![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অন্য দিগন্ত- www.bishorgo.com
উষ্ণ রাত, শিশির ভোর
স্বপ্ন সকাল, ক্লান্ত দিন
জীবন ছন্দ, হিম শীতল
সাগর সোহাগ, ঢেউ মলিন ।
স্বাপ্নিকঃ
আমাকে এক ফোটা জল এনে দাও
আমি সমুদ্র বানাবো ।
পিয়াসীঃ
এক আকাশের মেঘ এনে দাও
তৃষ্ণা মেটাবো ।
উল্লাসীঃ
একটু খানি শিশু হাসি দাও
প্রশান্ত হব ।
বিদ্রোহীঃ
শুকনো শোণিতে স্পর্শ দাও
আগুন জ্বালাবো ।
তখন সম্ভবতঃ দ্বিতীয় শ্রেণীতে যাওয়া আসা করতাম। ছোট ভাইটিও পড়াশোনা শুরু করেছে সবে। খেলাধুলা আর খেলনার আমাদের পিস্কিদের বাজারে নতুন এসেছে 'বাঁশের বন্দুক'! খুবই সহজলভ্য, আন্ডার ওয়ার্ল্ডে ধর্না দেয়ার কোনই প্রয়োজন হতো না। চানাবুট প্রবেশ করতে পারবে এমন সুড়ঙ্গবিশিষ্ট বাঁশের কঞ্চিকে পাইপের মত কেটে নিতে হতো আর আরেক খণ্ডকে ছেঁচে-ছিলে হাতের কাছে গিরাটা রেখে দিয়ে সেই সুড়ঙ্গে প্রবেশ করানো যায় মতো করে বানিয়ে নিতে হয়, ব্যস হয়ে গেল বৈকালী হিটলারী লড়াইয়ের সমরাস্ত্র- 'বাঁশের বন্দুক'।
বুলেট পাই কোথায়, খুব একটা ভাবতে হতো না, একদার বনাঞ্চল হিসেবে পরিচিত আমাদের গ্রামটিতে এখনো জন্মে অদ্ভুত সব গাছ-গাছালী, তার মধ্যে পাওয়া যেত অনেকটা লেবু কিংবা জাম্বুরা পাতার চেয়ে বড় পাতাবিশিষ্ট একধরনের ফুল গাছ, যার উচ্চতা এক থেকে দেড় মিটারের মত হতো, যার ফুলগুলো ছিল ঠিক চানাবুটের আকারের এবং সেরকমই শক্ত। আমরা ডাকতাম 'আঙিলা গাছ' আর ফুলকে 'আঙিলা ফুল', আর সেই আঙিলা ফুলই ছিল আমাদের বাঁশের বন্দুকের বুলেট; অবশ্য ক'দিন আগেও এই বুলেট দিয়েই চমৎকার মালা বানিয়ে গলায় পরতাম আর পরাতাম রাজা-রানী খেলায়। কিন্তু আধুনিকতা যেন সেই ভালবাসার মালার দানাগুলোকেই করে দিল আমাদের জন্য হন্তারকের প্রতীক 'বুলেট' আর বাঁধিয়ে দিল ট্রয়ের লড়াই।
সেদিন ছিল শুক্রবার, দুপুরের ঘুম আজকের জন্য মাফ, আম্মু গোসল করিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে কপালে ইয়াবড় একটা ফোটাও লাগিয়ে খাইয়ে দাইয়ে দিলেন। বায়না ধরলাম আঙিলা ফুল আনতে যাব, গ্রামের সবচেয়ে বড় আর ঐতিহ্যের নিদর্শনে ভরা ছিল মজুমদারদের বাড়ী, সেখানেই সবচেয়ে বেশী পাওয়া যায়। বিকেলে তখনো পুরোপুরি আসেনি, দুপুরও চলে যায়নি, এসময়টা গ্রামের জন্য নিঝুম রাতের মতই জনশূন্য। দু'ভাই হৈ রৈ করে ঢুকে পড়লাম বনের একটা অংশে, তুলতে লাগলাম হালকা-গাঢ় মিলিয়ে গোলাপী রঙের আঙিলা ফুলগুলো। কিছুক্ষণ পর, হঠাৎ মনে হলো সুপারি গাছের মাথায় কিছু শব্দ হলো, যেই না তাকালাম উপরের দিকে দেখি একি! ইয়া বড় একখণ্ড পুরোনো ইটের টুকরো নেমে আসছে ঠিক আমার বরাবর, গলা শুকিয়ে কাঠ, কি আর করা নড়ার সময়টুকুও পেলাম না। পড়লো তো পড়লো এক্কেবারে ঘাড়ের উপর। ভাবলাম, কেউ যদি ছুঁড়ে মারতো তাহলে টুকরোটি আসতো কোন পাশ থেকে, একেবারে গাছ থেকে পাকা সুপারির মত ঝরে পড়তো না; ভুতের ভয়টাই তখন গায়ে কাঁটা দিতে শুরু করলো। ব্যাথায় কঁকিয়ে উঠতেই ছোটভাই সহ আর দেরী নয়, দিলাম ছুট্, এক ছুটে মায়ের অাঁচলে।
তখন থেকে এখনো ভাবি, যদি ইটের টুকরোটি মাথায় পড়তো, তাহলে সেই কচিকালের মাথাটিকে হয়তো আজকের মত করে পেতাম না, কি জানি অসহনীয় আঘাত হলে মাথাটিকে প্রিয়জনেরা হয়তো মাটি চাপাও দিতেন।
ছবির জন্য [link|http://www.wozoproductions.org/images/bambo.jpg|K
২| ১৭ ই অক্টোবর, ২০০৬ দুপুর ২:৪৫
আরাফাত রহমান বলেছেন: শৈশবের কথা মনে পড়ে গেল। ..........
৩| ১৭ ই অক্টোবর, ২০০৬ বিকাল ৪:১৭
অতিথি বলেছেন: আপনার গদ্যো তো দারুন।
৪| ১৭ ই অক্টোবর, ২০০৬ বিকাল ৪:১৮
অতিথি বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। ইউনিকোডে চেষ্টা করেছিলাম।
হা, সেই দুরন্ত শৈশব...
৫| ১৭ ই অক্টোবর, ২০০৬ বিকাল ৫:৫৬
অতিথি বলেছেন: আরে এই বাঁশের বুলেট দিয়ে আমিও খেলেছি....যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা......
৬| ১৭ ই অক্টোবর, ২০০৬ রাত ৮:১৪
শাহানা বলেছেন: ভাগ্যিস মাথায় পড়েনি, না হলে আজ আর আপনার লেখা পড়া হতো না। ওটা কি পুরানো বাড়ি থেকে খুলে পড়েছিলো?
৭| ১৭ ই অক্টোবর, ২০০৬ রাত ৯:২২
অতিথি বলেছেন: ফজল ভাই, ভবিষ্যতে আমি আফসোস করতে পারি জেনেই ইট ব্যাটা একটু সাইডে পড়েছে। তয় আমি মাথায় কোদালের যে বাড়ি খেয়েছিলাম ওইডা ঠিক মাথার উপরেই ছিল। ফলাফল দুই সেলাই। এক্সটা লাভ: মাথাডা হাবিজাবিতে কিলবিল করে।
পড়ে ভাল লাগলো।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ২:২৬
ফজল বলেছেন: নিচের মন্তব্যানুযায়ী ইনি দাঁড়াচ্ছেন বৃশ্চিক ভাই এখন 'অতিথি'
কিন্তু কোদালের বাড়ির গল্পটা শোনা হলো না এখনো।
৮| ১৮ ই অক্টোবর, ২০০৬ রাত ১২:৩৯
অতিথি বলেছেন: মাথায় কোদালের বাড়ি!!!!!!!!!!!!!!!!!!! কি হইছিল?????????????????????
চমৎকার বর্ণনা ফজল ভাই!
৯| ১৮ ই অক্টোবর, ২০০৬ ভোর ৬:৫০
সাইফ ভুইয়া বলেছেন: দূরন্ত শৈশব।
১০| ২৪ শে অক্টোবর, ২০০৬ সকাল ৯:৩৯
অতিথি বলেছেন: সাদিক-
ধন্যবাদ।
আরাফাত রহমান-
শৈশবটা আসলেই আমাদের স্মৃতির এক সোনালী সঞ্চয়।
শেখ জলিল-
আর দারুন.... কথাগুলো ভুলতে পারি না। একটু অবসর পেলেই ভাবি আর ভাবি যদি জীবনটা সেখানেই আটকে থাকতো! ধন্যবাদ আপনাকে।
আবু সালেহ-
তাই না কি? তাহলে ওটার রপ্তানী আপনাদের এলাকায় ও হয়েছে?
না কি আমাদের এলাকায় আমদানী???
১১| ২৭ শে অক্টোবর, ২০০৬ ভোর ৬:২৪
অতিথি বলেছেন: শাহানা-
ধন্যবাদ আপনাকে ওই বাড়ীতে হিন্দুদের পুরোনো দালানকোঠা রয়েছে কয়েকটি। যা এখন খড়ের গুদাম বা খোয়াড় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। হতে পারে ওখানকার কোথাও থেকে, কিন্তু প্রশ্ন এখনো রয়েই গেছে যে, ইটের টুকরোটা দালান থেকে অনেক দূরের সুপারী গাছের আগায় আসলো কি করে?
বৃশ্চিক-
দারুন লিখেছেন। তো কোদালে বাড়ির গল্পটাই হয়ে যাক না একবার। কি বলেন?
আস্তমেয়ে-
হাঁ, তাইতো জানতে চাইছিলাম বৃশ্চিক ভাইয়ের কাছ থেকে। 'লড়াকু'র কোন একশন না তো আবার । ধন্যবাদ আপনাকে।
সাইফ ভুইয়া-
জি ভাই, দুর্দান্তই বটে। তবে সরলতাটাকেই আজকাল আল্লাহর মহাদয়া মনে হচ্ছে। নয়তো কি হতাম জানি না....
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই অক্টোবর, ২০০৬ দুপুর ২:২১
অতিথি বলেছেন: চমৎকার বর্ণনা।