তাঁদের নিজ নিজ রাজনৈতিক দল ক্ষমতার বলয়ের কাছা কাছি থাকায় আন্দোলনে নেই।
দেশের পরিবেশ এবং সুন্দরবন ধ্বংসে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক ঐক্যমত্ত দৃশ্যমান।
আমরা একটি সর্বগ্রাসী জাতি, আমাদের আপাদমস্তক সীমাহীন লালসা। কোন কিছুর কন্সিকোয়েন্স নিয়ে শিক্ষিত,অল্প শিক্ষিত, ধনী দরিদ্র কারোই মাথা ব্যাথা নেই। যেমনটা- আপা বলেছেন!
৫| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:২৪
মুরশীদ বলেছেন: চমৎকার এবং সময়োচিত একটি পোস্ট। শেয়ার করার মত। এসব বিষয়ে মানুষকে জানতে হবে। আসলে দেশের শিক্ষিত কম শিক্ষিত অনেকের সুন্দরবনের ব্যাপারে ধারনার কমতি আছে। অন্তত সামাজিক মাধ্যমে তাদের মন্তব্য গুলো দেখে আমার তাই মনে হয়। তাছাড়া দলকানা রা ত বুঝে শুনেই বিরোধী ভূমিকা নিয়েছে। আসলে সুন্দরবনের উদ্ভিদ ও প্রাণীদের জীবন চক্রের উপর আঘাত অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে এবং এর মূল অপরাধী, মানুষ। বন্দর, বিদ্যুৎ অবশ্যই আমাদের দরকার। অধিক মানুষের আনাগোনা বন্ধ করাও দুষ্কর। তাই বিতর্কে না গিয়ে সুন্দরবনের ক্ষতি কিভাবে বন্ধ করা যায় তার উপায় বের করতে হবে। দেশের বুদ্ধিজীবী এবং রাজনীতিবিদদের সুন্দরবন বাঁচানোর অঙ্গিকার এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া এটা সম্ভব নয়। তাহলে মিডিয়া গুলো এমনিতেই সক্রিয় হবে। তবে রামপাল বিদ্যুৎ প্লান্টের বর্তমান লোকেশন পরিবর্তন করা ছাড়া বিকল্প নাই। সুন্দর বনের ব্যাপারে “০” জিরো রিস্ক এপ্রোচ নিতে হবে। সংক্ষেপে অনেকগুলো তথ্য তুলেধরার জন্য লেখককে ধন্যবাদ।
১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৭
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: উচ্চমান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম।
কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নীতি, বিগ-বি এবং রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকার
এই লিখায় আমি ৩টি কন্সেপচুয়াল কথা বলেছি-
১। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে গলাচিপা নদীর পূর্বে সরানো, নিদেন পক্ষে পায়রা নদীর পূর্বে। আর প্রস্তাবিত পায়রা বন্দরকেও গলাচিপা নদীর মোহনায় নেয়া যায়।
২। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শোধন চেকের জন্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট আন্তর্জাতিক অডিট নিয়োগ, তাইলে বুঝা যাবে ইটিপির কপি পেস্ট তথ্য কতটা সত্য, টেকনলজি কতটা সুপার ক্রিটিক্যাল!!
৩। বেসরকারি খাতে কোন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র না দেয়া।
আমাদের দরকার সমন্বিত পরিকল্পনা। আপনি বলেছেন "দেশের বুদ্ধিজীবী এবং রাজনীতিবিদদের সুন্দরবন বাঁচানোর অঙ্গিকার এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া এটা সম্ভব নয়। "
আন্তরিক ধন্যবাদ সহ।
৬| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৪৩
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: বনের পাশেই কয়লা ট্রান্সপোর্টেশন ভিত্তিক বন্দর ঠিক কিভাবে ক্ষতি আনবে তার ব্যাখ্যা একটু বর্ধিত করছি- ১। বন্দর হলে আশে পাশের এলাকায় কোম্পানি- ব্যবসা এবং শিল্পের, লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রির জন্য জমি চাই। পায়রা মোহনার ঠিক পশ্চিমেই সুন্দরবন। প্রথম আলোর রিপোর্টে যে জমি ব্যবসার চিত্র উঠে এসেছে তার অনেক প্রকল্পই পায়রা বন্দর ভিত্তিক নতুন বিজনেজ অপরচুনিটি ঘটিত। ব্ন্দর ব্যবহার লাভজনক হয়ে উঠলে এই অঞ্চলে নতুন জি টু জি এমনকি বেসরকারি কয়লার প্ল্যাট বসানোর উদ্যোগ দেখা যেতে পারে। ২। পায়রা বন্দর হলে খুলনা সাতক্ষীরা বাগেরহাট পিরোজপুর পটুয়াখালি বরগুনা এই সকল এলাকার সব নদী-শাখা নদি-খাল ভিত্তিক সকল নৌ রুট পায়রার দিকে সচল হবে (প্রায় সব এলাকা থেকে শরটেস্ট পথের ভিত্তিতে)। এইসব যার অধিকাংশই সুন্দরবনের ভিতর দিয়ে। ৩। বন্দর হলে দুষণ বাড়বে, তেল-কয়লা-ফ্লাই এশ ভর্তি জাহাজ এর ট্রান্সমিশন বাড়বে-কিছু কিছু ডুববে, ওয়েস্ট ডাম্পিংও বাড়বে। আমার ব্যক্তিগত অভিমত হোল বন্দর পায়রা থেকে পুর্বে গলাচিপার মোহনায় (কুয়াকাটায়) করা। তবে যেহেতু এই আলোচনা শুধু মাত্র সুন্দরবনের শত্রু মিত্র নির্নয় এবং বন রক্ষা বিষয়ক হাই লেভেল আলোচনা তাই, দেশের বিদ্যুৎ এবং বন্দর অবকাঠামোর অনুকূলে যেতে গিয়ে পরিবেশে ক্ষতির ট্রেড অফ নিয়ে আলোচনা একেবারেই আনি নাই।
৭| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৭
আহমেদ জী এস বলেছেন: এক নিরুদ্দেশ পথিক ,
সুন্দরবনের টোটাল ইকোলোজির পাই-পয়সার হিসেব নিয়ে ,ব্লগের এই স্বল্প পরিসরের মাঝেও বিশদ এক অনবদ্য পোস্ট ।
৩ ও ৫ নং কমেন্টের সাথে সহমত পোষনের সাথে সাথে আপনার অনেকাংশে সঠিক বিশ্লেষন, বস্তুনিষ্ঠ প্রস্তাবনাতেও অকুন্ঠ সমর্থন জানাচ্ছি ।
তবে সবার আগে উচিৎ হবে আপনার ভাষ্যমতে পাঁচ তারা লূটেরা চক্রকে বাঘবন্দি করা । কারন এরাই ঘুণ পোকার মতো সুন্দরবনকে কুড়ে কুড়ে খেয়ে ছোবড়া বানিয়ে ফেলছে । পরে শকুনদের মোকাবেলা । সেটা একমাত্র রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া সম্ভব নয় । সেটা যখন সুদূর পরাহত তখন এই নেংটি পরা নিধিরাম আমজনতার বজ্রকঠিন হুঙ্কার দেয়া ছাড়া আর কোনও পথ খোলা রাখেনি কেউ ।
১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৫০
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: সাপোর্টিভ মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া।
সেটা একমাত্র রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া সম্ভব নয় । সেটা যখন সুদূর পরাহত তখন এই নেংটি পরা নিধিরাম আমজনতার বজ্রকঠিন হুঙ্কার দেয়া ছাড়া আর কোনও পথ খোলা রাখেনি কেউ ।
৮| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:০৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অসাধারন!
বরাবরের মতোই দারুন তথ্যপূর্ন, দিক-নির্দেশনা পূর্ণ পরিপূর্ণ ব্লগ
আপনার বক্তব্যই কোট করছি-
বাঘ-হরিণ, কুমির-নদী, সুন্দরী-গোলপাতা, বানর-পাখপাখলি এবং অন্য হাজারো প্রাণের আধার ব্যতীত সুন্দরবনের দৃশ্যত কোন মানব মিত্র নেই। সরাসরি দলীয় ব্যানারে সুন্দরবন রক্ষার মেনিফেস্টো দিতে অস্বীকার করা, ভারতের অবৈধ পরিকল্পনার অনুকূলে ইতস্তত করা এবং সুন্দরবনের রক্ষার জন্য রাজনৈতিক আন্দোলনে না যাওয়া (সামাজিক আন্দোলন নয়) ক্ষমতা বলয় ও এর জোট এবং এর বাইরে সকল বাম-ডান-মধ্যপন্থী-জাতীয়তাবাদী সকল রাজনৈতিক দল সুন্দরবনের সরাসরি শত্রু এবং বন লুণ্ঠনকারী হিসেবে বিবেচিত। এটাই চরম বাস্তবতা। চারিদিকে মানব শত্রু রেখে এই বাস্তবতায় সুন্দরবন কতদিন টিকে, এই আশঙ্কাকে মূখ্য বিবেচ্য করে বন রক্ষার টপ টু বটম সমন্বিত মহা কর্ম পরিকল্পনা চাই (রাষ্ট্রীয়) যার প্রতি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক ঐক্যমত্ত এবং অঙ্গীকার থাকবে।
সুন্দর বন সুন্দর থাকুক, বাংলাদেশের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা টেকসই হোক!
+++++++++++++++++
১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৫৪
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: হ্যাঁ বিদ্রোহী ভাই, মোটা দাগে এটাই বটম লাইন।
৯| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:০৫
মো: হাসানূর রহমান রিজভী বলেছেন: গঠনমূলক সময়োপযোগী একটি লেখা,আমাদের এই সমাজে আমরা নিজেরা নিজেদের শত্রু।
১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২১
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ।
১০| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৮
গেম চেঞ্জার বলেছেন: সুন্দরবন যে কত বড় সম্পদ আর সেটার সুবিধাভোগী আমরা সেটা ৯০ শতাংশ বাঙালিই জানে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা দেওয়া কত বড় প্রাপ্তি সেটা অনুধাবন আমরা করতে পারব না।
সবচেয়ে বড় কথা আমাদের বনাঞ্চল কম। ২৫% বনাঞ্চলের জায়গায় (প্রক্বত) ৭% এ এসে ঠেকেছে!! অফিসিয়ালি ১১ এর মতো থাকলেও এটা অনেক কম।
পার্শবর্তী দেশ ভারতের ২৪ শতাংশ ভুমি এখনো বনাঞ্চল!! আমাদের ভুমিদস্যু ও ইতর শ্রেণির লোভী রাজনৈতিকদের কারণে আমরা জাতীয় সম্পদ, ইকোসিস্টেমের এলাকা খোয়াচ্ছি!
বন থেকে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে বনজ সম্পদ আহরণ করলে এত বড় সর্বনাশ হতো না!
পানির স্রোত কমে যাওয়ায় নদীগুলোর মৃত্যু হয়েছে!! এর সাথে সুন্দরবনের ইকোসিস্টেমও নষ্ট হয়েছে!! আপনার সাথে কনভার্সেশনেই জানলাম এখন সুন্দরবনের মোট এলাকার ৫০%ও টিকে আছে কি-না সন্দেহ আছে!
আমাদের সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা ছাড়া উপায় নেই এখন আর!! জনগণবান্ধব সরকার না হলে যেটা হয় সেটাই হচ্ছে এখন!!!
১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৪
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: সবচেয়ে বড় কথা আমাদের বনাঞ্চল কম। ২৫% বনাঞ্চলের জায়গায় (প্রক্বত) ৭% এ এসে ঠেকেছে!! অফিসিয়ালি ১১ এর মতো থাকলেও এটা অনেক কম। পার্শবর্তী দেশ ভারতের ২৪ শতাংশ ভুমি এখনো বনাঞ্চল!! আমাদের ভুমিদস্যু ও ইতর শ্রেণির লোভী রাজনৈতিকদের কারণে আমরা জাতীয় সম্পদ, ইকোসিস্টেমের এলাকা খোয়াচ্ছি! বন থেকে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে বনজ সম্পদ আহরণ করলে এত বড় সর্বনাশ হতো না!
নিয়মতান্ত্রিকতা এবং ইন্সটিটুশনাল ব্যাপার গুলোর প্রতি আমাদের জাতীয় জীবনেই অনীহা আছে। আমাদের অনেক অনেক কাজ করতে হবে, সম্পদ ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রিত করতে, জন সচেতনতা আনতে। পরিকল্পনাবিদদের মাঝে আর টেকসই উন্নয়নের সেন্স আনতেও মেলা কাজ করতে হবে।
১১| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:২৬
চিন্তিত নিরন্তর বলেছেন: আমরা নিজেরাই ভালোনা। লোভ এত বেশি ভাবা যায়না। যে যার ধান্দায় আছে। সুন্দরবন ইতিহাস হউক সেটা আমরা চাইনা।
১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৫
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: সুন্দরবন "চকোরিয়া সুন্দরবন" হোক সেটা আমরা চাই না। আমাদের অবহেলায় এই সাম্প্রতিক বছর গুলোতেই "চকোরিয়া সুন্দরবন" হারিয়ে গেছে।
১২| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:০৬
খোলা মনের কথা বলেছেন: বাঘ-হরিণ, কুমির-নদী, সুন্দরী-গোলপাতা, বানর-পাখপাখলি এবং অন্য হাজারো প্রাণের আধার ব্যতীত সুন্দরবনের দৃশ্যত কোন মানব মিত্র নেই। সরাসরি দলীয় ব্যানারে সুন্দরবন রক্ষার মেনিফেস্টো দিতে অস্বীকার করা, ভারতের অবৈধ পরিকল্পনার অনুকূলে ইতস্তত করা এবং সুন্দরবনের রক্ষার জন্য রাজনৈতিক আন্দোলনে না যাওয়া (সামাজিক আন্দোলন নয়) ক্ষমতা বলয় ও এর জোট এবং এর বাইরে সকল বাম-ডান-মধ্যপন্থী-জাতীয়তাবাদী সকল রাজনৈতিক দল সুন্দরবনের সরাসরি শত্রু এবং বন লুণ্ঠনকারী হিসেবে বিবেচিত। এটাই চরম বাস্তবতা। চারিদিকে জঘন্য সব মানব শত্রু রেখে এই বাস্তবতায় সুন্দরবন কতদিন টিকে, এই আশঙ্কাকে মূখ্য বিবেচ্য করে বন রক্ষার টপ টু বটম সমন্বিত মহা কর্ম পরিকল্পনা চাই (রাষ্ট্রীয়) যার প্রতি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ঐক্যমত্ত এবং দৃঢ় অঙ্গীকার থাকবে।
আমরা বাঙ্গালী জাত র্নিলজ্জ বেহায়া জাত। সব যোগ্যতার চেয়ারে বসে আছে অযোগ্য লোক। তাদের একটি মাত্র স্বপ্ন ‘উল্টে পাল্টে দে মা লুটেপুটে খায়’। মা, মাটি, জাতি কোনটাই তাদের ভাবনা ভিতর নেই। সব কিছুর অবকাঠামো ঘুনে ধরা খুটির মত নড়বড়ে। কে শক্তিশালী করবে??? যারা শক্তিশালী করবে তারাই দেশপ্রেম নামে বুলি আওড়ায় আর অন্য দিকে শিকড় কাটে।
সুন্দরবন আমাদের মুল্যবান সম্পদ সেটা উপলব্ধি করতে পারছি না কেন?? হাজার বিদ্যুৎ কেন্দ্র পয়দা করা যাবে সারা দেশে কিন্তু সুন্দরবন আর একটি তৈরি করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। এখনো সময় আছে ‘দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝার চেষ্টা করি’।
দেশের সম্পদ রক্ষা আমাদেরই করতে হবে। আমাদের সম্পদ রক্ষ করতে ভীন দেশীরা আসবে না।
বেঁচে থাকুক সুন্দরবন, বেঁচে থাকুক প্রকৃতি, সুন্দর হোক বাংলাদেশ....
১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৮
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: সুন্দরবন নিয়ে ইন্টেলেকচুয়াল লেভেল অনেক কাজ করেছেন দেশের তরুণতা, এটা আশা জাগানিয়া। তার পরেও সামাজিক আন্দোলনে কোন জন সম্পৃক্ততা নেই, আর রাজনৈতিক আন্দোলন তো একেবারেই নেই। এটা খুব হতাশার। খুব.।
দেশের সম্পদ রক্ষা আমাদেরই করতে হবে। আমাদের সম্পদ রক্ষ করতে ভীন দেশীরা আসবে না।
আন্তরিক ধন্যবাদ রইল।
১৩| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:২৯
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: তথ্যসমৃদ্ধ ও শ্রমসাধ্য পোস্ট। সুন্দরবনের প্রয়োজনীয়তা ও উপকারিতা সবার উপলব্ধিতে নাই। ফলে এই ম্যানগ্রোভের মৃত্যু প্রায় অনিবার্য হয়ে উঠেছে।
১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৯
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সুন্দরবনের প্রয়োজনীয়তা ও উপকারিতা সবার উপলব্ধিতে নাই। ফলে এই ম্যানগ্রোভের মৃত্যু প্রায় অনিবার্য হয়ে উঠেছে।
১৪| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৪
জুন বলেছেন: অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন এই পোষ্টটি স্টিকি হয়েছএইদেখে ভালোলাগলো ।
"বন্ধ করো তোমাদের আগ্রাসন " ।
সুন্দরবনের কটকায় সিডরে ভেঙ্গে পড়া এই গাছের গুড়ি কি হাত উচিয়ে সবাইকে এটাই বলছে!!
সুন্দরবনে স্টাডি ট্যুরে গিয়ে ছবিটি আমার ছেলের তুলেছিল , ছবিটি ব্লগে একবার ব্লগে শেয়ার করেছি । আপনার পোষ্টের সাথে সঙ্গতিপুর্ন মনে হওয়ায় আবারো তুলে দিলাম নিরুদ্দেশ পথিক।
১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩১
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আপা, পোস্টটিকে রিচ করেছেন এই অসাধারণ ছবিটি দিয়ে।
আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানবেন। আপনার ছেলেকে ধন্যবাদ জানাবেন। প্লিজ!
১৫| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২০
eBooks Head বলেছেন: ন্যবাদ
১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩২
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও!
১৬| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৬
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: এ রিয়েল ব্লগিং !!
বিশাল তথ্যের সমাহার ! পরিশ্রমী পোস্টটি যথাযথ কতৃপক্ষের নজরে আসুক , তাদের শুভ বোধের উদয় হোক ।
অভিনন্দন নিন ব্লগার ।
১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৩
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অভিনন্দন গ্রহন করলাম ধন্যবাদ সহ, লিটন ভাই!
১৭| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫১
নোমান প্রধান বলেছেন: বেশি বার বেড়েছে সরকারের
১৮| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:০১
পয়গম্বর বলেছেন: চমৎকার একটি পোস্ট! ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম।
২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৩৩
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে দিলাম।
১৯| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:০৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: পোষ্ট ষ্টীকি করায় অভিনন্দন লেখক, কতৃপক্ষ দুজনকেই।
একটা ফেবু ষ্ট্যাটাস শেয়ােরর েলাভ সামলােত পারলাম না।
"সুন্দরবন' আমার 'মা,
ধ্বংস হতে দেবো না"
সুন্দরবন ধ্বংস করে,
বিদ্যুৎ কেন্দ্র চাই না...
ভিডিও ক্লিপ টি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন, একটি শেয়ার একটি প্রতিবাদ হয়ে থাকবে...
"ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রিংলা এসেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ খবর জানতে পেরে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে বিক্ষোভ প্রদর্শনের আয়োজন করা হয়। হাতে লেখা পোষ্টার দিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। প্রথমে ওরা তিনজন ছিল, পরে তা বিশজনে রূপ নেয়। তাদের একটাই কথা- ভারতের দালালরা হুশিয়ার সাবধান। হতে পারে ছোট প্রতিবাদ। কিন্তু তারপরও হাইকমিশনারকে শুনিয়ে দেয়া হয়েছে,
বর্তমান ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকারের মুষ্টিমেয় কিছু ভারতীয় চামচা পুলিশ বন্দুক দিয়ে জনপ্রতিবাদ ও আন্দোলন ঠেকানোর চেষ্টা করছে।
বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে সামনে গণদাবী আদায়ের ইতিহাস তৈরী হতে যাচ্ছে। সবাইকে সে ইতিহাসে অংশ নেয়ার আহবান রইল।
১৮ আগস্ট: দেশজুড়ে ছাত্র বিক্ষোভ।
২০ আগস্ট: সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান। স্থানীয়ভাবে পাড়া মহল্লায় অবস্খান নিন।
অবিলম্বে রামপাল চুক্তি বন্ধ কর করতে হবে,"
ভিডিও ক্লিপিট শেয়ার দিতে পারলাম না। ছোট্ট হলেও দারুন প্রতিবাদ।
আগ্রহীরা দেখতে পারেন।
JgtSheth/posts/156412301430293
২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:২৬
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ১৮ আগস্ট: দেশজুড়ে ছাত্র বিক্ষোভ।
২০ আগস্ট: সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান। স্থানীয়ভাবে পাড়া মহল্লায় অবস্খান নিন।
দল মত নির্বিশেষে সামাজিক আন্দোলনে অংশ গ্রহন করা দরকার। আমি সুন্দরবনের শত্রু হিসেবে ৬টি পয়েন্ট তুলেছি, জাতীয় কমিটি বনরক্ষায় শুধু মাত্র ৬ নং ইস্যুতে আন্দোলন করছে। এটাও একটা বিরাট প্রাপ্তি। আমি এই আন্দোলনের অনেককেই ব্যক্তিগত ভাবে চিনি, নিবেদিত এই দেশপ্রেমিক মানুশ গুলোকে আমি সম্মান করি।
আর আরেকটি কথা, ঢাকার পাশাপাশি আন্দোলন সুন্দরবন এলাকায় নিতে হবে, মানুষকে তাঁদের বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবির ব্যাপারে সচেতন করতে হবে।
সর্বোপরি নাগরিক আন্দোলন রাজনৈতিক আন্দোলন এ নিতে হবে, যার জন্য যাই রাজনৈতিক সদিচ্ছা। নচেৎ সুন্দরবনের উদ্ভিজ্জ প্রানীজ জলজ সম্পদ লূট হতে হতে আর জমির জন্য আগুন লাগতে লাগতে এমনিতেই বন শেষ হবে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দরকার হবে না।
আশা রাখি আনু মুহাম্মদ স্যার বাকি পয়েন্ট/বাকি বিষয় গুলোও সামনে আনবেন, নচেৎ সরকারের সাথে একটা সরাসরি কনফ্রন্টেশন আসবে যে, যেখানেই উন্নয়ন প্রজেক্ট সেখানেই জাতীয় কমিটির বাঁধা। শুধু বিরোধিতা না করে, কমিটির কাছে একাধিক টেকসই বিকল্প সহ সামাধান এবং ন্যায্য বিরোধিতা চাই। বাংলাদেশের বিকল্প এনার্জি প্ল্যান কি হবে সেটা থিউরিটিক্যালি না বলে রাইট পটেনশিয়াল (সৌর, বায়ু, টাইডাল, হাইড্রো, সোলার থার্মাল, জিও থার্মাল ইত্যাদি রিনিউএবল ফরমেটের বিদ্যুৎ এর আসলে কোথায় কত টুকূ রিসোর্স আছে তা সমীক্ষা পুর্বক) যাচাই করে জাতীয় কমিটির একচেটিয়া কয়লা বিরোধিতা করা দরকার।
উনারা কয়লার বিরোধিতা করেন, কিন্তু বিনিময়ে সরকার কিভাবে বিদ্যুৎ উতপাদন করবেন, কোথায় করবেন, কোথায় বন্দর হলে ভাল, রিনিউএবল এর কস্ট মডেল এবং টেকসই পটেনশিয়াল কোন খাতে কি আছ্ তা গভীর সমীক্ষা করে বাংলাদেশ ২০২১/৩১/৪১ এনার্জি পরিকল্পনা বাতলে দিতে হবে। জাপানি কোম্পানী টোকিও ইলেকট্রিক এর কথা পাওয়ার সিস্টেম মাষ্টার প্ল্যান ২০১০ এবং ২০১৬ এর ফর্মাল রিভিউ কিংবা ক্রিটিক কিংবা এর বিপরীতে বিকল্প এনার্জি প্ল্যান উনারা দেননি। খালি বলছেন ৫ বছরেই রিনিউএবলে দেশ নাকি ভরে দিতে পারবেন!
সমন্বিত পরিকল্পনায় পুর্ন এবং টেকসই সমাধান সহ আন্দোলন এবং সেখানে সাধারনের অংশ গ্রহন কাম্য।
২০| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:১০
প্রামানিক বলেছেন: তথ্যপুর্ণ ও গঠন মুলক অসাধারণ পোষ্ট। ধন্যবাদ
২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:২৯
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।
২১| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:২৩
মোঃ মঈনুদ্দিন বলেছেন: আপনার চমৎকার যুক্তি ও তথ্যবহুল পোস্টটির গুরুত্ব ব্লগ কর্তৃপক্ষ স্টিকি করে বুঝিয়ে দিয়েছেন। আপনার পোস্ট এবং সকল মন্তব্য পর্যবেক্ষণ করে এটা স্পষ্ট যে সুন্দরবন তথা আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ এর অস্তিত্ব আজ চরম সংকটাপন্ন। কিন্তু, অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এতবড় বিষয়ও আমাদের প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হচ্ছেনা।ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সময়োপযোগী পোস্টের জন্য। ভালো থাকুন।
২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৩৪
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ভাইয়া, চমৎকার মন্তব্যে আমার ভালো লাগা রইল!
২২| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:২৭
তাসনুভা সাখাওয়াত বীথি বলেছেন: গুড ইভনিং সামু, অনেক দিন আসিনা । এই পোস্ট দেখে লগ ইন করলাম। শুভেচ্ছা সবাইকে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
আপনি একজন মমতাময়ী মা। সুন্দরবন আমাদের অহংকার।আপনি আপনার ছেলেকে ভাত রান্নাকরে আদর করে খাওয়ানোর ছবি গোটা বাংলাদেশের মানুষ খুব পছন্দ করেছিল । জামাত শিবির রাজাকার ছাড়া বিরোধী পক্ষের ওরাও প্রশংসা করেছিল আপনার মাতৃত্বের।
প্লিজ আপনি তো আমাদের শুধু প্রধান মন্ত্রী নন। আপনি আমাদের জাতির জনকের অহংকার । আমাদের ২য় জাতীর জনক। একটি স্বাধীন বাংলাদেশ কে অন্ধ করে রেখেছিল ওরা। আপনি শক্রুদের পরাজিত করে জন্ম দিয়েছেন সম্পুর্ণ ডিজিটাল একটা বাংলাদেশ।
আপনার উন্নয়নের সর্বশ্রেষ্ট উদাহারণ হলো চট্রগ্রাম। ১ বছরে সম্পুর্ণ শহরের চেহারাই বদলে দিয়েছে আপনি কতৃক সিলেক্টেড এবং লাখো মানুষের এলেক্টেড সৎ সাহসী দক্ষ মেধাবী ও যোগ্য মাননীয় মেয়র আযম নাসির । চট্রগ্রাম এখন একটি যানযট ও দোষণমুক্ত শহর। এখানে কোন শিবির নেই এখন । ছাগু নেই। শুধু শান্তি আর শান্তি। একটি প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক শিক্ষিত শহর বর্তমান চট্রগ্রাম। এখানে এই বর্ষায় কোন জলাবদ্ধতা নেই।
চট্রগ্রাম এখন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। পানি উঠেনা। খুব দ্রুত শেষ হচ্ছে মুরাদপুর থেকে লালখান বাজার ফ্লাইওভার। এই লালখান বাজারেই আমার বাসা। এখান থেকে আমি মেডিকেলে যাই। অহংকার করি আপনাকে নিয়ে।
আপনি এখন আমাদের উন্নয়নের রুল মডেল।
একটি দেশের তরুন প্রজন্ম ঠিক যে সময়ে আপনাকে একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার একমাত্র যোগ্য মনে করছে ঠিক সে সময় দেশের ৯৯ % মানুষের মতামত কে অগ্রাহ্য করে এমন করা একজন দেশপ্রেমী ব্লগার হিসেবে আমি সমর্থন করতে পারছিনা।
একটি নতুন শিশু যখন পৃথিবীতে আসে তখন তাকে আদর করে মধু খাওয়ানো হয় যেন কন্ঠস্বর সুমিষ্ট হয়। আপনি তো এমন এক সুমিষ্ট কন্ঠস্বর ওয়ালা পিতার যোগ্য কন্যা। সে মিষ্টি কন্ঠস্বর এর জন্য হলেও আমাদের সুন্দর বন তা কে বাঁচিয়ে দিন।
অন্তত কোন মায়ের সন্তান সুন্দর বনের মধু খেয়ে আর একজন জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্ম নেওয়ার জন্য হলেও দিন না আমাদের সুন্দরবন টা ফেরত দিন। যিনি আরেকটি ভাষণ দিবেন। আমরা আবার এক হবো। এবার কোন যুদ্ধ নয় । এবার এক হবো সুন্দর, ডিজিটা্ প্রযুক্তি নির্ভর, স্বাস্থ্যবান, শিক্ষিত, ভদ্র, মার্জিত রাজাকার মুক্ত জাতী গড়ার জন্য।
আমাদের মায়াবী সুন্দর হরীণ গুলোর জন্য , বাংলাদেশ দলের ১১ জন বাঘের জন্য হলেও দিন না আমাদের সুন্দর বন টাকে বাঁচিয়ে।
২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৩৬
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আপু, আপনাকে সামুতে লগিন করাতে পেরে ভাল লাগছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার একান্ত হার্ডকোর একই সাথে একজন মমতাময়ী মায়ের ফরিয়াদ শুনুন।
২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৩৭
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আপু, আপনাকে সামুতে লগিন করাতে পেরে ভাল লাগছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার একান্ত হার্ডকোর সমর্থক, একই সাথে একজন মমতাময়ী মায়ের ফরিয়াদ শুনুন।
২৩| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:১৮
রুদ্র১ বলেছেন: লেখাটির জন্য ধন্যবাদ। সুন্দরবন রক্ষার জন্য আমাদের সামাজিক আন্দোলনের পাশাপাশি রাজনৈতিক আন্দোলন ও গড়ে তুলতে হবে। ভারত শুধু তাদের স্বার্থ নিয়ে ভাবে আমাদের ভাবে না।
২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৩৯
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: সুন্দরবন রক্ষার জন্য আমাদের সামাজিক আন্দোলনের পাশাপাশি রাজনৈতিক আন্দোলন ও গড়ে তুলতে হবে।
সহমত।
২৪| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:১০
আহমেদ জী এস বলেছেন: এক নিরুদ্দেশ পথিক ,
কী অদ্ভুত ! সমকালীন সময়ের সব চেয়ে আলোচিত সমস্যা যার প্রতিবাদে দেশে ঝড় বয়ে যাচ্ছে , তেমন বিষয়ের উপর এমন একটি সমৃদ্ধ লেখাতে পাঠক সংখ্যা ও মন্তব্যের দুর্ভিক্ষ ছিলো ১৯ এর দুপুর সম্ভবত দেড়টা পর্যন্ত । তখন পর্যন্ত মন্তব্য ছিলো হয়তো ৭/৮টি । আর কতৃপক্ষের সুবিবেচনায় যখনই পোষ্টটি ষ্টিকি হলো তখনই বেড়ে গেলো এর পাঠক আর মন্তব্যের সংখ্যা । এর মানে কি এই যে, আমরা ব্লগাররা আসলেই কোনটি খাটি কোনটি খাদ যুক্ত, কোনটি বিনোদন আর কোনটি জীবন মরনের সেটা বুঝে উঠতে পারছিনে? অভিজ্ঞতা থেকে সঞ্চিত , হতবাক হবার মতো ব্লগীয় এই অসচেতনতাকে এখানে তুলে আনলুম বলে কেউ যদি আমাকে ভুল বোঝেন , বুঝতে পারেন । তবে আমরা যে খাটি জিনিষের মর্যাদা দিতে কার্পন্য করি , সেটা পরিষ্কার ।
সামুকে ধন্যবাদ যে, নিজ থেকেই এমন একটি ( ষ্টিকি করার অনুরোধ ব্যতিরেকে ) পোস্টকে স্টিকি করেছেন ।
জয় হোক সমৃদ্ধ সকল লেখার ।
২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৪৭
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ভাইয়া, এরকম হতাশা মাঝে মাঝেই কাজ করে। তবে এই হতাশাকে পরাস্ত করেই ব্লগে লিখি, এখানে লিখা ম্যাচিউর হয়, ভাবনা গুলো পরিপক্ক হয়, সহ ব্লগারদের চিন্তা এবং বিবেকের চ্যালেঞ্জ নিয়ে ব্যক্তির নলেজ কার্ভ উপরে উঠে।
হয়ত আমার লিখা গুল নীরস কিংবা একটু কঠিন, ইনফাস্ট্রাকচার এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনার কথা তাই পাঠক প্রিয় না। তবে সামুর মডারেশন আমাকে সবসময়ই অনুপ্রেরণা দিয়ে গিয়েছেন।
সামুকে ধন্যবাদ যে, নিজ থেকেই এমন একটি ( ষ্টিকি করার অনুরোধ ব্যতিরেকে ) পোস্টকে স্টিকি করেছেন ।
মানুষের নির্লিপ্ততা খুব ভাবায় আমাকে, খুব অবাক হই এই আমরাই পড়েছি-
"আমরা যদি না জাগি মা!
কেমনে সকাল হবে?"
এই পাঠ প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিতে হবে মনে হচ্ছে।
ট্রেন্ড চেঞ্জ হবে না, চেঞ্জ করতে হবে। তবে অনেক বেশি কাজ করতে হবে। আপনার মত পরিশ্রমী সহ ব্লগার স্বপ্ন দেখায়!
২৫| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:২৫
মহা সমন্বয় বলেছেন: সুন্দর বন সুন্দর থাকুক, বাংলাদেশের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা টেকসই হোক!
২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:২২
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: বাংলাদেশের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা টেকসই হোক!
২৬| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:৩৩
সোহাগ আহসান বলেছেন: হ
২৭| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৫:৫৩
লেখা পাগলা বলেছেন: ভালো লাগল সুন্দরবন নিয়ে আলোচনা দেখে ।
২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:৪৮
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: এই আলোচনায় আপনাদের উপস্থিতিও ভালো লাগছে!
২৮| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:৪৪
সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন:
সুন্দরবন কি পরিমান উপকার করছে এমন সময় বোঝা যাবে যখন কিছুই করার থাকবে না। এজন্য পরবর্তী প্রজন্ম অামাদের দায়ি করবে।
অার রাজনীতিবীদরা তো কেও জন নেতা নই, জন নেতা হলে অবস্যই জনগনের কল্যানের কথা বিবেচনা করতো।
সমস্যা হল সাধারন জনগনের হবে। ধনীদের তো হবে না। প্রত্যেকের বিদেশে বাড়ী অাছে তারা সেখানে চলে যাবে।
অতএব, কার কি হলো এটাত দেখার সময় কত্তিপক্ষের ( কর্তৃপক্ষ) নেই
২২ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:০২
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: নেতৃত্ব, জাতীয় সম্পদের প্রোটেকশন এবং অনাগত প্রজন্মের উত্তরাধিকার!
আমাদের মধ্য বিত্ত,উচ্চ মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চ বিত্ত রাজনৈতিক নেতৃত্বের জেনারেশন গুলোর লার্নিং প্রসেসটা ভয়ংকর রকমের ইঙ্কমপ্লিট। এদের শিক্ষাগত, সামাজিক এবং মানবিক তিনটি দিকই অতি নিচু স্তরের। এদের পুরো কাজের পরিধিই অপরাধ এবং ভীতি সঞ্চার কেন্দ্রিক। এরা দেশের আর্থ সামাজিক বাস্তবতা, দরিদ্রদের ব্যক্তি জীবনের ক্ষুদ্র ইকোনোমিক ভ্যালূ এবং দরিদ্রদের জীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইকোনোমিক ভ্যারিয়েবল গুলো এমনকি কোন আইনগত সিদ্ধান্ত এবং উন্নয়ন কাজের টেকসই দিক সম্পর্কে পরিষ্কার কোন ধারনা রাখে না। বরং জ্ঞানহীনতার কারনে এগুলা তাদের কাছে তুচ্ছ বা ইগ্নোরেবল।
মোদ্দা কথায় পুরো রাজনৈতিক অঙ্গন এথিক্যাল, একাডেমিক, ইন্সটিটিউশনাল এবং ইকোনোমিক দিক থেকে নূন্যতম ভ্যালূ ড্রিভেন না।
অন্যদিক হোল এরা প্রাণ বৈচিত্র, পরিবেশ, প্রতিবেশ/ইকোলজি, টেকসই উন্নয়ন এগুলা সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখে না। কোন আধুনিক বা কারিগরি বিষয়ে পরিষ্কার ইন্টার এবং ইন্ট্রা ডোমেইন ইম্প্যাক্ট এনালাইসিস দেবার মত এক্সয়ার্টের সাথে তাঁদের সখ্যতা নেই, নেই কোন গবেষণা সংস্থার সাথে সংযোগ। নিচের পর্যায়ের ব্যক্তি রাজণিতিবিদের ক্ষেত্রে হয়ত এই সংযোগ হীনতাকে এক্সেপ্ট করা যায়, কিন্তু মন্ত্রীত্ব পাওয়া কোন রাজনীতিবিদ কিংবা একটি পুরো রাজনৈতিক দলের পরিবেশ ইকোলজি প্রাণ চক্র কৃষি এবং খাদ্য চক্র এইসব নিয়ে কোন উচ্চ (এমনকি মধ্য বা নিন্ম) মান গবেষণা সংস্থার সংযোগ না থাকা রীতিমত লজ্জার।
এদের কাজের পরিসর-কাজের প্রায়োরিটি কিংবা অর্ডার ভিন্ন (অর্থ আত্মসাৎ কেন্দ্রিক), এই মানের জন প্রতিনিধিরা পলিসি মেকার হিসেবে বেশি থেকে বেশি হারে আবির্ভুত হলে দেশের প্রাণ পরিবেশ প্রতিবেশ (প্রাকৃতিক সম্পদ) এর প্রটেকশন সমূহ বিপদ সংকুল হতে বাধ্য। এর অন্য একটি দিক হোল, দেশের ভবিষ্যৎ এবং অনাগত প্রজন্ম গুলো দিন দিন বেশি থেকে বেশি সম্পদ হীন হয়ে আনপ্রটেক্টেড, আন্সিকিউরড হচ্ছে একদিকে, অন্যদিকে জন্মের আগেই কিংবা প্রাপ্ত বয়স্ক হবার আগেই ব্যাপক হারে বৈদেশিক ঋণের এক ভারি বোঝা উত্তরাধিকার হিসেবে পেয়ে আছে।
২৯| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:২৫
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন:
বলতে ও লিখতে লিখতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। তাই বলা ও লেখা ছেড়ে দিয়েছি। তাই এই পোষ্টেও কিছু লিখলাম না। সামু ব্লগার "দূর্যোধন" দা এর একটা ফেসবুক স্টাটাস প্রায় কাঁচের ফ্রেমে বাধারই করে রেখেছি। তার সেই মন্তব্য তুলে দিলাম সকলের জন্য।
====================================
একবার এক বিজ্ঞ ব্যক্তি তার শিষ্যদের ডেকে বলিলেন, এ নাও কাচাঁমরিচ। একটা বিড়ালের দিকে আঙ্গুল দেখাইয়া বলিলেন, উহাকে কাচঁমরিচ খাওয়াইতে হবে।
গুরুর আদেশ শিরোধার্য। প্রথম শিষ্য বিড়ালকে ধরিয়া তাহার মুখে কাচাঁমরিচ ঠাসিয়া দিতে লাগিল কিন্তু কিছুতেই কিছু হল না। সেই উহাতে ব্যর্থ হইল। বিড়ালের নখের আঘাতে খনিকটা আহতও হইল। পরের শিষ্য অতি চালাকি করিয়া এক বাটি দুধ আনিয়া তাহাতে কাচাঁমরিচ মিশাইয়া দিল। বিড়ালকে জোর করিয়া বাটির কাছে আনাও হইল। কিন্তু দুষ্ট বিড়াল খানিক কয়েকবার গন্ধ শুকিয়া ভেংচি কাটিয়া চলিয়া গেল। এভাবেই প্রত্যেক শিষ্যই ভিন্ন ভিন্ন পন্হা অবলম্বন করিয়াও ব্যর্থ হইল।
অবশেষে বিজ্ঞ ব্যক্তি বলিলেন, আমাকে একটি কাচাঁমরিচ দাও। তিনি উহা নিয়া বিড়ালের পশ্চাতদেশে ঢলিয়া লাগাইয়া দিলেন। এবার সকলে অবাক হইয়া দেখিলেন, বিড়াল নিজে থেকেই আপন পশ্চাদদেশ চাটিয়া চাটিয়া কাচাঁমরিচ খাইতেছে....................................
===================================
গল্পের মোরাল:
===================================
গল্পের বিড়ালের স্হানে বাংলাদেশ ও কাঁচা মরিচের স্হানে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসাইয়া নিতে হবে।
কাঁচা মরিচের ঝাল থেকে বাঁচিবার জন্য বিড়ালকে যেমন নিজে থেকেই আপন পশ্চাদদেশ চাটিয়া চাটিয়া কাচাঁমরিচের ঝাল তুলিতে হইছে ঠিক একই ভাবে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটিকে আপন পশ্চাদদেশ চাটিয়া-চাটিয়া সুন্দরবন সহ উপকূলীয় এলাকার মাটি, পানি, বাতাস ও মৎস সম্পদের উপর রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিকর প্রভাব তুলিতে হইবে।
২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:৫৪
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: পলাশ ভাই, আপনার কলম থেমে যাক সেটা চাই না। ফের শুরু করুন নব প্রেরণায়!
৩০| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৭
শামছুল ইসলাম বলেছেন: আপনার পোস্টের প্রশংসা করার মত জ্ঞান-গরিমা আমার নেই।
তাই মনের কিছু কথা সহজ ভাষায় বলতে চাই।
সুন্দর বনের প্রতি ভালবাসা নেই, এমন মানুষ বোধ হয় বাংলাদেশে খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
তার পরও এর ক্ষতি হচ্ছে এবং নিঃশেষ করে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে।
আমার মনে হয় কিছু লোভী মানুষ, কিছু ক্ষমতাবান মানুষের সাথে একত্র হয়ে এই ধ্বংস যজ্ঞে নেমেছে।
কিন্তু আপামর জনসাধারণ ভাল চায় কিন্তু সেটা আদায় করার জন্য নিজেরা একত্র হতে পারেনা-এটাই বাস্তবতা।
যোগ্য নেতা, যোগ্য দল চাই - বাংলার আপামর জনগণ কখনো অন্যায়কে মেনে নেয়নি, তারা সবসময়ই ভালের পক্ষে।
ভাল থাকুন। সবসময়।
২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:৪৯
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আমার মনে হয় কিছু লোভী মানুষ, কিছু ক্ষমতাবান মানুষের সাথে একত্র হয়ে এই ধ্বংস যজ্ঞে নেমেছে।
কিন্তু আপামর জনসাধারণ ভাল চায় কিন্তু সেটা আদায় করার জন্য নিজেরা একত্র হতে পারেনা-এটাই বাস্তবতা।
হুম।
৩১| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৭
আস্তিক এলিয়েন বলেছেন: ক্ষমতার রাজনীতি মানুষকে অন্ধ করে দেয়। দুর্নীতিবাজ সরকার ও প্রশাসন যখন জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, তখন দেশকে ধ্বংস কিংবা প্রভুদেশের কাছে বিক্রি করে হলেও ক্ষমতাকে রক্ষার প্রাণপন চেষ্টা করে। এটা এরশাদের পর থেকেই অব্যাহতভাবেই চলে আসছে। বাংলাদেশে প্রয়োজন একজন সৎ যোগ্য ও দেশপ্রেমিক শাসকের। এমন শাসক যতদিন না পাবো, ততদিন আক্ষেপ করেই যাবো।
২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:৪৩
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: একটি সৎ ভীষণ সম্পন্ন ট্রান্সপারেট এবং জ্ঞানী নেতৃত্ব, রাজনৈতিক সংঘঠন খুব দরকার যারা টেকসই উন্নয়ন এবং দুর্নিতি মুক্ত বাজেট বাস্তবায়ন এর গুরুত্ব বুঝবে এবং মানবে।
৩২| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৮
রূপকথার পরী মাজহুল বলেছেন: সুন্দরবনকে বাঁচাতে এখানে ভোট দিন : Click This Link
২২ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:০০
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩৩| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:১৪
নাসের গ্যাং ০০৭ বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট
২২ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:০০
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৩৪| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: আজ চায়ের দোকানে যে কথা গুলো শুনলাম- রামপালে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ যাবে। দেশ আলোয় ভরে যাবে। অনেক লোকের কর্মসংস্থান হবে, জিডিপি কোথায় গিয়ে ঠেকবে বুঝতে পারছেন? বাঘ, হরিণ, সাপ পোকামাকড় পেলে কি হবে, জিডিপি বাড়বে?
এক টন কয়লা পুড়লে ২ দশমিক ৮৬ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয়। যা প্রকৃতির উপর আহামরি প্রভাব ফেলবে না। তাছাড়া, সবধরনের উন্নয়ন কাজ করতে গেলেই পরিবেশের কম বেশি ক্ষতি হবে।
শেখ হাসিনার দেশ প্রেম নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। কাজেই তিনি যা করবেন দেশ এবং দেশের মানুষের ভালোর জন্যই করবেন।
২২ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:০২
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: জ্ঞান অর্জনের জন্য আওয়ামীলীগ কর্মী এবং হার্ডকোর সমর্থকদের চায়ের দোকানে না গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এবং রিসার্চ ইন্সটিউশনে যাবার পরামর্শ দেই।
৩৫| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:১৬
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: দারুণ কাজ।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আমরা স্বেচ্ছামৃত্যুতে বেশ আগ্রহী। এটা দুঃখজনক।
মানুষ গাছ হোক। অন্তত একজন্মের জন্য।
২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:৫০
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ, রাজপূত্র!
"আমরা স্বেচ্ছামৃত্যুতে বেশ আগ্রহী।" আমি মনে করি এই আমাদের প্রবণতা প্রাণের চাইতে বুদ্ধির এবং বিবেকের দিক দিয়ে বেশি।
৩৬| ২১ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:৩২
আহসানের ব্লগ বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম ।
২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:৫২
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: বাধিত করলেন, আহসান ভাই।
৩৭| ২১ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:৫৩
রমিত বলেছেন: দারুন তথ্যপূর্ন ও দিক-নির্দেশনা পূর্ণ লেখা; এমন সময়োপযোগী লেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
পোস্ট-টি স্টিকি করার জন্য সামু কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।
'পদ্মা-মেঘনা-যমুনা তোমার আমার ঠিকানা' - এটি একটি অতি পরিচিত শ্লোগান, আমি মনে সুন্দরবনও আমাদের ঠিকানা, সেই ঠিকানাকে বিনাশ করতে দেয়া যাবেনা।
বিদ্যূৎ কেন্দ্র হলে দেশ আলোয় ভরে যাবে একথা যেমন ঠিক, প্রকৃতি ধ্বংস হলে দেশ অন্ধকারে ডুবে যাবে এটাও তেমনি ঠিক। ফলাফল তাহলে কি হলো? উত্তর - 'শূণ্য'। শূণ্য-কে পাওয়ার জন্য এত আয়োজনের কি প্রয়োজন? প্রকৃতিকে ধ্বংস না করেও বিদ্যূৎ উৎপাদনের বহু উপায় রয়েছে।
প্রকৃতিকে ধ্বংসের ফলাফল যে কি ভয়াবহ একথা নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী আন্দ্রেই সাখারোভ তাঁর নোবেল বক্তৃতায় জোর দিয়েই বলেছিলেন।
পৃথিবী যেখানে আজ ইকোলজি নিয়ে নতুন করে ভাবছে, আমরা সেখানে আজ তার প্রয়োজনীয়তাইটাই ভুলে গিয়েছি।
আমরা কি ধরে নেব? দেশের পলিসি মেকার-রা ইকোলজি সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন না? না কি তারা সজ্ঞানে একটি আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন?
২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:৪৭
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ভাইয়া, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠিয়েছেন। ইকোলজি সম্পর্কে নেতৃত্ব শুধু অজ্ঞ নয়, আমি বলছি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাই বলতে গেলে বেখেয়াল। দেশের শিক্ষিত লোকেরাই ইকোলজি, প্রাণ বৈচত্র, জীন স্বত্ব, স্থানীয় উদ্ভিজ্জ এবং প্রানীজ সম্পদের বিভিন্ন জাত/প্রজাতি/বীজ এইসবের গুরুত্ব সম্পর্কে বেখবর। তবে কাউকে দোষারপ না করে ব্যপারগুলো সামনে নিয়ে আসতে হবে।
এইবার ভিন্ন একটা কথা বলি, সুন্দরবনের জীন সম্পদ নিয়ে কিন্তু আমাদের কোন গবেষণা নেই। অথচ এটা আগামীর দিবে ব্যাপক সম্পদ হয়ে উঠবে। আমি কিছুটা অবাক হয়েছি যখন প্রথম যেনেছি, বর্তমানে জিএমও জাতের আলুতে এবং অন্য কিছু ফলনে পচন রোধে ব্যাঙ্গের জীন ব্যবহৃত হয়, তামাকের ফলন বাড়াতে জোনাক পোকার জীন ব্যবহৃত হয়। একবার ভাবুন! সুন্দরবনের হাজার হাজার উদ্ভিদ প্রাণী এবং জলজ বাস্থুসংস্থানে কত হাজারো জীন সত্ব লুকিয়ে আছে।
আমার এক রিসার্চার বন্ধু বলেছেন, উনি আশংকা করছেন যে, বিশ্ব হেরিটেজ করার সময় সুন্দরবন এবং বাঘের উপর এক মাস ব্যাপী ইউ এস টীম বিশাল নৌবহর সহ সুন্দর বনে অবস্থান করেছে, সেই সময় বহু জীন সত্ব চুরি করে ফেলা হয়েছে। আনুমান ভিত্তিক কথা হলেও, আমাদের এতটা ইন্টেলেকচূয়াল এবিলিটি নেই যে এই অনুসন্ধান চালাব, অথবা নিজেরাই সুন্দরবনের জীন সত্বের উপর গবেষণা করে সেসব ইন্টেলেকচুয়াল এন্টিটিকে রেজিস্টার্ড করে রাখব। আমরা না করলে ভারত এই কাজে এগিয়ে যাবে। শুধু গাছ মাছ আর প্রাণী সম্পদের বাজ্যিক লূটেই আমরা ব্যস্ত, যখন এই সব হারাবো তখন হা-হুতাশ করবো।
প্রাণ-পরিবেশ এবং ইকোলজি সম্পর্কে সম্যক ধারণা ছড়িয়ে দিক, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা। বিশ্বের সবচাইতে ঘনবসতি পূর্ণ দেশে এর অন্তত স্বাস্থ্য গত প্রভাব মাথায় নেয়া দরকার। স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের আশু ক্ষতির ইকোনোমিক ইম্প্যাক্ট আমলে নিলেও নেতৃত্বের সচেতন হওয়া দরকার।
আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ, এই বিষয়ের অবতারণা করার জন্য।
৩৮| ২১ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৫৬
কাঙ্গাল মুরশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ চমৎকার তথ্যবহুল পোস্টের জন্য।
কয়েক দিন আগে ভারতীয় হাইকমিশনারের চারুকলা পরিদর্শনের সময় স্বতস্ফুর্ত ভাবে যে মিছিল হয়েছিল 'গো ব্যাক ইন্ডিয়া' শ্লোগান দিয়ে - সেটাই ছিল বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ বিষয়। যদিও দালাল মিডিয়া সেটা হাইলাইট করতে পারেনি - আমাদের সবার উচিত সেই আন্দোলনকে আরো জোড়াল করা। সামগ্রিক ভাবে দিল্লির সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাহসনের বিরুদ্ধে দাড়াতে হবে অহিংস পথে। সাথে নেয়ার চেস্টা করতে হবে ভারতীয় জনগনকে - কারণ তারাও বহু ক্ষেত্রে এই আগ্রাসনের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:২৪
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: সুন্দর করে বলেছেন। সহমত।
২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:৫১
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: কয়েক দিন আগে ভারতীয় হাইকমিশনারের চারুকলা পরিদর্শনের সময় স্বতস্ফুর্ত ভাবে যে মিছিল হয়েছিল 'গো ব্যাক ইন্ডিয়া' শ্লোগান দিয়ে - সেটাই ছিল বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ বিষয়। যদিও দালাল মিডিয়া সেটা হাইলাইট করতে পারেনি - আমাদের সবার উচিত সেই আন্দোলনকে আরো জোড়াল করা। সামগ্রিক ভাবে দিল্লির সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাহসনের বিরুদ্ধে দাড়াতে হবে অহিংস পথে। সাথে নেয়ার চেস্টা করতে হবে ভারতীয় জনগনকে - কারণ তারাও বহু ক্ষেত্রে এই আগ্রাসনের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
৩৯| ২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:৩৩
মোহাম্মদ জায়েদ উল ইসলাম বলেছেন: KISU LOK thakte PARE JADER MATHA BETHA NEI BUT SOBAI SHOMAN NA R TAR CEYEO BORO KOTHA MULLAYON KORARA PIRIBESH NAI
২২ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:০৫
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: হ্যাঁ অধিকাংশই নাগরিকই দেশের সম্পদের সুরক্ষা চান। লুটেরারা সংখ্যায় কম, ভুক্তভোগীরাই অধিক!
৪০| ২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:৩৮
মোহাম্মদ জায়েদ উল ইসলাম বলেছেন: DOKKHOJONOK
৪১| ২২ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:৪২
সোহানী বলেছেন: হায়রে দেশ ... কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আমাদের!!! একজন ও নেতা নেই যে নিজের আখের না গোছায়ে একবার দেশের কথা ভাববে??
অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার পোস্ট এর জন্য। অনুসরন করলাম আরো কিছু জানার জন্য।
২২ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৫৬
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অনুসরণ করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। আমি সাস্টেইনএবল ডেভেলপমেন্টের কিছু দিক, ইনফাস্ট্রাকচার, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, বিভিন্ন ব্যবস্থাপনার ইফেসিয়েন্সি এইসব নিয়ে লিখি। আমার ব্লগে একটা ভিজিট করে আসার আমন্ত্রণ।
৪২| ২২ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:২৪
অগ্নি সারথি বলেছেন: সুন্দর বন সুন্দর থাকুক, বাংলাদেশের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা টেকসই হোক!
২২ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৪
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: সুন্দরবন সুন্দর থাকুক,
বাংলাদেশের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা টেকসই হোক!
৪৩| ২২ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:২৫
বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: লেখাটি পড়ে খুবিই ভালো লাগলো। সচেতনতা সৃষ্টিতে এই ধরনের লেখা খুব প্রয়োজন। পর্যাপ্ত ধারনা না থাকার কারনে অনেকেই প্রকৃত ক্ষতি বা ক্ষতির প্রভাব সম্পর্কে অবগত না।
পড়ার শুরুতেই "সাধু পানি" পড়তে অস্বস্তি বোধ করছিলাম, "স্বাদু পানি" হবে। এইটুকু ঠিক করে দিয়েন। এতো সুন্দর একটা লেখাই এই টুকু ক্ষত রাখা থিক হবে না।
২২ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৪৬
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: কৃতজ্ঞতা রইলো। কিছু ঠিক করে নিয়েছি। সময় নিয়ে আবার একটা রিভিউ দিব। ২ টা লিংক কাজ করছেনা, সেটাও ঠিক করতে হবে। যদিও মূল বক্তব্য পোস্টে তুলে এনেছি।
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন।
৪৪| ২২ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:২৯
পুলক ঢালী বলেছেন: গবেষনা মূলক অনেক পরিশ্রমী পোষ্ট । দেশের মঙ্গলের জন্য চরম আকুতি ফুটে উঠেছে কিন্তু যাদের উদ্দেশ্যে লেখা তাদের চোখে পড়বে কি? তাদের চোখে পড়লেও বোধে আঘাত লাগবে কিনা জানিনা। আমজনতার বোঝার এবং মাথা ঘামাবার সময় কোথায় ? ভাগ্য বিশ্বাসী জীবন যন্ত্রনায় জর্জরিত আমজনতা বড়ই অসহায়।
কষ্টকর তথ্যবহুল পোষ্ট উপহার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:২৭
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: পড়ার এবং মন্তব্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
কিন্তু যাদের উদ্দেশ্যে লেখা তাদের চোখে পড়বে কি? তাদের চোখে পড়লেও বোধে আঘাত লাগবে কিনা জানিনা। আমজনতার বোঝার এবং মাথা ঘামাবার সময় কোথায় ? ভাগ্য বিশ্বাসী জীবন যন্ত্রনায় জর্জরিত আমজনতা বড়ই অসহায়।
৪৫| ২২ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:১৩
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: বিদ্যুৎ আমাদের অবশ্যই প্রয়োজন কিন্তু সুন্দর বন কে বিসর্জন দিয়ে নয়। গুটি কয়েক মুনাফাখোর পুঁজিপতির স্বার্থ রক্ষার্থে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দর বন কে আমরা বিসর্জন দিতে পারি না । উচিৎ সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন ।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:২৮
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: সহমত।
চারিদিকে জঘন্য সব মানব শত্রু রেখে এই বাস্তবতায় সুন্দরবন কতদিন টিকে, এই আশঙ্কাকে মূখ্য বিবেচ্য করে বন রক্ষার টপ টু বটম সমন্বিত মহা কর্ম পরিকল্পনা চাই (রাষ্ট্রীয়) যার প্রতি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ঐক্যমত্ত এবং দৃঢ় অঙ্গীকার থাকবে।
৪৬| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৩২
শেয়াল বলেছেন: কই যাই কি করি ! আমাগোর সরকারই আমাগোর দিকে চাইয়া দেহে না ।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৩
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: কই যাই কি করি !
৪৭| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৩:১৬
সেলিনা মওলা বলেছেন: রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে নানা তর্কবিতর্ক চলছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী জ্বালানি বিশেষজ্ঞ আরশাদ মনসুর গত১৭ জুলাই প্রথমআলোয় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এই প্রকল্প সম্পর্কে ১০টি প্রশ্ন উত্থাপন করেন। রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর পাঠিয়েছে।যা নিম্নরূপঃ
প্রশ্ন ১: রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে নাইট্রোজেন অক্সাইড নিঃসরণের হার কমানোর লক্ষ্যে এসসিআর (সিলেক্টিভ ক্যাটালিস্ট রিঅ্যাক্টর) বা এ ধরনের অন্য কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে কি না?
উত্তর: হ্যাঁ, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে নাইট্রোজেন অক্সাইড নিঃসরণের হার কমানোর লক্ষ্যে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বয়লারে উন্নত প্রযুক্তি সংযোজনের কারণে রামপাল প্রকল্পে নাইট্রোজেন অক্সাইডের নিঃসরণ অত্যন্ত কম (৫১০ এমজি/এনএম৩
মাত্রার মধ্যে) হবে। স্টয়কিয়োমেট্রিক এয়ার ফুয়েল ও স্বল্পমাত্রার কমবাসশন সীমিত নাইট্রোজেন অক্সাইড তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।
প্রশ্ন ২: রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে কি এফজিডি (ফুয়েল-গ্যাস ডিসালফারাইজেশন) অথবা সালফার অক্সাইড নিঃসরণ কমানোর অন্য কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে?
উত্তর: হ্যাঁ, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে এফজিডি সংযোজন এবং সালফার অক্সাইডের নিঃসরণ কমানোর জন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। প্রথমত, প্রকল্পটিতে নিম্ন সালফারের কয়লা ব্যবহার করা হবে, যা সালফার অক্সাইডকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে। এ ছাড়া ফ্লু গ্যাসের র সালফার ডাই-অক্সাইড নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জাপানি আধুনিক প্রযুক্তি ফ্লু গ্যাস ডিসালফারাইজেশন সিস্টেম ব্যবহার করা হবে। নির্গত গ্যাস থেকে সালফার ডাই–অক্সাইড দূর করার জন্য ওয়েট লাইমস্টোন, ফোর্সড অক্সিডেশন এফজিডি পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। ডাবল ফ্লো কনট্যাক্ট স্ক্রাবার টাইপ এফজিডি ব্যবহার করা হবে, যার কার্যকারিতা ৯৬ শতাংশের বেশি। এ ছাড়া নির্গত গ্যাস পরিষ্কার রাখার জন্য অত্যন্ত বিশুদ্ধ (৯৫ শতাংশের বেশি) চুনাপাথর ব্যবহার করা হবে।
প্রশ্ন ৩: রামপাল প্রকল্পে পার্টিকুলেট ম্যাটার্সের মাত্রা কমানোর জন্য কি ব্যাগহাউস বা ইএসপি (ইলেকট্রোস্ট্যাটিক প্রিসিপিট্যাটর) বা অন্য কোনো যথাযথ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে?
উত্তর: হ্যাঁ, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে পার্টিকুলেট ম্যাটার্সের মাত্রা কমানোর জন্য ইএসপি ব্যবহার করা হবে। এ প্রকল্পের জন্য অনুমোদিত এসএমপির ১৫০ এমজি/এনএম৩ হলেও এর চেয়ে অনেক কম, অর্থাৎ ৫০ এমজি/এনএম৩ মাত্রার নিচে রাখার জন্য অত্যন্ত দক্ষতাসম্পন্ন ও পরীক্ষিত প্রযুক্তির ইএসপি ব্যবহার করা হবে।
প্রশ্ন ৪: রামপাল প্রকল্পে কি মারকারি রিমুভাল (পারদ দূরীকরণ) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে?
উত্তর: হ্যাঁ, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এফজিডির সঙ্গে ওয়েট লাইমস্টোন প্রযুক্তি পারদ দূরীকরণে কাজ করবে। তা ছাড়া, স্বাভাবিক নিয়মে কিছু পারদ ছাইয়ের মাধ্যমে শোষিত হবে। বটম অ্যাশ ও ফ্লাই অ্যাশ উভয়ই শুকনো অবস্থায় সংগ্রহ করা হবে এবং সেগুলো উপযুক্ত কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হবে। যার ফলে ভেজা ছাই মজুত করে রাখার দরকার হবে না।
প্রশ্ন ৫: রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে কি পানি পরিশোধন প্রযুক্তির মাধ্যমে দূষিত তরল নির্গমন কমানো হবে?
উত্তর: হ্যাঁ, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে অত্যাধুনিক পানি পরিশোধন প্রযুক্তির মাধ্যমে দূষিত তরল নির্গমন কমানো হবে। রামপাল প্রযুক্তিতে পানি পরিশোধনের জন্য আধুনিক ও বহুস্তরিক পরিশোধন প্লান্টের ব্যবস্থা করা হবে। প্রকল্প থেকে যে পানি নির্গত হবে, তার বেশির ভাগই কুলিং ওয়াটার রিসারকুলেশন ব্যবস্থার ব্লো ডাউনের পানি। এ ছাড়া প্রকল্পের ভেতরের অন্যান্য উৎস থেকে গৃহীত পানি পরিশোধন করা হবে এবং পশুর নদে নির্গত করার আগে সেন্ট্রাল ইফ্লুয়েন্ট মনিটরিং সাম্পের মাধ্যমে পিএইচ ©পর্যবেক্ষণ ও পরিশোধন করা হবে। প্রকল্পের বিভিন্ন উৎস থেকে নির্গত পানি পিএইচ ৭ নিরাপদ মাত্রায় নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএফসি গাইডলাইনের অনুমোদিত মাত্রা অনুযায়ী, প্রকল্পের নির্গত পানি নিঃসরণের যে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়, সেই অনুমোদিত মাত্রা থেকেও প্রকল্পের ব্যবস্থা আরও কঠোর বলা যেতে পারে।
প্রশ্ন ৬: রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে কি কয়লা থেকে উৎপন্ন ছাই শুকনো অবস্থায় ফেলার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে?
উত্তর: হ্যাঁ, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা থেকে উৎপন্ন ১০০ শতাংশ বটম ও ফ্লাই অ্যাশ উভয়ই শুকনো অবস্থায় সংগ্রহ করার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। সেগুলো উপযুক্ত কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হবে। তা ছাড়া ইতিমধ্যে এই প্রকল্প থেকে ছাই কেনার
জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উপযুক্ত বিভিন্ন সিমেন্ট কোম্পানি আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমাদের প্রকল্পের উৎপাদিত ছাই থেকেও বেশি পরিমাণ ছাই কেনার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাহিদা রয়েছে। এরপরও কোনো ব্যতিক্রমী কারণে শতভাগ ছাই কোনো নির্দিষ্ট সময়ে বিক্রি করা সম্ভব না হলে উন্নত প্রযুক্তি যেমন: হাই কনসেনট্রেশন স্লারি ডিসপোজাল (এইচসিএসডি) সিস্টেমের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা
হবে। এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্য হলো, আনুমানিক দুই দিনের মধ্যে অ্যাশ স্লারিকে অ্যাশ স্টোনে পরিণত করে। ফলে নিকটবর্তী জলাধারে ছাই মিশ্রণের সুযোগ নেই।
প্রশ্ন ৭: রামপাল প্রকল্পে কি কার্যকর অনলাইন মনিটরিং ব্যবস্থা থাকবে?
উত্তর: হ্যাঁ, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে অত্যাধুনিক অনলাইন মনিটরিং ব্যবস্থা থাকবে। এ প্রকল্পে ফ্ল গ্যাস টেম্পারেচার, নাইট্রাস অক্সাইড, সালফার অক্সাইড, অক্সিজেন, অক্সাইডঅব কার্বন পর্যবেক্ষণের জন্য কন্টিনিউয়াস এমিশন মনিটরিং সিস্টেমের (সিইএমএস) ব্যবস্থা করা হবে। এর মাধ্যমে প্রকৃত সময়ে সিইএমএস পদ্ধতিতে বয়লারের প্রকৃত চলমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পর্যবেক্ষণ ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের বায়ু নিঃসরণজনিত তথ্য চিহ্নিত ও বিশ্লেষণ করা হবে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশের এলাকার বায়ুর মান পর্যবেক্ষণের জন্য অ্যামবিয়েন্ট এয়ার কোয়ালিটি মনিটরিং সিস্টমের (এএকিউএমএস) ব্যবস্থা করা হবে।
প্রশ্ন ৮: রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে কি পার্শ্ববর্তী সামুদ্রিক প্রাণীর ওপর তাপীয় প্রভাব কমানোর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে?
উত্তর: হ্যাঁ, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী সামুদ্রিক প্রাণীর ওপর তাপীয় প্রভাব কমানোর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রয়োজনে পশুর নদের শুকনো মৌসুমের পানিপ্রবাহের অতি সামান্য পরিমাণ পানি (মাত্র ০.০৫ শতাংশ) ব্যবহার করা হবে এবং ব্যবহারের পর অবশিষ্ট নগণ্য পানি পরিশোধন করে পশুর নদের পানির তাপমাত্রার সঙ্গে সমন্বয় করে ছাড়া হবে।এ প্রকল্পে ক্লোজড সাইকেল কুলিং ওয়াটার সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ফলে নদীতে নির্গত পানির পরিমাণ হবে অত্যন্ত কম। এ ছাড়া নির্গত করার আগে ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্টে পানির মান কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে, যার ফলে আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএফসির কঠোর নিয়ম অনুযায়ী নির্গত পানির তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের চেয়ে বেশি হবে না।
প্রশ্ন ৯: এই প্রকল্পে কি স্থানীয় প্রতিবেশের ওপর কয়লা আনা-নেওয়া ও ব্যবহারের প্রভাব কমানোর ব্যবস্থা করা হবে?
উত্তর: হ্যাঁ, এটা করা হবে। কয়লা আমদানির বন্দর থেকে সমুদ্রপথে বৃহৎ আকারের জাহাজে সম্পূর্ণ আবৃত অবস্থায় কয়লা পরিবহন করা হবে এবং আবহাওয়া ও নদীর গভীরতা বিবেচনা করে উপযুক্ত স্থানে অপেক্ষাকৃত ছোট জাহাজে কয়লা স্থানান্তর করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত নদীপথে বিদ্যুৎকেন্দ্রে পরিবহন করা হবে। এই জাহাজ থেকে কোনো পদার্থ নিঃসৃত হবে না, সালফার অক্সাইড নিয়ন্ত্রিত থাকবে, শব্দদূষণ কম হবে। এ ছাড়া, কয়লা পরিবহনের ক্ষেত্রে সব রকম জাহাজ চলাচলে নির্ধারিত আইএমও কনভেনশন অনুসৃত হবে এবং সম্পূর্ণ আবৃত অবস্থায় সংরক্ষণ করা হবে।
প্রশ্ন ১০: এই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য কি এর পূর্ণাঙ্গ পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন করে তার ফলাফল জনগণের সামনে হাজির করা হয়েছে?
উত্তর: হ্যাঁ, প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট-ইআইএ) করে তা জনগণের সামনে হাজির করা হয়েছে। ২০১৩ সালের ৫ আগস্ট পরিবেশ অধিদপ্তর পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন প্রতিবেদনে অনুমোদন দেয়, যা বিআইএফপিসিএলের ওয়েবসাইট https//bifpcl.com–এ জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে রাখা আছে। এরপর বিভিন্ন সময়ে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি যেমন: মতবিনিময় সভা, আলোচনা সভা, অবহিতকরণ সভা ইত্যাদি করা হয়েছে। এ ছাড়া কোয়ার্টারলি এনভায়রনমেন্টাল মনিটরিং রিপোর্ট বিআইএফপিসিএলের ওয়েবসাইট https//bifpcl.com–এ সবার জন্য উন্মুক্ত করে রাখা আছে
-বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী আরশাদ মনসুর
২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:৪২
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ১০টি প্রশ্ন ও বিভ্রান্তিকর উত্তর
১০টি প্রশ্ন ও বিভ্রান্তিকর উত্তর কল্লোল মোস্তফা | আপডেট: ০০:০৫, আগস্ট ১৬, ২০১৬
রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে আরশাদ মনসুরের তোলা ১০টি প্রশ্নের যে উত্তর প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান পাঠিয়েছে, তা ৬ আগস্ট প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়েছে। প্রশ্ন-উত্তর পর্বে আলোচিত এই প্রযুক্তিগুলো কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হবে কি না, কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হলেই সুন্দরবনের ওপর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পূর্ণ দূর হবে কি না, কিংবা এই প্রযুক্তিগুলোর কোনো সীমাবদ্ধতা বা ক্ষতিকর প্রভাব আছে কি না—এসব বিষয়ে কিছু কথা বলা জরুরি মনে করছি।
১. নাইট্রোজেন অক্সাইড নিঃসরণ: নাইট্রোজেন অক্সাইড নিঃসরণের হার কমানোর লক্ষ্যে আরশাদ মনসুর উল্লেখিত এসসিআর (সিলেক্টিভ ক্যাটালাইটিক রিডাকশন) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে না; লো-নক্স বার্নার ব্যবহার করা হচ্ছে, যার কার্যকারিতা এসসিআরের প্রায় অর্ধেক (সূত্র: Click This Link)। ইআইএতে উল্লেখিত কার্যকরতার (৮৭ শতাংশ) দাবি সঠিক ধরে নিলেও দৈনিক নাইট্রোজেন অক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণ হবে ৮৪ দশমিক ৬ টন। সুন্দরবনের বাতাসে বর্তমানে নাইট্রোজেন অক্সাইডের গড় ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে দেখানো হয়েছে ১৮ মাইক্রোগ্রাম। বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হলে ১৪ কিলোমিটার দূরে সুন্দরবন অঞ্চলে নাইট্রোজেন অক্সাইডের ঘনত্ব (২৪ ঘণ্টার গড়) দাঁড়াবে ৪৭ দশমিক ২ মাইক্রোগ্রাম (সূত্র: সংশোধিত ইআইএ পৃষ্ঠা, ২৮৯)। যেহেতু এই নাইট্রোজেন অক্সাইড শ্বাসতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর, বাতাসে স্মগ বা ধোঁয়াশা তৈরি করে, অ্যাসিড বৃষ্টি ঘটায়, তাই সুন্দরবনের বাতাসে নাইট্রোজেনের ঘনত্ব চার মাস ধরে ৪৭ দশমিক ২ মাইক্রোগ্রাম থাকলে তা স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে ক্ষতিকর তো হবেই।
২. এফজিডি ব্যবহার: ইআইএ রিপোর্ট অনুসারে এফজিডি বাধ্যতামূলক ছিল না, বলা হয়েছিল কয়লায় সালফারের পরিমাণ শূন্য দশমিক ৬ শতাংশের বেশি হলেই কেবল এফজিডি ব্যবহৃত হবে। সমালোচনার কারণে হয়তো এখন এফজিডি ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে। ব্যয়বহুল এই পদ্ধতিতে শুধু প্রতি টন সালফার ডাই-অক্সাইড শোধনে বিপুল অর্থ (২০০ থেকে ৫০০ ডলার) লাগে। আবার এফজিডি বা স্ক্র্যাবার ব্যবহারের বিপদ হলো, কয়লা ও লাইমস্টোন থেকে ‘এফজিডি ওয়েস্ট ওয়াটার’-এ চলে আসা দ্রবীভূত কঠিন পদার্থ (ক্লোরাইড, সালফেট, বাইকার্বনেট), ভাসমান কঠিন পদার্থ (জিপসাম, ফ্লাই অ্যাশ), অ্যামোনিয়া, বিষাক্ত ভারী ধাতু যেমন আর্সেনিক, মার্কারি, সেলেনিয়াম, বোরন ইত্যাদি। ব্যবহৃত কয়লা ও লাইমস্টোনের ধরন অনুযায়ী এসবের মাত্রা বিভিন্ন রকম হয় বলে এসব পরিশোধনের কোনো একক ‘ওয়ান-সাইজ-ফিট-ফর-অল’ পদ্ধতি নেই, এগুলো পরিশোধন করাও দুরূহ ও ব্যয়সাপেক্ষ। (সূত্র: Click This Link নিউইয়র্ক টাইমস–এর Cleansing the Air at the Expense of Waterways শীর্ষক রিপোর্ট অনুসারে (লিংক: http://www.nytimes.com/ 2009/10/13/us/13water.html?_r=0 ) বায়ু দূষণমুক্ত করার জন্য স্ক্র্যাবার ব্যবহার করা হবে জেনে ২০০৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার হ্যাটফিল্ডস ফেরি (Hatfield’s Ferry) কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের দূষণের ভুক্তভোগীরা খুশিই হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা দেখলেন, স্ক্র্যাবার ব্যবহার করার ফলে বাতাস কিছুটা দূষণমুক্ত হচ্ছে, কিন্তু তার বদলে দূষিত হচ্ছে পানি! এ প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট বিপুল পরিমাণ তরল বর্জ্য ফেলা হচ্ছে পার্শ্ববর্তী মননগাহেলা (Monongahela) নদীতে, যে নদী ৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষের খাওয়ার পানির জোগান দেয়। তাই তো কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১৫ মাইল বা ২৪ কিলোমিটার দূরে বসবাসকারী ফিলিপ কোলম্যানের উপলব্ধি, ‘মনে হচ্ছে তারা আমাদের নিশ্বাসের মাধ্যমে বিষ গ্রহণ থেকে মুক্তি দিয়েছে, বিনিময়ে আমাদের সেই বিষ পানির সঙ্গে পান করতে হচ্ছে।’ (সুন্দরবনের দূরত্ব কিন্তু ১৪ কিলোমিটার এবং পশুর নদ ঠিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশ দিয়ে গেছে!)
৩. পার্টিকুলেট ম্যাটার্সের মাত্রা: ইএসপি ব্যবহার করে বাতাসে ক্ষুদ্র কণা নিঃসরণের হার কমানোর কথা বলা হলেও ইএসপির আওতার বাইরে থাকা দূষণের উৎস যেমন নির্মাণকাজ, কয়লা পরিবহন, ছাই ব্যবস্থাপনা ইত্যাদির মাধ্যমে সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশে পার্টিকুলেট ম্যাটার্সের মোট মাত্রা কত হবে এবং তা কীভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে, তার কোনো হিসাব করা হয়নি।
৪. পারদ দূরীকরণ: কী পরিমাণ পারদ নিঃসরণ হবে এবং তার কত অংশ দূরীকরণ সম্ভব হবে, তার কোনো হিসাব করা হয়নি। ইএসপি ও এফজিডির মাধ্যমে সম্পূর্ণ পারদ দূর করা যায় না—গড়ে ৪৮ শতাংশ, সর্বোচ্চ ৬৯ শতাংশ পারদ দূর করা
যায়। (সূত্র: Click This Link Coal/ewr/mercury_-FGD-white-paper-Final.pdf) সেই সঙ্গে এফজিডি ওয়েস্ট ওয়াটারে পারদের পরিমাণ বৃদ্ধির বিপদ তো আছেই।
৫. পানি পরিশোধন: ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মাধ্যমে দূষিত পানি পরিশোধন করে নদীতে নির্গমনের কথা বলা হলেও কার্যকারিতা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। পরিশোধনের বেলায় শুধু পিএইচ নিয়ন্ত্রণ করলেই হয় না, দূষিত পানিতে বিওডি, টিডিএস, টিএসসহ বিভিন্ন বিষাক্ত ভারী ধাতু নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন হয়, যা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঠিকঠাক করা হয় না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২৭২টি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৮৮টি থেকে নদীতে পানি নির্গমনের বেলায় আর্সেনিক, বোরন, কেডমিয়াম, সিসা, পারদ ও সেলিনিয়ামের কোনো সীমা বা মাত্রা মেনে চলা হয় না। (সূত্র: ) নিউইয়র্ক টাইমস–এর রিপোর্ট থেকেও দেখা যাচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা, কেনটাকি, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওহাইওসহ ১০টি রাজ্যের ২১টি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নদী ও জলাভূমিতে ফেডারেল ড্রিংকিং স্ট্যান্ডার্ডের চেয়ে ১৮ গুণ বেশি আর্সেনিকসম্পন্ন পানি নির্গত করেছে। আর ঢাকার নদীগুলোতে প্রতিদিন ৯০ হাজার ঘনমিটার তরল বর্জ্য কোনো ধরনের পরিশোধন ছাড়াই ডিসচার্জ করা হয়। ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থাকলেও সেগুলো ব্যবহার করা হয় না। কারণ, প্রতি ঘনমিটার তরল বর্জ্য পরিশোধন করতে ৩০ টাকা করে লাগে! (সূত্র: বণিক বার্তা, ২ এপ্রিল, ২০১৬) এ রকম একটা অবস্থায় কীভাবে ভরসা রাখা যেতে পারে যে ঢাকা থেকে বহু দূরে সুন্দরবনের প্রান্তে ঠিকঠাকমতো পানি পরিশোধন করে নদীতে ফেলা হবে!
৬. ছাই ব্যবস্থাপনা: সরকার একদিকে বলছে, সিমেন্ট কোম্পানিগুলোর কাছে ফ্লাই অ্যাশ বিক্রি করা হবে, অন্যদিকে সিমেন্ট কোম্পানিগুলো বিজ্ঞাপন দিয়ে ফ্লাই অ্যাশমুক্ত সিমেন্টের প্রচার করছে। এই অবস্থায় শুধু রামপাল নয়, আরও যেসব বৃহৎ কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেগুলো থেকে উৎপন্ন বিপুল পরিমাণ ছাই যথাযথ সময়ে বিক্রয় হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। বড়পুকুরিয়া কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ছাইয়ের ক্রেতা খুঁজে পেতে নয় বছর লেগেছে, তত দিনে চারপাশের পরিবেশ ছাইদূষণের শিকার হয়েছে।
৭. অনলাইন মনিটরিং: অনলাইন মনিটরিং-ব্যবস্থায় শুধু বায়ুদূষণ মনিটরিং করা হয়। কিন্তু চিহ্নিত দূষণ দূরীকরণ কি হবে?
প্রি–কনস্ট্রাকশন ফেইজে জমি তৈরি, মাটি ভরাট, ড্রেজিং ইত্যাদির মাধ্যমে যতটুকু দূষণ হয়েছে, তা চিহ্নিত করে রিপোর্ট দিয়েছিল মনিটর প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস। নভেম্বর ২০১৪ সালে তৃতীয় মনিটরিং রিপোর্টে ধুলো নিয়ন্ত্রণ, ড্রেজার থেকে শব্দদূষণ ও কালো ধোঁয়া নির্গমনের সমস্যা সমাধানের কথা বলা হলেও ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সালের অষ্টম মনিটরিং রিপোর্টেও দেখা যাচ্ছে, সেগুলোর সমাধান হয়নি।
৮. নির্গত পানির তাপমাত্রা: এত দিন বলা হতো, নির্গত পানির তাপমাত্রা নাকি একেবারেই স্বাভাবিক থাকবে! প্রশ্ন-উত্তরে স্বীকার করা হয়েছে, পানির তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বাড়বে। পানির তাপমাত্রা আসলে কত বাড়বে, সেটা একটা প্রশ্ন। কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নির্গত পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধির বিষয়ে জাইকার একটি রিপোর্টে থার্মাল ইফ্লুয়েন্ট নির্গমনের ফলে পানির তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত বৃদ্ধি এবং এর ফলে মাছের ক্ষতি হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সূত্র:
৯. কয়লা আনা-নেওয়ার প্রভাব: স্রেফ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে কয়লা পরিবহনের দূষণ ও ঝুঁকি সম্পূর্ণ দূর করা যাবে না। যেমন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের পাশ দিয়ে চলা কয়লা পরিবহনকারী জাহাজ থেকে কয়লা, তেল, আবর্জনা, দূষিত পানি নিঃসরণ ও শব্দদূষণ, সুন্দরবনের ভেতরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে কয়লা ওঠানো-নামানোর সময় পানি/বায়ু/শব্দদূষণ, রাতে জাহাজ চলাচলের সময় জাহাজের সার্চ লাইটের আলোয় নিশাচর প্রাণীর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ইত্যাদি। তা ছাড়া জাহাজের ড্রাফট মেইনটেইন করার জন্য নিয়মিত নদী ড্রেজিংয়ের প্রয়োজন হবে, সেই ড্রেজিংয়ের ফলেও নদীদূষণ ঘটবে।
১০. পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন: পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু সে মূল্যায়ন প্রত্যাখ্যাত হলেও আমলে নেওয়া হয়নি। আসলে আগে চুক্তি ও স্থান চূড়ান্ত করে পরে ইআইএ কিংবা গণশুনানি করার অর্থ থাকে না।
প্রকৃতপক্ষে, প্রযুক্তি ব্যবহার করে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কিছু কিছু দূষণ আংশিক কমানো গেলেও অনেক দূষণ আবার কমানো যায় না। বায়ুদূষণ কমাতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে পানিদূষণ বেড়ে যায়। এ কারণেই সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মতো স্পর্শকাতর অঞ্চলের ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন না করার কথা বলা হয়েছে ভারতের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ইআইএ গাইডলাইন, ২০১০-এ। আমরা আশা করব, সুন্দরবনের গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র অন্যত্র স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেবে।
কল্লোল মোস্তফা: প্রকৌশলী।
৪৮| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৩:৩২
সেলিনা মওলা বলেছেন: গত বৃহস্পতিবার এবং সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে পরিবাশ সমিক্ষার কথা বলা হয়েছে । সেখানে বলা হয়েছে, জাহাজ চলাচলে ডলফিনের ক্ষতি হবে । জানামতে, ঐ নদিতে দিনে গড়ে ৮০ টি জাহাজ চলাচল করে । আর ১২০০০ টন কয়লা নিয়ে দিনে জাহাজ চলাচল করবে গড়ে দেড় টি । অর্থাৎ ৮০+১,৫ টি জাহাজ চলাচল করবে । কয়লার জাহার থেকে আকরাম পয়েন্টে মাদার ভ্যাসেল থেকে ঢাকনাযুক্ত লাইটার্জে রামপালে কয়লা আনা হবে এবং - কয়লা খালাসের জন্য ভাসমান টার্মিনাল ব্যবহার (এফটিএস) করা হবে।
এতোদিন, দিনে প্রায় ৮০ টির মত জাহাজেও যখন ডলফিনের ক্ষতি হয় নাই তাহলে অতিরিক্ত দেড় টি জাহাজে ডলফিনের ক্ষতি হয়ে তা বিলুপ্ত হয়ে যাবে তা কতটুকু যৌক্তিক ?
তর্ক করার জন্যে নয় । জানার জন্যে উপরের সব কমেন্টসহ এই কমেন্ট দিলাম ।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:১৬
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: সেলিনা মওলা, আপনি এই পোস্টের বিষয় বস্তুই বুঝেন নাই, এটা সুন্দরবনের সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং বনের প্রটেকশনের দৃষ্টি কোণ থেকে লিখা। বিদ্যুৎ কেন্দ্র আলোচ্য বনের শত্রু আলোনায় আনা ৬ টি পয়েন্টের শুধু একটি মাত্র দিক।
অত্যন্ত ভয়ের কথা হোল, উল্লেখিত পাঁচ চক্রের যার পর নাই অবারিত সম্পদ লুণ্ঠন এবং রেণু সংগ্রহ অব্যহত থাকলে আশে পাশের এলাকায় কোন ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র না থাকলেও শুধু রাজনৈতিক দুর্বিত্তায়িত প্রাণীজ-জলজ-বনজ সম্পদ আহরণ ভিত্তিক অগ্রসরমান ফরেস্ট পেনিট্রেশন এবং এতদসম্পর্কিত অনাচারে এমনিতেই ২০-৩০ বছরের মধ্যে সুন্দরবন হারিয়ে সাধারণ উদ্যান যাবে।
আমি ধরে নিচ্ছ, আপনি পোষ্ট একেবারেই পড়েননি। পড়ুন, বুঝুন এবং তার পর মন্তব্য করুন। প্রপাগান্ডা মেশিন থেকে দেয়া কপি পেস্ট লিংক দিবেন না। আরশাদ সাহেব এবং বাংলানিউজের সাংবাদিকদের ভারতে ভ্যাকেশন ট্যুরে নিয়ে কিভাবে ট্রিট দেয়া হয়েছে এবং উপঢৌকন ধরিয়ে দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষে দালালি করার পথ উত্মুক্ত করা তা বাংলানিউজের খবরেই আছে, পড়ে নিয়েন।
আরো কয়েকটি কথা-
১। অতীত এবং ভবিশ্যতের সব ধরনের জাহাজ চলাচলই বিবেচনায় এনে মংলা বন্দরের দিকে শুধু প্রধান রুট সচল রাখার এবং অন্য শাখা রুট বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। ঊত্তরত্তত ঢেউ শুধু ডোলফিন না, সকল জলজ প্রানী এবং অতি ক্ষুদ্র জুয়ো প্লাংকটন এর জন্যও ক্ষতি। (অস্থানে সময় নষ্ট করতে চাচ্ছি না)
২। রামপাল সাবেক সুন্দরবনেরই একটি এলাকা। দুরুত্ব নিয়ে জ্ঞানহীন এবং অন্ধ সমর্থনের খাতিরে তর্ক করবেন না।
৩। রামপাল থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্র সরানোর স্কোপ আছে, এমনকি বন্দরের জন্য পায়রাও একটি উত্তম যায়গা নয়। আমি বলেছি গলাচিপা নদীর মোহনায় বন্দর এবং এর পুর্বে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করার কথা।
আরো কিছু জবাব এইসব লিখায় আছে-
রামপালের কয়লা পরিবহনে ঝুঁকি বাড়বে সুন্দরবনের
রামপালের কয়লা পরিবহনে ঝুঁকি বাড়বে সুন্দরবনের
ইফতেখার মাহমুদ | আপডেট: ০২:৪১, আগস্ট ২৩, ২০১৬
রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বছরে ৪৭ লাখ টন কয়লা ও চুনাপাথর আনা হবে। সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত পশুর নদ ও শিবসা নদী এবং বিভিন্ন খাল দিয়ে এসব রামপালে পৌঁছাবে। কয়লা ও চুনাপাথর বহনকারী জাহাজগুলোর সমুদ্র থেকে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে ৫২৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। এই পথে ডলফিনের দুটি অভয়ারণ্য, সুন্দরবনের বেঙ্গল টাইগারসহ মহা বিপন্ন প্রজাতির বেশ কিছু প্রাণীর বিচরণ এলাকা রয়েছে। ফলে প্রাণিকুল নতুন করে ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। রামপাল প্রকল্পের কয়লা পরিবহনের পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা (ইআইএ) প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) সমীক্ষাটি চূড়ান্ত করেছে। রামপাল মৈত্রী বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী কোম্পানির অর্থায়নে এ সমীক্ষা করা হয়।
মূলত প্রকল্পের কারণে কোন ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, তা জানতে ও বুঝতেই এই সমীক্ষা করা হয়। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ইআইএ সমীক্ষা এবং ঝুঁকি চিহ্নিত করে তা মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিতে হয়। মৈত্রী কোম্পানির ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনটির সারসংক্ষেপ দেওয়া হয়েছে। মতামত সংগ্রহে ইতিমধ্যে ঢাকা, মোংলা ও বাগেরহাটে এই প্রতিবেদনের ওপর আলোচনা হয়েছে। আজ খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রতিবেদনটি সম্পর্কে জানাতে গিয়ে সিইজিআইএসের নির্বাহী পরিচালক ওয়াজি উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘রামপালে কয়লা পরিবহনের ফলে পরিবেশগত, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে যত ধরনের প্রভাব পড়বে, তা আমরা চিহ্নিত করেছি। এই ঝুঁকিগুলো কীভাবে কমানো যায়, তার পরামর্শ দিয়েছি। এসব মেনে চললে সম্ভাব্য ক্ষতি অনেক কমে আসবে।’
ইআইএর প্রতিবেদনে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতার ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রাক-নির্মাণ পর্যায়, নির্মাণ পর্যায় ও নির্মাণ-পরবর্তী পরিচালনা এবং তদারকি পর্যায়ে ১২ ধরনের মোট ৮৩টি প্রভাব ও ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়েছে। ১২ ধরনের প্রভাবের মধ্যে ১১টি পরিবেশগত ঝুঁকি। একমাত্র ইতিবাচক অর্থনৈতিক প্রভাব হিসেবে মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়লা পরিবহনের সময় জাহাজ থেকে বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য সুন্দরবনে পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে চিহ্নিত হওয়া ঝুঁকির মধ্যে কয়লা ও বাতাসের ঘর্ষণে আগুন ধরে যাওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে এমন মানের কয়লা আনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে বাতাসের ঘর্ষণে আগুন ধরবে না। আমদানিকারক দেশ থেকে ওই নিশ্চয়তাপত্র নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া জাহাজের শব্দ, আলো, ধোঁয়ায় কম্পনের পরিমাণ বেড়ে যাবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক উজ্জ্বল কান্তি ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘কয়লা পরিবহনের এই সমীক্ষাটি নিয়ে আমরা দুটি জেলায় যে আলোচনাগুলো করেছি, তাতে আরও নিশ্চিত হয়েছি যে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি না করেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে পারব। আমরা এমন উন্নত জাহাজে করে কয়লা আনব, যাতে এত আস্তে শব্দ হবে যে বনের প্রাণীদের সমস্যা হবে না। জাহাজের আলো খুব সীমিত থাকবে, পানিতে কম্পনও কম হবে। প্রাণীদের জন্য কোনো সমস্যা সৃষ্টি করবে না।’
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বদরূল ইমাম প্রথম আলোকে বলেন, কয়লা পরিবহন-পথের পাশাপাশি রামপালে কয়লা এনে তা জাহাজ থেকে প্রকল্প এলাকায় স্থানান্তরের সময় কয়লার ব্যাপক ধুলা ও বিষাক্ত পদার্থ চারপাশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ইআইএর প্রতিবেদনে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু পাওয়া যায়নি। আর রামপাল প্রকল্প কর্তৃপক্ষ যেভাবে প্রযুক্তি দিয়ে দূষণ শতভাগ রোধ করবে বলছে, তা অবৈজ্ঞানিক। কারণ, পৃথিবীর এমন কোনো প্রযুক্তি নেই, যেখানে কেউ দাবি করতে পারে, শতভাগ দূষণ রোধ করা যাবে। বলা যায়, দূষণ কমিয়ে আনা যাবে। কিন্তু এই অল্প দূষণও সাধারণ এলাকার যতটা ক্ষতি করবে, সুন্দরবনের ক্ষতি করবে তার কয়েক গুণ বেশি।
বদরূল ইমাম আরও বলেন, গত দুই বছরে সুন্দরবনে পাঁচ-ছয়টি তেল-কয়লা ও সিমেন্টবাহী জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে। সেগুলো ছিল ছোট জাহাজ, সেই ক্ষতি মোকাবিলায় তেমন কোনো সঠিক উদ্যোগ দেখা যায়নি। ফলে রামপালে এসে সবকিছু শতভাগ শুদ্ধ হয়ে যাবে, এ আস্থা রাখা যায় না।
রামপাল প্রকল্পে কয়লা পরিবহনের জন্য তিনটি পথের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে পশুর নদ দিয়ে মোংলায় কয়লা নিয়ে যেতে ১৪৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। এই পথের ৮০ শতাংশই সুন্দরবনের মধ্যে পড়েছে। শিবসা চ্যানেল দিয়ে গেলে ১৫৩ কিলোমিটার পাড়ি দিতে হবে এবং এই পথের ৭৫ শতাংশ সুন্দরবন। সুন্দরবনের পাশ দিয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে বলেশ্বর নদ হয়ে ঘসিয়াখালী খাল দিয়ে গেলে পাড়ি দিতে হবে ১৯৬ কিলোমিটার পথ।
উজ্জ্বল কান্তি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা পশুর নদ দিয়ে মোংলা হয়ে রামপালে কয়লা নেওয়ার কথা ভাবছি। কারণ, এটি প্রতিষ্ঠিত পুরোনো পথ।’ এই পথে ডলফিনের অভয়ারণ্য পড়েছে এবং বন্য প্রাণী আইন অনুযায়ী এই অভয়ারণ্যে জাহাজ চলাচল নিষেধ। এই তথ্য উল্লেখ করে মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই পথ দিয়ে তো মোংলা বন্দরে নিয়মিত জাহাজ যাচ্ছে। আমাদের শুধু দিনে দু-একটি জাহাজ বেশি যাবে।’
ইআইএর প্রতিবেদনে কয়লা পরিবহনের ফলে বন্য প্রাণীদের শরীর ও আচরণের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কার কথাও উল্লেখ রয়েছে। পৃথিবী থেকে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী বেঙ্গল টাইগার, দুই প্রজাতির ডলফিন, নোনা পানির কুমির, ভোঁদড়; পাখিদের মধ্যে মাসকট ফিন ফুট, স্পুন বিলড সেন্ডপাইপার, হোয়াইট রমপেড শকুন, স্লেনডার বিলড শকুন, হোয়াইট হেডেড ডাক ও গ্রেটারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। জাহাজের শব্দ প্রাণী ও পাখিদের বিরক্তির কারণ হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়লা পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত এলাকার দুই পাশে ৩ লাখ ২০ হাজার ৫০০ একর ভূমি রয়েছে। এর প্রায় ১২ শতাংশ কৃষিজমি ও চিংড়িঘের, ৩৬ শতাংশ বনভূমি ও ৪৮ শতাংশ এলাকায় জলাভূমি ও বসতি রয়েছে। জলাভূমিতে ৩২৬ জাতের মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়িজাতীয় প্রাণী, ৫ প্রজাতির কাঁকড়া, ৩ প্রজাতির সাপ ও ২২ প্রজাতির ঝিনুক রয়েছে।
জানতে চাইলে বন বিভাগের বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল বিভাগের বন সংরক্ষক অসিত রঞ্জন পাল প্রথম আলোকে বলেন, সুন্দরবন বাংলাদেশের শুধু নয়, পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের অন্যতম বড় আধার। এই বনের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য এখানকার প্রধান সম্পদ। কাজেই সবার উচিত এমন কিছু না করা, যাতে এই সম্পদের ক্ষতি হয়।
নিচের লিখাটা নিজের ফেবু পেইজে দিয়েছেন মেরিনার ওয়াহিদ জামান-
https://www.facebook.com/wahid.zaman.5205/posts/841686902599063
""রামপাল প্রসঙ্গঃ-
আমি বর্তমানে যে জাহাজটিতে আছি সেটির দৈর্ঘ্য ১৯০ মিটার,ধারন ক্ষমতা প্রায় ৪৭ হাজার মেট্রিক টন। প্রতি মাসেই আমরা থাইল্যান্ড থেকে ধারন ক্ষমতার সমপরিমাণ সিমেন্ট ক্লিঙ্কার নিয়ে বাংলাদেশে আসি।কর্ণফুলী নদী দিয়ে চট্রগ্রাম বন্দরে ১৯০ মিটার বা তার চেয়ে বড় জাহাজ ঢুকতে পারে না বলে আমাদেরকে সমুদ্রের ভিতরে নোঙ্গরে থেকে পুরো কার্গো ডিসচার্জ করতে হয়। লাইটার জাহাজ(ছোট জাহাজ)এসে কার্গো ডিসচার্জ করে নিয়ে যায়। ৪৭ হাজার টনের জাহাজটিকে খালি করতে প্রায় ৪০টি লাইটার জাহাজের দরকার হয় যে লাইটার জাহাজগুলো কর্ণফুলী, বুড়িগঙ্গা,পশুর ইত্যাদি নদীতে চলাচল করে। রামপালে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে এই লাইটার গুলোই বড় জাহাজ থেকে কয়লা নামিয়ে সুন্দরবনের ভিতর দিয়েই রামপালে যাবে।
কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতি বছর কয়লা লাগবে ৪৭ লক্ষ মেট্রিক টন।অর্থাৎ আমি যে জাহাজটিতে আছি এরকম ১০০টি জাহাজ প্রতিবছর কয়লা নিয়ে পশুর নদীর আকরাম পয়েন্ট/ হিরণ পয়েন্ট এ গিয়ে নোঙ্গর করবে। সেখান থেকে প্রতি বছর প্রায় ৪০০০(৪০X১০০) লাইটার জাহাজ কয়লা নামিয়ে রামপালে নিয়ে ডিসচার্জ দিবে। বুঝা যাচ্ছে যে, ৪৭ লক্ষ টন কয়লা প্রতি বছর ২ বার করে ডিসচার্জ হবে।একবার আকরাম পয়েন্টে,আরেকবার রামপালে।
যারা কয়লা লোডিং/ডিসচার্জ দেখেননি তারা কল্পনাও করতে পারবেন যে এর দ্বারা কিভাবে পানি আর বায়ু দুষিত হয়! হাজার হাজার লাইটার জাহাজ থেকে নির্গত বর্জ্য,ধোঁওয়া,তেল থেকে যেমন হবে পানি আর বায়ু দূষণ তেমনি হবে শব্দ আর আলো দূষণ।আর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হয়ে গেলে তো কথাই নেই।সুন্দরবনের বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইড,সালফার-ডাই-অক্সাইড এর মাত্রা বাড়বে কি বাড়বে না, ফ্লোরা/ফনা ধ্বংস হবে কি হবে না,নদীর মাছ আর সুন্দরবনের পশুপাখির ক্ষতি হবে কি হবে না এগুলোর ব্যাখ্যা দেয়ার দরকার পরে না। এর পরেও অনেকেই বলছেন যে,রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে নাকি সুন্দরবনের একটি পাতারও ক্ষতি হবে না। যদিও মাননীয় অর্থমন্ত্রী বলেছেন যে, সুন্দরবনের ক্ষতি হলেও সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা হবে না। অর্থাৎ যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা নিজেরাও জানেন যে সুন্দরবনের পরিবেশ মারাত্তকভাবে খতিগ্রস্ত হবে। তাহলে সব কিছু জেনে বুঝেও কেন এই আত্তঘাতি সিদ্ধান্ত!!
অনেকেই ভাবছেন যে, জেনে শুনে সুন্দরবনের পরিবেশ হুমকির মুখে ঠেলে দিয়ে যে চুক্তি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে সেখান থেকে মনে হয় বাংলাদেশ অনেক বেশি লাভবান হবে। তাই সুন্দরবনের পরিবেশকে ছাড় দেয়া হচ্ছে। যদি আপনিও এমনটি ভেবে থাকেন তাহলে চুক্তিটা সম্পর্কে একবার হলেও আপনার জানা দরকার।
যদি আপনার বিবেক বিক্রি হয়ে গিয়ে থাকে,যদি আপনি দল আর মতের কাছে অন্ধত্ব বরণ করে থাকেন তাহলে অনুরোধ করব অন্তত কিছু সময়ের জন্য হলেও বিবেক নিজের কাছে ফিরিয়ে এনে সুস্থ মাথায় চিন্তা করতে যে-
আপনার বাড়ির বিদ্যুতের সমস্যা নিরসনের জন্য বড়লোক প্রতিবেশীর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। চুক্তি অনুযায়ি আপনার বাড়ির উঠোনে ঠিক বাগানটার পাশেই কয়লা দিয়ে চালিত একটা বিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে। প্রতিবেশীরও বিদ্যুতের দরকার আছে কিন্তু নিজের বাড়ির পরিবেশের কথা চিন্তা করে তারা আপনার বাড়িতেই কেন্দ্রটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করতে খরচ হবে ১০০ টাকা। ১৫ টাকা দিবেন আপনি, ১৫ টাকা আপনার প্রতিবেশী আর ৭০ টাকা আপনাকে সুদে ধার নিতে হবে প্রতিবেশি থেকে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু করতে যত কয়লা লাগবে তার সবটুকুই আপনার প্রতিবেশি থেকেই কিনতে হবে যদিও আপনার প্রতিবেশি নিজেরাই কয়লা অন্য দেশ থেকে আমদানি করে। আমি নিজে অনেকবার ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা নিয়ে গিয়েছি আপনার প্রতিবেশির বাড়িতে। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে,যারা নিজেরাই কিনে আনে তারা আপনার কাছে লাভ ছাড়া নিশ্চয়ই বিক্রি করবে না। অথচ আপনি নিজেই এই কয়লা কিনে আনতে পারতেন। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম যে,আপনার বাসা ঢাকার কাউরানবাজারে আর বাংলা মোটরেই কয়লা বিক্রি হয়। আপনি কয়লা বাংলামোটর থেকে না কিনে কিনছেন আপনার প্রতিবেশির বাড়ি ফার্মগেট থেকে যারা নিজেরাই কয়লা বাংলামোটর থেকে কিনে আনে। যাই হোক। এই কয়লা কিন্তু আপনার উঠোনের বাগান দিয়েই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নেয়া হবে। এতসব কিছুর পরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হলে যে লাভ হবে তার ৫০ ভাগ আপনি পাবেন আর ৫০ ভাগই নিয়ে যাবে আপনার বড়লোক প্রতিবেশি!! যদি আপনি আপনার প্রতিবেশির ভাগ থেকে কিনতে চান তাহলে চড়া দাম দিয়েই কিনে নিতে হবে। এখানেই শেষ নয়। পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সব ধরনের ঝুঁকি আর ক্ষতির ভার আপনাকেই বহন করতে হবে। এবার ভেবে বলুন তো যে, আপনার বিবেক কি এই ধরনের চুক্তিকেও অন্ধভাবে সমর্থন দেয় !! আপনার বিবেক বুঝি এভাবেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে !!
এর পরেও যদি মনে করেন যে, আমি এর প্রতিবাদ করতে পারব না তাহলে অন্তত নিরব থাকুন। মানুষকে ভুল বুঝাবেন না।খোঁড়া যুক্তি দেখাবেন না। আপনাদের খোঁড়া যুক্তি দেখলে ভয় হয় যে,অন্ধত্ব কিভাবে মানুষকে আচ্ছন্ন করে রাখে,গোলামীর নেশা কিভাবে মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করে, আড়ষ্টতা কিভাবে মানুষকে বাকরুদ্ধ করে আর গোয়ার্তমির নেশা কিভাবে মানুষকে বিবেকহীন করে !!
অলাভজনক চুক্তির যেসব কাঁটা মধ্যবিত্তের এই বাংলাদেশের গলায় একের পর এক বিদ্ধ হচ্ছে এগুলো একসময় অনেক বেশি ব্যথার কারন হয়ে দাঁড়াবে, এর থেকে মুক্তি পেতে এক সময় বাংলাদেশ ছটফট করবে। আফসোস, এতে শুধু ব্যথাই বাড়বে কিন্তু মুক্তি এত সহজে মিলবে না। এটা আমি হলফ করেই বলে দিতে পারি। আপনি লিখে রাখতে পারেন।""
২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:২৮
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: জাস্ট খেয়াল করলাম, মাত্রই একাউন্ট ওপেন করে আপনি এখানে প্রপাগান্ডা চালাতে এসেছেন।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:৩২
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: বিজ্ঞান, বিজ্ঞাপন ও সুন্দরবন -১
আবুল হাসান রুবেল | ২০:৪৯:০০ মিনিট, আগস্ট ১৭, ২০১৬
বিজ্ঞান, বিজ্ঞাপন ও সুন্দরবন -১
বিজ্ঞান, বিজ্ঞাপন ও সুন্দরবন
আবুল হাসান রুবেল | ১৯:২৫:০০ মিনিট, আগস্ট ১৬, ২০১৬
বিজ্ঞান, বিজ্ঞাপন ও সুন্দরবন-২
কয়েক বছর ধরেই কয়লাবিদ্যুত্ নিয়ে পড়াশোনা করছি মূলত পরিবেশের প্রশ্নটাকে কেন্দ্রে রেখে। সুন্দরবনের কাছে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র করার ঘোষণা আসার পর থেকে স্বাভাবিকভাবেই এ পড়াশোনার মাত্রা আরেকটু বাড়াতে হয়েছে। তবে কিছুদিন ধরে কয়লাবিদ্যুতের পক্ষে সরকারি আর কোম্পানির প্রচার-প্রচারণায় নিজেরই সন্দেহ হতে থাকল— এত দিন যা জেনেছি, ঠিক জেনেছি তো? তাই আবারো পুরনো জানাটাকে ঝালিয়ে নেয়া আর নতুন করে অনুসন্ধান শুরু করতে হলো। গত কয়েক সপ্তাহে পক্ষে-বিপক্ষে বহু নিবন্ধ, রিপোর্ট, বই-পুস্তক, জার্নাল ঘাঁটাঘাঁটি করা হলো। উদ্দেশ্য, প্রথমত. নিজের জানা-বোঝায় যাতে ঘাটতি না থাকে। যারা রামপালবিরোধী আন্দোলন করছেন, তাদের অনেকের মধ্যেই এ চেষ্টা জারি আছে। নানা জন নানা দিক থেকে বিশ্লেষণ করছেন। এ জানা-বোঝাটা একেবারে কেবল জানা-বোঝার উদ্দেশ্যে নয়, এর অন্য একটা উদ্দেশ্য আছে। সেটা হলো, সুন্দরবনকে রক্ষা করা। যাতে তার কোনো ক্ষতি না হয়, সেটা নিশ্চিত হওয়া। বিপরীতে কোম্পানির চেষ্টা হওয়ার কথা তাদের প্রকল্প চালু করা, এতে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না কেন, সে বিষয়ে সততার সঙ্গে জনগণকে আশ্বস্ত করা। অন্যদিকে রাষ্ট্র কিংবা সরকারের কাজ হওয়ার কথা নাগরিকদের উদ্বেগ আমলে নিয়ে কী কী বিকল্প আছে, তার অনুসন্ধান, কোম্পানিকে অন্যত্র বিদ্যুৎকেন্দ্র সরিয়ে নিতে বলা এবং তার ব্যবস্থা করা, যদি নাগরিকদের দাবি অযৌক্তিক বলেও মনে হয় তবুও তাদের সংশয় দূর করার উদ্যোগ নেয়া, সুন্দরবনকে রক্ষায় তাদের পদক্ষেপগুলো সুনির্দিষ্টভাবে তুলে ধরা। কিন্তু আমরা বর্তমানে কোম্পানি এবং সরকারের ভূমিকার কার্যত কোনো পার্থক্য দেখতে পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে, তারা একাকার হয়ে গেছে। আবার আন্দোলনকারীদের দিক থেকে কয়লাবিদ্যুত্ নিয়ে জানাশোনার যে চেষ্টাটা দেখা যাচ্ছে, প্রকল্পের পক্ষের লোকদের সুন্দরবন নিয়ে জানাশোনার সেই আগ্রহটা দেখা যাচ্ছে না। রামপাল প্রকল্প সুন্দরবনের ক্ষতি করবে না— এটা বলার জন্য সুন্দরবনকে যতটুকু উল্লেখ করতে হয়, তাদের বক্তব্যে সুন্দরবনের উল্লেখ ততটুকুই। সুন্দরবনের কী কী ধরনের বাস্তুতন্ত্র আছে, কীভাবে তাদের রক্ষা করা হবে বা তাদের আন্তঃসম্পর্ক কী কী কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, সেগুলো নিয়ে কোনো কথাবার্তা আমরা তাদের বক্তব্যে পাই না। সুন্দরবনের বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী কী কী এবং কীভাবে তাদের ওপর এ বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রভাব রাখবে না, সে রকম কথাও আমরা তাদের কাছে শুনছি না। অথবা সুন্দবনের উদ্ভিদকুলের প্রতিবেশগত প্রয়োজন কী কী এবং সেগুলো মাথায় রেখে তা রক্ষায় কী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, সে রকম কোনো কিছুও আমরা তাদের কাছ থেকে জানতে পারছি না। বরং তাদের বক্তব্যে সত্যিকার বোঝাপড়া বা অনুসন্ধানের চেয়ে বিজ্ঞাপনের একরৈখিক প্রচারণার সুরই প্রধান। ফলে তারা বৈজ্ঞানিকতার দাবি করে আসলে বিজ্ঞান নয়, প্রচার করছেন বিজ্ঞাপন। এই বিজ্ঞাপনের বিপরীতে আমরা এখানে সত্য অনুসন্ধানের বৈজ্ঞানিক পথেই বিষয়গুলোর মীমাংসার চেষ্টা করব। আর মনে রাখব টেকনোলজিই বিজ্ঞান নয়, বরং সত্য অনুসন্ধানের পথই বিজ্ঞান।
বিজ্ঞাপন-১
রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এ প্রযুত্তি ব্যবহার করলে পরিবেশ দূষিত হবে না। কাজেই সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা না থাকলেও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ না জেনে অহেতুক বিরোধিতা করা হচ্ছে।
বাস্তবতা
এটাই যারা বিদ্যুৎকেন্দ্র করার পক্ষে তাদের দিক থেকে দেয়া এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বহুল প্রচারিত যুক্তি। এতে বিরোধিতাকারীদের ওপর একটা ছাপ মেরে দেয়ার চেষ্টা খোলা চোখেই দৃশ্যমান। সরকারি যুক্তিতে সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে যেন তা সব সমস্যার সমাধান করে দেবে। জ্বালানি ও বিদ্যুত্ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে কয়লাকে এমনকি পরিবেশবান্ধব জ্বালানি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আসলে এসব বক্তব্যে সত্যের ছোঁয়া সামান্যই। সারা দুনিয়ায় কয়লা সবচেয়ে দূষণকারী ও নোংরা জ্বালানি হিসেবেই স্বীকৃত, পরিবেশবান্ধব নয়। আজকাল ইন্টারনেটের যুগে যে কেউ গুগল করেই এ বক্তব্যের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেন। বিশেষ গবেষণা ও বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের দরকার নেই। আর সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি খুব নতুন কিছু নয়। মূলত পঞ্চাশের দশকের শেষ দিক থেকেই এর ব্যবহার শুরু হয় কম কয়লা ব্যবহার করে বিদ্যুত্ উত্পাদনের সুবিধার জন্য। মূলত এর সঙ্গে পরিবেশের যা সম্পর্ক, তা কয়লা পোড়ানোর পরিমাণ ও দক্ষতার সঙ্গে। এ প্রযুক্তিতে অপেক্ষাকৃত দক্ষতার সঙ্গে কয়লা পোড়ানো হয়। ফলে কম কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুত্ উত্পাদন করা যায় এবং দূষণও খানিকটা কম হয়। এ প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু হওয়ার পর বেশ কিছুদিন চললেও কয়লার দাম মোটামুটি স্থিতিশীল হওয়ার পর নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকেই নতুন করে এর ব্যবহার বন্ধ হয়। কেননা বেশি কয়লা পুড়িয়েও বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে আর অসুবিধা থাকে না, প্রযুক্তিগত আয়োজনের খরচ মিটিয়ে কম কয়লা ব্যবহার করেও এই পদ্ধতিতে পুরনো সাব-ক্রিটিক্যাল পদ্ধতির চেয়ে বেশি হওয়ার ফলে। অর্থাত্ এ প্রযুক্তির আবির্ভাব ও ব্যবহার কমে যাওয়ার পেছনে ছিল অর্থনৈতিক বিবেচনা, পরিবেশ নয়। এহেন সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিকে যে সর্বরোগহর দাওয়াই হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, এমনকি কয়লাকে পরিবেশবান্ধব বানিয়ে দেয়া হচ্ছে— এটা বাংলাদেশের বিশেষ ও অনন্যবাস্তবতা। এমন উদাহরণ আর কোথাও পাওয়া যাবে না। তবে এ সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি আবারো ব্যবহার শুরুর কারণ হিসেবে আসলে আছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ হিসেবে সবচেয়ে দায়ী জ্বালানি হিসেবে কয়লা ব্যবহার বন্ধ করার দাবির পরিপ্রেক্ষিত। নতুন করে এ বিষয়ে গবেষণা শুরু হয় প্রযুক্তিকে আরো উন্নত করতে। বলা বাহুল্য, সেগুলো করার ক্ষেত্রে কয়লা কোম্পানির উদ্দেশ্য ছিল কয়লাকে গ্রহণযোগ্য করা, তার ভাবমূর্তি পরিষ্কার করা। এ গবেষণার মাধ্যমে প্রযুক্তিকে আরো উন্নত করার পদক্ষেপ নেয়া হয়। সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির চেয়েও কয়লার এনার্জি কনভারশন রেট বাড়ানো যেতে পারে আলট্রাসুপারক্রিটিক্যাল টেকনোলজি মারফত। তাতে দূষণও আরেকটু কমে। কয়লার দহন দক্ষতা আরো বাড়ানোর প্রযুক্তি হচ্ছে অ্যাডভান্সড আলট্রাসুপারক্রিটিক্যাল টেকনোলজি। যদিও রামপালে এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে না। বর্তমানে কার্বন উদ্গীরণ নিয়ে যে সচেতনতা, তার ফলে নতুন করে সে প্রযুক্তির কথা বলা হচ্ছে সেটা হলো— কার্বন ক্যাপচার ও স্টোরেজ বা সিকুয়েন্সশন (সিসিএস) প্রযুক্তি। যাতে কার্বনের নিঃসরণ অনেকটা কমে আসে। সেটি এখনো বহুল ব্যবহারের পর্যায়ে আসেনি। এখন পর্যন্ত (জুলাই ২০১৬) এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে কেবল দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে। কিন্তু এমনকি সেই প্রযুক্তিও কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ঈঙচ২১-এ স্বাক্ষর করে এসেছে, তা পূরণে সক্ষম নয়।
কয়লা হচ্ছে দুনিয়ার সবচেয়ে দূষিত জ্বালানি, কয়লাখনি বিপুলভাবে ভূমিরূপের গঠন পরিবর্তন করে, গাছপালা-পশুপাখি-মানুষের মৃত্যু ঘটায়। দূষিত ও ধ্বংস করে পানির উত্সকে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রবেশের আগেই কয়লা পরিবহন মারফত একবার দূষণ ঘটে। এর পর বিদ্যুৎকেন্দ্রে ঢোকানোর আগে কয়লা ধুয়ে নিতে হয়, যা লক্ষ লক্ষ টন কোল স্লারির উদ্ভব ঘটিয়ে পানির উত্সকে দূষিত করে। এতে পানির মান ধ্বংস হয়, তীরবর্তী প্রাণের ক্ষতি হয় এবং আশপাশের এলাকায় স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির জন্ম দেয়। আর এসব প্লান্টে দুর্ঘটনা ঘটলে তার প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে সব দিকেই। উদাহরণস্বরূপ, টেনেসিতে কিংস্টন ফসিল প্লান্টে কোল স্লারির দেয়ালে ফাটল ধরে ৫ দশমিক ৪ মিলিয়ন ঘন গজ তরল কয়লার ছাই ছড়িয়ে পড়ে, যা নিকটস্থ টেনেসি নদীর ৩ হাজার একরজুড়ে এক ফুট গভীর স্তরের জন্ম দেয়। ছড়িয়ে পড়ে কয়েক মাইলজুড়ে, মানুষের বাড়িঘর, রেললাইন, রাস্তা, পুকুর ধ্বংস করে এবং পানিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি বেড়ে যায়, যার বিষক্রিয়া পানিকে দূষিত করে।
সাধারণভাবে একটা ৫০০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে প্রতি বছর প্রায় ৩০ লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত করে। প্রতিটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের আকার ও দক্ষতার ওপর কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনের পরিমাণ নির্ভর করে। মার্টিনস লেক টেক্সাসে ২০০৬ সালে শুধু একটি বিদুৎকেন্দ্রই ২১০ লাখ টন কার্বন নির্গত করে; যা স্লোভেনিয়া, এস্তোনিয়া, বলিভিয়া বা আফগানিস্তানের ২০০৪ সালের মোট কার্বন নির্গমনের চেয়ে বেশি। বিশ্বজুড়ে যে ২৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র ‘সবচেয়ে বেশি কার্বন নির্গমনের জন্য দায়ী, তার সবকটিই কয়লাভিত্তিক।’ এগুলোর সম্মিলিত কার্বন নির্গমন ৫ হাজার ৭০০ লাখ টন, যা যুক্তরাজ্যের মোট বার্ষিক নির্গমনের সমান। ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, যার রয়েছে বহুমাত্রিক প্রভাব, তার প্রধান উত্স হলো কার্বন নির্গমন; যা সুপারক্রিটিক্যাল, আলট্রাসুপারক্রিটিক্যাল, এমনকি অ্যাডভান্সড আলট্রাসুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি দিয়েও রোধ করা যায় না। আর কার্বন শুধু বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিই ঘটায় না বরং বাতাসে কার্বনকণা ছড়িয়ে পড়লে তা উদ্ভিদের সালোক সংশ্লেষণের হারও কমায়। ফলে বনভূমি অঞ্চলে তা বাড়তি বিপদ ডেকে আনে। আর নানাভাবে এরই মধ্যে সংকটাপন্ন সুন্দরবন নতুন করে এ চাপ নিতে সক্ষম নয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষের কয়েকজন গবেষক হিসাব করে দেখিয়েছেন যে, সুন্দরবন বার্ষিক ৪১ লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইডের চাপ নিতে সক্ষম এবং আমাদের দুশ্চিন্তা না করতে উপদেশ দিয়েছেন। কিন্তু তারা বেমালুম চেপে গেছেন যে, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে এর চেয়ে অনেক বেশি কার্বন নিঃসরণ হবে এবং সুন্দরবন এরই মধ্যে কার্বন শোষণ করে, নতুন কার্বন হবে তার জন্য বাড়তি চাপ। আর এ চাপ নেয়ার সক্ষমতা সুন্দরবনের নেই। কিন্তু এগুলো রামপালে কয়লাবিদ্যুতের পক্ষের লোকেরা মানতে রাজি নন। তারা বলছেন, তারা এমন ব্যবস্থা করবেন, যাতে আর দূষণই হবে না। কয়লাবিদ্যুত্ উত্পাদনের নতুন কোনো প্রযুক্তি কি তারা আবিষ্কার করে ফেলেছেন? নিশ্চয়ই তা করেননি। ফলে দুনিয়ায় নতুন যেসব প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হচ্ছে, সেগুলোর ব্যবহারই তাদের করতে হবে। এগুলো নিয়ে যখন বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যায় তখনই দেখা যায়, আসলে ‘ক্লিন কোল’ পক্ষীয়দের যে যুক্তি, কমবেশি তারই কথা বলছেন তারা। আসলে ক্লিন কোল বলে কিছু নেই বরং তা ‘কোলের ইমেজ ক্লিন’ করারই একটা প্রচেষ্টা মাত্র। এখানে আমরা ক্লিন কোল-বিষয়ক যেসব মিথ ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে, কোম্পানির প্রচার মারফত সেগুলোর উল্লেখ করে এর বিপরীতে বাস্তবতা তুলে ধরার চেষ্টা করছি। এখানে প্রাসঙ্গিকভাবে কোম্পানির পক্ষ থেকে যে প্রচার/নিবন্ধের জবাব দেয়া হয়েছে, তারও পর্যালোচনা করা হবে।
বিজ্ঞাপন-২
কয়লা ধৌতকরণ কয়লায় সালফার ও অন্যান্য খনিজ উপাদান কমায়।
বাস্তবতা
কয়লা ধৌতকরণ বিপুল পরিমাণ কোল স্লারির জন্ম দেয়। যাকে বর্জ্যের স্তূপে জমা করা হয়। বৃষ্টির পানি এগুলোকে ভাসিয়ে নিয়ে নদী বা অন্যান্য জলাধারে মেশায়। এগুলো অ্যাসিডিক ও এতে অনেক ভারী ধাতু মিশে থাকে। কয়লা ধোয়া বাবদ কোল স্লারি দূষণ বিষয়ে বক্তব্য কোম্পানি বা সরকার কারো দিক থেকেই আসেনি।
বিজ্ঞাপন-৩
লো নাইট্রোজেন অক্সাইড বার্নারের মাধ্যমে নাইট্রোজেন অক্সাইড কমানো যেতে পারে। শিখা তাপমাত্রা ও দহনের রাসায়নিক পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এগুলো নাইট্রোজেনের অক্সাইড তৈরি হতে বাধা দেয়। এর পর পোস্ট কমবাশন স্তরে এসএনসিআর বা এসসিআর পদ্ধতি ব্যবহার করে এর পরিমাণ বিপুল পরিমাণে কমানো যায়।
ফ্লু গ্যাস ডিসালফারাইজেশনের (FGD) মাধ্যমে সালফার ডাই-অক্সাইড দূর করা যায়। ওয়েট এফজিডি বা ওয়েট স্ক্র্যাবিং বেশি ব্যবহূত হয়, যা সালফার শোষণকারী রাসায়নিক যেমন— লাইম (চুন) ব্যবহার করে সালফার দূর করে।
দহনের সময় ক্লিন কোল টেকনোলজিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেয়া হয় এবং তাতে দূষিত গ্যাস নির্গমন বন্ধ হয়। কণা দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য ইলেকট্রোস্ট্যাটিক প্রেসিপিটর (ESP) ও ফ্যাব্রিক ফিল্টার ব্যবহার করা হয়। ইএসপি সাধারণত বেশি ব্যবহূত হয়। জ্বালানি গ্যাসকে একটা সংগ্রাহক পাতের মধ্য দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বৈদ্যুতিক চার্জের মাধ্যমে সেগুলো কণাকে আকর্ষণ করে।
ক্ষুদ্রকণা যেমন— মার্কারি, আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম অপসারণের জন্য কণা নিয়ন্ত্রণ ও এফজিডি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। মার্কারি দূর করার জন্য অ্যাক্টিভেটেড কার্বন ইনজেকশন করা যেতে পারে।
বাস্তবতা
কয়লার ৭-৩০ শতাংশ থাকে দহন অযোগ্য উপাদান, যেগুলোকে কোথাও না কোথাও ফেলতে হয়। ক্লিন কোল টেকনোলজি ব্যবহূত কয়লা ধোঁয়ায় পরিণত হওয়ার আগেই সেগুলো ধরে ফেলতে চায়। দহন অযোগ্য কয়লায় বিষাক্ত উপাদান থাকা সত্ত্বেও সেগুলো ব্যবহার করা হয় বা গর্ত করে মাটিতে পুঁতে রাখা হয়।
প্রকৃতপক্ষে নাইট্রোজেন অক্সাইডের মাত্রা কমানো যেতে পারে কিন্তু দূর করা যায় না। সব নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সুচারুভাবে অনুশীলন করলে ৫০-৯০ শতাংশ কমানো সম্ভব। সেক্ষেত্রে কেবল বার্নারের পরিবর্তন যথেষ্ট নয়। পরবর্তীতে পোস্ট কমবাশন টেকনোলজি যেমন— এসসিআর ব্যবহার করতে হয়। এখন দেখা যাক এ বিষয়ে কোম্পানির প্রশ্নোত্তর:
প্রশ্ন: রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে নাইট্রোজেন অক্সাইড নিঃসরণের হার কমানোর লক্ষ্যে সিলেকটিভ ক্যাটালিস্ট রিঅ্যাক্টর (এসসিআর) বা এ ধরনের অন্য কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা?
উত্তর: হ্যাঁ, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে নাইট্রোজেন অক্সাইড নিঃসরণের হার কমাতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বয়লারে উন্নত প্রযুক্তি সংযোজনের কারণে রামপাল প্রকল্পে নাইট্রোজেন অক্সাইডের নিঃসরণ অত্যন্ত কম (৫১০ এমজি/এনএম৩মাত্রার মধ্যে) হবে। স্টয়কিয়োমেট্রিক এয়ার ফুয়েল ও স্বল্পমাত্রার কমবাশন সীমিত নাইট্রোজেন অক্সাইড তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।
বিশ্লেষণ: এখানে স্পষ্টভাবেই এক ধরনের চাতুরির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। প্রশ্নে যেখানে সুনির্দিষ্টভাবে এসসিআর টেকনোলজির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে আধুনিক প্রযুক্তির কথা বলে পাশ কাটানো হয়েছে পুরো বিষয়টা। আর যে প্রযুক্তির উল্লেখ করা হয়েছে তা হলো— কমবাশন টেকনোলজি। অন্যদিকে এসসিআর বা এসএনসিআর আসলে পোস্ট কমবাশন টেকনোলজি। কমবাশন প্রক্রিয়ায় সামান্যই নাইট্রোজেন অক্সাইড নিয়ন্ত্রণ করা যায়, ফলে পোস্ট কমবাশন নিয়ন্ত্রণ জরুরি হয়ে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে সিলেকটেড নন ক্যাটালাইটিক রিডাকশন (এসএনসিআর) বা সিলেকটেড ক্যাটালাইটিক রিডাকশনের (এসসিআর) আশ্রয় নিতে হয়। এসএনসিআরে নাইট্রোজেন অক্সাইড সরানোর হার ১৫-৩৫ শতাংশ আর এসসিআরে তা ৫০-৯০ শতাংশ। সেজন্যই বিশেষভাবে এসসিআর প্রযুক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু তাকে পাশ কাটিয়ে উত্তরটা হ্যাঁ দিয়ে শুরু করে আসলে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। সততার সঙ্গে প্রশ্নটির উত্তর দিলে তা শুরু হতো না দিয়ে। অর্থাত্ এখানে যে টেকনোলজি ব্যবহার করা হবে তাতে নাইট্রোজেন অক্সাইডের দূষণ থেকে যাবে এবং যেসব ক্ষতি করে তাও অব্যাহত থাকবে।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সালফার ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন অক্সাইডের গুরুত্বপূর্ণ উত্স, যা অ্যাসিড রেইন ও ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে।
নাইট্রোজেনের অক্সাইডগুলো গ্রিনহাউজ গ্যাস ও জৈব যৌগের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে, যা উদ্ভিদের প্রাণ ধ্বংস করে। উদ্ভিদকে রোগ ও ঋতুর হেরফেরের ক্ষেত্রে অধিক নাজুক করে। অ্যাজমা, শ্বাসতন্ত্রের ক্ষয়, অকালমৃত্যু ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের ওপর এটা বিরাট স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি তৈরি করে।
যখন সালফার ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন অক্সাইড পানি, অক্সিজেন ও বাতাসের অন্যান্য রাসায়নিকের সঙ্গে মেশে তখন অ্যাসিড বৃষ্টি হয়। এই বিষ আকাশ থেকে বৃষ্টির আকারে একটা বিরাট এলাকাজুড়ে পড়তে পারে, যা উদ্ভিদ ও মাছের মৃত্যু ঘটায়। বনভূমির ক্ষেত্রে এটা উদ্ভিজ্জরাজির সরাসরি ক্ষতি করতে পারে আবার মাটির পুষ্টি ক্ষয় করেও তা করতে পারে।
উন্নত মানের কয়লা, যেগুলোয় সালফারের পরিমাণ কম, সেগুলো নির্গমন কমানো ও দক্ষতা বাড়ানোর কথা। কিন্তু এটা মাত্র এক ভাগ তাপীয় দক্ষতা বাড়ায়। অন্যদিকে সালফারের দূষণ কমানোর যেসব ব্যবস্থা এবং তার পরিমাণ কমানোর জন্য ধৌতকরণ পানিতে সেই দূষণ ছড়িয়ে দেয়। এফজিডি পদ্ধতিতে বা স্ক্র্যাবেও যে সালফার বা অন্যান্য উপাদান ধরা পড়ে তা পানির মাধ্যমে পরিবহন করা হয়, যা আশেপাশের অঞ্চলে পানি দূষণ বাড়ায়। নর্থ ক্যারোলিনায় অধিবাসীদের অধিক দূষিত পানি পাওয়ার প্রেক্ষিতে ডিউক ইউনিভার্সিটি পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, সেখানে এফজিডি ব্যবহারের পর পানির দূষণ প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
এখনো বিদ্যুত্ উত্পাদনের সময় তৈরি হওয়া সালফার নির্গমনের সবচেয়ে বড় উত্স কয়লা। ২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে তৈরি হওয়া সালফার ডাই-অক্সাইডের ৯৫ শতাংশ ও নাইট্রোজেন অক্সাইডের ৯০ শতাংশ এসেছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে।
জাতিসংঘের পরিবেশ প্রকল্পের (ইউএনইপি) রিপোর্টের তথ্য অনুসারে, মার্কারি মানুষের স্বাস্থ্য ও বনভূমির জন্য একটা বৈশ্বিক হুমকি। রিপোর্টে এটাও বলা হয়েছে, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রই হলো বৈশ্বিক মার্কারি দূষণের জন্য দায়ী এককভাবে সবচেয়ে বড় উত্স। এখন দেখা যাক মার্কারি দূষণ সম্পর্কে কী ব্যবস্থা নেয়ার কথা আসলে বলা হচ্ছে:
প্রশ্ন: রামপাল প্রকল্পে কি মার্কারি রিমুভাল (পারদ দূরীকরণ) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে?
উত্তর: হ্যাঁ, এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এফডিজির সঙ্গে ওয়েট লাইমস্টোন প্রযুক্তি পারদ দূরীকরণে কাজ করবে। তাছাড়া স্বাভাবিক নিয়মে কিছু পারদ ছাইয়ের মাধ্যমে শোষিত হবে। বটম অ্যাশ ও ফ্লাই অ্যাশ উভয়ই শুকনো অবস্থায় সংগ্রহ করা হবে এবং সেগুলো উপযুক্ত কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হবে। যার ফলে ভেজা ছাই মজুদ করে রাখার দরকার হবে না।
এখানে যে প্রযুক্তির কথা বলা হচ্ছে, তা মূলত সালফার দূর করার প্রযুক্তি। সালফার কমানোর সঙ্গে সঙ্গে তা কিছু মার্কারিও সরায়। কিন্তু সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট এক গবেষণায় বলছে, (এ রকম আরো গবেষণা একই ধরনের কথা বলে) শুধু অক্সিডাইজড মার্কারি বা আয়নিত মার্কারিকেই তা সরাতে পারে, মার্কারি অনুকে নয়। রামপালে এসসিআর পদ্ধতি ব্যবহার না করা হলে তা কার্বনকে অক্সিডাইজ করে তাকে আয়নিত করার উপায় কি হবে? যদি এফজিডি দিয়ে মার্কারি দূর করতে হয় তাহলে তো আয়নিত করার বিকল্প নেই। আর আয়নিত মার্কারি আটকানোর সমস্যা হলো যে, মার্কারিকে যা আটকায় তা স্থায়ী নয়, ফলে গ্যাসীয়করণের স্তরে এসে তার পুনর্নিঃসরণ ঘটতে পারে। আসলে মার্কারি দূর করার প্রযুক্তি বলতে বোঝায় পিএসি (পাওডারড অ্যাক্টিভেটেড কার্বন) ইনজেকশন, যার কথা প্রশ্নে আসলে জিজ্ঞেস করা হয়েছে। কিন্তু এখানেও চাতুরির আশ্রয় নিয়ে তা এড়িয়ে ছাই শুকনা অবস্থায় সংগ্রহকে সঙ্গে জুড়ে দেয়া হয়েছে। আসলে এ পদ্ধতিতে মার্কারি নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত ব্যয়বহুল। মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অব এনার্জি কমিশন রিপোর্ট বলছে, মার্কারি দূষণ সরানোর প্রযুক্তিতে প্রতি কেজি মার্কারি সরানোর খরচ ৭ লাখ ৬১ হাজার ডলার। রামপালে এ প্রযুক্তির ব্যবহারের কোনো উল্লেখ কোম্পানি করেনি এবং এ প্রকল্পে দূষণ নিয়ন্ত্রণের মোট ব্যয় বরাদ্দের সঙ্গেও এর ব্যবহার সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যদিও এমনকি এ প্রযুক্তি ব্যবহারের পরও ১০ ভাগ মার্কারি থেকে যায়, যা বিপুল দূষণ ঘটাতে সক্ষম।
বৈশ্বিকভাবে মার্কারি দূষণের সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। মানুষ সব মিলিয়ে যা মার্কারি দূষণ করে, তার ৫০ ভাগেরও বেশি আসে কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। মার্কারি নির্গত হওয়ার পর তা নদী-নালা, খাল, হ্রদে ও ভূপৃষ্ঠে ছড়িয়ে যায় এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে ভূগর্ভের পানিতেও তা প্রবেশ করে। সেখান থেকে শৈবাল হয়ে সব ধরনের প্রাণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তা খাদ্যশৃঙ্খলে ঢুকে পড়ে। একেবারে ছোট থেকে বড়। মাছ থেকে পাখি, মাছ খায় এমন স্তন্যপায়ী, সবার খাদ্যশৃঙ্খলেই এটা ঢুকে পড়ে। খাদ্যশৃঙ্খলের যত উপরে সে উঠতে থাকে, মার্কারির ঘনত্বও তত বাড়তে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৯টি রাজ্যে মার্কারি দূষণের কারণে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা বা সতর্কতা জারি করতে হয়েছে।
মার্কারি স্নায়বিক ব্যবস্থার গঠনের ক্ষেত্রে ক্ষতিকর বলে এটা বিশেষভাবে ভ্রূণ, সদ্যোজাত ও ছোট শিশুদের জন্য মারাত্মক। মার্কারি দূষণের শিকার হলে মস্তিষ্কের ক্ষয়, মানসিক অবসাদ, অন্ধত্ব, বাকশক্তি হারানো, মৃগী রোগ ইত্যাদি হতে পারে। মার্কারির ক্লোরাইড ও মিথাইল মার্কারি ক্যান্সারের কারণ।
বিজ্ঞাপন-৪
কার্বন ক্যাপচার ও স্টোরেজ টেকনোলজি (সিসিএস) ব্যবহার করে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে কার্বন সংগ্রহ করে সাগর কিংবা মাটির নিচে নিরাপদে রেখে দেয়া সম্ভব।
বাস্তবতা
সিসিএস পূর্ণভাবে কার্বন নির্গমন দূর করতে পারে না। এটা কমিয়ে ১১০ g/kwh পর্যন্ত নিয়ে আসতে পারে মাত্র। সেটাও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার যে লক্ষ্যমাত্রা, তা পূরণ করতে সক্ষম নয়। আর সিসিএস যেমন কার্বন নিঃসরণ কমায়, তেমনি কয়লার মোট প্রয়োজনীয়তা বাড়ায়। ফলে প্রকৃত নিঃসরণ উল্লিখিত পরিমাণের চেয়ে বেশি হয়। এনার্জি জাস্টিস নেটওয়ার্কের হিসাবমতে, এটা কার্বন কমালেও সালফার অক্সাইড ও নাইট্রোজেন অক্সাইডের মাত্রা ৪০ ভাগ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। নতুন প্রযুক্তি হওয়ায় এর প্রভাব নিয়ে গবেষণা চলমান। ২০১৫ সালের শেষে একটি ও বর্তমানে আরেকটি মিলিয়ে এখন (জুলাই ২০১৬-এর রিপোর্ট অনুসারে) মাত্র দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে এ প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। এ প্রযুক্তির ফলে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর খরচ ৪৭ ভাগ বেড়ে গেছে। কয়লা ব্যবহারের পক্ষে প্রধান যে যুক্তি দেয়া হয়— কয়লা সস্তা, তা আর মোটেই সত্য থাকে না। বরং নবায়নযোগ্য জ্বালানির চেয়েও ব্যয়বহুল হয়ে যায় তার চেয়ে বহুগুণ বেশি দূষণ করেও।
আমাদের আলোচনা থেকে এটা স্পষ্ট যে, নতুন প্রযুক্তি হয়তো কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রের দূষণ খানিকটা কমায় কিন্তু তার পরও তা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় দূষণ করে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আর যেসব প্রযুক্তি তাত্পর্যপূর্ণ মাত্রায় দূষণ কমাতে সক্ষম, সেগুলোর বেশির ভাগই রামপাল প্রকল্পে ব্যবহার করা হচ্ছে না। আর সেগুলোর সব ব্যবহার করতে গেলে অর্থনৈতিকভাবে এ প্রকল্প পুরোপুরিই অর্থহীন। সেক্ষেত্রে সুন্দরবনের মতো প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এবং একই সঙ্গে অতিজরুরি স্থানে এ ধরনের প্রকল্পের আসলে যৌক্তিকতা কী? হ্যাঁ, আমাদের বিদ্যুতের দরকার আছে। কিন্তু বিদ্যুত্ প্রকল্প আমরা এখন বা ভবিষ্যতে অনেক করতে পারব। কিন্তু সুন্দরবন কোনোভাবেই নয়। তার একটা অংশও নয়। তাই তার সামান্যতম ক্ষতি করার অধিকারও আমাদের থাকতে পারে না, কোনো যুক্তিতেই নয়।বিজ্ঞান, বিজ্ঞাপন ও সুন্দরবন
আবুল হাসান রুবেল | ২০:৪৯:০০ মিনিট, আগস্ট ১৭, ২০১৬
বিজ্ঞাপন-৩
লো নাইট্রোজেন অক্সাইড বার্নারের মাধ্যমে নাইট্রোজেন অক্সাইড কমানো যেতে পারে। শিখা তাপমাত্রা ও দহনের রাসায়নিক পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এগুলো নাইট্রোজেনের অক্সাইড তৈরি হতে বাধা দেয়। এর পর পোস্ট কমবাশন স্তরে এসএনসিআর বা এসসিআর পদ্ধতি ব্যবহার করে এর পরিমাণ বিপুল পরিমাণে কমানো যায়।
ফ্লু গ্যাস ডিসালফারাইজেশনের (FGD) মাধ্যমে সালফার ডাই-অক্সাইড দূর করা যায়। ওয়েট এফজিডি বা ওয়েট স্ক্র্যাবিং বেশি ব্যবহূত হয়, যা সালফার শোষণকারী রাসায়নিক যেমন— লাইম (চুন) ব্যবহার করে সালফার দূর করে।
দহনের সময় ক্লিন কোল টেকনোলজিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেয়া হয় এবং তাতে দূষিত গ্যাস নির্গমন বন্ধ হয়। কণা দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য ইলেকট্রোস্ট্যাটিক প্রেসিপিটর (ESP) ও ফ্যাব্রিক ফিল্টার ব্যবহার করা হয়। ইএসপি সাধারণত বেশি ব্যবহূত হয়। জ্বালানি গ্যাসকে একটা সংগ্রাহক পাতের মধ্য দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বৈদ্যুতিক চার্জের মাধ্যমে সেগুলো কণাকে আকর্ষণ করে।
ক্ষুদ্রকণা যেমন— মার্কারি, আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম অপসারণের জন্য কণা নিয়ন্ত্রণ ও এফজিডি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। মার্কারি দূর করার জন্য অ্যাক্টিভেটেড কার্বন ইনজেকশন করা যেতে পারে।
বাস্তবতা
কয়লার ৭-৩০ শতাংশ থাকে দহন অযোগ্য উপাদান, যেগুলোকে কোথাও না কোথাও ফেলতে হয়। ক্লিন কোল টেকনোলজি ব্যবহূত কয়লা ধোঁয়ায় পরিণত হওয়ার আগেই সেগুলো ধরে ফেলতে চায়। দহন অযোগ্য কয়লায় বিষাক্ত উপাদান থাকা সত্ত্বেও সেগুলো ব্যবহার করা হয় বা গর্ত করে মাটিতে পুঁতে রাখা হয়।
প্রকৃতপক্ষে নাইট্রোজেন অক্সাইডের মাত্রা কমানো যেতে পারে কিন্তু দূর করা যায় না। সব নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সুচারুভাবে অনুশীলন করলে ৫০-৯০ শতাংশ কমানো সম্ভব। সেক্ষেত্রে কেবল বার্নারের পরিবর্তন যথেষ্ট নয়। পরবর্তীতে পোস্ট কমবাশন টেকনোলজি যেমন— এসসিআর ব্যবহার করতে হয়। এখন দেখা যাক এ বিষয়ে কোম্পানির প্রশ্নোত্তর:
প্রশ্ন: রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে নাইট্রোজেন অক্সাইড নিঃসরণের হার কমানোর লক্ষ্যে সিলেকটিভ ক্যাটালিস্ট রিঅ্যাক্টর (এসসিআর) বা এ ধরনের অন্য কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা?
উত্তর: হ্যাঁ, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে নাইট্রোজেন অক্সাইড নিঃসরণের হার কমাতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বয়লারে উন্নত প্রযুক্তি সংযোজনের কারণে রামপাল প্রকল্পে নাইট্রোজেন অক্সাইডের নিঃসরণ অত্যন্ত কম (৫১০ এমজি/এনএম৩মাত্রার মধ্যে) হবে। স্টয়কিয়োমেট্রিক এয়ার ফুয়েল ও স্বল্পমাত্রার কমবাশন সীমিত নাইট্রোজেন অক্সাইড তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।
বিশ্লেষণ: এখানে স্পষ্টভাবেই এক ধরনের চাতুরির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। প্রশ্নে যেখানে সুনির্দিষ্টভাবে এসসিআর টেকনোলজির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে আধুনিক প্রযুক্তির কথা বলে পাশ কাটানো হয়েছে পুরো বিষয়টা। আর যে প্রযুক্তির উল্লেখ করা হয়েছে তা হলো— কমবাশন টেকনোলজি। অন্যদিকে এসসিআর বা এসএনসিআর আসলে পোস্ট কমবাশন টেকনোলজি। কমবাশন প্রক্রিয়ায় সামান্যই নাইট্রোজেন অক্সাইড নিয়ন্ত্রণ করা যায়, ফলে পোস্ট কমবাশন নিয়ন্ত্রণ জরুরি হয়ে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে সিলেকটেড নন ক্যাটালাইটিক রিডাকশন (এসএনসিআর) বা সিলেকটেড ক্যাটালাইটিক রিডাকশনের (এসসিআর) আশ্রয় নিতে হয়। এসএনসিআরে নাইট্রোজেন অক্সাইড সরানোর হার ১৫-৩৫ শতাংশ আর এসসিআরে তা ৫০-৯০ শতাংশ। সেজন্যই বিশেষভাবে এসসিআর প্রযুক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু তাকে পাশ কাটিয়ে উত্তরটা হ্যাঁ দিয়ে শুরু করে আসলে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। সততার সঙ্গে প্রশ্নটির উত্তর দিলে তা শুরু হতো না দিয়ে। অর্থাত্ এখানে যে টেকনোলজি ব্যবহার করা হবে তাতে নাইট্রোজেন অক্সাইডের দূষণ থেকে যাবে এবং যেসব ক্ষতি করে তাও অব্যাহত থাকবে।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সালফার ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন অক্সাইডের গুরুত্বপূর্ণ উত্স, যা অ্যাসিড রেইন ও ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে।
নাইট্রোজেনের অক্সাইডগুলো গ্রিনহাউজ গ্যাস ও জৈব যৌগের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে, যা উদ্ভিদের প্রাণ ধ্বংস করে। উদ্ভিদকে রোগ ও ঋতুর হেরফেরের ক্ষেত্রে অধিক নাজুক করে। অ্যাজমা, শ্বাসতন্ত্রের ক্ষয়, অকালমৃত্যু ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের ওপর এটা বিরাট স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি তৈরি করে।
যখন সালফার ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন অক্সাইড পানি, অক্সিজেন ও বাতাসের অন্যান্য রাসায়নিকের সঙ্গে মেশে তখন অ্যাসিড বৃষ্টি হয়। এই বিষ আকাশ থেকে বৃষ্টির আকারে একটা বিরাট এলাকাজুড়ে পড়তে পারে, যা উদ্ভিদ ও মাছের মৃত্যু ঘটায়। বনভূমির ক্ষেত্রে এটা উদ্ভিজ্জরাজির সরাসরি ক্ষতি করতে পারে আবার মাটির পুষ্টি ক্ষয় করেও তা করতে পারে।
উন্নত মানের কয়লা, যেগুলোয় সালফারের পরিমাণ কম, সেগুলো নির্গমন কমানো ও দক্ষতা বাড়ানোর কথা। কিন্তু এটা মাত্র এক ভাগ তাপীয় দক্ষতা বাড়ায়। অন্যদিকে সালফারের দূষণ কমানোর যেসব ব্যবস্থা এবং তার পরিমাণ কমানোর জন্য ধৌতকরণ পানিতে সেই দূষণ ছড়িয়ে দেয়। এফজিডি পদ্ধতিতে বা স্ক্র্যাবেও যে সালফার বা অন্যান্য উপাদান ধরা পড়ে তা পানির মাধ্যমে পরিবহন করা হয়, যা আশেপাশের অঞ্চলে পানি দূষণ বাড়ায়। নর্থ ক্যারোলিনায় অধিবাসীদের অধিক দূষিত পানি পাওয়ার প্রেক্ষিতে ডিউক ইউনিভার্সিটি পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, সেখানে এফজিডি ব্যবহারের পর পানির দূষণ প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
এখনো বিদ্যুত্ উত্পাদনের সময় তৈরি হওয়া সালফার নির্গমনের সবচেয়ে বড় উত্স কয়লা। ২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে তৈরি হওয়া সালফার ডাই-অক্সাইডের ৯৫ শতাংশ ও নাইট্রোজেন অক্সাইডের ৯০ শতাংশ এসেছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে।
জাতিসংঘের পরিবেশ প্রকল্পের (ইউএনইপি) রিপোর্টের তথ্য অনুসারে, মার্কারি মানুষের স্বাস্থ্য ও বনভূমির জন্য একটা বৈশ্বিক হুমকি। রিপোর্টে এটাও বলা হয়েছে, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রই হলো বৈশ্বিক মার্কারি দূষণের জন্য দায়ী এককভাবে সবচেয়ে বড় উত্স। এখন দেখা যাক মার্কারি দূষণ সম্পর্কে কী ব্যবস্থা নেয়ার কথা আসলে বলা হচ্ছে:
প্রশ্ন: রামপাল প্রকল্পে কি মার্কারি রিমুভাল (পারদ দূরীকরণ) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে?
উত্তর: হ্যাঁ, এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এফডিজির সঙ্গে ওয়েট লাইমস্টোন প্রযুক্তি পারদ দূরীকরণে কাজ করবে। তাছাড়া স্বাভাবিক নিয়মে কিছু পারদ ছাইয়ের মাধ্যমে শোষিত হবে। বটম অ্যাশ ও ফ্লাই অ্যাশ উভয়ই শুকনো অবস্থায় সংগ্রহ করা হবে এবং সেগুলো উপযুক্ত কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হবে। যার ফলে ভেজা ছাই মজুদ করে রাখার
৪৯| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:১৪
আরজু পনি বলেছেন:
আপনার পোস্টের উপযুক্ত সম্মান পেতে দেখে খুব ভালো লাগছে।
আপনি বরাবরই নীরবে লিখে যাচ্ছেন দেশের জন্যে...
অনেক মঙ্গল হোক আপনার এবং প্রিয় দেশটির।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:২৪
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনি সবসময়ই উৎসাহ অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন।
অনেক মঙ্গল হোক আমাদের প্রিয় দেশটির।
৫০| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৩৭
মনিরুল ইসলাম পরামানিক বলেছেন:
কই যাই কি করি ! আমাগোর সরকারই আমাগোর দিকে চাইয়া দেহে না
২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:০৫
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: কই যাই কি করি!
৫১| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:৫২
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন:
১ দিন বয়সী ব্লগার ভদ্র মহিলার সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে চাইলে ফেসবুকে উনার প্রোফাইল ঘুরে আসেন। এর চেয়ে বেশি কিছু জানতে চাইলে গুগল মামার কাছে সাহায্য নেন। গুগল মামার কাছে সাহায্য চাওয়ার সময় উনার নামের সাথে কি-ওয়ার্ড হিসাবে "ছিপি গ্যাং" শব্দ ২ টাও যোগ করিয়া দিবেন দয়া করিয়া।
বিঃদ্রঃ গুগল মামার কাছে সাহায্য চাইবার পূর্বে ১ পাতা এভোমিন ট্যাবলেট খাইয়া নিবেন। উনার ভাষা প্রতিভার বর্ণনা পাইয়া বমি করিয়া কলেরা হসপিটালে ভর্তি হইতে হইবেক বিধায় সেখানে একটা সিটের বন্দো-বস্ত করিয়া লইবেন। তবে অতিরিক্ত বমির কারণে রোগী মৃত্যুবরণ করিলে আমি অভিযোগ হইতে দায়মুক্তি সুবিধা ভোগ করিতে বাধ্য থাকিব।
২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৪৪
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: মাফ চাই, দোয়াও চাই।
৫২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:২৫
মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: জানিনা,
দেশ কোনদিকে এগোচ্ছে,
তবুও,এক পা এগিয়ে যেতে অামাদের দুই পা ভাবতে হয়।
কিছু বিষয় অাছে অামাদের বেশী সতর্ক হতে হয়,
অামরা অনেকেই রাম পাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে,
তবে অামাদের এটা মনে রাখতে হবে অামাদের সুন্দবন যেমন জরুরী,
তেমনি বিদ্যুৎও কিন্তু জরুরী।
তবে সুন্দরবন এবং রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে সরকারের অারো সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
অামার কথার কেউ উল্টা মিনিং করবেন না। সবাই ভাল থাকবেন।
ধন্যবাদ।।
২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৪৩
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আপনার উপলভধির জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
"তবে সুন্দরবন এবং রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে সরকারের অারো সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।"
৫৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৫৮
মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: শুভেচ্ছা।
তবে একটা প্রশ্ন,
এত সমাচার, এত ঢাক ঢোলের করেও কি রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন থেকে সরকারকে থামানো যাবে?
২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৪:২০
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আপনি একটা কঠিন প্রশ্ন করলেন। আমি উত্তর খুঁজেছি এভাবে-
১। আওয়ামিলীগ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত পরিবর্তনকে পরাজয় হিসেবে দেখে। সমালোচনা আমলে নেয়ার নজির দল্টির ইতিহাসে খুব কমই আছে।
কিন্তু রামপাল অর্থনৈতিক এবং ইনফাস্ট্রাকচার বিষয়ক সিদ্ধান্ত , সুতরাং এখান থেকে সরে আসা দলটির জন্য সেইফ। তাছাড়া এটা ক্ষমতার রাজনীতির সাথেও জড়িত না!
তাই আশা করি দলটি সাইট চেঞ্জ করবে। চুক্তি আরো বেশি স্পষ্ট এবং আর্থিক ভাবে বাংলাদেশের অনুকূলে আনবে।
২। দলটি ভারতের ভয়ে ইতস্তত করে থাকতে পারে, পাছে ভারত না আবার চটে! একচেটিয়া ভারতীয় সমর্থনের অবৈধ ক্ষমতা বলে কথা।
৩। যদি দুর্বার আন্দোলনের পরেও সাইট এর লোকেশন এবং চুক্তির শর্ত কোনটাই পরিবর্তন না করে (অন্তত ১ম টি করা সহজ এবং দলের ইমেইজ এর জন্য ভাল) তাহলে আমি বলব, ষড়যন্ত্র তত্ত্বই সঠিক। মানে কলকাতার লোড সেন্টারকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের এই অঞ্ছলে ব্যাপক ভারতীয় কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন এবং বাংলাদেশের এই অঞ্চল থেকে স্বল্প দূরুত্বের সঞ্চালন কাঠামোয় এবং ভারতের দিকে ব্যাপক ভাবে হেলে থাকা আর্থিক মডেলে বিদ্যুৎ উতপাদন করে ভারতে নেয়ার মহা পরিকল্পনা । রামপাল এর জন্য একটি পাইলট মাত্র। এর সাক্সেস স্টোরি ভিন্ন মাত্রা দিবে। খেয়াল করবেন, রামপালের জন্য পায়রা বন্দরের কাজ এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। ভারত সোনাদিয়ায় সমুদ্র বন্দরের বিরোধিতা করে, সেই নদির মোহনাতেই আবার অকার্যকর একটি বন্দর করতে চায় যেখানে পানির গভীরতা মাত্র ১২-১৫ মিটার যা আবার সিল্টেড আপ হয়ে উঠার সম্ভাবনা প্রবল।
এতে ভারতের ৩ টিঃ
ক। দেশটির উপর অব্যহত কার্বন এমিশন রোধ এর আন্তর্জাতিক চাপ সামলানো। ভারত ৬৫০০০ মেগা ওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ উতপাদন করে, সীমান্তের ওপারে করা গেলে এই এমাউন্ট কমবে না কিন্তু কার্বন এমিশনের গ্রোথ নেই এটা দেখানো যাবে।
খ। বাংলাদেশের এনার্জি পরিকল্পনায় ভারতী অনুপ্রবেশ, যাতে পরবর্তিতে উতপাদনের পাশাপাশি ভারতীয় ব্যবসা বিদ্যুৎ সঞ্চালন এবং বিতরণ ব্যবসায় আসে।
গ। বাংলাদেশ থেকে দীর্ঘমেয়াদে সুদ আদায়ের আর্থিক সুফল।
আওয়ামীলীগ কে ২০১৪ এর জাল নির্বাচনে ক্ষমতায় আনার পিছনের প্যাকেজ সুবিধার অংশ হিসেবে ট্রাঞ্জিট এবং কয়লা বিদ্যুৎ পরিকল্পনা থাকতে পারে। নাইলে, অর্থ মন্ত্রী বলতে পারে না "সাবস্ট্যানশিয়ালি এফেক্টেড হবে, তবে আমরা সরব না"।
তবে এই লিখায় আমি এইসব আলচনা করিনি। শুধু বনের প্রটেকশনের দিক থেকে এর শত্রু মিত্রের আলোচনা এনেছি। কোন ষড়যন্ত্র তত্ব মূল আলোচনায় আনিনি। ৩৭ নং কমেন্টে দেখবেন, সুন্দরবনের জীন স্বত্ব চূরি নিয়েও আমাদের সন্দেহ আছে এমেরিকার বিরুদ্ধে। কিন্তু প্রমাণ না থাকায় এই সকল বিষয়ে এগুনো যাচ্ছে না। বাংলাদেশ সরকার কোন পরিকল্পনাই তার নাগরিকের সাথে শেয়ার করে না।
৫৪| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৫:২৮
সেলিনা মওলা বলেছেন: আপনার পোস্টটি আমি ভালভাবেই পড়েছি । এবং পোস্টের কমেন্ট পড়ে মনে করলাম কিছু তথ্য দেয়া উচিৎ । একদিনের রেজিস্ট্রেশন মানেই যে কিছুই জানেনা তা আপনি এতো নিশ্চিতভাবে বলতে পারেন কি ? আর যে তথ্যগুলো দিয়েছি তা ডঃ আঞ্জুমান্দ-এর গবেষনালব্ধ তথ্য । তিনি একজন পরিবেশ প্রকৌশলীর । আমি প্রপাগান্ডা চালাচ্ছি না আপনি চালাচ্ছেন তা এই ব্লগ যারা পড়ছে কিংবা পড়বে এবং তার সাথে ব্লগের বাইরেও কিছু পড়বেন তারাই নির্ধারণ করবেন । আরেকটা কথা, আপনি দীর্ঘদিন ব্লগিং করেন খুব ভাল কথা, আপনাকে অভিনন্দন জানাই তার মানে এই নয় যে এইমাত্র যিনি একাউন্ট খুললেন তিনি একেবারেই মূর্খ । তিনি যে মূর্খ এ ব্যপারে আপনি নিশ্চিত হচ্ছেন কিভাবে ? নাকি হওয়াটা উচিৎ ? নাকি এটাই নিয়ম ? আপনি এখানে রামপাল সম্পর্কে যা যা লিখেছেন তার টেকনোলজিক্যালি প্রুভড উত্তর আমি দিয়েছি । হ্যা, কপি পেস্ট করেই দিয়েছি । আপনি কি দিয়েছেন ? নিজের গবেষন ? কপি পেস্ট নয় ? আমি যা দিয়েছি তা একদম গবেষনার কাগজগুলো থেকে কপি পেস্ট করা হয়েছে । আশাকরি, আপনার উন্নাসিকতাকে বর্জন করে এক আধ দিনের একাউন্টকে সন্মান করার মানসিকতা ধারন করবেন ।
ছিপি গ্যাং বলেছেন আরেকজন । তাকেও অভিনন্দন জানাই । ছিপি গ্যাং গালিবাজ বলে মূর্খ মনে করলে আপনাকেই লোকে শিক্ষিত হওয়া স্বতেও মূর্খ ভাববে । এটা কি ঠিক হবে ? গালি তাদেরই দেই যারা গালি খবার উপযুক্ত । যেমন মীর কাশেম । কেন, আপনি কি তাকে সন্মান দিয়ে কথা বলেন ? যদি বলে থাকেন তো আপনি কি গালি খাবার উপযুক্ত হলেন না ? যাইহোক, এখানে তো গালি দিতে আসি নাই । দেইও নাই । তাহলে অনলাইনের সেই গালিযুদ্ধের কথা টানা অবান্তর । এখানে তর্ক করতেও আসিনি । এসেছি একদিনের একাউন্ট নিয়ে কিছু তথ্য দেবার জন্য । ব্লগটাকেই যদি কেউ তথ্য সম্ভার মনে করে বাদ বাকি সম্ভারকে এড়িয়ে যায় তো সে শিক্ষিত হলেও সচেতন নয় । তাই, প্রোপাগান্ডার বিষয়ে সচেতন হন হে পাঠক বৃন্দ । আপনাদের আবেগ এবং ভালবাসাকে খেলনা করে কারো হাতে তুলে দেবার আগে আরেকটু পড়ুন এবং জানুন । পড়ালেখায় কেউ ভিখিরি হয়না বন্ধু । ব্লগটাই বেদ নয় । এর বাইরেও জানার অসংখ্য সম্ভার রয়েছে । ধন্যবাদ ।
৫৫| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৩৮
ব্লগারনির্ভীক বলেছেন: আসুন আমরা দল ও মতের উর্ধ্বে উঠে আমাদের জাতীয় সম্পদ তথা পৃথিবীর একমাত্র ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনকে রক্ষায় এগিয়ে যাই।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:৩৫
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আসুন আমরা দল ও মতের উর্ধ্বে উঠে আমাদের জাতীয় সম্পদ তথা পৃথিবীর একমাত্র ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনকে রক্ষায় এগিয়ে যাই।
৫৬| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:১৮
রংবাজরঙ্গরাজ বলেছেন: ভাই, মানুষ শুধু আজকেরটাই দেখে, আজকের সমস্যার সাময়িক সমাধান করতে গিয়া যে ভবিষ্যত নাই হইয়া যায় সেইটার কোন খবর রাখেনা, ধন্যবাদ লেখাটার জন্য।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:৩২
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আজকের সমস্যার সাময়িক সমাধান করতে গিয়া যে ভবিষ্যত নাই হইয়া যায় সেইটার কোন খবর রাখতে হবে, এটাই সহজ বাংলায় এবং প্রাঞ্জল ভাষায় টেকসই উন্নয়নের সংজ্ঞা।
আন্তরিক ধন্যবাদ।
৫৭| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৫৫
গোফরান চ.বি বলেছেন: সুন্দরবন ধ্বংস করে রামপাল হলে দেশের ক্ষতি হবে তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভালো মতোই। নিশ্চয় তিনি কোন বিকল্প কোন পদ্ধতি সৃষ্টি করবেন।
একটা প্রশ্ন আমাদের বাঘ দরকার নাকি বিদ্যুৎ দরকার ? দেশের জন্য চিড়িয়া খানা দরকার নাকি বিদ্যুৎ দরকার। বাঘ দিয়ে ভাত খাবো ? আমাদের তাকার দরকার। যে সব দেশে সুন্দরবন নেই ওরা কি চলেনা ? আমরা কি ওদের চেয়ে বেশী সভ্য।
আমি সুন্দরবন চাই না । আমি একটি বিদ্যুৎ বিভ্রাট বিহীন শিল্পোন্নত বাংলাদেশ চাই।
স্যরি , বাট আমি সত্যি চাই ।
২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৫৬
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: নোটেড! আপনারা চেঞ্জ না হলে আপনার দল চেঞ্জ হবে কি করে? দেশের সম্পদ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সাবজেক্ট ম্যাটার এক্সপার্টদের বুঝিয়ে দিয়ে একটি দেশের নেতৃত্ব কাজ আদায় করে নেন।
আর বাংলাদেশে যাবতীয় তৈলের ডিব্বা দলীয় পেশাজীবীদের ধরিয়ে দিয়ে, প্রধানমন্ত্রী (সব শাসনামলেই) সব সিস্টেমের সব তার একসাথে আগলে আছেন (এক কার্যালয়ে কেন্দ্রীভূত শাসন কাঠামো)। তাই কিছু দিন পর পর অনিয়মিত বিরতিতে শর্ট সার্কিট হয়, এতে দেশের প্রাণ এবং সম্পদের ভয়াবহ ক্ষতি হচ্ছে।
আমি একজন সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট একটিভিস্ট। বিভিন্ন সেকটরে মান হীন ইনফাস্ট্রাকচারাল কাজ নিয়ে হা হুতাশ করি, সমালোচনা করি, প্রকৌশলী এবং রিসার্চার হিসেবে টেকসই সমাধান বাতলে দিবার চেস্টা করি। আমার এই ব্লগের বহু লিখায় এর ফুট প্রিন্ট পাবেন।
এইবার আসি,
বিদ্যুৎ চাইনা এটা এই পোস্টে কোথায় বলা হয়েছে? বলা হয়েছে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সরিইয়ে গলাচিপা নদীর পুর্বে করা হোক, পায়রায় বন্দর না করে আরেকটু পুর্বে গিয়ে কুয়াকাটার কাছাকাছি করা হোক।
একটি দেশের পরিবেশ এবং জীব বৈচিত্র ঠিক রাখতে হলে ২৫% বনাঞ্চল প্রয়োজন। আমাদের আছে ৭%, অফিশিয়ালি, আনফিশিয়ালি ৫%।
সুন্দরবন এবং অন্য বন নস্ট হলে কি হবে-
১। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে প্রতি বছর যে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সম্পদ (বন, ফসল, মাছ, গৃহ, বৈষয়িক সম্পদ) এবং প্রাণের (মানুষ এবং গবাদি পশুর) যে ক্ষতি হবে তা এক বছরে সুদ-উতপাদন কস্ট বাদ দিয়ে উতপাদিত বিদ্যুৎ মূল্যের চাইতে বহু গুনে বেশি। সিডর এর কথা ভুলে যাবেন না, শুধু ১২ হাজার মানুষই মারা গেছে, সুন্দরবন না থাকলে ১২ লক্ষ হতে পারতো।
দেশ কি জন্য, নাগরিকের জন্যই তো! তো উপকূলীয় মানুশই যদি না বাঁচে তাইলে কার জন্য বিদ্যুৎ।
২। সুন্দরবন বাংলাদেশে, মৌমাছির এবং অন্য পতঙ্গের বড় আঁধার। এরা হারিয়ে গেলে উদ্ভিদের পরাগায়ন হবে না। দেশের কৃষি বিপর্যস্ত হবে। তখন বিদ্যুৎ দিয়ে করবেন?
৩। সুন্দরবনের রয়েছে কয়েক হাজার ইউনিক জীন গত বিশিষ্ট যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য খনিজ সম্পদ তুল্য।
৪। সুন্দরবন লোনা পানি এবং স্বাদু পানির মধ্যকার জল বিন্যাসকে সমন্বয় করছে। এটা না থাকলে দক্ষিণাঞ্চলে লবনাক্ততা বেড়ে কৃষির অনুপযোগী হয়ে উঠবে।
৫। প্রায় ৫-১০ লক্ষ বনজীবি রয়েছেন যারা সুন্দরবনে পুরো কিংবা আংশিক নির্ভরতায় জীবিকা নির্বাহ করেন।
বহু বিষয় আছে অনুধাবন করার।
শুধু আওয়ামীলীগ করেন বলে এভাবে দলকানা অবস্থান না নিয়ে, নিজের বুদ্ধি বিবেককে জাগ্রত করুন।
আপনি বাংলাদেশেরই নাগরিক, তাই আপনাকেও বুঝানোর দায়িত্ব নিলাম! তবে আন্তরিকভাবে অনুরোধ করবো, অহেতুক এবং গতানুগতিক দলীয় তোষামুদে টাইপের লোকেরা যেসব পয়েন্টে কথা বলে সেসব ফালতু বিষয় সামনে এনে সময় নস্ট করবেন না, প্লিজ!
বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান জানতে চাইলে , পড়ুন আমার বহু লিখা আছে।
বাংলাদেশ পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান এবং এনার্জি মিক্স ২০৩০ পর্যালোচনা
সৌর শক্তি কথামালাঃ বাংলাদেশের নবায়ন যোগ্য জ্বালানীর সম্ভাবনা
বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা এবং জ্বালানী ইফেসিয়েন্সিতে এক্সসিলেন্স আনার কিছু প্রাসঙ্গিক কথামালা
কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নীতি, বিগ-বি এবং রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকার
কিসে বেঁধে রেখেছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চাহিদার গ্রোথ!
বিদ্যুৎ উৎপাদন রেকর্ড ২০১৫ঃ ক্যাপাসিটি অবজার্ভেশন ও উত্তরণের দিক সমূহ
লিখক নিজে একজন ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে অবশ্যই বিদ্যুৎ সেকটরের টেকসই উন্নয়নের ক্যাম্পেইনার। এই পোষ্টেও কয়লা বিদ্যুতের সরাসরি বিরোধিতা করা হয়নি, বরং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের লোকেশনের বিরোধিতাই শুধু করা হয়েছে, এবং সেই সাথে বিকল্প প্রস্তাবনাও দেয়া হয়েছে, আশা করি দেশের সামগ্রিক স্বার্থে বিস্তারিত ব্যাখ্যায় লিখকের অবস্থান বুঝতে পেরেছেন।
একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনার অবস্থান হওয়া উচিত-
আমি সুন্দরবন চাই এবং একটি বিদ্যুৎ বিভ্রাট বিহীন শিল্পোন্নত বাংলাদেশ চাই।
৫৮| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৫৭
গোফরান চ.বি বলেছেন: *ভালো মতই জানেন ।
একটু অনুগ্রহ করে শুদ্ধ করে পড়ে নেওয়ার জন্য সবিনয়ে অনুরোধ জানাচ্ছি ।
২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৫৯
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ।
৫৯| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৫১
বিজন রয় বলেছেন: দারুন পোস্ট।
দারুন আলোচনা।
সমৃদ্ধ।
২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৪১
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন:
দারুন পোস্ট। দারুন আলোচনা। সমৃদ্ধ।
জনাব রয়, ভালো লাগলো।
খুব ভাল থাকবেন!
৬০| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:২০
বৃতি বলেছেন: সমসাময়িক আলোচিত-সমালোচিত বিষয়টি নিয়ে আপনার তথ্যবহুল ও শ্রমসাধ্য এই পোস্টটি স্টিকি হওয়াতে বেশ ভালো লাগছে। ধন্যবাদ আপনাকে, ধন্যবাদ ব্লগ কর্তৃপক্ষকে। আমাদের সুন্দরবন রক্ষা পাক।
২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:০৭
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: সমসাময়িক আলোচিত-সমালোচিত বিষয়টি নিয়ে তথ্যবহুল ও শ্রমসাধ্য এই পোস্টটি স্টিকি হওয়াতে মডারেশন প্ল্যানেল এবং সামুর পাঠকদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।
সুন্দরবন সুন্দর থাকুক, বাংলাদেশের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা টেকসই হোক!
বাংলাদেশ এগিয়ে যাক!
৬১| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:০৭
কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: চারিদিকে জঘন্য সব মানব শত্রু রেখে এই বাস্তবতায় সুন্দরবন কতদিন টিকে, এই আশঙ্কাকে মূখ্য বিবেচ্য করে বন রক্ষার টপ টু বটম সমন্বিত মহা কর্ম পরিকল্পনা চাই (রাষ্ট্রীয়) যার প্রতি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ঐক্যমত্ত এবং দৃঢ় অঙ্গীকার থাকবে।
সুন্দর বন সুন্দর থাকুক, বাংলাদেশের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা টেকসই হোক! ----------- অনেক অনেক ধন্যবাদ!!
২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৩৮
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আপু, আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
৬২| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৫৩
Rebel Robiul বলেছেন: জারা সুত্রু দমন করবে তারাইত সুত্রু!!! ঠিক বলেচি কিনা?????
২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৩৯
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: হ্যাঁ ভাই, রক্ষকই ভক্ষক !
৬৩| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৯
তাহমিদ তাজ ওয়ার বলেছেন: অসাধারন একটি প্রতিবেদন ভাল লাগলো । সবাই কে দেশের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সচেতন হতে হবে ।
২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৩৭
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: সুন্দরবন এবং এর পরিবেশ বিষয়ক, দেশের মৌলিক সম্পদ এর ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সংক্ষিপ্ত আলোচনা পড়ার জন্য এবং মন্তব্য জানানোর জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
৬৪| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৩৪
ছায়াহরিণ বলেছেন: চমৎকার একটি পোস্ট! ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম।
২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৩১
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: হরিণ হরিণীরা সুন্দরবনের নির্মল এবং নিরাপদ ছায়ায় থাকুক অনাদিকাল!
আন্তরিক ধন্যবাদ, ছায়াহরিণ।
৬৫| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:৫১
গোফরান চ.বি বলেছেন: পোস্টটি স্টিকি তে থাকুক । আলোচনার দরকার আছে।
২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:০২
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ।
৬৬| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৯
ইফতি সৌরভ বলেছেন: আমরা যারা এতদিন সুন্দরবন নিয়ে লাফালাফি করলাম, তাদের জন্য দয়াপরবশ হয়ে সংবাদ সম্মেলন করলেন P.M.
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে দেশের উন্নয়নবিরোধী একটি মহল মানুষকে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে। আমরা এতোদিন খোঁজার চেষ্টা করছিলাম এর পেছনে শক্তিটা কোথায়? এতদিন পরে আমরা দেখলাম, খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন করে এই অপপ্রচারে ............ আসলে যারা প্রতিবাদ করছে সবাই বি এন পি আর রাজাকার দের দোসর!!
ল্যাও ঠেলা!! দেশপ্রেমিক হইবা?
২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:২৬
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আমার রাষ্ট্র লূট হয়ে যাচ্ছে কিংবা গেছে,
আমার প্রিয় দেশ, তুমি দ্বিধা হও!
৬৭| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:৩৪
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সংবাদ সম্মেলেন ইহা কি শুনিলাম---
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অন্তত এ বিশ্বাসটুকু আমার ওপর রাখা উচিত যে, পরিবেশগত কোনো ক্ষতি হলে আমি এটি (রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র) হতে দিতাম না।’
সমালোচকদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমার কিছু আসে যায় না। বেশি কথা বললে সব (বিদ্যুৎ প্রকল্প) বন্ধ করে দিলে আর বিদ্যুৎ পাবে না।’
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গাড়িবহর নিয়ে যে লংমার্চ, সমাবেশ করছে, তার ফুয়েল (অর্থ) কোথা থেকে পাচ্ছেন? কে যোগান দিচ্ছে; অর্থ-কড়ি কোথা থেকে পাচ্ছেন?’
ধরনী দ্বিধা হও!!!!!!!!!!!!!!!!!
৬৮| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৫৮
সুলতানা সালমা বলেছেন: কিছুদিন আগে, চট্টগ্রামে CUFL এর একটা এমোনিয়া ট্যাংক মুখ থুবড়ে পড়ে তাতেই মনে হচছিল মারা যাব!
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে এখন! ভুপাল হবে নাকি দেশটা? আললাহ রক্ষা করুন।
২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:০২
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: চাই দেশটা বাংলাদেশই থাকুক, ভৌগলিক-রাজনোইতিক-অর্থনৈতিক-সংস্ক্রিতিক এই চার দিক থেকেই।
৬৯| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:০৪
রিফাত ২০১০ বলেছেন: মাননীয় ভারতকে আমাদের সব দিয়ে দিয়েছেন ।
এই একটা সুন্দরবন । বিমানবন্দরের মতো এইটাও বাংলার জনগণ রুখে দিবে।
হাস্যকর তেলবাজীর সংবাদ সম্মেলেন করে এমনিতেই হাসির পাত্র। আর হাসির পাত্র হৈয়েন না ।
২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৪৯
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: এইটাও বাংলার জনগণ রুখে দিবে। এই বলিষ্ঠতা আশা জাগানিয়া!
৭০| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:২৩
মোঃমোজাম হক বলেছেন: তথ্যপূর্ন ও দিক-নির্দেশগুলি ভাল লেগেছে।সুন্দরবনের পক্ষে থাকলেও আপনার এই নোটগুলি অনেকটাই অজানা ছিল।
কিন্তু ব্রাদার শেষ প্যারাটা মাথায় ঢুকছেনা " সকল বাম-ডান-মধ্যপন্থী-জাতীয়তাবাদী সকল রাজনৈতিক দল সুন্দরবনের সরাসরি শত্রু এবং বন লুণ্ঠনকারী হিসেবে বিবেচিত। এটাই চরম বাস্তবতা।"
সামু ছেড়েছিলাম মেরুদন্ডহীন বলে , এই পোষ্ট ষ্টিকি দেখে বুঝলাম ঘুড়ে দাড়ানোর চেষ্টা করছে।
২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৪২
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ভাইয়া, সামুকে ছেড়ে দিয়ে প্ল্যাটফর্মের ক্ষতি না করে চলুন পাঠকদের নিয়ে কাজ করি, যাতে আমাদের পাঠকেরা জাতীয় সম্পদ রক্ষার দায়বোধ নিয়ে আরো বেশি ভাবিত চিন্তিত হন। এমনিতেই বাংলা ব্লগের দিন খুব খারাপ যাচ্ছে, তার উপর রয়েছে চরম একপেশে নিয়ন্ত্রন, সেই সাথে একটি কালো আইনের খড়গ।
যাই হোক আলোচনায় ফিরি,
বাঘ-হরিণ, কুমির-নদী, সুন্দরী-গোলপাতা, বানর-পাখপাখলি এবং অন্য হাজারো প্রাণের আধার ব্যতীত সুন্দরবনের দৃশ্যত কোন মানব মিত্র নেই। সরাসরি দলীয় ব্যানারে সুন্দরবন রক্ষার মেনিফেস্টো দিতে অস্বীকার করা, ভারতের অবৈধ পরিকল্পনার অনুকূলে ইতস্তত করা এবং সুন্দরবনের রক্ষার জন্য রাজনৈতিক আন্দোলনে না যাওয়া (সামাজিক আন্দোলন নয়) ক্ষমতা বলয় ও এর জোট এবং এর বাইরে সকল বাম-ডান-মধ্যপন্থী-জাতীয়তাবাদী সকল রাজনৈতিক দল সুন্দরবনের সরাসরি শত্রু এবং বন লুণ্ঠনকারী হিসেবে বিবেচিত। এটাই চরম বাস্তবতা। চারিদিকে জঘন্য সব মানব শত্রু রেখে এই বাস্তবতায় সুন্দরবন কতদিন টিকে, এই আশঙ্কাকে মূখ্য বিবেচ্য করে বন রক্ষার টপ টু বটম সমন্বিত মহা কর্ম পরিকল্পনা চাই (রাষ্ট্রীয়) যার প্রতি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ঐক্যমত্ত এবং দৃঢ় অঙ্গীকার থাকবে।
এই প্যারায় আমি, মাঠ পর্যায়ে শত্রু মিত্র চিহ্নিত করে বন রক্ষার জন্য বাস্তবিক একটি উপসংহার টেনেছি। একটু মনোযোগ দিলে বুঝতে অসুবিধা হবার কথা না। তবে আমার পরবর্তি লিখায় এটা সাধারণ পাঠাকদের জন্য বিস্তারিত আলোচনায় আনবো। এখানে প্রেক্ষাপট বলছি-
১। বাম ধারার দলগুলো দলীয় ভাবে আন্দোলন না করে লাল পতাকা নিয়ে "তেল গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষার কমিটির" ব্যানারে আন্দোলন করছেন লাল পতাকা নিয়েই, কিন্তু দেখবেন এই কর্মীদের অনেকেরই মাদার রাজনৈতিক সংগঠন ক্ষমতার জোটেই আছে। যতক্ষণ না উনারা জোটকে চ্যালেঞ্জ করে সরাসরি রাজনৈতিক আন্দোলন না করেন, ততক্ষণ না উনাদের সততা প্রশ্নযুক্ত।
২। পেটায়া রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সামাজিক আন্দোলন বাংলাদেশে সফলতা পায়নি। তাই সার্বিক ভাবে সুন্দরবন রক্ষায় রাজনৈতিক আন্দোলন চাই, শুধুমাত্র এতে অংশ গ্রহনের মাধ্যমেই একটি রাজনৈতিক দল চূড়ান্ত ভাবে প্রমাণ দিতে পারবে সে সুন্দরবন এর মিত্র। বাকি কথা ৩ নং এ, ১ মার্চে প্রকাশিত আমার নোটে আক্ষেপ করে কিছু কথা বলেছি-
৩।
জাতীয় সম্পদ রক্ষার আন্দোলনে নাগরিকের দায় ও নীরবতা
{
দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষায় আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জামায়াত-শিবির, জাপা, আওয়ামী ঘরনার বাম এই সব দুর্বিত্ত রাজনৈতিক দলের কোন মাথাব্যাথা নেই। অধুনা সৃষ্ট মধ্য ধারার দল বিকল্প ধারা, এল ডি পি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, নাগরিক ফোরাম এদেরও কোন ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।
এক সময়ে উদার ইসলামপন্থী দলগুলো দেশের সম্পদ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কথা বললেও এই সাম্প্রতিক বছরগুলুতে এসে তারা সব বুদ্ধি বিবেক হারিয়ে বসে আছে। দেশের সম্পদ ব্যবস্থাপনা নিয়ে তাদের যেন কোন খেয়ালই নেই।
সুন্দরবন বন্দর তেল গ্যাস সহ সম্পদ রক্ষায় মূল ধারার কয়েকজন বাম বিশেষ করে প্রকৌশলী শহীদুল্লাহ এবং আনু মুহাম্মদ স্যার অতি অল্প সংখ্যক কিছু মেহনতি মানুষকে সাথে নিয়ে আন্দোলন কে একক ভাবে এগিয়ে নিচ্ছেন।
১ম কথা হচ্ছে এটা কি উনাদের একক দায়?
২য় কথা হচ্ছে ভারতীয় অর্থনৈতিক শয়তানীর উপর দাঁড়ানো আওয়ামী এস্টাব্লিশ্মেন্ট সংকটে না পড়লে কোন দাবি মানারই সম্ভাবনা নেই।
৩য় কথা হচ্ছে এই এগিয়ে নেয়া আন্দোলন সরকারের জন্য সংকট বয়ে আনলে (যদিও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না) উনাদের অনেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়তে পারেন, কারণ লীগকে ক্ষমতার বাইরে রেখে উনারা ডান কিংবা জাতীয়তাবাদীদের ক্ষমতায় দেখতে চান না। তাহলে দেশের সম্পদ রক্ষার চূড়ান্ত আন্দোলন কে করবে? দেশের নাগরিক কোথায়?
একটি দেশের সম্পদ রক্ষার আন্দোলন এগিয়ে নেয় তাঁর বাম এবং সত্যিকারের জাতীয়তাবাদী শক্তি। বাংলাদেশের বাম ক্ষমতার বলয়ে নিজেদের সপে দিয়ে নিজেদের লূটপাটের সাথী বানিয়ে জীবন ও ক্ষমতা উপভোগ করছে। বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদীর দেশের সম্পদ রক্ষার বোধ এবং মেধা হারিয়েছে শুধু ক্ষমতার বেদনায় তড়পাইতেসে। এই শিবিরে অতীতে ভালো কিছু লোক ছিলেন তারা মরে গেছেন অথবা নিস্ক্রিয় হয়েছেন বড় বলদের অতি বেয়াদপিতে। সেদিন, বিদায়ী রাশান দূত আসল কথা বলে গেছেন- রুপপুর নিয়ে রাজনৈতিক ঐক্যমত্ত আছে। উনি সুস্পষ্ট ভাবে বলেছেন রূপপুর প্রকল্পে সায় আছে বিএনপির। রাম্পাল নিয়েও একই কেইস হতে পারে। বিএনপি ভবিষ্যৎ ক্ষমতার লোভে কাউকে চটাতে চায় না, সকল লূটপাট আর ভারতের অর্থনৈইতিক উপনিবেশ নিয়ে কথা বলতে ভুলে গেসে। এই হোল আমাদের জাতীয়তাবাদী মুখোশ।
এক সময় মনে হোত, আওয়ামীলীগ সুন্দরবনের বিপর্যয় বুঝতে পারছে না। কিন্তু অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, “দ্যাট উড বি সাম ইমপ্যাক্ট, অবভিয়াসলি।.. ভেরি সাবস্টেনশিয়ালি অ্যাফেক্টেড হবে।”।
ক্ষতি হলেও সরবে না রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র: অর্থমন্ত্রী
নাকে খত দিয়ে অবৈধ ক্ষমতা আনা হয়েছে, তাই ভারতের ইচ্ছা পূরন করতেই হবে। নাইলে ২০৪১ পর্যন্ত খোয়াব ফস্কে যেতে পারে। বন বন্দর গ্যাস ট্রানজিট নদি যায় যাক! ক্ষতি জেনেও রামপাল ডেলিবারেটলিই করা হচ্ছে ভারতের ইচ্ছায়। এটাই আওয়ামী মুখোশ!
দুঃখের বিষয় হচ্ছে দেশের দুটি বড় দল আওয়ামীলীগ এবং বিএনপি প্রায় ৯০-৯৫% জনসমর্থন ধারন করে কিন্তু কেউই জনস্বার্থের নূন্যতম দায়িত্ব ধারণ করে না।
দুর্বিত্ত রাজনৈতিক দলগুলো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সিকিউরড দেশ গড়বে না এবং তাদের হার্ড কোর সমর্থকরা ইতিমধ্যেই উচ্ছিষ্ট ভোগের কারনে অথবা উচ্ছিষ্ট ভোগের দাও মারার অপেক্ষায় আছে বলে কিছু বলবে না। বরং দুর্বিত্তায়নকে সমর্থন করবে।
কিন্তু বিস্তৃত সাধারণ সমর্থকরা, দেশের নাগরিক এত নীরব কেন? সুন্দরবন নিয়ে তো কম সচেতনতা গড়া হয়নি! দুর্বিত্তায়ন কি এতই সহনীয় এবং সুখের হয়ে গেছে?
}
৭১| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৬:১৩
মাহমুদুল হাসান কায়রো বলেছেন: বৎসরে এমন একটি পোস্ট আসলেও এর জন্য ব্লগকে সবার বাঁচিয়ে রাখা উচিত.
লেখককে অসঙ্খ্য ধন্যবাদ এত গবেষণা করে চমৎকার এই লেখা উপহার দেয়ার জন্য.
লেখক এই পোস্টার মাধ্যমে সামু ব্লগারদের দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তি দিয়েছেন.
সামু কর্তৃপক্ষকেও ও ধন্যবাদ পোস্ট টি স্টিকি করার জন্য.
২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:০১
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: মন্তব্যে ভালো লাগা রইলো।
৭২| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৫৫
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
অনেক পরিশ্রম করে সুন্দরভাবে লিখেছেন।
সুধু বিদ্যুতকেন্দ্র না, সুন্দরবন ধ্বংশ হওয়ার আরো প্রায় ডজনখানেক কারন এখনো বিদ্যমান।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণস্থল সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তসীমা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে।
ভারত ও অন্যান্ন দেশের গাইড লাইন - বনাঞ্চলের ২৫ কিমি এর মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন না করা। পরিবেশবাদিদের দাবিও তাই।
তার মানে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ১১ কিলোমিটার উত্তরে সরিয়ে নিলে আর কোন সমস্যা নেই।
না সরালে ১৪০ কিলোমিটার লম্বা সুন্দরবনের মাত্র ১১ কি:মি অর্থাৎ ৭.৮% খারাপ ইম্প্যাক্ট। বা ক্ষতি হবে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি না করা হলেও মংলা বন্দর রুট ও প্রাচীন চালনা বন্দর জাহাজ রুট বন্ধ হবে না।
আর বাকি যা ক্ষতির কথা বলা হচ্ছে কার্বন পোড়ালে যে ক্ষতি সেটাই, সেটা সুধু দেশব্যাপি বা সুন্দরবন ব্যাপি না। গ্লোবাল ইম্প্যাক্ট। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি না করা হলেও সারা পৃথিবী বসে নেই। প্রতিমাসে গড়ে যোগ হচ্ছে কয়লা ভিত্তিক ৬০, ০০০ মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র। নির্মানে পরিবেশ সচেতন দেশগুলোও বাদ নেই।
আমি তো কোন আশা দেখছি না।
২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৮
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: হাসান ভাই, সুন্দরবনের সম্পদ ব্যবস্থাপনার ন্যারেটিভেই মন্তব্য সেকশনে আলোচনা হবে আশা ছিল যদিও মন্তব্য এবং প্রতি মন্তব্যের কারনে আলোচনা ভিন্ন দিকে গেছে বেশি।
শুধু বিদ্যুৎ কেন্দ্র না, সুন্দরবন ধ্বংস হওয়ার আরো প্রায় ডজনখানেক কারন এখনো বিদ্যমান। -এই কথাটা "তেল গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা কমিটি" সহ, বুদ্ধিজীবী সহ সুশীল কুশীল, লীগ বিম্পি, জাপা, জামাত, বাম সবাইকে বুঝতে হবে। আমার কথা হোল, বহু দিক থেকে আক্রান্ত সুন্দরবন রক্ষায় কি কি করা দরকার তাতে একটা ঐক্যমত্ত আসুক। চারিদিকে জঘন্য সব মানব শত্রু রেখে এই বাস্তবতায় সুন্দরবন কতদিন টিকে, এই আশঙ্কাকে মূখ্য বিবেচ্য করে বন রক্ষার টপ টু বটম সমন্বিত মহা কর্ম পরিকল্পনা চাই (রাষ্ট্রীয়) যার প্রতি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ঐক্যমত্ত এবং দৃঢ় অঙ্গীকার থাকবে।
"তেল গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা কমিটি"কে ঠিক করতে হবে আসলে উনারা কি চান?
ক। একচেটিয়া কয়লা বিদ্যুতের বিরোধিতা নাকি সুন্দরবন রক্ষা, নাকি সার্বিক ভাবে পরিবেশ রক্ষা?
অনেকগুলো কারনের মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুধু একটি। অত্যন্ত ভয়ের কথা হোল, উল্লেখিত পাঁচ চক্রের যার পর নাই অবারিত সম্পদ লুণ্ঠন এবং রেণু সংগ্রহ অব্যহত থাকলে আশে পাশের এলাকায় কোন ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র না থাকলেও শুধু রাজনৈতিক দুর্বিত্তায়িত প্রাণীজ-জলজ-বনজ সম্পদ আহরণ ভিত্তিক অগ্রসরমান ফরেস্ট পেনিট্রেশন এবং এতদসম্পর্কিত অনাচারে এমনিতেই ২০-৩০ বছরের মধ্যে সুন্দরবন হারিয়ে সাধারণ উদ্যান যাবে।
খ। এককভাবে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চাইতে পায়রায় বন্দর (যদি লাভজনক হয়ে উঠে) সুন্দরবনের আরো বেশি ক্ষতি করতে পারে। এটা নিয়ে বিকল্প কোন কথা উনাদের আলোচনায় নেই।
১) বন্দর হলে আশপাশের এলাকায় কোম্পানি- ব্যবসা এবং শিল্পের, লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রির জন্য জমি চাই। পায়রা মোহনার ঠিক পশ্চিমেই সুন্দরবন। প্রথম আলোর রিপোর্টে যে জমিব্যবসার চিত্র উঠে এসেছে তার অনেক প্রকল্পই পায়রা বন্দর ভিত্তিক নতুন বিজনেস অপরচুনিটি ঘটিত। ২) বন্দর ব্যবহার লাভজনক হয়ে উঠলে এই অঞ্চলে নতুন জি টু জি এমনকি বেসরকারি কয়লার প্ল্যান্ট বসানোর উদ্যোগ দেখা যেতে পারে।৩) পায়রা বন্দর হলে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, পটুয়াখালি ও বরগুনা এলাকার সব জালের মত বেষ্ঠিত নদী- শাখানদী খাল ভিত্তিক সকল নৌরুট পায়রার দিকে সচল হবে (প্রায় সব এলাকা থেকে শর্টেস্ট ডিস্টেন্স ভিত্তিতে) যার অধিকাংশই সুন্দরবনের ভিতর দিয়ে। ৪) বন্দর হলে দুষণ বাড়বে, তেল-কয়লা-ফ্লাইঅ্যাশ ভর্তি জাহাজ এর ট্রান্সমিশন বাড়বে, কিছু কিছু ডুববে, ওয়েস্ট ডাম্পিংও বাড়বে। আমার ব্যক্তিগত অভিমত হল, বন্দর পায়রা থেকে পুর্বে গলাচিপার মোহনায় (কুয়াকাটায়) করা যেতে পারে।
কমিটি শুধু ১টি বিষয়ে আন্দোলন করছে যা সফল হলেও সুন্দরবন বিপদমুক্ত হবে না। কথা হচ্ছে, পেটায়া রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সামাজিক আন্দোলন বাংলাদেশে সফলতা পায়নি। তাই সার্বিক ভাবে সুন্দরবন রক্ষায় রাজনৈতিক আন্দোলন দরকার। কারন সম্পদ লূট বন্ধ করতে রাজনৈতিক মতৈক্য চাই।
আশা রাখি উনারা বাকি পয়েন্ট/বাকি বিষয় গুলোও সামনে আনবেন, নচেৎ সরকারের সাথে একটা সরাসরি কনফ্রন্টেশন চলে আসে যে, যেখানেই উন্নয়ন প্রজেক্ট সেখানেই জাতীয় কমিটির বাঁধা। শুধু বিরোধিতা না করে, কমিটির কাছে একাধিক টেকসই বিকল্প সহ সামাধান এবং ন্যায্য বিরোধিতা চাই। বাংলাদেশের বিকল্প এনার্জি প্ল্যান কি হবে সেটা থিউরিটিক্যালি না বলে রাইট পটেনশিয়াল (সৌর, বায়ু, টাইডাল, হাইড্রো, সোলার থার্মাল, জিও থার্মাল ইত্যাদি রিনিউএবল ফরমেটের বিদ্যুৎ এর আসলে কোথায় কত টুকূ রিসোর্স আছে তা সমীক্ষা পুর্বক) যাচাই করে জাতীয় কমিটির একচেটিয়া কয়লা বিরোধিতা করা দরকার।
উনারা কয়লার বিরোধিতা করেন, কিন্তু বিনিময়ে সরকার কিভাবে বিদ্যুৎ উতপাদন করবেন, কোথায় করবেন, কোথায় বন্দর হলে ভাল, রিনিউএবল এর কস্ট মডেল এবং টেকসই পটেনশিয়াল কোন খাতে কি আছ্ তা গভীর সমীক্ষা করে বাংলাদেশ ২০২১/৩১/৪১ এনার্জি পরিকল্পনা বাতলে দিতে হবে। জাপানি কোম্পানী টোকিও ইলেকট্রিক এর কথা পাওয়ার সিস্টেম মাষ্টার প্ল্যান ২০১০ এবং ২০১৬ এর ফর্মাল রিভিউ কিংবা ক্রিটিক কিংবা এর বিপরীতে বিকল্প এনার্জি প্ল্যান উনারা দেননি। খালি বলছেন ৫ বছরেই রিনিউএবলে দেশ নাকি ভরে দিতে পারবেন!
আল্টারনেটিভ এনার্জি প্ল্যান পেলেই, আমরা আলোচনার টেবেলে বস্তে পারবো, কি পরিমাণ বিদ্যুতের জন্য কি পরিমাণ পরিবেশ গত ছাড় মানা যায়, অর্থাৎ বিদ্যুৎ এবং বনের ফিউচার এর ট্রেড অফ আলোচনা।
নোটঃ রামপাল উত্তরে সরুক এটা আমি চাইনা, এটাকে আরো পুর্বে সরাতে হবে, উপকূলীয় এলাকায়। এতে কয়লার ইন ল্যান্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্টেশন লাগবে না। পরিবেশ এবং ট্রান্সপোর্টেশন কষ্ট ২ দিক থেকেই এটা জরুরি।
৭৩| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:১২
শূন্যস্থানের শূন্যতা বলেছেন: লিখাটা আর মন্তব্যগুলো থেকে অনেক কিছু জানলাম! ধন্যবাদ!
২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:০০
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
৭৪| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:৪১
সুমন৪২০ বলেছেন: সুনরবন আমাদের সম্পদ এটা আমাদের ই রক্ষা করতে হবে ।
কেও যদি অনলাইনে ইঙ্কাম করতে আগ্রহি থাকো তাহলে নিচের পেইজটা ভিজিট করে দেখতে পারেন ।
https://www.youtube.com/channel/UCzqMXpIm1721WGstLEyGwZw
৭৫| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:০০
এম এ মুক্তাদির বলেছেন: বনভূমি ধংসের উপর একটি উপন্যাস - বনভূমি ধংসের উপর একটি উপন্যাস -
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩১
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, রেফারেন্স হিসেবে কাজে আসবে।
৭৬| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:২১
আনু মোল্লাহ বলেছেন: দেশের জনগণ কিন্তু রামপালের এই বিদ্যুৎকেন্দ্র চায় না। কিন্তু সরকার চায়। বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবাদী, সর্বোপরি জমমত উপেক্ষা করেই এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার বদ্ধপরিকর। আমাদের দেশে আমরা সাধারণ জনগণ নিজেদের বর্তমানে চাওয়া না চাওয়াতেই সীমাবদ্ধ রেখেছি। আমাদের চাওয়া বাস্তবায়নে আমাদের প্রচেষ্টা অতিশয় ক্ষুদ্র, বিশেষত এই ধরনের প্রকল্প বন্ধ করতে যে ধরবে প্রচেষ্টা প্রয়োজন তার তুলনায় আমরা যা করছি তা আসলে তেমন কিছু না (বেশির ভাগই কী বোর্ড টিপাটিপিতে সীমাবদ্ধ)। আর জনগণের পাশে কেউ নাই। না রাজনীতিকরা, না বুদ্ধিজীবী, না সাংবাদিক।
আপনার এই পোস্ট আমাদের চেতনায় আরো একটু ঘা দিবে, সেজন্য আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ জানাই। শুভ কামনা রইল।
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৮
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন:
দেশের জনগণ কিন্তু রামপালের এই বিদ্যুৎকেন্দ্র চায় না। কিন্তু সরকার চায়। বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবাদী, সর্বোপরি জমমত উপেক্ষা করেই এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার বদ্ধপরিকর। আমাদের দেশে আমরা সাধারণ জনগণ নিজেদের বর্তমানে চাওয়া না চাওয়াতেই সীমাবদ্ধ রেখেছি। আমাদের চাওয়া বাস্তবায়নে আমাদের প্রচেষ্টা অতিশয় ক্ষুদ্র, বিশেষত এই ধরনের প্রকল্প বন্ধ করতে যে ধরবে প্রচেষ্টা প্রয়োজন তার তুলনায় আমরা যা করছি তা আসলে তেমন কিছু না (বেশির ভাগই কী বোর্ড টিপাটিপিতে সীমাবদ্ধ)। আর জনগণের পাশে কেউ নাই। না রাজনীতিকরা, না বুদ্ধিজীবী, না সাংবাদিক।
গুরুত্বপূর্ণ উপলভধি!
৭৭| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৪
নাজমুল আকিব বলেছেন: পড়ে ভালো লাগলো
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩২
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ভালো লাগা জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানবেন।
৭৮| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:০২
মো: সাকিব আহমদ মুছা বলেছেন: ধলু আর কালো বাহিরে কেবল
লেখক: মো: সাকিব আহমদ মুছা
আধা আঁধারির ঘরটায় এ.সি-র এল.ই.ডি নির্দেশিকায় চোখ পড়ছে বার বার । ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস । কয়েকবার খুঁজেও রিমোটটা না পাওয়ায় শেষমেশ লেপের তলে । এই আগস্টের রাতেও নরম লেপ গায়ে শুয়ে আছে সাকিব আহমদ মুছা । এই কাজ সে আগেও করেছে । গরমে এসি ছেড়ে ঘরে কৃত্রিম শীত বানিয়ে পাতলা চাদর বা কাঁথা গায়ে ঘুম […]
৭৯| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:১৮
শেখ মিজান বলেছেন: ভালো লিখেন আপনি.. আশা করি নিয়মিত আপনাকে পাবো।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:২৪
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: মিজান ভাই, আমার ব্লগ প্রফাইলে দেশের সম্পদ ব্যবস্থাপনার বহু দিক নিয়ে আলোচনা আছে, আশা করি মাঝে মাঝে ঢু মারবেন। চেষ্টা করছি অবিরাম, তবে মাঝে মাঝে হতাশা ঘিরে ধরে, সেগুলোকে ঝেড়ে ফেলে আবার ফির চেষ্টা করি!
৮০| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৫৬
Shahjahan kiron বলেছেন: হ্যা, দেশের নাগরিক হিসেবে রামপাল প্রকল্পের বিরোধিতা করা উচিৎ
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:২০
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ।
৮১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২৬
রুবিনা পাহলান বলেছেন: প্রশ্ন হলো----এত সুন্দর যিনি উপস্থাপন করেন তিনি নিরুদ্দেশ কেন? তার তো সামনে থাকা উচিত। আর আমরা অনুসরন করবো যে----কিন্তু যাকে অনুসরন করবো সে কেন থাকবে নিরুদ্দেশ পথিক হয়ে ?
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:১৯
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: খুবই ভালো লাগা কিন্তু অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন!
বাংলাদেশের সম্পদ ব্যবস্থাপনার মূল কোন লক্ষ নেই যাকে সাস্টেইনেবল বলা যায়। মূল লক্ষকে ভূলে গিয়ে আমরা উপলক্ষ নিয়ে ব্যস্ত। আমরা যেন গন্তব্য না জানা একদল মানুষ যাত্রা পথ নিয়ে বিতর্ক করছি।
আর সেই পথিক দলের এক নিরুদ্দেশ সদস্য বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন নিয়ে সামান্য কিছু লিখা লিখি করার চেষ্টায় রত এই লিখক "এক নিরুদ্দেশ পথিক"!
৮২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৪৮
রুবিনা পাহলান বলেছেন: অসাধারণ জবাব।
৮৩| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:১৬
অাহসান খান বলেছেন: অসাধারন
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০১
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
৮৪| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৭
রিফাত ২০১০ বলেছেন: মাহমুদুল হাসান কায়রো বলেছেন: বৎসরে এমন একটি পোস্ট আসলেও এর জন্য ব্লগকে সবার বাঁচিয়ে রাখা উচিত.
লেখককে অসঙ্খ্য ধন্যবাদ এত গবেষণা করে চমৎকার এই লেখা উপহার দেয়ার জন্য.
লেখক এই পোস্টার মাধ্যমে সামু ব্লগারদের দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তি দিয়েছেন.
সামু কর্তৃপক্ষকেও ও ধন্যবাদ পোস্ট টি স্টিকি করার জন্য
আরজু পনি বলেছেন:
আপনার পোস্টের উপযুক্ত সম্মান পেতে দেখে খুব ভালো লাগছে।
আপনি বরাবরই নীরবে লিখে যাচ্ছেন দেশের জন্যে...
অনেক মঙ্গল হোক আপনার এবং প্রিয় দেশটির।
মোঃমোজাম হক বলেছেন: তথ্যপূর্ন ও দিক-নির্দেশগুলি ভাল লেগেছে।সুন্দরবনের পক্ষে থাকলেও আপনার এই নোটগুলি অনেকটাই অজানা ছিল।
তথ্যবহুল পোস্ট টি এই মুহুর্তে সুন্দরবন রক্ষায় খুব গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে।
ধন্যবাদ কাল্পোনিক ভালোবাসা ও জানা কে কে ।
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০১
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ভালো লাগা রইলো।
সুন্দর বন সুন্দর থাকুক, বাংলাদেশের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা টেকসই হোক!
৮৫| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৪০
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আড্ডা পোষ্টেও এরচে বেশী অংশগ্রহণ থাকে!
আমরা আসলেই পথহারা জাতি!
অথবা এই নিস্ক্রিয়তা সেই স্বৈরতাকেই প্রমাণ করছে- মানুষ যার ভয়ে আতংকিত হয়ে নিজের অধিকারের কথাও ভুলতে চাইছে!!!
কোন একটাতো সত্য!
অনলাইন এক্টিভিষ্ট ফোরাম অবশেষে বদলে যাওয়া গণজাগরন মঞ্চ! কই?
জাতীয় এমন ইস্যুতেও বিস্ময়কর নিরবতা অনেক প্রশ্নের অতীত বর্তমান ভবিষ্যতের!
যারা প্রোগ্রামিংয়ে ভাল তারা কি এই বিষয়ে কিছূ করার তাগিদ অনুভব করছেন। করলে প্লিজ করুন।
হ্যাকার ভা্য়েরাও জেগে উঠতে পারেন জাতীয় স্বার্থে। জাস্ট টু শেইক! সফট হ্যাক করতে পারেন - ঘুমন্ত বিবেককে জাগাতে!
শিল্পীরা গাইতে পারেন দরদী গান- পরিবেশ ও প্রাণের উপর!
শিল্পী আঁকতে পারেন হৃদয় নাড়িয়ে দেয়া চিত্রকর্ম!
আবৃত্তিকার আবৃতিতে জাগিয়ে তুলুন তন্দ্রাচ্ছন্ন চেতনাকে!
মোবাইল এপসে হোক তথ্য জাগরন!
আরো যত প্রযোজ্য পথ পাথেয় আছে সব ব্যবহৃত হোক - সুন্দরবনের সুরক্ষায়।
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৫
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: জাতীয় এমন ইস্যুতেও বিস্ময়কর নিরবতা অনেক প্রশ্নের অতীত বর্তমান ভবিষ্যতের! , সুন্দরবন নিয়ে ইন্টেলেকচুয়াল মুভমেন্ট অনেক হয়েছে, ঝিমিয়ে পড়া তারুণ্যের কাছ থেকে এটা একটা প্রাপ্তি। কিন্তু এতদসত্ত্বেও সার্বিক ভাবে দেশের জাতীয় সম্পদ রক্ষায় বিস্তৃত জনসাধারণের অসচেতনতা অস্বস্তির।
জাতীয় এমন ইস্যুতেও বিস্ময়কর নিরবতা অনেক প্রশ্নের অতীত বর্তমান ভবিষ্যতের!
নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবারই কন্ট্রিবিউট করা দরকার, প্রাণ এবং প্রকৃতিকে সুরক্ষা দিয়েই দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন এগিয়ে যাক। সুন্দর বন সুন্দর থাকুক, বাংলাদেশের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা টেকসই হোক!
৮৬| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৭
জেন রসি বলেছেন: ভারতের রাজনীতিবিদরা এসব ব্যাপারে নিজেদের স্বার্থ সম্পর্কে সচেতন। হয়ত তারা এসব স্পর্ষকাতর বিষয়ে তাদের জনগনের প্রতিক্রিয়াকে কিছুটা হলেও ভয় পায়। তাই যা কিছু ক্ষতিকর তা আমাদের দেশের উপরই চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এতে করে রথ দেখা এবং কলা বেঁচা দুটোই তাদের হয়ে যায়।রামপাল বিদুৎকেন্দ্র ঠিক তেমনই একটা প্রকল্প। যা আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিটা আমাদের হবে। যথারীতি লাভটা ওদের। তীব্র সামাজিক এবং রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারলে এ দেশের গুটিকয়েক রাজনীতিবিদরা আমাদের নিয়ে এভাবেই খেলে যাবে।
চমৎকার পোস্ট। ঠিক এমন একটা যৌক্তিক এবং তাত্বিক পোস্টের খুব প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সুন্দরবন বাঁচাতে হলে রাজপথে নামা ছাড়া অন্য আর কোন উপায় নেই।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৪৬
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছে, রামপাল ছাড়াও দেশের জাতীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনার এবং জ্বালানী নিরাপত্তার অন্য বেশ কিছু বিষয়েও "তীব্র সামাজিক এবং রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে" তোলার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
জেন রসি, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
৮৭| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:০৫
জেন রসি বলেছেন: স্যালাইন পেনিট্রেশন সম্পর্কে খুব বেশী কিছু জানতাম না। আমাদের আসলেই সচেতনতার অভাব আছে। এর ফলে এখন পর্যন্ত কেমন ক্ষতি হয়েছে তা নিয়ে কি কোন গবেষনা হয়েছে? এমন চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ এ কতটা ক্ষতি হতে পারে তার কোন পরিসংখ্যান কিংবা হাইপোথিসিস আছে?
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:১৮
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: এটা তো অনেক ব্যাপক বিষয়, ক্ষতির মাত্রা স্পেসিফিক সাবজেক্ট ওরিয়েন্টেড।
উপকূলীয় ধান এবং অন্যান্য ফলনের চাষে প্রভাব,
মৎস্য চাষ,
সামাজিক বনায়ন
লাইভ স্টক ফুড (ঘাস এবং অন্যান্য),
সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রজাতির উপর প্রভাব (গাছ, মাছ এবং অন্যান্য )
সব বিষয় কভার করে ব্যাপক আকারে গবেষণার কথা শুনিনি।
তবে।।
চিংড়ি চাষের উপযোগিতা এবং লবন সহায়ক জাত ধানের জাত আবিষ্কারে অনেক অনেক গবেষণা হয়েছে। এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি, বারি খুবই গুরুত্বপূর্ণ আরএনডি করে বহু ধান জাতের উদাভাবন করেছে যা লবণ সহায়ক। এই কাজটা খুব প্রশংসা প্রাপ্য রাষ্ট্রীয় দিক থেকে, কারণ এটা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার সাথে সরাসরি জড়িত।
তবে খুলনা এবং বাগেরহাটে স্যালাইন ওয়াটার সারফেইসে ঘের দিয়ে চিংড়ী চাষে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, কারণ চিংড়ির রেণু খামার থেকে উতপাদন না করে সুন্দরবনের প্রাক্রিতিক জলজ আবাস থেকে নেয়া হয়েছে। এতে ঘন জাল এবং ক্যামিক্যাল ব্যাবহার করা হয়েছে। সুন্দরবনে হিউম্যান পেনিট্রেশনের মাত্রায় এই রেণু সংগ্রহ মারাত্মক ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
আমার একটা নির্দেশনা ছিল এরকম,
জলবায়ু তহবিলের প্রকল্প গুলো এমনভাবে তৈরি করা যাতে এই স্যালাইন পেনিট্রেশন জনিত ক্ষতি গুলো আন্ডেন্টিফাই করে এর বিপরীতে পরিবেশ এবং খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক প্রকল্প সামনে আনা হয়।
এর আওতায় পড়বে-
ধান সহ সকল উপকূলীয় ফলনের জাতের লবন সহায়ক প্রজাতির উদ্ভাবন এর রিসার্ড এন্ড ডেভেলপমেন্ট কস্ট, জাতগুলোর পাইলট করার কষ্ট, চাষিদের বিনামূল্যে চারা বিতরণ এর খরচ ইত্যাদি, এভাবে গো খাদ্য, বিভিন্ন গাছ এবং মাছের প্রজাতি এতে ইঙ্কলুড করা হবে।
হতাশার বিষয় হচ্ছে, আপনি যদি জলবায়ু তহবিলের প্রকল্প দেখেন সেখানে পাবেন শহর রক্ষা, বন্যা নিয়ন্ত্রন, জলাবদ্ধতা এবং সাইক্লোন সেন্টার নির্মান। এগুলা দরকার আছে কিন্তু এগুলা আসলে নগর পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থাপনার সাধারণ এবং রুটিন কাজ।
অর্থাৎ আমাদেরকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে সৃষ্ট খাদ্য এবং পরিবেশ নিরাপত্তার মৌলিক ইম্প্যাক্ট গুলোর ইন্টেলেকচুয়াল নলেজ গ্যাদার করে সেভাবে আন্তর্জাতিক বলয়ে ফান্ড চাইতে, সচেতনতা আনতে হবে, রাইটলি বলতে হবে মৌলিক ব্যাপারগুলোতে আমরা আসলে কি ভাবে ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছি। এই ক্ষতির কিছু ব্যাপার নদী দূষণ জনিত কারনে ভারতকেও অভিত করে ব্যবস্থা নিতে বলতে হবে কিংবা ক্ষতিপূরণ চাইতে হবে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৬:৫৮
অন্তর্জালের মুসাফির বলেছেন: