নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

এক নিরুদ্দেশ পথিক

সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।

এক নিরুদ্দেশ পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাতৃভাষা বাংলার একাডেমিক বিকাশ ও উৎকর্ষ

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৯

আধুনিক সময়ে বাংলা বিপণনের ভাষা, ব্যাপক ভিত্তিতে সাংবাদিকতার ভাষা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভাষা, খুব সীমিত কিছু পর্যায়ে করপোরেট ভাষা, শিক্ষার প্রাথমিক স্তরগুলোর ভাষা, শিল্পের অধুনা রূপগুলোর স্থানীয় বিকাশের ভাষা এবং স্থানীয় প্রশাসনের ভাষা হওয়ায় এর বিকাশ, প্রসার ও ধারণ অব্যাহতভাবেই বর্ধমান। ভাষাকে প্রাণময় বলে ধরে নিলে এ ভাষা অবশ্যই জীবিত ও সতেজ। বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩০ কোটি মানুষের চলনে-বলনে, ছন্দ ও রুচির সঙ্গে বাংলা মিশে আছে। বাংলা ভাষার জন্য দুই বাংলা এবং বিশেষভাবে বাংলাদেশের মানুষের আদি ও অকৃত্রিম প্রাণের টান এই মধুসুধাময় ভাষাটিকে চিরসঞ্চারিত রাখবে তা সব সংশয়ের অবকাশমুক্ত বলাই চলে। পৃথিবীর সপ্তম বৃহৎ ভাষা বাংলা একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা নির্বাহের ভাষা। এর সচলতার অন্যতম কারণ এটাই। তবে নৃতাত্ত্বিকভাবে বাংলাদেশে একজনও ইংরেজি ও হিন্দি ভাষাভাষী না থাকলেও আমাদের এই প্রাণের ভাষাকে ইংরেজি বা হিন্দির সঙ্গে পাল্লা দিতে হচ্ছে। বাংলাদেশের আদালতের প্রধান ভাষা এখনও ইংরেজি, বাংলা এর অনুবাদ সংস্করণ। আদালতের রায় লিখিত হয় ইংরেজিতে। অন্যদিকে হিন্দি বিনোদনের ভাষা, বিকৃত কথ্যবাংলায় এর অনুপ্রবেশ লক্ষণীয়। তাই বাস্তবিক অর্থে বাংলা হিন্দির সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের ব্যাপক শিকার।

অন্যদিকে বাংলা এখনও বিজ্ঞান ও ব্যবসায় উচ্চশিক্ষা কিংবা কারিগরি জ্ঞানের ভাষা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেনি; আসলে বলা উচিত আমরা এখনও উচ্চশিক্ষার ভাষা হিসেবে বাংলাকে মর্যাদা দিতে পারিনি। বলা হয়ে থাকে, অপরের ভাষায় শিল্প, সাহিত্য বা দর্শন কিংবা ধর্মতত্ত্ব পড়ে যেমন আধ্যাত্মিক পর্যায়ে পৌঁছানো যায় না, তেমনি অন্য ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা করেও এর উৎকর্ষে ওঠা যায় না। এর জন্য চাই আগে নিজের ভাষায় জ্ঞান-বিজ্ঞানের হাতেখড়ি। আমাদের বিদ্যাপীঠগুলো বলতে গেলে সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া এখনও কিছু চৌকস করপোরেট নির্বাহী কিংবা সেকেলে প্রশাসনের গতানুগতিক মানের আমলা তৈরির কাজই করে যাচ্ছে। এর পেছনে যে ভাষাগত বাধার মনস্তাত্ত্বিক দিকটি রয়েছে, তা অনালোচিত। জীবিকার খাতিরে আমাদের মেধাবীরা ইংরেজিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন বা দিতে হচ্ছে; বিস্তৃত গ্রামীণ মধ্যবিত্ত আরব বিশ্বে গিয়ে আরবিকে কর্মসংস্থানের ভাষা হিসেবে আয়ত্ত করেছেন। সমসাময়িক বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে এ প্রতিযোগিতা দিন দিন হয়ে পড়ছে অসম। এতে বাংলা পিছিয়ে পড়ছে, যার প্রভাব এখনই পশ্চিম বাংলায় দৃশ্যমান, পূর্বে এ প্রভাব অনুমেয়।

অতি অদূরদর্শী হয়ে আমরা অগ্রসর বাঙালিরা প্রাণপ্রিয় ভাষাকে উচ্চশিক্ষা এবং জীবিকা নির্বাহের ভাষা হিসেবে দূরে ঠেলে রেখে শুধু প্রান্তিক আর অনগ্রসর কায়িক শ্রমজীবী মানুষের পেশাগত ভাষা হিসেবে রেখেই ঢের তৃপ্তি পাচ্ছি।

মাতৃভাষা বাংলার একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বিকাশ এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের জগতে এর উৎকর্ষে আমরা কতটুকু চিন্তাশীল, আন্তরিক আর দায়িত্বশীল তা ভাবার কথা সময়ে আমাদের বিবেক নাড়া দিয়ে যাচ্ছে। একুশ এই বার্তা নিয়ে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সমাজের কাছে হাজির হয় প্রতি বছর।


জ্ঞানচর্চা ও গবেষণায় ভাষা হিসেবে বাংলার সীমাবদ্ধতার বাইরেও কিছু দিক নিয়ে মনোযোগী হওয়া দরকার। বাংলার ব্যাপক বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক বিকাশ কিছু ক্ষেত্রে এতই উত্তেজনাকরভাবে আবির্ভূত হয়েছে যে, ভাষার মান সংরক্ষণে এর অপধারার লাগাম টেনে ধরা নিতান্ত জরুরি মনে করছি। অধুনা রাজনীতি আর বিনোদন শিল্পের বিকৃত বাংলা এর মৌলিকতাকে চ্যালেঞ্জ করছে বললে বাড়াবাড়ি হবে না বোধহয়। এতে বাংলার শৈল্পিক আবেদন যে দিন দিন বিস্মৃত ও মলিন হচ্ছে, তা নির্দ্বিধায় বলা যায়। আজকের বাংলা একদিকে যেমন যশোর ও নদীয়ার সাধু বাংলা নয়, তেমনি কথ্যবাংলার শিল্পিত রূপটিও নয়। ভাষার প্রয়োগ উদাসীনতার কদর্য দিকগুলো একদিকে যেমন ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক ভাষাগুলোকে চ্যালেঞ্জ করছে, ঠিক তেমনি এটি বাংলার শৈল্পিক দিকটিকেও একদিন হেয় করে বসবে।

মাতৃভাষা বাংলার বিকাশ ও উৎকর্ষ ত্বরান্বিত করতে ভাষাকে সমৃদ্ধ করার ব্যাপক দূরদর্শী পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং কার্যকর কিছু পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এর কিছু সীমিত পরিসরে আলোচনায় আনছি।

ক) মাতৃভাষা বাংলার একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বিকাশে প্রচলিত বাংলা শিক্ষাদান পদ্ধতি পরিবর্তন করা দরকার।

আমাদের স্কুলগুলোয় প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ১০০ নম্বরের বাংলা, ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ২০০ নম্বরের পরীক্ষার বিপরীতে বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র পড়ানো হচ্ছে। কিন্তু এত দীর্ঘ বাংলা পাঠ্যক্রম থাকা সত্ত্বেও সাধারণের কথোপকথন ও লেখায় ভাষার মার্জিত কিংবা প্রমিত রূপটির চূড়ান্ত অনুপস্থিতি বিস্ময়ের ব্যাপার। এর কারণ শিক্ষাদান পদ্ধতিটির চূড়ান্ত অকার্যকারিতা।

দেখা যাচ্ছে, একজন শিক্ষার্থী প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল, কলেজ ও পাবলিক পরীক্ষা মিলে শুধু বাংলায় ৫৭০০ নম্ব^রের ওপর শুধু লিখিত পরীক্ষায় অবতীর্ণ হন, যা সম্পূর্ণ আনুষ্ঠানিক। (১ম, ২য় এবং বার্ষিক/পাবলিক পরীক্ষা মিলে প্রাথমিকে ১০০*৩*৫=১৫০০, উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০০*৩*৫=৩০০০, কলেজে ২০০*৩*২=১২০০ নম্বর)। তবুও বাংলার লিখিত রূপে এসব শিক্ষার্থী ন্যূনতম পারদর্শিতা নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাস্তর পার করতে পারছেন না।

সব শ্রেণিতেই বাংলা প্রথম পত্রে কিছু কবিতা ও গল্প পড়ানো হয় নৈতিকতা শেখানোর জন্য, যা আসলে সংস্কারে আনা দরকার। আদতে নৈতিকতা ও মূল্যবোধ সমাজের চিন্তা, চর্চা ও পারিবারিক মূল্যবোধ থেকে আসার কথা। তা না এসে থাকলে সেটা নিয়ে কাজ করার মৌলিক পরিকল্পনা দরকার। তবে এসব কবিতা, গল্প অবশ্যই সহায়ক হিসেবে থাকা শ্রেয়, যা বিদ্যালয়ের পাঠাগারে উন্মুক্ত পাঠের জন্য থাকবে। শিক্ষকরা সময় সময় প্রাসঙ্গিক ক্লাস কথনে কিংবা পাঠচক্র করে এথিকস ও ভ্যালু নিয়ে তাগাদা দেবেন। অন্যদিকে বাংলা দ্বিতীয় পত্রে সাধারণ থেকে অন্তত জটিল পর্যায়ের ব্যাকরণ শিখতে বাধ্য করা হয় পরীক্ষানির্ভর পাঠ্যক্রমের বাধ্যবাধকতার কারণে।

অকার্যকর পাঠ্যক্রমের বিপরীতে এসে পঠন, লিখন, শ্রবণ, বলন, উপস্থাপন ও যোগাযোগ- এ ছয়টি স্কিল সেটের বিপরীতে বাংলার একাডেমিক পাঠ্যক্রম ডেভেলপ করা দরকার, যা মাধ্যমিকেই সমাপ্ত হবে। উচ্চমাধ্যমিককে অপ্রয়োজনীয় বিষয়ের ভারমুক্ত করে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ফাউন্ডেশনের অনুকূলে অ্যাডভান্স পাঠ্যক্রম দিয়ে সাজানো দরকার, যাতে স্নাতকের প্রথম বর্ষে ফাউন্ডেশন কোর্স নিতে না হয়।

উচ্চমাধ্যমিক একটি উচ্চ ধাপ, যেখান থেকে লাইফ স্কিল ডেভেলপ শুরু করা দরকার, কর্মসংস্থান বিষয়ক শিক্ষাক্রমকে এখানে ফোকাসে আনা দরকার, দরকার একেকটি রিসোর্স সাবজেক্ট ম্যাটার এক্সপার্ট বানানোর প্রক্রিয়া শুরুর চেষ্টা।

সাহিত্যবোধ তো দূরের কথা, ১২টি একাডেমিক ধাপের পরও মানুষের সাধারণ কথন, লিখন ও যোগাযোগে বাংলার যে কদর্য রূপ বিস্তৃত হচ্ছে- সেটা নিয়ে আমি শঙ্কিত। স্কিল সেটভিত্তিক ভাষা শিক্ষাক্রমও মানবিক-দার্শনিক-আধ্যান্তিক বিকাশ করতে পারে, সেটা নির্ভর করে কতটা গবেষণালব্ধ, উচ্চমান ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পাঠ্যক্রম তৈরি হবে এবং কোন পদ্ধতিতে সেটা পঠিত হবে, তার সমুদয় মাস্টারপ্ল্যানের ওপর। অর্থাৎ সাবজেকটিভলি কীভাবে মূল্যবোধ সমাজে পেনিট্রেট করতে হবে, তার সিসটেম্যাটিক একাডেমিক অ্যাপ্রোচের ওপর।

সময়ের প্রয়োজনে ইংরেজিসহ জ্ঞানবিজ্ঞানে উন্নত ভাষাগুলো শিক্ষার জন্য অতিকার্যকরী পঠন, লিখন, শ্রবণ ও বলন পদ্ধতি ডেভেলপ করেছে (উদাহরণস্বরূপ আইইএলটিএস বা স্কুলের ভাষা শিক্ষার জন্য পঠন, লিখন, শ্রবণ ও বলন ইত্যাদির পাঠ্যবই কিংবা সফটওয়্যার)। ভাষাবিজ্ঞানী ও মনস্তাত্ত্বিকদের ডিজাইন করা এসব ভাষা পাঠ্যক্রমের কার্যকারিতা যুগ যুগ ধরে প্রমাণিত, যার মাধ্যমে বিদেশি শিক্ষার্থীদেরও আকৃষ্ট করার পরিকল্পনা ফলপ্রসূ হয়েছে। শিক্ষাদান (একাডেমিক) ও যোগাযোগের (কমিউনিকেশনের) জন্য বিশেষ বিশেষ পাঠ্যক্রমভিত্তিক অফলাইন কিংবা অনলাইন ভাষা শিক্ষার মডিউল ডেভেলপ না করে আমরা এখনও সেই অকার্যকর গৎবাঁধা পদ্ধতিতেই ভাষা শিক্ষা নিয়ে ব্যস্ত আছি।


সব শ্রেণিতেই অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে বাংলা শিক্ষার্থীকে চাপে রাখছে অথচ সময়ের সঙ্গে এই শিক্ষার কোনো কার্যকারিতা দেখা যাচ্ছে না। মাতৃভাষায় একাডেমিক পারদর্শিতা যেখানে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিকের শিক্ষাবর্ষগুলোতেই আসার কথা ছিল, সেখানে ১২টি শিক্ষাবর্ষে পড়ানোর পরও আমাদের শিক্ষার্থীরা ভাষার শিল্পিত রূপ ও মননশীলতা রপ্ত করতে পারছেন না। এর অন্যতম কারণ পুঁথিনির্ভর পরীক্ষাভিত্তিক মানহীন পাঠ্যক্রম, যা কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণা কিংবা মনস্তাত্ত্বিক সার্ভের আদলে তৈরি করা হয়নি।

খ) বাংলায় পাঠ্যবই, শিক্ষাসহায়ক বই, বিষয়ভিত্তিক মানসম্পন্ন বই প্রকাশের পদক্ষেপ নেওয়া

১। দেশ-বিদেশের হাজার হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনারত স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সবগুলো ডিসিপি­নে প্রথিতযশা ও উচ্চমানসম্পন্ন শিক্ষকদের প্রোফাইল তৈরি করে তাদের নিজ নিজ বিষয়ে লব্ধ জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও আধুনিক জ্ঞানের সমম্বয়ে একাধিক পুস্তক প্রণয়নের আমন্ত্রণ জানানো। এ কাজ একটি সুবিশাল কর্মযজ্ঞ, যার জন্য সত্যিকারের জ্ঞানী শিক্ষকের প্রোফাইল তৈরি করতে হবে, তাদের পুস্তক লিখে নিজেদের রিপ্রডিউসের গুরুত্ব বোঝাতে হবে, বই লেখায় নিরন্তর উৎসাহ দিতে হবে।

এনসিটিবিটির মূল বইয়ের একই পাঠ্যক্রমে উচ্চমান কন্টেন্ট এবং তার অনুমোদনসাপেক্ষে একাধিক রেফারেন্স বই নিশ্চিত করা গেলে একটিমাত্র পাঠ্যবই ও তাতে প্রদত্ত প্রশ্নপত্রকেন্দ্রিক পুঁথিনির্ভরতা কাটিয়ে ওঠা যাবে।

২। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সবগুলো ডিসিপি­নে প্রথিতযশা শিক্ষকদের সমন্বয়ে উচ্চমান পর্যালোচনা পরিষদ তৈরি করতে হবে। বই লেখার পর পর্যালোচনা পরিষদ কর্তৃক রিভিউ তৈরি করে সেটা আবার লেখকের মাধ্যমে ঠিক করে নিয়ে চূড়ান্ত পান্ডুলিপি তৈরি করার কাজগুলো নিবিড় তত্ত্বাবধানে যতœসহকারে এবং অতি গুরুত্ব দিয়ে করতে হবে।

৩। বই সময়মত প্রকাশ এবং দেশ-বিদেশের সব প্রতিষ্ঠানে সার্কুলেশনের, এমনকি বিপণনের উদ্যোগ নিতে হবে। বই প্রকাশের দেখভাল এবং খরচ বাংলা একাডেমি করবে। সরকার এ মৌলিক বিষয়ে উচ্চক্ষমতার সমন্বয়কারী দল গঠন করবে এবং যথাসময়ে অর্থ বরাদ্দ দেবে।

এর মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাসি জ্ঞানীদের জ্ঞান রিপ্রডিউস করা হবে, যাতে তাদের অবর্তমানেও আমরা তাদের লব্ধ একাডেমিক জ্ঞানের সঠিক ব্যবহার করতে পারি।
৪। বিদেশি ভাষার পাঠ্যবই, শিক্ষাসহায়ক বই, বিষয়ভিত্তিক মানসম্পন্ন বই বাংলায় অনুবাদের ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়া

৪-১। দেশ-বিদেশে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সবগুলো ডিসিপি­নে যেসব মানসম্পন্ন বিদেশি পাঠ্যবই পড়ানো হয়, বিশ্বের নামকরা সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন নামকরা লেখকের উচ্চমানের বই পড়ানো হয়, সেসবের বিশদ তালিকা তৈরি করে সব শেষ ভার্সনকে অনুবাদের ব্যবস্থা করা।

৪-২। এখানে সরাসরি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের টেক্সট বুক প্রকাশকের সঙ্গে বাংলা একাডেমির ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। সরকারের আনুক‚ল্যে একাডেমি এ খাতে অর্থায়ন করবে। বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশি­ষ্ট ফ্যাকাল্টির সঙ্গে কমিউনিকেশন স্টাবলিস্ট করতে হবে।


গ। শিক্ষার জন্য অ্যাপি­কেশন ডেভেলপ।
দেশের তথ্যপ্রযুক্তিবিদ আর অ্যাপি­কেশন ডেভেলপার (বিশেষ করে ইনডিভিজুয়াল ক্লাস ও কোর্স কন্টেন্টের আদলে ইন্টারঅ্যাকটিভ সফটওয়্যার ডেভেলপ, বিভিন্ন লেভেলের বাংলা শিক্ষার সফটওয়্যার ডিজাইন (পঠন, লিখন, শ্রবণ, বলন, উপস্থাপন ও যোগাযোগÑএ ছয়টি স্কিল সেটের বিপরীতে), ব্যাকরণের অ্যাপি­কেশন ডেভেলপ এবং বাংলায় শিশু শিক্ষার ক্রিয়েটিভ অ্যাপ ডেভেলপ), প্রোগ্রামারদের একই প্ল্যাটফরমে নিয়ে আসার জন্য বাংলা একাডেমির কাজ করতে হবে। ডেভেলপারদের কাজের স্বীকৃতি দেওয়া, কিছু ক্ষেত্রে মৌলিক কাজের পারিশ্রমিক দেয়াও দরকার।

উলে­খ্য, প্রথমবারের মতো প্রথম শ্রেণির বাংলা বইকে ই-লার্নিংয়ের জন্য ভিডিও প্রেজেন্টেশনে আনা হয়েছে আমাদের আইসিটি এবং ব্র্যাকের যৌথ প্রযোজনায়, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি শুরু। পুরো বইকে এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের একটি একক ভিডিওতে (https://www.youtube.com/watch?v=DvY4mSUiSTs) আনা হয়েছে, যাকে আরও বেশি কাস্টমাইজড করা যায়, ক্লাসভিত্তিক লেকচার মডিউল করা যায়, আনা যায় ইন্টারঅ্যাকটিভ লার্নিং মডিউল এবং ইন্টারঅ্যাকটিভ টুলসসমৃদ্ধ পিসি ও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। তবে এটাও খেয়ালে রাখতে হবে যে, বিস্তৃত গ্রামীণ শিক্ষায় এটা ব্যবহারের অবকাঠামো এখনও তৈরি হয়নি। লেখকের নিজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনও বিদ্যুতের সুবিধাই পৌঁছায়নি, নেই একটি ফ্যানও। এ অবকাঠামো পরিকল্পনাগুলো তৈরি হতে বড্ড বেশি দেরি হয়ে যাচ্ছে।

ঘ। মাতৃভাষার সঙ্গে কর্মমুখী ভাষার সমন্বয় এবং ভাষা শিক্ষার প্রচলিত মডেলের কার্যকারিতা।
ইংরেজিতে শিক্ষা দেওয়ার জন্য ইনফাসট্রাকচার গঠনের ভুলভাল চেষ্টা ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে চললেও সেটি তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপক সাফল্য পায়নি, স্থানীয় আচার-ব্যবহার এবং সংস্কৃতি, মানুষের জীবনধারা কমফোর্ট জোনে রেখেই নিজের শিক্ষণ ব্যবস্থা ডেভেলপ করতে হবে। অন্য কোনো কপি পেস্টমডেল যে ফল আনছে না, তা দৃশ্যমান। আধুনিক শিক্ষার উৎসস্থল ইউরোপের প্রায় প্রতিটি ছোট-বড় জাতি মাতৃভাষায় শিক্ষালাভ করে। মাত্র কয়েক মিলিয়ন মানুষের ইউরোপীয় দেশে ভাষায় গণিত, পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, জীববিজ্ঞান, আর্কিটেকচার ব্যবসা এবং শিল্পকলার হেন কোনো বিভাগ নেই, যার পাঠ্যবই ডাচে রচিত, অনূদিত বা প্রকাশিত হয়নি এবং যা লোকাল ভাষায় স্কুলে পড়ানো হয় না। একই চিত্র চীন-জাপানেরও। কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় থেকে দ্বিতীয়, এমনকি তৃতীয় ভাষা শিক্ষা অপশনাল থাকায় এ নেশনগুলোর কোনোটই আন্তর্জাতিক ভাষা ইংরেজিতে পিছিয়ে পড়েনি।

যে ছেলেমেয়ে স্কুলের পাশাপাশি মা-বাবার কৃষিকাজে এবং ঘরের কাজে সহায়তা করে, তাকে আপনি বিদেশি ভাষায় বিজ্ঞান শিক্ষা দিতে বাধ্য করতে পারেন না; এটা একটা মনোগত বাধা দাঁড় করিয়ে দেয়। তার ব্রেন বাংলা টু ইংরেজি এবং ইংরেজি টু বাংলা দ্বৈত রূপান্তরে ব্যস্ত থাকে, উপরন্তু না বোঝার ভয়ে আচ্ছন্ন থাকে। প্রতিটি বাক্যই যদি কনভার্সন প্রসেসে আসে, তাহলে ইনোভেশন আর ক্রিয়েটিভিট আশা করা যায় না বরং শিক্ষাভীতি আসে। সাইকোলজিস্টরা এর বেশি ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। এ সমস্যা বিশ্ববিদ্যালয়েও আছে, প্রচুর বিদেশি ভাষার রেফারেন্স পড়ার চর্চা আমাদের হয়ে ওঠেনি এ কারণেই। ফলে কনসেপচুয়াল ডেভেলপমেন্ট বড্ড দেরিতে আসে। আমরা দেখছি, আন্ডার গ্র্যাজুয়েশনে তেমন মানসম্পন্ন গবেষণা কাজ হয়ই না। তাই হয় আপনাকে স্ট্রং ইংরেজি শিক্ষার স্ট্রাকচার ডেভেলপ করতে হবে, যা ২০০ বছরের প্রচেষ্টায়ও পুরোপুরি সফল হতে পারেনি; অন্যথায় আপনাকে বাংলাভিত্তিক বিকল্পসহ ইংরেজি-বাংলার কার্যকর সমন্বয়ের কথা ভাবতে হবে। এর বাইরে উচ্চশিক্ষায় বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ করার তাগিদ এবং দায়বদ্ধতাও রয়েছে।

বাংলা একাডেমিকে শুধু বাৎসরিক মেলা আয়োজন, কিছু নন-একাডেমিক বই সম্পাদনা এবং পারিভাষিক শব্দ খোঁজার প্রয়োজনীয় বা অপ্রয়োজনীয় কাজে বছর পার করলে চলবে না, কীভাবে বাংলা ভাষাকে ব্যবসা-বিজ্ঞান ও গবেষণার জগতে উৎকর্ষময় করা যায়, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগে অন্য ভাষার আধিপত্য ছাপিয়ে টিকিয়ে রাখা যায় এবং ক্রমবিকশিত করা যায়Ñসেদিকে মনোযোগী হতে হবে। বাংলায় উচ্চশিক্ষাদান প্রস্তুতির পরিকল্পনা নেওয়াই বোধ করি অমর একুশের সত্যিকারের তাগাদা। শহীদ মিনারের ফুলেল সৌন্দর্যকে ছাপিয়ে উঠুক বাংলা শিক্ষাদানের বুদ্ধিবৃত্তিক সৌন্দর্য।

বাংলা ভাষা এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাক।

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:০৩

কামরুননাহার কলি বলেছেন: ভালো লাগলো পড়ে।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:০৮

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ, কামরুননাহার কলি।

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৮

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: এত সুন্দর একটা পোস্টে শুধু লাইক দিয়ে মন ভরল না। আফসোস! এই পোস্টের বিষয়বস্তু নিয়ে চিন্তা-ভাবনা বা কাজ করার চেষ্টা আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে!

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:২৬

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: এই পোস্টের বিষয়বস্তু নিয়ে চিন্তা-ভাবনা বা কাজ করার চেষ্টা আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে!

বাংলা ভাষার উতকর্ষ আনয়নে অনেক অনেক দুরদর্শী উদ্যোগ নেয়া চাই, সকল দ্বিধা ও হীন্মান্যতা অবসান করে ভাষার সত্যিকার বিকাশে সমাজ সরকার ও প্রশাসন এগিয়ে যাবে এই আশা ব্যক্ত করি।

৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এই পোষ্ট স্টিকি করা যেতে পারে।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:২৮

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: এটা একটা মৌলিক রচনা, স্টিকি হলে ভাবনা গুলো ছড়িয়ে যাবে, হয়তবা গুরুত্বপূর্ণ কারো নজরেও আসবে!
আন্তরিক ধন্যবাদ।

৪| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আপনার প্রতিটা পোষ্টই জাতিগত উন্নয়ন অগ্রগিতর প্রকৃত দিকনির্দেশনা সমৃদ্ধ।
আমাদের নীতি নির্ধারকরা এসব বোঝেনা কেন???
রাগে চূল ছিড়ার ইমো হবে X((

লিপষ্টিক ষ্টাইল ডিজিটালাইজনের চেয়ে মৌলিক ইনফ্রাষ্ট্রাকচার (আপনার গ্রােমর স্কুেল বিদ্যুত নেই, ফ্যান নেই) এর সত্যিকারের উন্নয় দরকার। সরকারী ফান্ড চুরির চিন্তা দূরে থাক- তাতে আরো সকলে স্ব:স্পূর্ত অংশগ্রহনের মাধ্যেম অপূর্নতাকে পূর্ণ করবে এইরকম কালচার প্রতিষ্ঠা কি খুবই দুরুহ!

পরকিয়ার প‌্যানপ‌্যানে ঘ্যানগ্যানে নাটকে পিছনে বিপুল পয়সার শ্রাদ্ধ না করে জাতিগঠনে মিডিয়া গুলোও যদি আপনার মতো আউটলাইন বেইজ ভাবতে পারত- কিচূ কিছূ কাজ শুরু হয়ে যেত ইতোমধ্যে!

যাক। আপনার প্রবন্ধই হোক শুভারম্ভ :)

+++++++++

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫২

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: হ্যাঁ আমার প্রাথমিক স্কুলে বিদ্যুৎ পৌঁছেনি। চ্যেয়ারম্যান সাহেবকে অন্তত দুবার বলেছি বিদ্যুৎ এনে ফ্যান এর ব্যবস্থা করার জন্য ইউএনো'র সাথে কাজ করতে।

যেখানে বিদ্যুৎ নেই কিংবা ইনফাস্ট্রাকচার নেই, শিক্ষক ট্রেনিং নেই, সেখানে আপনি ডিজিটাল বই কার জন্য বানিয়েছেন? শুধু শহুরে শিক্ষক ও শিশুদের জন্য? ঐ শিশুরা তো এর আগেই প্রাইভেট ইনিশিয়েটিভের এপ দেখে বর্ণ শিখে ফেলেছে।

আমাদের উন্নয়ন ভাবনা গুলো ম্যাচিউর করা দরকার, পরিকল্পনা গুলো এন্ড টু এন্ড করা দরকার, যাতে সেগুলো ম্যাচিউর ও টেকসই। শিক্ষার ফেসিলিটি গুলো কিভাবে সর্বস্তরে পৌঁছান যায় তার চিন্তা চর্চা ও বাস্তবায়ন করা দরকার।

৫| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৯

তারেক ফাহিম বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অালোচনা।

অালোচনার মুলভাব সফল করা বেশ কঠিন মনে হচ্ছে এ দেশের জন্য।
বছরের পর বছর শুধু দিবসে দিবসে গান গেয়ে পার করে দিচ্ছি :(

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪০

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অালোচনার মুলভাব সফল করা বেশ কঠিন মনে হচ্ছে এ দেশের জন্য।

আলোচনার মূল ভাব সফল না হবার অর্থ হচ্ছে,
আমাদের উচ্চতর শিক্ষা শুধু এলিট জন্যই শুধু থেকে যাবে, যারা খুব ছোট থেকেই পারিবারিক সাপোর্টে বিদেশী ভাষা জেনে যাবেন তাদের জন্য। যে শিশু গ্রামীণ, যে শিশু নিন্ম বিত্ত কিংবা সাধারণ মধ্য বিত্ত উচ্চশিক্ষায় তার প্রবেশ এবং উচ্চশিক্ষার আন্ডারস্ট্যান্ডিং সীমিতই থাকবে- এই অপব্যবস্থাকে মেনে নেয়া। আমরা আমাদের শিশু গ্রামীণ, নিন্ম বিত্ত কিংবা সাধারণ মধ্য বিত্ত শিশুদের বিদেশী ভাষার দক্ষতা তৈরির ভুলভাল ও অনৈতিক একটি কাঠামোর উপর ছেড়ে দিব, লাখে লাখে। এদের মধ্যে হাতে গুণা যারা উঠে আস্ততে পারবে নিজের জোরে, পরিবারের জোরে, তাদেরই হবে রাষ্ট্র, এই রাষ্ট্রে বাকিদের কোন স্টেইক নেই।

আর এইটাও মেনে নেয়া যে, মাতৃ ভাষায় উচ্চ শিক্ষার অধিকার শিশুর নেই!
আর এইটাও মেনে নেয়া যে, মাতৃ ভাষা বাংলার উচ্চ শিক্ষার ভাষা হবার অধিকার নেই, এটা অকার্যকর ভাষা কিংবা অক্ষম ভাষা!

৬| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ভাষা দিবসে সত্যিকারের ভালবাসায় পোষ্টটি ষ্টিকি করা হোক!


ভাবনা সম্প্রসারিত হোক জন থেকে জনে।

৭| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:৫৩

রিএ্যাক্ট বিডি বলেছেন: একুশের গল্প :- https://youtu.be/dhKGUG7uD64

৮| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৫

সৈয়দ ইসলাম বলেছেন:



খুবই গভীর চিন্তার সুন্দর প্রকাশ। ভালো লাগলো। শুভকামনা আপনার জন্য।


৯| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৩৯

তপোবণ বলেছেন: আপনার প্রতিটি লেখায় আমি খুব অনুপ্রাণিত হই। সমাজ সচেতনাতায় সমৃদ্ধ আপনার লেখা সমাজ যারা চালায় তারা যদি পড়তো তাহলে খুব ভালো হতো। কিছু মানুষতো থাকেই সমাজে যারা চাইলে সমাজকে বদলে দিতে পারে। এই লেখাটা তেমন কিছু সমাজ হিতৈষিদের চোখে পড়লে ভালো হতো ।

লেখাটি প্রিয়তে গেল, ভালো থাকুন।

১০| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৩১

এম ডি মুসা বলেছেন: শুভেচ্ছা ধন্যবাদ ।

১১| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:১৯

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: আপনার সুচিন্তিত লেখাটিতে প্রতিফলিত মতামত সমর্থন করি।
সাথে আমার একটি ভাবনা শেয়ার করি-
http://www.somewhereinblog.net/blog/KAMAL5648/30011120

১২| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:২০

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.