![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রামগরুড়ের ছানা হাসতে তাদের মানা, হাসির কথা শুনলে বলে, "হাসব না-না, না-না"। সদাই মরে ত্রাসে- ঐ বুঝি কেউ হাসে! এক চোখে তাই মিটমিটিয়ে তাকায় আশে পাশে। ---------সুকুমার রায়
আর্নেষ্ট দুশেষনে (Ernest Duchesne) প্রথম ছত্রাক পেনিসিলিয়ামের (Penicillium glaucum) অ্যান্টিবায়েটিক প্রোপার্টি আবিষ্কার করেন ১৮৯৬ সালে তার ডক্টরেট থিসিস করার সময়। মাত্র ২৩ বছর বয়সী অচেনা দুশেষনে থিসিসটি প্রাপ্তি স্বীকারও করেনি পাস্তুর ইন্সস্টিটিউট। আর্মি মেডিকেল সার্ভিসের চাকরী তাকে এ বিষয়ে গবেষনা করার আর কোন সুযোগ দেয়নি। মাত্র ৩৭ বছর বয়সে যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
১৯২৮ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর অনেকটা আকস্মিক ভাবেই পেনিসিলিয়াম ছত্রাকের অ্যান্টিবায়োটিক প্রোপার্টি পুন: আবিষ্কার করেন স্কটিশ বিজ্ঞানী আলেক্সান্ডার ফ্লেমিং। তিনিই প্রথম পেনিসিলিয়ামের জীবানু ধ্বংসকারী উপাদানটি আলাদা করতে সক্ষম হন। ১৯২৯ সালের ৭ মার্চ তিনি এর নাম দেন Penicillin ; এর মাধ্যমেই শুরু হয় অ্যান্টিবায়োটিকের যুগ। ১৯৪৫ সালে তিনি এই আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরষ্কার পান।
অক্সফোর্ডে কর্মরত অষ্ট্রেলিয়ান ফার্মাকোলজিষ্ট এবং প্যাথলজিষ্ট হাওয়ার্ড ফ্লোরে ১৯৩৮ সালে ফ্লেমিং এর আবিষ্কৃত পেনিসিলিনকে নিয়ে বড় পরিসরে গবেষনা এবং চিকিৎসায় ব্যবহ্যার করার মত পরিমানে তৈরী করার প্রচেষ্টা শুরু করেন। ১৯৪১ সালে পরীক্ষা মুলক ভাবে প্রথম মানুষের উপর প্রয়োগ করা হয় পেনিসিলিন।অক্সফোর্ড এ তার সহযোগী জার্মান ব্রিটিশ আর্ণস্ট বরিস চেইন প্রথম এর রাসায়নিক গঠনের ব্যাখ্যা দেন, যা এক্সরে ক্রিষ্টালোগ্রাফির মাধ্যমে প্রমান করে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ডরোথি হজকিন্স। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কারনে যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা বড় ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমান পেনিসিলিন তৈরীতে ব্যর্থ হন। ১৯৪১ সালে সহযোগী নর্মান হিটলীকে নিয়ে ফ্লোরে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনোয়া অঙ্গরাজ্যে পিওরিয়া ল্যাবে আসেন, যেখানে বিজ্ঞানীরা শিল্প পর্যায়ে ছত্রাকের উৎপাদনের গবেষনা করছিলেন। এখানেই পিওরিয়া মার্কেট থেকে সংগ্রহ করা ছত্রাক পড়া ক্যান্টালুপের পেনিসিলিয়াম নোটাটাম চাষ করেই প্রথমবারের মত অধিক পরিমান পেনিসিলিন তৈরী করা সম্ভব হয়। ১৯৪১ সালের নভেম্বরে ল্যাবের অ্যান্ড্রু ময়ের এবং নর্মান হিটলী পেনিসিলিনের পরিমান ১০ গুন পরিমান বাড়াতে সক্ষম হন। ১৯৪৩ সালের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে প্রমানিত হয় পেনিসিলিনের কার্যকারীতা, যুদ্ধে আক্রান্ত অ্যালাইড সৈন্যদের চিকিৎসায় ব্যবহারে জন্য ব্যাপক পরিমানে পেনিসিলিন উৎপাদন শুরু হয়। ১৯৪৫ সালে ফ্লোরে এবং চেইন, ফ্লেমিং এর সাথে নোবেল পুরষ্কার পান। ১৯৪৮ সালে অ্যান্ড্রু ময়ের পেনিসিলিনের মাস প্রোডাকশনের পেটেন্ট পান।
স্যার হেনরী হ্যারিস বলেছিলেন: Without Fleming, no Chain or Florey; without Florey, no Heatley; without Heatley, no penicillin. হিটলী তার কাজের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন ১৯৯০ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্মানসুচক ডক্টরেট অব মেডিসিন প্রদানের মাধ্যমে। অক্সফোর্ডের ৮০০ বছরে ইতিহাসের প্রথম বারের মত চিকিৎসক না এমন কাউকে এই সন্মান দেয়া হয়। হিটলী কিছু আবিষ্কার ছাড়া পেনিসিলিন কে বিশুদ্ধ করা অসম্ভব হতো। এমনকি তার সরাসরি অবদান থাকা সত্ত্বেও অ্যান্ড্রৃ ময়ের, হিটলীর নাম তাদের গবেষনা পত্রে উল্লেখ করেননি।
©somewhere in net ltd.