নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Ferdous

ferdous

::: I am not what happened to me... I am what I choose to become...

ferdous › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুবার ফোন কাটা হয়েছে এর মধ্যেই। তৃতীয়বার আবার ফোন আসছে।

২৮ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৬

ফোনের স্ক্রিনের আলোটা জ্বলছে আর নিভছে। জ্বলা নিভার খেলাটা ভালো লাগছে। খেলা শেষের অপেক্ষায় তাকিয়ে থাকা। তারপর আবার পুনরায় ফোনের বেজে ওঠার অপেক্ষা, কখনো একটু পরেই বেজে ওঠে, কখনো বা যখন মনে হয় আরেকবার আর ফোন করবে না তখনই বেজে ওঠা। আবারো চক্রের শুরু।



চক্রের কথা মনে হলো কেন? ফ্যানের দিকে তাকিয়ে আছি তাই ? ফ্যান ঠিকঠাকই ঘুরছে, তবুও তরতর করে ঘামছি। খুব কি গরম বাইরে ? দেখে আসা যেতে পারে। এক কাপ চাও খাওয়া দরকার, চায়ের সাথে দশ টাকার বেনসন সিগারেট। সিগারেটের ধোয়ায় এখন আর নিষেধাজ্ঞা নেই। কিছুক্ষনের মধ্যে কেটে যাবে হয়তো আরো কিছু নিষেধাজ্ঞা। রাস্তার যেকোন সুন্দরী তরুণীর দিকে প্রকাশ্যেই তাকানো যাবে। অনেক অনেক দিন শেভ না করলেও কোন সমস্যা নেই। রাত জেগে চোখ লাল করা যাবে, ঘুমের অনিয়ম করা যাবে, ‘সময়মত খাওনি কেন তার উপযুক্ত কারণ দর্শাও’ এমন কোন রুল জারি করা নেই। কিংবা বাধ্যবাধকতা নেই কাউকে ভাবার, মনে করার। এখন অবসর, মনের এখন সীমাহীন অবসর।



যখন ধরেই নিয়েছি একের পর এক ফোন করে ফোনটার মতো অহনাও হাপিয়ে গেছে, তখনই বেজে উঠলো টুংটাং রিংটোন। বিয়ের দিনেও কোন মেয়ে কাউকে বারংবার ফোন করে যাওয়ার এতটা অবকাশ পেতে পারে বলে ধারণা ছিলনা। ফোনটা কি একবার ধরে বলা উচিৎ, ‘অহনা, তোমার কি বর পছন্দ হয়েছে ? হাইট কত বরের ? লম্বা ছেলে ছাড়া নাকি বিয়েই করবে না বলেছিলে?” না, কথার মধ্যে কেমন হাহাকার টের পাওয়া যাচ্ছে। বরং অন্যকিছু বলা যেতে পারে। “আজকে তোলা কোন ছবি কি কোনভাবে আমাকে দেয়া যায় ? তোমাকে বিয়ের দিনে কেমন লাগবে আমি এরকম একটা ছবি বহুদিন ধরে মনে মনে সাজিয়েছিলাম। মিলিয়ে দেখব একটু।” না, এটাও হয়তো বলা যায়না। হাহাকার ভাবটা দূর করা যাচ্ছেনা। প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকাকে কি বলতে হয় তার তো অভিজ্ঞতা নেই।



টানা দুটো সিগারেট ধোয়ায় উড়ালাম। তৃতীয়টা যখন হাতে নিয়েছি ততক্ষণে আরো একবার ফোন বাজতে শুরু করেছে। ধরতে ইচ্ছা হচ্ছেনা এটা সত্যি না। মনে হচ্ছে ফোন ধরা মানেই শেষবার ফোন আসা। আরো একবার নাহয় তাকিয়ে থাকুক ফোনে উঠে থাকা আমার নামের দিকে। ওর ফোনে এখন আমার নাম কি আছে কে জানে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নাম থাকে। একবার ছিল, ‘কুটিকু’ ! একবার ছিল গাব্দু। আরেকবার খুব ঝগড়া চলেছিল কয়দিন, সেবার নাকি ছিল ‘হারামি’। এখন কি ফোনে আদৌ আমার নামটা আছে! কে জানে, হয়তো এর মধ্যেই সেটাও নেই।



রাস্তায় কি কিছুক্ষণ পায়চারি করা যায় ? বড় অসহ্য লাগছে সবকিছু। ওই চায়ের দোকানদার থেকে শুরু করে ল্যাম্পপোস্টের হলুদ আলোটাও মনে হচ্ছে অদ্ভুত করুণা নিয়ে দেখছে আমাকে। ইচ্ছা করছে হেটে সেই গলিটার মাথায় চলে যাই যে গলির সামনে না জানি কত বিকাল সন্ধ্যা কেটেছে। যেই গলিকে নিয়ে কত বিচার, বিশ্লেষণ, গবেষণা ! গলির কতটুকু সামনে রিকশা থামাতে হবে, বের হওয়ার সময় গলি থেকে বেরিয়ে কোন দিকে হেটে গেলে সবার নজরে কম পড়া হয়, কোথায় দাড়ালে ওই বিল্ডিং এর বারান্দাটা খানিক দেখা যায়।



আমি ফিরে যাচ্ছি। কারাগারের মতো বিষন্ন ওই ঘরের দিকে। যেখানে অন্ধকারও তোমার কথা বলে, নৈশব্দও তোমার কথা বলে। যেই ঘরের ঘড়ির কাটার টিকটিক কাটার মতো বেঁধে মনে, ছিন্নভিন্ন করে দেয় পুরোটা।



২.

অহনা প্রায় এক ঘন্টা ধরে বাসার গলি থেকে কিছু সামনে পার্কের কাছে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবারই মনে মনে ভাবছে এই ফোনটা না ধরা হলে সে ফিরে যাবে। ফিরে যাওয়ার মতো অবস্থা এক ঘণ্টা আগে থেকে কনে নিখোজ হওয়া বাড়িটাতে আছে কিনা জানা নেই। তবুও ফিরে যাবে। তবুও ফোন করছে, একের পর এক ফোন করেই যাচ্ছে। এই ফোনটাই হয়তো শেষ, মনে হচ্ছে এই ফোনটা হয়তো ধরা হবে। অহনা ফোন কানে চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে আছে। মন বলছে এবারেরটা রিসিভ হবে, আর পাঁচ দশ সেকেন্ড বাকি আছে রিং শেষ হতে, তবু মনে হচ্ছে!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মে, ২০১৪ রাত ৮:৫৯

মোসতাকিম রাহী বলেছেন: মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়ছিলাম....!

অতিসাধারণ কাহিনি, কিন্তু জাদুকরি বয়ান!
ভাই, আপনি লিখুন নিয়মিত। অনেক শুভেচ্ছা....

২| ২৯ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:০৫

আজীব ০০৭ বলেছেন: ভালোই লিখেছেন..........।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.