নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যুক্তির মাঝেই সমাধান খুঁজি।

উড়ন্ত বাসনা

জীবন কে ভালবাসি।

উড়ন্ত বাসনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভিশন ২০৩০ আওয়ামী লীগের দুঃচিন্তা

১৯ শে মে, ২০১৭ রাত ৯:১৩

ভিশন ২০৩০ রুপকল্প ঘোষণার পর দেশে সাধারণ মানুষের মনে নতুন করে আশার আলো উঁকি মেরেছে। মানুষ বিএনপিকে সাধবাদ জানিয়েছেন। বেগম জিয়ার ২৫৬ দফায় মানুষ নতুন নতুন প্রকল্প দেখেছে। কিছু কিছু বিষয়ে মানুষ এই চমককে স্বাগত জানিয়েছে। বিশেষ করে গণভোট ব্যবস্থা, পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার মাথা পিছু আয় সহ জীবনমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা ও প্রধানমন্ত্রীর একক ক্ষমতার ভারসাম্য দফাগুলি ছিল চমকপ্রদ। বেগম জিয়া তার প্রকল্পের যে বিষয়টি এনেছেন তার মধ্যে অন্যতম হল স্বৈরাচারী ও একনায়তান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে সংবিধান সংশোধনী এনে প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা ভারসাম্য আনা। যদিও দ্বিকক্ষ সংসদ থেকে সরে আসেন বেগম জিয়া, তবে তা পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য সময় নিবেন তিনি। ঘণ্টা ব্যপি এই সম্মেলনে তিনি ভিশন ২০৩০ পড়ে শুনান। বৈপ্লবিক পরিবর্তনের প্রতিশ্রতিতে শিক্ষিত বেকারদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা প্রদানে ঘোষণা দেন। এই ভিশনে বিএনপি বেশ উজ্জীবিত, ঢাকার সব কূটনৈতিক মিশনে এ ভিশনের কপি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। দেশের বুদ্ধিজীবীরা এটাকে ইতিবাচক বলে আখ্যা দেন। অনেকদিন পর হলেও জাতির সামনে নতুন কিছু উপস্থাপন করতে সামর্থ্য হয়েছে।
খালেদার এ ভিশন ২০৩০ রূপকল্প ভালো চোখে দেখছেন না আওয়ামী লীগ। কানাঘুষা করছে। আওয়ামীর কেন্দ্রীয় নেতাগণ এটাকে ভালভাবে নিতে পারছেন না। শেখ হাসিনাকে অনুকরণ করছেন বলে জানিয়েছেন তোফায়েল। আওয়ামীর লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এটাকে মেধাহীন অন্তঃসারশূন্য বলে আখ্যা দেন। খাদ্য মন্ত্রী এই প্রকল্পকে ধাপ্পাবাজি বলে মন্তব্য করেন। শেখ হাসিনাকে অনুকরণ করছেন বেগম জিয়া, এখানে নতুনত্ব বলতে কিছু নেই। আওয়ামী লীগের দাবি এই প্রকল্প ইতিমধ্যেই অনেকগুলি বাস্তবায়ন হয়ে গেছে আর বাকিগুলি বাস্তবায়নের পথে। বিএনপির এই প্রকল্প ঘোষণার পর থেকে আওয়ামী লীগ নানান ভাবে সমালোচনা করে আসছে, সাংবাদিক সম্মেলন করে তারা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। আওয়ামী লীগ এই ভিশন নিয়ে বেশ চিন্তিত, তারা মিডিয়ার সামনে এই নিয়ে নানা প্রকার কথা বলছেন। যা অনেকটা হিংসাত্মক।
দেশকে উন্নত এবং বিশ্ব চ্যালেঞ্জে দাঁড় করাতে ভিশন ২০৩০ এ ৩৭ পয়েন্টকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এইগুলির মাঝে আছে- প্রতিরক্ষা, নৈতিকতার শক্তি পুনরুদ্ধার, পরিষেবা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা, সন্ত্রাসবাদ, অর্থনীতি, গবেষণা ও উন্নয়ন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ, প্রবাসী কল্যাণ, মিডিয়া ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা, কৃষি ও কৃষক, শ্রমীক কল্যাণ, নগরায়ন ও আবাসন, নিরাপদ খাদ্য ও ওষুধ, নারী ও শিশু, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। আর সবগুলি জীবন ঘনিষ্ঠ। মানব সম্পদের সাথে বেশ সম্পৃক্ত।
আওয়ামী লীগ বিএনপির এই প্রকল্প নিয়ে ইতিবাচক কোন কথা বলেন নি, শুধু বদনামই গেয়েছেন। এমনকি ফাঁকা প্রতিশ্রুতির ফাঁপানো বেলুন বলে টিজ করেছেন। জাতির সাথে প্রতারণা বলেও আখ্যা দেন। আশার কথা হল সাধারণ মানুষ এটাকে বেশ ভালোভাবেই গ্রহণ করেছেন। অনেকদিন পর বেগম জিয়া মিডিয়ার সামনে বক্তব্য দিয়েছেন। মানুষ তার এই ভিশন শুনবার জন্য বেশ আগ্রহ ছিল। চা স্টলে, টিভির দোকানে, রাস্তার পাশে বিভিন্ন দোকানে বেশ ভিড় ছিল। বিএনপি সঠিক সময়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছে, যদিও অনেকে আরও আগে কেন আসলো না বলে মন্তব্য করেছেন, আশার কথা হচ্ছে বিএনপি তার অবস্থানে এসে সঠিক সময়ে এবং যুগপযোগী একটি প্রকল্প দাঁড় করাতে সামর্থ্য হয়েছে এটাই চরম সার্থকতা। মানুষ তার এই ভিশন কে ভালো চোখেই দেখছেন।
বিএনপিতে আরো বেশ কিছু পরিবর্তন আসছে বলে জানা যাচ্ছে। বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে বেশ চেষ্টা করছে। সংসদ নির্বাচন নিয়ে এগুচ্ছে। বিএনপির এই ভিশন প্রকল্পে সবচেয়ে আশার বাণী আছে তরুণদের জন্য। বেকার তরুণদের ভাতা প্রদান বিষয়টি বেশ আশার সঞ্চার জুগিয়েছে । প্রধানমন্ত্রীর একক ক্ষমতা নিরসন ইস্যুটিও বেশ চমকপ্রদ। নতুন এসব প্রস্তাবে আওয়ামী লীগ বেশ ঈর্ষান্বীত, চিন্তিত বটে। আওয়ামী লীগ এটাকে হাসিনার ২০২১ হতে চুরি বলে মন্তব্য করেছেন। জীবনমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রকল্পটি জাতির জন্য বেশ কল্যাণকর। গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে চেঞ্জ করার পরিকল্পনা জাতিকে উন্নতমানের ভবিষ্যৎ দিতে পারবে, এই ধরণের চিন্তা আগে কেউ দিতে পারেনি। চাকুরীর নিশ্চয়তাও দিয়েছেন বেগম জিয়া, আওয়ামী লীগ এখানে ব্যর্থ হয়েছে চরম ভাবে। চাকুরীর বাজার এখন খুব খারাপ। দেশে বর্তমানে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ।সরকারি চাকুরী এখন সোনার হরিণ নয় তার থেকেও দামী। আওয়ামী লীগ খাদ্যের নিশ্চয়তা দিতে শতভাগ ব্যর্থ। ওয়াদা অনুযায়ী ১০ টাকা সের চাউল দিতে পারেনি।কৃষি ও কৃষকদের কল্যাণময় কিছু দিতে পারেনি। বিএনপিও ক্ষমতায় থাকাকালিন এই ইস্যুটি শেষভাগে চরম ব্যর্থ হয়েছিল। সার নিয়ে ইস্যুটি সুনাম ক্ষুন্ন করেছিল জোট সরকারের। এবারের ভিশনে এই প্রকল্পটি বেশ ভালো মনে হচ্ছে। বিএনপির প্রতিটি প্রকল্প বেশ দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণময় বলে মনে হচ্ছে। বেগম জিয়া তার বক্তব্যে এক পর্যায়ে বলেছেন আমাদের দেশে ব্যবস্থাপক, ব্যবসায়- প্রশাসক, কারিগরি ও অন্যান্য ধরণের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের মানবসম্পদের ঘারতির ফলে বিপুল সংখ্যক বিদেশী আমাদের বিভিন্ন ব্যবসায় ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত হয়েছে এবং হচ্ছে। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠবার জন্য চাহিদা নিরিখে টেকনিক্যাল শিক্ষা ও ভাষা শিক্ষার প্রতি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। দেশের মানুষের মনে দারুন প্রভাব ফেলেছে।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষকদের জীবন যাত্রার মান উন্নত করা করার লক্ষ্যে দ্রব্য মূল্যের সাথে সঙ্গতি রেখে নিয়মিত বেতন ভাতাদি বর্ধন করা হবে। মাদরাসা শিক্ষার আধুনিকায়ন করা হবে। ছেলেদের ও মেয়েদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি কার্যক্রম সপ্রসারণ করা হবে। ছেলে মেয়েদের স্নাতক পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা নিশ্চিত করা হবে। মূলত এই ভিশনে শিক্ষা খাতকে বেশ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। যা বেশ প্রশংসনীয়। সুশাসন ক্ষেত্রেও বেশ জোরালো দেওয়া হয় এই ভিশনে।
বেগম জিয়ার একটি প্রকল্প আইন বিভাগের পরিবর্তন। দেশে দেশে গঠন, কাঠামো,সদস্য সংখ্যা, সদস্য পদের যোগ্যতা, নির্বাচন পদ্ধতি, কার্যকালের মেয়াদ প্রভৃতি বিষয়ে বিভিন্ন দেশের আইন বিভাগের সংগঠনের মধ্যে বিভিন্ন মাত্রা বা পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। চলমান আইনসভারগুলি দু প্রকারের। এক কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা এবং দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা। বিএনপির ভিশন ২০৩০ একটি বিষয় ছিল আইন বিভাগের পরিবর্তন যদিও তা আপাদত রাখছেনা। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে যুক্তি- হঠকারী আইন রোধ, সুচিন্তিত আইন প্রনয়ন, নিয়ন্ত্রণ পরিবর্ধন ও সামঞ্জস্য বিধান, এক কক্ষের স্বেচ্ছাচার রোধ, বিভিন্ন শ্রেণী ও স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব দান, শাসন বিভাগের সুবিধা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থ রক্ষা, জনমতের প্রতিফলন, রাজনৈতিক শিক্ষার প্রসার।
সুবিচার নিয়ে এই ভিশনে বলা হয়েছে- বিগত দেশে আশঙ্কাজনকভাবে বিচারহীনতা যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে তা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে। সে লক্ষে জনপ্রশাসন, বিচার, পুলিশ ও কারাগার এ চার প্রতিষ্ঠানের ব্যপক সংস্কারের মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছ । দক্ষ, আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলা হবে। বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ বাতিল করা হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কার্যকর করা হবে।
আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে ইসি খুব ব্যস্ত, ভোটের জন্য প্রস্তুত থাকতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। তিনটি বিষয়ে চ্যালেঞ্জ দেখছে এই কমিশন। সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশিত করা, সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা, আনন্দ মুখর ভোটের পরিবেশ তৈরি করা। ২০১৯ সালের শুরুতে নির্বাচন হবে, বিএনপি সহ অন্যান্য দল অংশগ্রহণের বেশ নিশ্চয়তা আছে। বিএনপি দল গোছাতে খুব ব্যস্ত। সব দল বেশ ভালো ভাবেই নামছেন আসছে নির্বাচন নিয়ে। সকলের সমান অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি অবাধ নিরেপেক্ষ নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে সাধারণ মানুষ
আমার এই লেখাটি ১৯।০৫।১৭ তারিখে জাতীয় পত্রিকা দৈনিক দিনকালে প্রকাশিত হয়

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মে, ২০১৭ রাত ৯:৪৩

খরতাপ বলেছেন: যে বিএনপির কোন লেজ নাই আগা নাই, তার ভিশন ২০৩০ এই কি আর ৫০ এই বা কি? বিএনপি কি কোন একটা দল? এই দলকে মানুষ লেজ দিয়েও পোছেনা। বিএনপির অবস্থান যে মানুষের কাছে কি, তা স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনের ফলাফল দেখলেই বুঝা যায়। একমাত্র মেয়র সাক্কু এক নামহীন গোত্রহীন মহিলা প্রার্থীর সাথে জিতে আবার শেখ হাসিনার কাছে গেছে পা ছুঁয়ে সালাম করতে, যে কাজ আওয়ামী লিগের কোন নিম্নশ্রেণীর দালালও কোনদিন করেনি।

এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যে ফাঁদই পাতুক না কেন, তাতে বিএনপির পা না দিয়ে কোন উপায় নেই। এসব ভিশন মিশন দিয়ে কোন ফায়দা হবেনা।

২| ১৯ শে মে, ২০১৭ রাত ১০:১৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


বেগম জিয়ার "ভিশন ২০৩০"তে ২৫৬ দফা আছে? আপনার কত বছর লাগবে এগুলো মনে রাখতে? বেগম জিয়া এ জীবনে ২৫৬ দফা মনে রাখতে পারবেন?

শেখ সাহেবের ছিল ৬ দফা, উনি কার্যকরী করতে পারেননি, জিয়ার ছিল ১৯ দফা উনি কার্যকরী করতে পারেননি; ২০১৫ সালে বেগম জিয়ার ছিল ১ দফা, উনি কার্যকরী করতে পারেননি; ২৫৬ দফার কি হবে?

আপনার লেখা সুন্দর হয়েছে, ইংরেজী অনুবাদ করেন, লন্ডন টাইমসে যাবে, ফরাসী করেন প্যারিসের "লা মন্ড" পত্রিকায় উঠবে।

৩| ১৯ শে মে, ২০১৭ রাত ১০:৩০

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: এই ভিশন ২০৩০ নিয়ে আওয়ামী লীগের হৈ চৈ দেখে আমি অবাক। আওয়ামী লীগ বিএনপির ভয়ে খুব বেশী রকমের ভীত হয়ে পড়েছে।

৪| ১৯ শে মে, ২০১৭ রাত ১০:৪৩

Rabbani বলেছেন: ভিশন ২০৩০ বর্তমান প্রজন্মের জন্য খুবই উপযোগী। এবং বাস্তব সম্মত।

৫| ২০ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:১২

শোভ বলেছেন: ...... ২০৩০ সে জংগীবাদ আর যোদ্বারাধীদের বিচার নিয়ে কোন কথা নেই কেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.