নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফেরারী

ভালোবাসি তোমায় প্রিয় জন্মভূমি

এম এস এস মামুন

কম্পিউটার প্রকৌশল, ইউনিভার্সিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিক

এম এস এস মামুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলার ইতিহাসঃ রাজা গণেশ

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২৬

বর্তমান ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার ভাতুরিয়ায় ছিল রাজা গণেশের গড় বা তার শাসন প্রাসাদ । মুসলিম ঐতিহাসিকদের রচনায় তিনি ‘কন্স’ হিসেবে উপস্থাপিত। মধ্যযুগের ইন্দো-পারসিয়ান ইতিহাসবিদরা তাকে একজন কাফির দখলদার বলে অবিহিত করেছেন। আধুনিক কিছু পন্ডিত তাকে দানুজামারদানদেব বলে উল্লেখ করলেও এই পরিচয়টি সর্বত্র স্বীকৃত নয়। পনের শতকের প্রারম্ভে ইলিয়াসশাহী বংশের দুর্বল সুলতানের নিকট থেকে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে বাংলার রাজা হন। তার প্রতিষ্ঠিত রাজবংশ ১৪১৫-১৪৩৫ সময়কালে বাংলা শাসন করে।

তাঁর জন্ম ও বংশ পরিচয় সম্পর্কে সঠিক কিছু জানা যায় না। গিয়াসউদ্দীন আজম শাহের রাজত্বকালের শেষের দিকে ফিরুজাবাদের ( পান্ডুয়া) ইলিয়াসশাহী রাজদরবারে যেসকল অমাত্য প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন, গণেশ তাঁদের অন্যতম। তিনি সাইফুদ্দীন হামজাহ শাহ, শিহাবউদ্দীন বায়েজীদ শাহ ও আলাউদ্দীন ফিরুজ শাহের রাজত্বকালে বাংলার রাজনীতিতে ষড়যন্ত্রমূলক ভূমিকা পালন করেন এবং কম করে হলেও চার বছর (১৪১০-১৪১৪) রাজ্যের প্রকৃত ক্ষমতা তাঁর হাতে কেন্দ্রীভূত ছিল। তিনি রাজ্যের শাসন কর্তৃত্ব কুক্ষিগত করেন এবং বিশৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক গোলযোগের সুযোগে আলাউদ্দীন ফিরুজ শাহকে সিংহাসনচ্যুত (সম্ভবত হত্যা) করে ১৪১৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলার সিংহাসন দখল করেন।

রাজা গণেশ বাংলায় মুসলিম শাসন উৎখাতের জন্য মুসলমানদের নির্যাতন ও উচ্ছেদ করার নীতি গ্রহণ করেন। নির্যাতিত মুসলমানগণ শেখ নূর কুতুব আলমের শরণাপন্ন হয়। তিনি জৌনপুরের সুলতান ইবরাহিম শাহ শর্কীকে মুসলমানদের উদ্ধারে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান। সুলতান ইবরাহিম শাহ শর্কী বাংলায় অভিযান করে সরাই ফিরুজপুরে শিবির স্থাপন করেন। রাজা গণেশ নূর কুতুব আলমের কাছে আত্মসমর্পণ করলে তিনি তাঁকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার দাবি জানান। গণেশ নিজের স্থলে তাঁর পুত্র যদুকে ধর্মান্তরিত করার প্রস্তাব দেন। যদু ইসলাম গ্রহণ করেন এবং তাঁকে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করা হয়। তিনি তাঁর নতুন নাম জালালুদ্দীন মুহম্মদ শাহ নামে মুদ্রা প্রচলন করেন। কিন্তু জৌনপুর সেনাবাহিনীর প্রস্থানের পর গণেশ তাঁর পুত্রকে সিংহাসনচ্যুত ও বন্দি করেন। তিনি দনুজমর্দনদেব উপাধি ধারণ করে নিজ নামে মুদ্রা জারি করে রাজকীয় ক্ষমতার প্রয়োগ শুরু করেন। তিনি পুনরায় মুসলিম নির্যাতন শুরু করেন, শেখ আনোয়ারকে হত্যা করেন এবং শেখ জাহিদকে সোনারগাঁওয়ে নির্বাসন দেন। কিন্তু শীঘ্রই ১৪১৮ খ্রিস্টাব্দে গণেশ তাঁর পুত্র জালালুদ্দীন কর্তৃক সিংহাসনচ্যুত এবং সম্ভবত নিহত হন । ১৪৩৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত জালালুদ্দীন বাংলার রাজা ছিলেন।

রাজা গণেশ তাঁর স্বল্পকালীন শাসনে প্রায় সমগ্র বাংলার ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। ব্যক্তিত্বের অধিকারী রাজা গণেশ ছিলেন একজন চতুর কূটনীতিক। তিনি দেবী চন্ডীর ভক্ত ছিলেন।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫৬

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:

চমৎকার পোস্ট।+++

এরকম আরো পোস্ট দিন। আর সম্ভব হলে আরো তথ্য দিবেন। :)

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:০৩

এম এস এস মামুন বলেছেন: উৎসাহ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। চেষ্টা করব। :)

২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০০

শাশ্বত স্বপন বলেছেন: জোর করে,কৌশলে ধর্মান্তরিত করে কি ফল হয়েছে, দেখেন সিমারকে, তার বাবাকে, শত শত পীরকে, যাদের পূর্বপুরুষরা ধর্মান্তরিত হয়েছিল। অধুনা গায়ক সুমন চট্রোপাধ্যায় সাবিনাকে বিয়ে করে সুমন কবীর হয়েছে। পাইকারী হারে এসব করতে গিয়ে দেখেন ইসলামের আজকের অবস্থা!

কোয়ালিটির চেয়ে কোয়ানটিটি কি ভাল?

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:০৪

এম এস এস মামুন বলেছেন: কি অবস্থা হয়েছে বলেন দেখি?

৩| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৪৪

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: পোস্ট ভালো লাগলো। ইতিহাস সংক্রান্ত পোস্টে তথ্যসূত্র উল্লেখ করা সমীচীন।



শুভকামনা :)

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:০৩

এম এস এস মামুন বলেছেন: ধন্যবাদ পোস্টটি সম্পাদিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.