নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভীষণ বৃষ্টি। তিন তলার জানালাটা কেমন ঝাপসা দেখা যাচ্ছে। পরিষ্কার দেখা গেলেও বিশেষ লাভ হয়তো কিনা কে জানে। থাই গ্লাসের জানালা বেশ ভালোমতই লাগানো। জানালার পেছনে ভারী পর্দা দেয়া। বৃষ্টির মতো জানালায় আছড়ে পড়ছে আমার অপেক্ষমান দৃষ্টি। জানালার কাচ আর পর্দা ভেদ করে বৃষ্টিই পৌছায় না, চশমার কাচে ঢাকা আমার দৃষ্টি কি পৌছবে! ভালোবাসার পৌছানো তো আরো দুরূহ।
আমি হাতে একটা গোলাপ আর মনে বেশ খানিকটা আশা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। রাগ ভাঙ্গানোর জন্য বৃষ্টি নিশ্চয়ই খুব বাজে সময়। এখন বাজছে তিনটা। আকাশটা নিশ্চয়ই আমার মনে মতো ফুটো হয়ে গেছে। জানালার দিকে তাকিয়ে থাকার গুরুদায়িত্ব থেকে চোখ একটু অবসর নিয়ে মাঝেসাঝে আশেপাশে তাকাচ্ছে। রাস্তায় অনেকখানি পানি জমে গেছে। জুতা হাতে নিয়ে হাটছে স্কুল থেকে ফেরা ছেলেমেয়েগুলো। এক রিকশাওয়ালা ছাউনি ফেলা দোকানে বসে খুব আয়েশে চা টানছে। এক দিনের জন্য সেই তো রাজা। রাস্তার কিছু ভাসমান ছেলেরা অবশ্য পানি ছিটাছিটি করে ভীষণ ফূর্তিতে আছে। আজকের এই রাস্তাই তাদের ওয়াটার কিংডম।
অহনা কি করছে এখন ? কয়েক পৃষ্ঠা পড়ে ভাজ করে রাখা পাতাটা খুলে কবিতার বইটা ধরেছে নাকি আবারো! নাকি কান গুজে দিয়েছে বৃষ্টি সম্রাট রবীন্দ্রনাথের সুরের আশ্রয়ে! নাকি এখনো আমার গায়ে অভিমানের ঢিল ছুড়ে চলেছে মনে মনে। বৃষ্টিভেজা বিকালগুলো অভিমানের, ভুল নেই তাতে।
গোলাপটা ভিজতে ভিজতে কেমন নুয়ে পড়েছে। আমি সন্দিহান দৃষ্টিতে গোলাপের দিকে তাকাচ্ছি, সেও কি অভিমান করে বসলো আমার উপর। গোলাপের মধ্যে স্ত্রী পুরুষ আর প্রেমের ব্যাপার থাকলে পুরুষ গোলাপ স্ত্রী গোলাপের রাগ ভাঙ্গাতো কি করে কে জানে। কি ফুল নিয়ে যেত?
তোমার অভিমান অনেকটা শিলা বৃষ্টির মতো। ভীষণ আঘাত করে আবার স্নিগ্ধতায় মন ভিজিয়েও দেয়। কাল তোমার অভিমানে ভিজেছি, আর আমাকে ভিজিয়ে চলেছে মেঘ ঝরা বৃষ্টি। কাকেরা আমাকে এই মুহুর্তে দেখলে একে অপরকে দেখে বলবে, ‘তুইতো অমিতভেজা হয়েছিস’। আচ্ছা অহনা কি আজকের বৃষ্টিটা দেখবে না একবারও! অন্যদিন কি উচ্ছ্বাস তার বৃষ্টি নিয়ে, আজ কি আমার অভিমান বৃষ্টির উপর দিয়েও গেল তাহলে ?
আমি দাড়িয়েই আছি। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামুক। ভিজিয়ে চলুক বৃষ্টি আজ পুরো আত্মা। ধুয়ে যাক সব অভিমান। অভিমানের তীব্র রোদে বৃষ্টির ছিটেফোঁটা প্রেমের রংধনু হয়ে যাক আকাশে!
বৃষ্টিতে চশমার কাচ যথেষ্ট ঘোলা হয়ে না থাকলে আমি তখনই দেখতাম, অহনা নেমে এসেছে। একটা বেগুনি ছাতা নিয়ে এগিয়ে আসছে আমার দিকে। আমি তখনো সীমাহীন অপেক্ষা নিয়ে জানালার দিকে তাকিয়ে আছি। যতটা অপেক্ষা নিয়ে বৃষ্টির আশায় তাকিয়ে থাকে গ্রীষ্মের দাবদাহে একদল ক্লান্ত পথিক। জানালার কাচের আড়াল থেকে দিব্যি সব দেখা যায়, এটুকু কেন যে সবসময় মনে পড়েনা।
বৃষ্টি বেড়েই চলেছে। আজ বোধ হয় মন ভেজানো বৃষ্টি, মন না ভিজিয়ে বৃষ্টির থামবে না।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৪
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাহ! বেশ লুতুপুতু রোমান্টিকতা!!!!
একণও কি এগুলো কি আছে?
ফেসবুক আর টুইটের ভীরে?
ডিস্কো, বার আর মোবালাইজেশনে
বানিজ্য, ডিজিটাইজেশনে,
আর ফাস্ট কালচারের যুগে!!!!
বনলতা সেনকেতো তারা বলে বোকা!
কিংবা জীবনানন্দ সেকেল!
তাদের কাল কি?
তাতেও বোকা বোকা চোখে চেয়ে থাকে!
এখন বুঝি সময় থ্রি ডব্লিউর।
এখানে প্রেম খোঝে কে কোথা!?????