নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভুল গল্প!

কে বলেগো সেই প্রভাতে নেই আমি!

শুঁটকি মাছ

এই আছি, আবার নাই!!!!

শুঁটকি মাছ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রম্য গল্পঃখালার সাথে প্রেমিকা ফ্রী ;) ;) ;)

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩৫

এলাকায় নতুন আসা চুমকিকে জাকিরের খুব মনে ধরেছে।কিছুদিন চুমকির পিছনে ঘুরাঘুরি করে জাকির তার মনের কথাটা চুমকিকে বলার চেষ্টাও করেছিল।কিন্তু চুমকি বড়াবড়ই তাকে প্রত্যাখান করেছে।সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ি জানা গেছে,চুমকি জাকিরকে থ্রেট দিয়ে বলেছে যে আর কখনো যদি চুমকি জাকিরকে তার আশে পাশে দেখে তাহলে সে তার পেন্সিল হিলের জুতা দিয়ে জাকিরের গালে বাড়ি দিয়ে জাকিরের চাপা ভেঙ্গে দেবে।এরপ্র থেকে জাকির ভয়ের চোটে চুমকির ১০০ গজের ভিতর থাকে না।কিন্তু চুমকিকে যে সে ভালোবাসে!!তাকে না দেখলে তার দিলটা যে কেমন করে তা যদি চুমকি জানত।কিসের এত দেমাগ চুমকির?চুমকি কলেজে পড়ে আর জাকির সারাদিন চুমকিদের বাড়ির সামনের চায়ের দোকানে বসে ভ্যারেন্ডা ভাজে বলে?

সে যাই হোক।চুমকির হাই হিলের জুতার বাড়ি খাওয়ার ভয়ে তো আর চুমকির প্রতি মোহাব্বত কমে যেতে পারে না।এখনো সে সারাদিন কিভাবে চুমকিকে তার প্রেমিকা বানানো যায় সেই চিন্তা করে।

ইতিমধ্যে জাকির এক নেংটি পরা পীর বাবার সন্ধান পেয়েছে।এক শুভদিনে জাকির সেই পীর বাবার কাছে গিয়ে তার পা ধরে বলল, “বাবা, আপনে আমারে এমন কোনো তাবিজ দেন যা খাইয়্যা চুমকি আমার প্রেমে দিওয়ানা হইয়্যা যাবে”।

পীর বাবা পা ঝাড়া দিয়ে বললেন, “অই তুই আগে আমার পা দুইটা আগে টিপ্পা দে।তারপর কইতাছি কি করন লাগবো”।

জাকির ঘন্টা ২ নেংটি পড়া পীর বাবার পা দলাই মালাই করে দিল।অতপর বাবা তুষ্ট মনে বলল, “তুই যেই মাইয়্যারে ভালাবাসোস তার মাথার চুল নিয়া আসবি।সেই চুল আমি পইড়া দিলেই ওই মাইয়া তোরে ছাড়া আর কুনো পুরুষরে ভালা পাইব না”।

জাকির ভেবেছিল পীর বাবা তাকে দোয়া করে দেবে।আর সেই দোয়ার বদৌলতে চুমকি তার হয়ে যাবে।আর এই ব্যাটা বলে কিনা তাকে চুমকির চুল নিয়ে আসতে?সে কোথায় পাবে চুমকির চুল?সেকি চুমকির কাছে গিয়ে বলবে যে আসো চুমকি তোমার মাথার খুশকি বেছে দেই আর এই চান্সে সে চুমকির মাথার চুল তুলে আনবে।এই পীর ব্যাটা নিশ্চিত ভন্ড!তারপরও জাকির পীরবাবার কথা ফেলে দিতে পারেনা।কোনো ভাবে চুমকির চুল জোগার করে পীরবাবার হাতে দিলে হয়তো কাজ হলেও হতে পারে।

পরেরদিন সকালে জাকির চুমকিদের বাসার ছুটা বুয়ার হাতে পান খাওয়ার জন্য ৫০০ টাকা হাতে গুজে দিয়ে বলল, “খালা গো,এই ৫০০ টাকা দিয়া তুমি পান খাইয়ো।আমারে যদি ওই বাসার আপার চুল আইন্না দিতে পারো,তাইলে আরো ৫০০ টাকা পাইবা”।

জাকিরের এহেন কথা শুনে বুয়ার ডিমান্ড আরো বেড়ে গেল।বুয়া বলল, “মামা, খালি ৫০০ টাকায় তো আইজকাইল পান পাওন যায় না।পান তো খান না মামা।হেইর লইগ্যা পানের দামও জানেন না।২০০০ টাকা দিতে হইব মামা”।

বুয়ার কথা শুনে জাকিরের ইচ্ছে হল বুয়ার গালের উপর তড়াম করে দুইটা বসিয়ে দিতে।হাতি ফাদে পড়লে পিপড়াও লাথি মারে।পান কিনতে নাকি ২০০০ টাকা লাগে! অনেক কষ্টে জাকির তার মাথা ঠান্ডা রেখে কোনোক্রমে বুয়ার কথায় সায় দিল।

বুয়াও তার দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করল।দুদিন পরেই এক গাছি চুল এনে জাকিরের হাতে দিয়ে ২০০০ টাকা নিয়ে চলে গেল।আর জাকির সেই চুল হাতে পাওয়া মাত্র দৌড়ে পীর বাবার কাছে চলে গেল।

পীরবাবা সেই চুল নিয়ে কি করল কে জানে?কিন্তু খুব দ্রুত কিছু একটা পরিবর্তন দেখতে পেল।

সেদিন চুমকি তার যে খালার কাছে থাকে সেই খালা ফেরীওয়ালার কাছ থেকে কদুর শাক কিনবে বলে নিচে নামল।জাকির প্রতিদিনের মত সেদিনও খালাকে দেখা মাত্র সালাম দিল।খালা সাধারণত সালামের জবাব দেন না।কিন্তু সেদিন খালা হাসিমুখে সালামের জবাব দিল।জাকির তো পুরাই টাস্কি খেয়ে গেল।তার উপর জাকিরকে আরো অবাক করে দিয়ে খালা বললেন,

“কি ব্যাপার,তুমি তো সব সময় নিচে দাড়িয়েই সালাম দাও।মাঝে মাঝে একটু তো বাসায় বেড়াতেও আসতে পারো,নাকি?”

খালার কথা শুনে জাকিরের তো পুরা তাকধিন তাকধিন করে নাচানাচি করতে ইচ্ছে হল।কোনো ভাবে সে নিজেকে সামলে বলল, “জি আসব”।

জাকিরের কথা শুনে খালাকে বেশ খুশিই মনে হল।খালা জাকিরকে একটা মিষ্টি হাসি উপহার দিয়ে বাসায় চলে গেলেন।

জাকিরের মনটা পুরাই ফুরফুরা হয়ে গেল।পীরবাবার চুল পড়ার ডোজ যে এত ডেঞ্জারাস তা সে ভাবতেই পারেনি।তারপরের দিন বিকালে মাঞ্জা মেরে জাকির চুমকিদের বাসায় গেল।যদিও তার মনে এখনও চুমকির হিল জুতার বাড়ি খাওয়ার ভয় কিঞ্চিত আছে।তবুও চুমকির খালা তাকে বাসায় যেতে বলেছে।তার উপর তো কথা চলে না।চুমকির খালার মন জয় করতে পারলে চুমকিকেও সে জয় করতে পারবে।

চুমকির বাসায় যেতেই খালা জাকিরকে পুরা জামাই আদর শুরু করে দিল।এটা সেটা খেতে দিল,সুখ-দুখের আলাপ করল।কথায় কথায় জাকির জানতে পারল যে খালার এখনও বিয়ে শাদি হয়নি।খালা কেবল চুমকিকে নিয়েই থাকে।খালা তার নিজের মত কথা বলতেই থাকে।কিন্তু আশেপাশে তো চুমকির সারা শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না।জাকির খালাকে বলল, “বাসার মানুষজন কই?”

খালা জানাল চুমকি তার মা-বাবাকে দেখতে গ্রামে গিয়েছে।চুমকি বাসায় নাই শুনে জাকিরের মনটা ব্যাজার হয়ে গেল।জাকিরকে চুপচাপ দেখে খালা বলল, “হঠাৎ চুপ হয়ে গেলে কেন?”

জাকিরঃনা না…।চুপ হইনি।আপনার কথা শুনছিলাম আর ভাবছিলাম।

খালাঃজাকির তুমি সব সময় এতো ভয়ে ভয়ে থাকো কেন বলোতো?সব সময় এতো চুপ চাপ থাকলে চলবে?তুমি পুরুষ মানুষ।মনের কথাটা সাহস করে খুলে বললেই পারো।

জাকির খালার কথা শুনে অবাক হয়ে গেল।চুমকির খালা তো পুরাই জোস টাইপ খালা।সে জাকিরের মনের কথা বুঝে ফেলেছে।আহারে চুমকিটা যদি এতো সহজে তার মনের কথাটা বুঝতো!!!!

জাকির আমতা আমতা করে বলল, “আসলে ল্যাদাকাল থেকেই আমার লজ্জাশরম একটু বেশি!”

খালাঃএতই যদি লজ্জা পাও তাহলে তোমার মা-বাবাকে পাঠাও!

জাকিরঃমা-বাবাকে পাঠাবো?আচ্ছা,তাহলে কালই আপনার সাথে কথা বলতে মা-বাবাকে পাঠিয়ে দেই????

খালা জাকিরের কথা শুনে কেমন যেন লজ্জা পেয়ে যায়।লাজুক লাজুক মুখ করে বলেঃবাড়ে আমার কাছে কেন পাঠাবে?

জাকিরঃতাহলে চুমকির মা-বাবার সাথে আমার মা-বাবাকে পাঠাই?

খালাঃযাহ!তুমি দেখি আস্ত বোকা।চুমকির মা-তো আমার ছোট বোন।তোমার মা-বাবাকে যদি পাঠাতেই হয় তবে আমার বড় বোনের কাছে পাঠাও।মা-বাবা মারা যাওয়ার পর তারাই আমার গার্জিয়ান।

জাকির খালার কথার কোনো আগা-মাথা খুজে পায়না।সে বোকার মত মুখ করে বলেঃআপনার গার্জিয়ান দিয়ে কি হবে?

খালাঃওমা,তোমার আমার বিয়েতে আমাদের অভিভাবকদের দোয়া থাকবে না?

খালার কথা শুনে জাকির পুরাই তব্দা খেয়ে গেল।ডাল মে কুচ কালা হ্যায়।জাকির আর কোনো কথা বাড়ায় না।কারণ,এখন কথা বাড়ালেই সে চিপায় পড়ে যাবে।সে কোনো রকমে খালার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে।

পরদিন জাকির বুয়াকে ধরে।

জাকিরঃওই বুয়া,তুমি আমারে কার চুল আইনা দিছো?

বুয়াঃক্যান,যার চুল আনতে হইসেন হ্যার চুলই আনছি!

জাকিরঃআমি তোমারে ওই বাসার আপার চুল আনতে কইছিলাম।তুমি কার চুল আনছো সত্য কইরা কও।

বুয়াঃআমি আফার চুলই আনছি মামা।

জাকিরঃতোমারে আমি চুমকি চুল আনতে কইছিলাম বুয়া!আমার তো মনে হইতেছে তুমি আমারে তার খালার চুল আইনা দিছো।

বুয়াঃহ,আমি তো চুমকির খালারেই আফা ডাকি।আপনে তো আমারে আফার চুল আনতেই কইছিলেন।

জাকিরের কাছে এবার সব পানির মত পরিষ্কার হয়ে যায়।সে কোনো মতে টলতে টলতে চুমকিদের বাড়ির সামনের সেই চায়ের দোকানে গিয়ে বসে।

ঠিক সেই সময় জাকিরের মুঠোফোনটা বেজে উঠল।ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে বলে উঠলঃ একটু সামনে তাকিয়ে দোতালার দিকে মুখটা ফেরাও।

জাকির দোতালার দিকে তাকিয়ে যা দেখল তাতে সে রীতিমত ভূত দেখার মত চমকে উঠল।চুমকির খালা কড়া ম্যাজেন্ডা কালারের শাড়ী পরে বারান্দায় দাঁড়িয়ে তার পান খাওয়া দাত বের করে জাকিরের দিকে তাকিয়ে হাসছে।

জাকির চোখে কেমন যেন অন্ধকার দেখতে পায়।সে বুঝতে পারে,চুমকির খালা তার ঘাড়ে সিন্দাবাদের ভূতের মত ঝুলে পরেছে।এই ভূতকে নামানো সহজ হবে না।পীর বাবার চুল পড়া বলে কথা।এ্যাকশান একবার শুরু হলে আর থামতে চায় না।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৪৫

ক্ষণিক বলেছেন: পীরবাবা কি সত্যিই আছে নাকি? :D :D ঠিকানাটা দরকার, তিলমে কুছ সাদা হেয়। :D :D

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫৭

শুঁটকি মাছ বলেছেন: আমার কাছে ঠিকানা নাই।জাকিরের কাছে চাইয়া দেখো।পাইলেও পাইতে পারো।

২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫০

সপ্নাতুর আহসান বলেছেন: :) :D :#) =p~ চরম মজা পাইলাম।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:০৮

শুঁটকি মাছ বলেছেন: মজা পাইলেই সার্থক!!!!!পড়ার জন্য ধন্যবাদ

৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৯

চ।ন্দু বলেছেন: আমারও দেখি পীর ধরতে হবে। এমন কিছু সত্যি হয় নাকি?

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:২০

শুঁটকি মাছ বলেছেন: আমি ঠিক সিওর জানি না।জাকিরের কাছ থেকে জেনে আপনাকে জানাবোনে।উখি?????

৪| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৪৭

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
ব্যাপারটা একটু প্রেডিক্টেড ছিল, তবে মজা পাইসি ||

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৮

শুঁটকি মাছ বলেছেন: :!> :!> :!> :#> :#> :#> :#> :#> :#> :#>

ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.