নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যুক্তির মাঝেই সমাধান খুঁজি।

উড়ন্ত বাসনা

জীবন কে ভালবাসি।

উড়ন্ত বাসনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঢেউটিন পর্দা বালিশে উন্নয়নঃ ক্যাসিনোতে রাজধানী

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:১৯

একজন যুবলীগ নেতার এতো টাকা ও সম্পদ থাকতে পারে ! ভাবতেই হতবাক হতে হয়। কেমন করে এতো বিত্তশালী বনে যায় ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক নেতারা তা এখন স্পষ্ট। অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। অবৈধ ক্যাসিনো আর চাঁদাবাজি ও টেন্ডার বাগিয়ে এনে ঠিকাদারের কাজ-ই তাদের বিত্ত-বৈভবের মূল উৎস।

দলের এ পরিস্থিতি আর সরকারের গ্রহণযোগ্যতা সঙ্কোচনের কারণেই এই শুদ্ধি অভিযান সরকারের এমন খবরও এসেছে পত্রপত্রিকায়। জানা গেছে এই অভিযানে এমপি’রাও রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর হাতে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তৈরি দলের হাই লেভেলের নেতাদের আমলনামা রয়েছে। জানা গেছে মন্ত্রী পরিষদে রদবদল আসছে সহসাই।

এক কথায় বলতে গেলে সব খবরই ক্ষমতাসীনদের নিয়ে। সব মিলিয়ে সরকার তেমন একটা ভালো নেই, সঙ্কটে দিন যাপন করছে। যদিও এটা অস্পষ্ট তবে দলের হাই কমান্ড সূত্র বিভিন্ন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে।

চলতি মাসে ইস্যুগুলো বিশেষ করে লুটপাট আর দুর্নীতির। হরিলুটের সংবাদ একটির পর একটি ফাঁস হচ্ছে। ছাত্রলীগের দুর্নীতি পদচুত্য হয়েছেন কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। টাকা নিয়ে ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে গণমাধ্যমে। জাবির ভিসি ফেঁসে যাচ্ছেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা আগামী ২১ নভেম্বর পর্যন্ত পদত্যাগের সময়সীমা বেধে দিয়েছেন।

সরকার নিজেদের দুর্নীতি মুক্ত দাবি করলেও তা আর বেধে রাখতে পারছে না। একটির পর আরেকটি কেলেঙ্কারি ফাঁস হচ্ছে। কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসার অবস্থা। ছাত্রলীগের পর এবার যুবলীগের ওপর ক্ষেপেছেন নেত্রী।

গত ১২ সেপ্টেম্বর প্রথম আলো তার পত্রিকায় লিড নিউজ করেছে “ টাকার খোঁজে সরকার”। প্রথম আলোকে সাধুবাদ দিতেই হয়।

আগেই বলেছি ইস্যু একটি নয়। সারসংক্ষেপে বললে- শেয়ার বাজারে আবারো ধস, খাগড়াছড়িতে একটি ঢেউটিনের এক লাখ টাকা! রেলের প্রকল্পে ক্লিনারের বেতন চার লাখ টাকা, চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রকল্পে পানি বিশুদ্ধকরণ প্রশিক্ষণে ৪১ কর্মকর্তা উগান্ডায়, পুকুর কাটা প্রশিক্ষণ নিতে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ গমন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ’র পর্দা ও বই কেলেঙ্কারি, যুবলীগের জুয়ার আসর, খেলার নামে ক্যাসিনো ক্লাব এইগুলি সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা।

খরচ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। ব্যয়ের খাত বড়ই হচ্ছে, আয়ে আছে বড় ঘাটতি। ব্যয়ের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ নেই সরকারের কাছে। বরং টাকার সংকটে আছে সরকার। বিষয়টি দেশের জন্য বেশ উদ্বেগজনক।

এক কথায় সব মিলিয়ে সরকারের ব্যয়ের তালিকা দীর্ঘ। রাজস্ব আয়ের বাইরে সরকারের অর্থের উৎস ঋণ নেওয়া। এই ঋণ এখন অত্যন্ত ব্যয়বহুল। ফলে সরকার অর্থ সংস্থানের নানা উপায় খুঁজছে।

হিসাব মিলাতে না পারায় জায়গায় অজায়গায় হাত দিচ্ছে সরকার, বলতে গেলে আয়ের নতুন ধান্দা খুঁজছে। স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার অলস অর্থ নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন, মহাসড়ক থেকে টোল আদায়, টেলিকম কোম্পানির কাছ থেকে চাপ দিয়ে অর্থ আদায় ফিকিরে ব্যস্ত।

ব্যয় বাড়লেও এর স্বচ্ছতা নিয়েও আছে প্রশ্ন। একটি প্রকল্প সঠিক সময়ে উদ্বোধন হয়নি। ২০১৯ সালে পদ্মা সেতু চালু হবার কথা থাকলেও তার মাত্র কয়েক শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ২০২১ সালে পদ্মা সেতুর কাজ শতভাগ শেষ হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে মহা দুর্নীতি, একতরফাভাবে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি, জবাবদিহির অভাব, জনগণের করের টাকায় সরকারি বিভিন্ন অদক্ষ প্রতিষ্ঠান পরিচালনা হচ্ছে যা ইচ্ছে তাই। করের বোঝা বৃদ্ধি হচ্ছে সাধারণ নাগরিকের ঘাড়ে।

আয়ের তুলনায় ব্যয় যতো বাড়ছে, সরকারও ততো বেশি ঋণের ফাঁদে পড়ছে। সরকার সবচেয়ে বেশি ব্যয় বাড়িয়েছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা। বাজেটের ২৮ শতাংশই খরচ হয় বেতন, ভাতা খাতে।

সংবাদে এসেছে, “স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত, প্রতিষ্ঠানের কাছে এখন প্রায় সোয়া ২ লাখ কোটি টাকা আছে। নজর এখন এখানে। এটা কি আমাদের জন্য চিন্তার ভাঁজ কপালে ফেলবার নয়?

১১টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। এই ১১ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা আছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা। বেশির ভাগ বড় প্রকল্পেই খরচ ও বাস্তবায়নের সময় বেড়েছে। সব মিলিয়ে দেশে এখন তহবিল ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের ঘাটতি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দের ৪-৬ পারসেন্ট চাঁদা দাবি করেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। গত ৮ আগস্ট রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সঙ্গে তার বাসভবনে দেখা করে এই চাঁদা চান দুই নেতা। কার্যকারী কমিটি ডেকে ১৪ তারিখ রাতে পদ থেকে শোভন ও রাব্বানিকে পদচুত্য করা হয়।

অডিও রেকর্ড ফাঁস হয় গণমাধ্যমে। ভাইরাল হওয়া এই রেকর্ডে লেনদেনের বিষয়টির সত্যতা প্রকাশিত হয়। রাব্বানী ও সাদ্দাম হোসেনের কথোপকথনে স্পষ্ট ভিসি তাদের টাকা দিয়েছেন। যুগান্তরে ফারজানা ইসলাম তাদের ব্যবহার ও আচরণ এবং টাকা নিয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন কিন্তু পরে আবার তা অস্বীকার করেন।

উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার পেয়েছে- এমন কোম্পানির কাছ থেকে ভিসিকে টাকার ব্যবস্থা করে দিতে বলেন শোভন ও রাব্বানী। কিন্তু ভিসি তাতে রাজি না হওয়ায় তার সঙ্গে রূঢ় আচরণ করেন বলে জানান ফারজানা ইসলাম।

সাক্ষাৎকারে ভিসি জানিয়েছেন, ‘সেদিন শোভন ও রাব্বানী বলে- এতো বড় প্রকল্প, আপনি আমাদের সহযোগিতা করেন, আমরাও আপনাকে সহযোগিতা করবো। কোম্পানিগুলোকে বলে দেন তারা যেন আমাদের কিছু (পার্সেন্ট) টাকা দেয়।

ফাঁস হওয়ায় সেই অডিওতে দেখা যাচ্ছে জাবি ভিসি ফারজানা টাকা ভাগ করে দিয়েছেন। তিনি এখন বিতর্কের কাঠগড়ায়; তারও পদত্যাগ চাই এর কঠিন তদন্ত চাই এমন দাবি উঠা অযৌক্তিক নয়। এই অপরাধে যদি শোভন-রাব্বানী পদচুত্য হয় সাদ্দামসহ বাকিরা কেন শাস্তি পাবে না? আইনের ঊর্ধ্বে তো কেউ না।

দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে মোটাদাগে বলতে গেলে বলতে হয়- শেয়ারবাজার, ব্যাংক খাত, সরকারি সকল খাতই দুর্নীতির মহোৎসবে ভাসছে। একটি রাজনৈতিক শক্তি, প্রজাতন্ত্রের বেপরোয়া একদল কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে লুটের রাজ্য বানাতে চায় বাংলাদেশ। বিদেশি বিনিয়োগ একেবারেই কমেছে।

জবাবদিহি না থাকায় লাগামহীন অবস্থায় চলে গেছে দুর্নীতি। অভ্যন্তরীণ খাতে ক্রয়, ও প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়ন্ত্রণ নেই।
টিনের দাম কিংবা বালিশ বা পর্দা প্রতিটি দুর্নীতিই যোগসাজশে হয়। তবুও ক্ষমতাসীনরা নিজেদের দোষ স্বীকার না করে এগারো বছর আগের দুর্নীতির গীত গায়!

উন্নয়নের নামে লুটপাট করে পরে চলে ভাগ-বাটোয়ারা। একটি ঢেউটিন লাখ টাকা ধরা হয়েছে! খাগড়াছড়ির আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-৬ (এপিবিএন)-এর ঘর মেরামতের কাজে ঢেউটিনের দাম ধরা হয়েছে ১ লাখ টাকা, টিনের সংখ্যা কিন্তু একটি! পত্রিকায় এসেছে ওই মেরামত কাজে মাত্র দুই বান টিনের দাম দেখানো হয়েছে ১৪ লাখ টাকা।

ক্লিনারের বেতন মাসে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা! অফিস সহায়কের বেতন ৮৪ হাজার টাকা! রেলওয়ের কারিগরি প্রকল্পে এমনই বেতন ধরা হয়েছে। লোকসানের বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানটি।

উগান্ডার মানুষ নিরাপদ পানি থেকে বঞ্চিত। উন্নত পয়োনিষ্কাশন সুবিধারও অভাব সেখানে। অথচ চট্টগ্রাম ওয়াসা তাদের ২৭ জন কর্মকর্তা কর্মচারীকে ‘প্রশিক্ষণের’ জন্য পূর্ব-মধ্য আফ্রিকার এই দরিদ্র দেশে পাঠিয়েছে। তাদের সঙ্গে দেশটি ভ্রমণে গেছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরের আরও ১৪ জন কর্মকর্তা।

বালিশ, পর্দাসহ অস্বাভাবিক দামে কেনাকাটার আরও কয়েকটি ঘটনা আগেও প্রকাশ্যে এসেছে। কোনো শাস্তির কথা তো শুনছি না। ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন সড়ক নির্মাণ হলো বছর দুই। এখনই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন মেরামতের জন্য নতুন বাজেট দেওয়া হচ্ছে। সরকার কি তদন্ত করে দেখেছে ব্যয়বহুল রাস্তাটি এত তাড়াতাড়ি নষ্ট হলো কেন?

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:২৮

সাইন বোর্ড বলেছেন: এটা এখন হরিলুটের দেশ, যে যেভাবে পারছে লুট করছে...

২| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: রাজনীতিবিদ এবং তাদের ছত্রছায়ায় থাকা লোকজনের টাকার অভাব নেই।
নব্য ধনীদের ব্যাপারে তো কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হলো না।

৩| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৪৩

মা.হাসান বলেছেন: জয় বাংলা। উন্নয়নের খবরে কিছু লোকের চোখ টাটায়। দেশ যোগ্য নেতৃত্বে ঠিক পথেই এগুচ্ছে। গুজবে কান দেবেন না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.