নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

এক নিরুদ্দেশ পথিক

সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।

এক নিরুদ্দেশ পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভোটগ্রহণে ইভিএম পদ্ধতির সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৫৪

বিবদমান ও কলহপূর্ণ রাজনৈতিক কালচার এবং ভয়ঙ্কর সব নির্বাচনী অপরাধের দেশে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর অতীব গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা, টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দেশী-বিদেশী বিনিয়োগের পূর্বশর্ত। রাষ্ট্রীয় সম্পদের নয়ছয়, অব্যবস্থাপনা, অর্থ লোপাট কিংবা ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে হীনতার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত দুই দল চোরের মাঝে একটিকে বা দুজন দুর্বৃত্তের মাঝে একজনকে বেছে নেয়ার বারবার চেষ্টা এবং বহুবার এই একই সেন্সলেস ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে যেতে বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক খুব ক্লান্ত। আমরা জেনেছি যে, সর্বশেষ ক্ষমতার স্বাদ পাওয়া চোরটি সবসময়ই বহুগুণে প্রবল পরাক্রান্ত হয়ে রাষ্ট্র লুটে আবির্ভূত হয়। তাই অপেক্ষাকৃত ছোটটিকে বেছে নেয়ার এ লজ্জাকর খেলার সমাপ্তি দরকার। দরকার একটি মৌলিক পরিবর্তন।

ভোটগ্রহণ পদ্ধতির সংস্কার তাই বহু জরুরি বিষয়ের ওপরের সারির একটি। বিগত বছরগুলোয় ইভিএম ট্রায়াল হয়েছে। দেশীয় প্রযুক্তির বিকাশে এটি গর্ব করার মতো আবিষ্কার আমাদের তরুণ প্রকৌশলীদের। কিন্তু সমস্যা হলো, এটি আসলে উন্নত আইন-শৃঙ্খলা ও নাগরিক মর্যাদার দেশে খুব ভালো কাজ করবে, যেখানে বলপ্রয়োগে অন্যের ভোট জোর করে দিয়ে দেয়ার বা ভোটের পূর্বরাতে ক্যাডার দিয়ে ব্যালট ছিনতাই করে সিল মারার মতো অপরাধ ঘটে না। আমাদের দেশের সোনার ছেলেরা নির্বাচনের পূর্বরাতে ভোটার নম্বর ধরে ধরে ইলেকট্রনিক ভোট দিয়ে দেয়ার গুরুদায়িত্ব নিজেরাই খুব দ্রুত সেরে নেবে। এটা ব্যালট সিলের মতো নয়, তাই সাংবাদিকরাও রিপোর্ট করার রেফারেন্স খুঁজে পাবেন না।

বর্তমানের ইভিএম মেশিন ভোটার নম্বর ধরে ধরে বিভিন্ন প্রতীকের বিপরীতে অ্যাসাইন করা কোডে ভোট দেয়ার মেশিন। এটা প্রশাসনিক জালিয়াতি বা জালিয়াতির ইচ্ছার বিপরীতে প্রটেকশনহীন। এ সময়ের ভোটভিত্তিক দুর্বৃত্তপনার বিপরীতে অনিরাপদ।

তবে যদি ইভিএমে ইনডিভিজ্যুয়াল ভোটার আইডেন্টিটির প্রটেকশন মেকানিজম সংযোগ করা যায়, তাহলে ভোট চুরির লাগামহীনতা রোধে তা কার্যকর হতে পারে। আইডেন্টিটি দুই ধরনের হতে পারে—

১. একটা হলো প্রতি ভোটারের পিন কোড বা পাস কোড, যা গোপন চিঠিতে বা মেইলে আগেই বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হবে।

স্বল্পশিক্ষিত বা অশিক্ষিত নাগরিকের অনেকের জন্যই পিন পাস ঝামেলাপূর্ণ হতে পারে। সেক্ষেত্রে নাগরিককে ‘কিউ আর’ কোডের ব্যালট পাঠানো যায় (তবে সেক্ষেত্রে ইভিএম কিউ আর রিডিং সক্ষমতায় আসতে হবে, সেটা আবার খরুচেও)। কিউআর কোডসংযুক্ত ব্যালট স্ক্যান করলে তার ন্যাশনাল আইডির ডাটা চলে আসবে। ফলে ভোটার ভেরিফাইড হবে এবং এভিএমে ভোট দিতে পারবেন।

২. অন্যটা হলো, বায়োমেট্রিক ফিঙ্গার প্রিন্ট বা আইরিশ স্ক্যান। এখানে ডিজিটাল বা অ্যানালগ কোনো ধরনের পেপার ব্যালটের ঝামেলা নেই।

তবে বায়োমেট্রিক সিস্টেম দ্রুতগতিতে ভোট কাস্ট করতে প্রতিবন্ধক হবে। বাংলাদেশের বহু কায়িক শ্রমিকের ফিঙ্গার স্ক্যান রিডেবল হবে না। অন্যদিকে আইরিশ স্ক্যান ফিঙ্গার প্রিন্টের ইনপুট থেকে সময়সাপেক্ষ। সেক্ষেত্রে একই পোলিং সেন্টারে বহু পোলিং বুথের দরকার পড়বে এবং বেশিসংখ্যক বায়োমেট্রিক সক্ষমতার ইভিএম লাগবে, যা নির্বাচনী খরচ লাগামহীন করবে। অর্থাৎ ইভিএমের খরচের মডেল অবাস্তব হয়ে উঠবে।

অন্যদিকে ব্যাকগ্রাউন্ডে উচ্চসক্ষমতার ইভিএম ম্যানেজমেন্টে বেশি বেশি স্কিল্ড লোকের দরকার। সব মিলে ইভিএম অত্যধিক ব্যয়বহুল। তবে বর্তমানের দেশীয় প্রযুক্তিতে কতটা সাশ্রয়ীভাবে কিউআর কোড বা বায়োমেট্রিক ডাটা রিডিং ক্যাপাবল (সক্ষমতা) ইভিএম তৈরি করা যাবে, তার অ্যানালাইসিসও করা চাই সবার আগে। সেই ভিত্তিতে গবেষণা, কস্ট মডেল, প্রডাকশন পরিকল্পনা ও অর্থ বরাদ্দের উদ্যোগ নিতে হবে।

বায়োমেট্রিক সিস্টেমের আরেক সমস্যা হচ্ছে, উভয় আইডেন্টিটির প্রয়োগ ক্ষেত্রেই ব্যক্তি ভোটার কোন মার্কায় ভোট দিয়েছেন তা বের করে ফেলা যাবে ভোট পরবর্তীতে, যদি না আইডেন্টিটির বিপরীতে প্রদত্ত ভোটের ম্যাপিং সিস্টেমে জমা না করা হয় (সেভাবে সিস্টেম সফটওয়্যার ডিজাইন করা লাগবে)। তবে এটা নাগরিক নিরাপত্তায় খুব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার।

আবার আইডেন্টিটির বিপরীতে প্রদত্ত ভোটের ম্যাপিং সার্ভার সিস্টেমে জমা না করার অসুবিধা হলো, ভোট চলার সময়ে ইভিএম হ্যাং করলে এরই মধ্যে প্রদত্ত ভোটের হিসাব পাওয়া ঝামেলার হবে কিংবা ভোট রি-কাউন্টে সমস্যা হবে।

সব মিলিয়ে একদিকে পাস কোডবিহীন ইভিএম ভোট ডাকাতি ত্বরান্বিত করবে, সুরক্ষাহীন সফটওয়্যার ডিজাইন ভবিষ্যতে নাগরিককে রাজনৈতিক হয়রানির উপলক্ষ তৈরি করবে, অন্যদিকে উচ্চকারিগরি সক্ষমতার ইভিএম তৈরি ও মেইনটেন্যান্সও ঝামেলাপূর্ণ এবং বেশ খরুচে।

বাংলাদেশে প্রশাসনের কাছে প্রায় শতভাগ নাগরিকের ডিজিটাল ডাটা আছে। আছে অ্যাড্রেস, ন্যাশনাল আইডিতে বায়োমেট্রিক ফিঙ্গার প্রিন্ট, এমনকি আইরিশ স্ক্যানও আছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে নাগরিক ডাটার গোপনীয়তা রক্ষায় ইউরোপীয় ‘General Data Protection Regulation- GDPR’-এর আদলে কোনো নাগরিক ডাটা সুরক্ষা আইন তৈরি হয়নি। তাই আসলেই প্রশাসন নাগরিকের ডাটা সিকিউরিটির সর্বোচ্চ গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা না দিলে অপরাধপ্রবণ এবং দুর্বৃত্ত রাজনৈতিক সংস্কৃতির দেশে ইলেকট্রনিক ভোটের মতো অত্যাধুনিক সিস্টেমও খুবই বিপদের। কারিগরি উদ্ভাবক ও ব্যবস্থাপকদের জন্য এটি একটি বিশাল হতাশার ব্যাপার বটে।

ক্লাসিক্যাল ভোটগ্রহণ পদ্ধতির সংস্কার

ভোট প্রদানের বর্তমান অপরাধ প্রবণতা, ইভিএম অটোমেশন, ইভিএমে সিটিজেন আইডেন্টিটি সন্নিবেশ জটিলতা ও খরচ এবং ডাটা প্রটেকশন সবকিছু বিবেচনায় রেখে টেকসই ভোটগ্রহণে ইভিএম পদ্ধতির বিকল্প নিয়েও ভাবতে হবে। উন্নত দেশগুলো সর্বেসর্বা কারিগরি সক্ষমতা অর্জন করেও ভোটিং সিস্টেমকে ব্যালটভিত্তিকই রেখেছে। হ্যাঁ, এখানে কিছু অসাধারণ প্রটেকশন ট্রান্সপারেন্সি সংযুক্ত করে জালিয়াতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করেছে। সত্যিকার অর্থে ব্যালটভিত্তিক ভোটগ্রহণ পদ্ধতি নাগরিককে সম্মানিত বোধে রাখার রাষ্ট্রীয় চর্চা। তাই এ কালচার প্রতিষ্ঠা পাওয়ার শুভবোধ ও চর্চাও রাজনীতিতে থাকা চাই। এ লক্ষ্যে কিছু প্রস্তাবনা এ রকম হতে পারে—

কিউ আর কোডভিত্তিক ডিজিটাল ব্যালট পেপার

১. নির্বাচন কমিশন ‘কিউ আর কোড’ সংযুক্ত ডিজিটাল ব্যালট পেপার ঘরে ঘরে পাঠিয়ে দেবে গোপনীয় সিলগালায় সরকারি পোস্ট অফিসের মাধ্যমে। সঙ্গে প্রার্থীর যোগ্যতা, পরিচিতি ও অঙ্গীকারনামা থাকবে (এর বিপরীতে ব্যক্তি উদ্যোগের পোস্টার বন্ধ হবে)। নাগরিক সিটিজেন আইডি ও ডিজিটাল ব্যালট নিয়ে কেন্দ্রে যাবেন। বুথ প্রশাসন আইডি ও ব্যালট যৌথভাবে ভেরিফাই করে প্রার্থীকে ভোট দিতে অনুমতি দেবে। ফলে বৈধ ভোটার হিসেবে তিনি গোপনীয় কামরায় প্রবেশ করে নিজ পছন্দের প্রার্থীকে সিল দিয়ে ব্যালট জমা দেবেন।
বুথ প্রশাসনের যৌথ আইডি ও ব্যালট ভেরিফিকেশন রেকর্ড ও লগ অত্যন্ত সহজেই কিউ আর রিডেবল ডিভাসে জমা রাখা যাবে। এতে করে মোট জমা কৃত ব্যালটের বিপরীতে ভেরিফিকেশন কাউন্ট মিলিয়ে অবৈধ ভোটের ধারণা পাওয়া যাবে। (যদি থেকে থাকে!)

এই ভেরিফিকেশন প্রসেস শুধু ব্যালটের কি আর কোড এবং ভোটার আইডি শুধু ভেরিফাই করবে, এর পরবর্তি স্টেইজেই শুধু ব্যক্তি ম্যানুয়ালি গোপন ব্যালটে ভোট দিবে। এতে ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দিয়েছে তা রেকর্ডেড হবে না, ফলে নাগরিক নিরাপত্তার বিষয়টি সিকিউরড হবে।


ডিজিটাল ব্যালটের এ পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিদেশে বাংলদেশ মিশন ও দূতাবাসে পোলিং সেন্টার বানিয়ে প্রবাসীদের ভোটের আওতায় আনা খুবই জরুরি।

মোবাইল ভোটিং

২. দেশে আইন-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা পেলে, নির্বাচনী অপরাধের লাগাম টেনে ধরা গেলে রেজিস্ট্রেশনসাপেক্ষে রিয়েল টাইম পিন কোড ও হার্ড কপি ব্যালটের যৌথ প্রটেকশনসহ মোবাইলে ভোটিংয়ের অপশন আনা যায়, যাতে ভোটকেন্দ্রের লাইন ও নির্বাচনী খরচ ছোট করে আনা যায়। এখানে মোবাইলের ‘ইউএসএসডি’ টেকনোলজি ব্যবহার করা যায়। অথবা স্মার্টফোনের অ্যাপ দিয়ে এটা করা যায় (তবে এখানে ব্যক্তি ভোটারের ভিজ্যুয়াল ভেরিফিকেশন খুবই নাজুক। স্থানীয় নেতারা ভোট কিনে মোবাইল ফোন দখলে নিয়ে বাল্ক রেজিস্ট্রেশন করে নিজেরাই ভোট দিতে পারেন)।

অনলাইন ভোটিং

৩. পরবর্তীতে আসতে পারে রেজিস্ট্রেশনসাপেক্ষে আগাম ভোটিং ও অনলাইন ভোটের মতো বিষয়গুলো। তবে ডিজিটাল ব্যালট শুধু ই-মেইলে পাঠালে সেখানে জালিয়াতি হবে (ভোটারের নামে ই-মেইল আইডি খুলে রেজিস্ট্রেশন করে ভোট দেয়ার মহড়া হবে)। অনলাইন ভোটিং ভেরিফিকেশন ই-মেইল বিষয় বাধ্যতামূলক রাখা যাবে)।

দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা প্রবাসীদের ভোটাধিকার ই-মেইল ভোটিং পদ্ধতিতে সহজ, নিরাপদ ও ঝুঁকিহীন। সিকিউরড পাস কোড নিয়ন্ত্রিত ই-মেইল ভোটিং কিংবা আগেই রেজিস্ট্রেশনসাপেক্ষে ডাক মারফতের ব্যালট পাঠিয়েও এটা সহজেই বাস্তবায়নযোগ্য।

অর্থাৎ দুর্বল পক্ষের প্রিজাইডিং অফিসার বের করে দেয়া, ব্যালট ছিনতাই, ভোট বাক্স ছিনতাই, আগের রাতেই সিল মেরে বাক্স ভরার দুর্বৃত্ত কাজগুলোর স্কোপই ক্লোজ করে দিতে হবে। নইলে টেকসই ভোটগ্রহণ পদ্ধতি প্রবর্তন করা যাবে না। তবে ব্যালট প্যাপার খুব বেশি আগে পাঠালে কিংবা মোবাইল ভোটিং অথবা ই-মেইলের পাস কোড ডাকযোগে খুব বেশি আগে পাঠালে ভোট বিক্রি নগদ হয়ে উঠতে পারে, তাই এ কাজ ন্যূনতম সময় আগে করা যায়। অর্থাৎ নির্বাচনী প্রচারণা অফিশিয়ালি বন্ধের ঠিক পর স্থানীয় পোস্ট ব্যালট ও পাস কোড ভেরিফিকেশনের চিঠি নির্বাচনের ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে বিলি শুরু করবে। সব মিলে ভোটকেন্দ্রিক দুর্বৃত্ত কাজগুলোর গলা টিপে ধরা অটোমেশন বাস্তবায়ন করতে হবে। নইলে টেকসই ভোটগ্রহণ পদ্ধতি প্রবর্তন অধরাই থেকে যাবে।

ক্লাসিক্যাল ভোটগ্রহণ পদ্ধতির কার্যকর সংস্কারে প্রচার ব্যবস্থা পাল্টাতে হবে

প্রার্থীরা নিজেরা কোনো ধরনের পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার কিংবা দেয়াল লিখন করতে পারবেন না। শুধু গণসংযোগ করতে পারবেন, যার ভিত্তি হবে দুটি—

ক. নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া নির্বাচনী ম্যানিফেস্ট/অঙ্গীকার।

খ. শুধু নির্বাচন কমিশনের পাবলিশ করা প্রার্থী পরিচিতি। এর বাইরে কোনো ধরনের আন-অথরাইজড তথ্যসংবলিত পোস্টার, লিফলেট গণসংযোগে ব্যবহার করা যাবে না।


ব্যক্তি ভোটার পত্রিকায় নির্বাচনী বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন না, শুধু দল পারবে; যার বিপরীতে দলের আর্থিক উৎস চেক করা হবে এবং সেখানে ভ্যাট প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ চাঁদাবাজির টাকায় অথবা অবৈধ উপার্জনে ঘুষ, অর্থের বিনিময়ে ভোট কেনা, এমনকি কাগজ-পরিবেশ ধ্বংসের শেইমফুল ও মিথ্যায় ভরা প্রচারণার টুঁটি চেপে ধরতে হবে কৌশলে এবং সিস্টেমেটিক অটোমেশনে।

নির্বাচনে ‘না’ ভোট

নির্বাচনে ‘না’ ভোটের বিধান এমনভাবে থাকবে, যাতে তিন ভাগের এক ভাগ ভোটার ‘না’ ভোট দিলে সব প্রার্থীকে অযোগ্য ঘোষণা করে নতুন প্রার্থীতে নির্বাচন ঘোষণা করতে হবে। চোর ও লুণ্ঠনকারী হটানোর জন্য এ পদ্ধতি সমালোচনা সত্ত্বেও গ্রহণ করতে হবে। এর বাইরেও ‘না’ ভোটের বিধান দিয়ে বলপ্রয়োগে বাধ্য করা একদলীয় ভোট শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিহত করা যাবে।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান মাথা তুলে দাঁড়াক,
বাংলাদেশ এগিয়ে যাক!


লিখকের কন্সেপচূয়াল আর্টিক্যাল, বণিক বার্তায় প্রকাশিত। (২৮-১২-২০১৭)

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৩:৩৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
টেকনোলজি সংস্কারের আগে রাজনৈতিক সংস্কার টা জরুরি।
যুদ্ধাপরাধী দল অথর্ব বিম্পির সহায়তায় যেকোন ভাবে ক্ষমতায় আসতে পারলে ৭১এর চেয়েও বড় বিপর্যয় হওয়ার সম্ভাবনা। রহিংগারা তো পালিয়ে বাঁচতে পেরেছে, আমাদের সেটাও সম্ভব হবে না।

মাথায় কোরান, হাত সন্তানের মাথায়। আল্লারকসম বলে আল্লার রাস্তায় ভোট দিব,শপথ! এরপর ২টি হাজারি নোট।
কাগজে-কলমে ভোট ১০০% সুষ্ঠ! কিন্তু.....

সুষ্ঠ নির্বাচন চাইলে স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধী ও তাদের দোশরদের বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে হবে।
পৃথিবীর কোন দেশেই দেশবিরোধীদের ভোটাধিকার থাকেনা।

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ ভোর ৪:২২

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: দেশের মানুষের উপর আস্থা রাখুন, ব্যাপারটা ওরকম না যেরকম জুজু আপনি দেখাচ্ছেন। বিম্পি আগেও ক্ষমতায় ছিল এক বার না বেশ কয়েকবার। দেশ পাকিস্তানো হয়নি , দুর্ভিখও লাগেনি। এইসব জুজু হল স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনের চূরান্ত অন্তরায়।

চাঁদা, তদবির, কমিশন এবং দুর্নীতি কেন্দ্রিক শাসন প্রক্রিয়ার বিচারে বিম্পি ও লীগের মধ্যে কোন তফাৎ নেই। সর্বশেষে যে ক্ষমতায় থাকে সে আগের চাইতে বেশি চুরি করে।

তফাৎ আপনি দেখছেন সেটা ঝেড়ে ফেলুন।

গলা টুটি ধরা নিয়মে দুর্বিত্তায়ন ঠেকান, দেখবেন দেশ ঠিক হয়ে গেছে। পৃথিবীর দেশে দেশে দুর্নিতি ঠেকানোর উপায় টেকনোলজির ম্যানুপুলেশন হীন বাস্তবায়ন। স্বাধীনতা বিরোধী সবকালে ছিল, থাকবে। সেটা ভারত, স্পেইন, বেলজিয়াম, পাকিস্তান, বাংলাদেশ সর্বত্রই। মানুষের জাপিত জীবনের মান বোধগম্য পর্যায়ে উন্নয়ন করলে এইসব সমস্যা গৌণ।

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ ভোর ৪:২৯

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: নির্বাচন কমিশন কিভাবে চোর ডাকাত ঠেকাবে সেটা নিয়ে আরেকটা লিখার ড্রাফট আছে। সেটা নিয়ে আরো একটু কাজ করে আপডেইট দিব!! তবে বাংলাদেশে এগুলা কেউ বাস্তবায়ন করবে না!

২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ ভোর ৬:১৪

বিডি আইডল বলেছেন: জুজু দেখাতে পারলে কাঠাল ভাংগতে সুবিধা.....দেশের আইনের শাসনের যে নির্মম অধোগতি: গত ৮ বছরে হয়েছে, সেটা লীগের আমলেই হয়েছে, বিএনপির আমলে হয়নি। গুম-ধর্ষণের যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, সেটাও হাসিনার আমলেই।

কেন্দ্রে যদি ভোটারদের যেতেই না দেয়া হয়, ইভিএম দিয়ে কিছুই হবে না। জনগণকে নিসংকোচনে, নির্ভয়ে তার মতামত জানানোর মত কোনরকম স্বদিচ্ছাই হাসিনা নেই।

৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: কোনো লাভ নেই। যদি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন দেয়- বিএনপি মেনে নিবে না। ফেয়ার নির্বাচন হলেও বিএনপি মানবে না।

৪| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:২৭

এম এ মুক্তাদির বলেছেন: The present election commissioner has been specially chosen to fulfill the interest of one political party. By saying something in favor of BNP he , as per shrewd plan has already been able to be regarded as 'neutral'. (The fact is - He has been assigned to introduce EVM in the coming national election). The ruling party knows, this is the only way through which it can manipulate result in the so called 'free and fair election'. That is why the EC used EVM in one center in one bye-election and then declared : (01) It is so successful that he would use in all such future elections.
In order to avoid suspicion of the people, he unnecessarily declared, (02) We shall not use it in the national election.
It is known all over the world that EVM can shrewdly be used to manipulating election result and the present EC is after that, as planned by the party that wants to enjoy power for all time to come.

৫| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৪৫

এম এ মুক্তাদির বলেছেন: The easiest and fairest way for voting is to use OMR readable paper marked with number or letter and publicly teach the voters to attach election symbol with those. Voting will be like filling the void circle (bigger size). 'No vote will be a must. Result will be counted within a few minutes.

NO ACCEPTING THIS TECHNOLOGY IN ELECTION MAY BE TAKEN TO BE A CONSPIRACY.

৬| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৫১

এম এ মুক্তাদির বলেছেন: NON-ACCEPTANCE OF THIS TECHNOLOGY IN ELECTION MAY BE TAKEN AS A CONSPIRACY.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.