নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: এই নিকটি অবশ্যই (১৮+) দের জন্য এবং দুর্বল ও সংবেদনশীলদের বিশেষ ভাবে অনুরোধ রইলো এই নিকের পোস্ট সমূহ এড়িয়ে যাওয়ার। এর পরও যাদের ভিতরে খুব বেশি কুড়কুড়ি আছে তারা অবশ্যই নিজ দায়িত্বে ঢুকবেন। আর পোলাপাইন!!! এই গুলান বহুত শয়তান ।

সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: এই নিকটি অবশ্যই (১৮+) দের জন্য এবং দুর্বল ও সংবেদনশীলদের বিশেষ ভাবে অনুরোধ রইলো এই নিকের পোস্ট সমূহ এড়িয়ে যাওয়ার। এর পরও যাদের ভিতরে খুব বেশি কুড়কুড়ি আছে তারা অবশ্যই নিজ দায়িত্বে ঢুকবেন। আর পোলাপাইন!!! এই গুলান বহুত শয়তান ।

িফল্ড মার্শাল

অবসর সময় টুকু এখানেই কাটাই । ব্লগে এসে প্রচুর আনন্দ পাই । খারাপ লাগে যখন আমাকে ব্যান করে দেয় বা ব্লক করে দেয় । অনেকবার ব্যান খেয়েছি । জানাপার হাতে পায়ে ধরে আবার ব্লগে আসি । ব্লগের সবাইকে আমার অভিন্ন্দন । [email protected]

িফল্ড মার্শাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঙালির বাসর রাত

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৪

উঠতি যৌবন যখন বাঁধভাঙিবার উপক্রম করিলো , তখনই আবুলের পিতা কাল বিলম্ব না করিয়া আবুলকে বিয়ের পিড়িতে বসাইয়া দিলেন । বাল্য কাল , কিশোর কাল ইত্যাদি সময়কালে এমন রাত্রি খুব কম ই গিয়াছে যে রাত্তিরে আবুল বাসর রাতের স্বপ্ন দেখে নাই । নির্ঘুম রাত্রি কাটিছে একে একে তাহার ইয়াত্তা নাই । নারী সঙ্গ হইতে সর্বদা দূরে থাকা আবুল নারীদের প্রতি তেব্র আকর্ষণ বোধ করিত । হেতু তাহার পিতা গ্রামের মান্যগণ্য একজন , সেহেতু সে তাহার আকর্ষণ অনেকটাই লুকাছুপা করিয়া রাখিত । নানান সময় নানান ভাবে নানান জনের প্রেমে পড়িয়াছে আবুল । প্রথম প্রেমের ব্যথ উপাখ্যান রচিত হয় তাহার কিশোর বয়সে । লতা’র চোরা চাহনিতে বিমোহিত আবুল তাহার নামের সার্থকতা প্রমাণ করিয়া ড্যাব ড্যাব করিয়া চাইয়া রহিত । এভাবেই সে চাইয়া চাইয়া লতা’র বিবাহ দেখিয়া ফেলিলো ।



কাহিনী এখানেই থামিয়া থাকে নি । বাস , ট্রেন আর মেয়ে একখান যায় , আরেকখান আসে । এই থিউরি প্রমাণ করিয়া আবুলের জীবনে আরও একখান মেয়ের আগমন ঘটিলো । গ্রামের মুদির দোকানীর লড়কি রুপবান । মুদির দোকান হইতে পণ্য খরিদ করিবার জন্য যাইতে যাইতে রুপবানের প্রেমে পড়িয়া যায় আবুল । কিন্তু লজ্জা শরমের কাথা বালিশ মোড়া আবুল তাহার ভালোবাসার কথা রুপবানরে কইতে পারে নাই । সময় স্রোত আর নারী , কাহারো জন্য অপেক্ষা করে না । রূপবানও এই সুত্রানুসারে আবুলের লজ্জা শরমের কাথা বালিশ খোলার অপেক্ষা না করিয়া বিবাহ করিয়া চলিয়া গেলো আবুলের ই বন্ধু ছদরুলের সহিত ।



আবুলের গণহারে ছ্যাক খাওয়ার কথা তাহার পিতার অজানা ছিল না । পুত্রের এই পরিণতি জটিল হইতে জটিলতর হওয়ার পূর্বেই তাহার পিতা আবুলকে বিবাহ বন্ধনে আইন্ধার গিট্টু বাইন্ধ্যা দিলেন । পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক রূপবতী কইন্যা আঙ্গুরলতা । বাসর রাত লইয়া বরাবরের মতোই উৎসুক আবুল বন্ধুদের সহিত পরামর্শ করিতে লাগিলো । বাসর রাতে কি কি করিতে হয় বন্ধুদের সহিত সে আলাপচারিতায় অবাকিত হইয়া আবুল লক্ষ্য করিল সে কিছুই জানে না । বন্ধুদের রসালো আলাপে আবুলের কান ভোঁ ভোঁ করিত লাগিল ।



রাত্তিরে যথা সময়ে দরজা ঠেলিয়া আবুল তাহার কক্ষে প্রবেশ করিলো । টুকটুকে লাল শাড়িতে বিছানায় বসা আঙ্গুর লতা’কে দেখিয়া আবুলের কলিজা ধক করিয়া উঠিলো । চোখ টিপ মারিয়া আঙ্গুর লতা আবুলকে আমন্ত্রণ জানাইলো । আবুল এক পা আগাইয়া তিন পা পিছাইয়া গেলো । তাহার কানে কানাঘাত করিতে লাগিলো ছদরুলের একখান বাক্য ।

‘’ বন্ধু বাসর রাইতে মনে করিয়া মারিও বিলাই

নইলে সারাজীবন থাকিতে হইবে স্ত্রীর পায়েরও তলায় ‘’



আঙ্গুর লতার তীব্র আকর্ষণ হইতে নিজেকে বিরত করিয়া দরজা খুলিয়া আবুল বাইরে ছুটিয়া গেলো । আবুলের দৌড়ের ‘আবুলিয় গতি’তে আঙ্গুর লতা আবুল হইয়া গেলো । আবুলের ফিরিয়া আসার অপেক্ষায় আঙ্গুরলতা প্রহর গুণিতে লাগিলো । দশ মিনিট যায় , আধা ঘণ্টা যায় , এক ঘণ্টা যায় , দুই ঘণ্টা যায় । আবুল ফিরিয়া আসে না । এদিকে ভোর হইতে লাগিল । আবুলের দেখা নাই । পাঁচ ঘণ্টা উনত্রিশ মিনিট ছাপ্পান্ন সেকেন্ড বাদে আবুল কক্ষে ফিরিয়া আসিলো । আঙ্গুর লতা আবুলকে দেখিয়া বিভীষিকায় কাপিয়া উঠিলো । ইহাকি আবুল ? তাহার আবুল ? নাকি ভূত ? সফেদ রঙা পাঞ্জাবী ধুলোয় মাখামাখি । এদিকে সেদিকে ছেড়া । কালিতে মুখ পোড়া আবুলের মতো অবস্থা । চোখ পাকিয়ে আঙ্গুর লতা কইলো , ‘ ওহে আবুল , কি করিয়া আসিছ ? ‘ আবুল তাহার পেছন থেকে দুই হাত সামনে আনিয়া কহিল , ওহ লতা, বিড়াল ধইরা আনিছি । বাসর রাতে বিড়াল মারিতে হয় । খাটের নিচ হইতে দা বাহির করিয়া মাটিতে বিড়ালের কল্লা রাখিয়া ‘ ইয়াআআআ আল্লল্লি ‘ চিৎকার করিয়া আবুল বিড়ালের কল্লা নামাই ফেলিলো ।



পরবর্তী ঘটনা খুবি সংক্ষিপ্ত । আঙ্গুর লতা আবুলকে ছাড়িয়া চলিয়া যায় । বিড়াল মারিতে যাইয়া সে তাহার বাসর রাতের স্বপ্ন মারিয়া ফেলে ।



উপরের ঘটনা বিড়াল মারিবার কাহিনী নিয়া বহুত প্রচলিত একখান চুটকি । ইহাকে নিজের মতো ঘুরিয়া ফিরিয়া লেখিয়া একটু মজাক দানের কোশিস করিলাম । এছাড়াও এই পুরাতণ কাহিনিকে উপস্থাপন করিবার আরও একখান হেতু আছে । বাঙালির বাসর রাতের কাহিনী দিনকে দিন পরিবর্তন হইয়াছে । আবুলের মত আবলামি এখন আর কেহ করে না । বিড়াল মারা’র আসল কাহিনী ধরতে না পারিয়া অনেকেই বেলাইনে উড়াউড়ি করেন ।



নিন্দুকেরা কহেন ,



‘ বাঙালি পুরুষের রোম্যান্টিকতা কবিতার মাঝেই সীমাবদ্ধ ‘



বাক্যখানা যে কতোখানি খাঁটি , তাহা বোঝা যায় আজকালকার প্রজন্ম দেখিয়া । আনাচে কানাচে , অলিতে গলিতে নানান নামে নানান কবিদের সমারোহ । তাহারা তাদের রচিত ‘কবিতার’ মাধ্যমে তাহাদের রোম্যান্টিকতা , তথা মনের উথাল পাথাল ভাবনার মূলোৎপাটন করিয়া থাকেন ।



শুধু আজকালকার প্রজন্ম নহে , আমাদের আগের প্রজন্ম ও বাসর রাতে তাহার সঙ্গীদের কবিতা শুনাইতেন । কক্ষে ঢুকবার পূর্বে তাহারা কয়েকখান কবিতা মুখস্ত করিয়া যাইতেন , এবং সময় মতো উদ্গিরন করিতেন ।



বর্তমান প্রজন্ম ফেসবুক প্রজন্ম । তাহারা সারাক্ষণ ফেসবুকে গুতান এবং কবতে লিখেন । নিন্দুকদের কথার সার্থক করেন । বিষয়টা এমন ই দাঁড়ায় যে প্রেমিকার বিয়ে হইয়া যাইতেছে আর এদিকে প্রেমিক কবিতা লেখিয়া তাহার মনের ভাব উজার করিতেছেন ।



আরে থাকুক অপ্রাসঙ্গিক কথা । এসব কথা বলিয়া আপনাদের বিরক্ত করিবার কোন হেতু নাই ।

যাহা কইতেছিলেম । বাসর রাতের প্রজন্ম ।



বর্তমান প্রেমিক প্রেমিকারা বরই লুম্যান্টিক । তাহারা নিত্তনতুন বাসরের ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা করিয়া থাকেন । ব্যাপারটা এমন , সখিনা লাল রঙে স্টোন পাথরের জামা কিনিয়াছে , সুতরাং জরিনা সবুজ রঙের জামা কিনিবে । সেম টু সেম হওয়া চলিবে না । স্বকীয়তা দরকার ।



আজকালকার প্রেমিক প্রেমিকারা তাহাদের বাসর রাতের পরিকল্পনা করিবার ক্ষেত্রে বরই স্পর্শকাতর ।



কাহিনী শুনি একখান ,



ঘাসের মাটিতে , ঝাড়ের চিপায় বসিয়া আছে দুই কইতর কইতরি । কইতর কইতেছে ,

ওই কইতরি , আমারা আমাদের বাসর রাতে কি করিবো ? ‘

কইতরি কহিল , আমরা চিঠি আদান প্রদান করিব । বাসর রাতে তুমি এক গাদা চিঠি নিয়া আসিবে । ‘’ কইতরির এহেন কথা শুনিয়া কইতর কহিত , ‘ ইহা কি কও কইতরি , এইডা ক্যামনে ? ‘’

কইতরি বিরক্ত হইয়া কহিল , ‘’ এটা ইউনিক ইস্তাইল , সবাই যাহা করে তাহা আমরা করিব না ‘’

কইতর লোলুপ দৃষ্টিতে কহিল , ‘ সবাই কি করে ? ‘



কইতরি মুখ ঝামটা দিয়া কহিল , কইতে পারুম না । ‘’

কইতর কইল , ‘ ও কইতরি , চিঠি চালাচালি করলে আমগো গেদা ক্যামনে পয়দা হইব ? ‘

কইতরি লাজুক স্বরে কইলো ‘’ পয়দা হওয়ার সময় হইবে । ভাবিও না ‘’



কইতর কহিল ‘ কিন্তু চিঠি চালাচালি করিলে চিঠির ই একে একে গেদা হইবে । আমাদের গেদা আর হইবে না ‘’

কইতরি ‘ চুপ যা বদমাশ ‘



আধুনিকায়নের এই যুগে প্রেমিক প্রেমিকারা তাহাদের বাসর রাত শুধু চিঠি চালাচালির মধ্যেই নহে , আরও নানান ভাবে পালন করিবার চিন্তা ভাবনা করিয়া থাকেন । আমার এক বন্ধু প্রতিম একবার দুঃখের সহিত কহিল যে তাহার প্রেমিকা তাহারে কইছেন যে ত্যানারা বাসর রাতের সময় ফোনালাপ করিবেন । দুই জন দুই রুম থেকে সারারাত ফোনে আলাপ করিবেন । এভাবেই তাহারা পালন করিবেন বাসর ।

আমি কইলাম , প্রথমে না আড্ডা দিয়া পালন করিতে চাইছিলি ? দোস্ত কইল , এই আইডিয়া নাকি তাহার বান্ধবী ঠিক করিয়াছে । তাই উহা বাতিল ।



বাসর রাত নিয়া জল্পনা কল্পনা চলিতে থাকিবে । যুগে যুগে , প্রজন্ম হইতে প্রজন্ম বাসর রাত নিয়া নানান রচনা রচিত হইবে , নতুন নতুন পরিকল্পনা হইবে ।



ক্ষুদ্র পরিকল্পনায় ইহা লেখিলাম । ভুল ভ্রান্তি ক্ষমার যোগ্য । আগামীবার ‘বাসর রাতের সাতকাহন’ পড়িবার আমন্ত্রণ রইলো ।



সবাইকে ধন্যবাদ ।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:৫৩

মেহেদী হাসান '' বলেছেন: কইতর কইতরির ব্যাপার টা মজা পাইলাম,,,

২| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৪

নিষ্‌কর্মা বলেছেন: =p~ =p~ =p~

৩| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৬

গ্রীনলাভার বলেছেন: :D :D :D :D :D :D

ভাই জোস লিখছেন। আরেকবার হেসে নেই -
:D :D :D :D :D :D :D :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.