নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম

ডঃ ফচটাচ

হে খোদা তুমি আমাকে শক্তি দাও যেন ইসলামের আলোয় সবাইকে জয় করতে পারি।

ডঃ ফচটাচ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তির রাত পবিত্র শবে বরাত

২৭ শে আগস্ট, ২০০৭ সকাল ৭:২৪

দিন-রাত-মাস-বছর সবই আল্লাহর। তারপরও কিছু কিছু দিন ও রাতের মর্যাদার মধ্যে তারতম্য আছে। সে সকল দিন বা রাত অশেষ মহিমান্বিত, সওয়াব ও বরকতের অমিয় ধারায় প্লাবিত। শবে বরাত এমনি এক মহিমান্বিত ও বরকত, সওয়াবপূর্ণ রজনী। এ সময় ইবাদত-বন্দেগীর সওয়াব অনেক বেশি। শব ফারসি শব্দ-এর অর্থ রজনী বা রাত। আর বরাত শব্দের অর্থ ভাগ্য বা সৌভাগ্য, শব্দটির অন্য অর্থও আছে। শবে বরাতকে আরবীতে বলে লাইলাতুল বারায়াত। লাইলা অর্থ রাত বা রজনী, আর বারায়াত অর্থ মুক্তি, নিষ্কৃতি অর্থ লাইলাতুল বারায়াত মানে মুক্তি রজনী বা নিষ্কৃতি রজনী। শবে বরাত আল্লাহর ইবাদত বা উপাসনার রাত। পরম করুণাময়ের দরবারে নিজের সারা জীবনের দোষ-ত্রুটি, পাপ কাজ ও অন্যায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার রাত। এ রাতে পবিত্র মনে, একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করলে আল্লাহর কাছে নিজের পাপ-গোনাহ ও অন্যায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি তা কবুল করেন এবং অনুতপ্ত বান্দাহকে গোনাহ থেকে মুক্তি দিয়ে তাকে মাফ করে দেন। এ কারণেই এ রাত মুক্তি রজনী বা নিষ্কৃতি রজনী তবে আমাদের দেশে বারায়াত শব্দটি বরাত অর্থাৎ ভাগ্য রজনী বা সৌভাগ্য অর্থেই বেশি প্রচলিত। এ কারণে এ দেশে শবে বরাত সাধারণ অর্থে ভাগ্য রজনী বা সৌভাগ্য রজনী হিসেবেই বেশি পরিচিত। আরবি শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত অর্থাৎ ১৫ শাবান পবিত্র শবে বরাত বা সৌভাগ্য রজনী। রাসূল (সাঃ) বলেছেন- যখন শাবান চাঁদের ১৫-এর রাত আসবে তখন তোমরা জাগ্রত থেকে আল্লাহর ইবাদত করবে। আর পরদিন রোজা রাখবে । কেননা আল্লাহ এ রাতে সূর্যাস্তের পরই সর্বনিম্ন আসমানে নেমে আসেন এবং তার বান্দাদের ডেকে বলেন, ওহে আছো কোন ক্ষমা প্রার্থী? আমি তোমাকে ক্ষমা করব। আছো কোন রিজিক প্রার্থী? আমি তোমাকে রিজিক দেব। আছো কোন বিপদগ্রস্ত? আমি তোমাকে বিপদমুক্ত করব। আছো কোন তওবাকারী? আমি তোমার তওবা কবুল করব। এভাবে সুবহে সাদেক পর্যন্ত আল্লাহ আহবান করতে থাকেন (ইবনে মাজাহ)। অন্য এক হাদীসে রাসূল (সাঃ) বলেন- শবে বরাতে আল্লাহ স্বীয় রহমতের তিনশত দ্বার খুলে দিয়ে প্রথম আসমানে আসেন এবং সূর্যাস্ত হতে সূর্যোদয় পর্যন্ত তাঁর বান্দাহদেরকে এ বলে আহবান করতে থাকেন, হে আমার বান্দাহগণ আজ তোমরা কে কি চাও? কে রোগ মুক্তি চাও? কে মনোবাসনা পূর্ণ করতে চাও? কে সারা জীবনের গুনাহর ক্ষমা চাও? কে অফুরন্ত সুখের জান্নাত চাও? আজ যে-যা চাও তা পাবে। পবিত্র শবে বরাতের ফজিলত ও মাহাত্ম বর্ণনায় আরো অনেক হাদীস আছে যা স্বল্প পরিসরে আলোচনা করা সম্ভব হলো না। শবে-বরাতের রাতে আল্লাহর বিশেষ রহমত অনিঃশেষ ধারায় বর্ষিত হতে থাকে তার বান্দাহদের ওপর। এ রাতে মানুষের ভালোমন্দ কাজ-কর্ম হিসাব-নিকাশ আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়। সারা বছরের যাবতীয় ফয়সালা হায়াত, মওত, রিজিক, দৌলত, আমল ইত্যাদির সহিত সম্পর্কযুক্ত আদেশ-নিষেধসমূহ উক্ত রাত্রিতে লওহে মাহফুজ হতে উদ্ধৃত করে কার্যনির্বাহক ফেরেশতাদের নিকট সোপর্দ করা হয়। প্রিয় নবী (সাঃ)-এর নির্দেশনাযায়ী এ পবিত্র রাতে সাধারণত ইবাদত-বন্দেগীর মাঝে নিমগ্ন থাকাই প্রতিটি মুসলমানের প্রধানতম কাজ।



অন্তরকে কলুষমুক্ত করে ভক্তি ও আশা-ইয়াকিনসহকারে নফল নামাজ, তিলাওয়াত-ই-কুরআন, দরূদপাঠ, দান-খয়রাত, দু’আ-মুনাজাত প্রভৃতি ইবাদতে নিজেকে মশগুল রাখতে হবে। শবে বরাতের নামাজের নির্ধারিত কোন নিয়ম নেই। দু’রাকাত হতে ২০ রাকাত পর্যন্ত নফল নিয়তে নামাজ পড়তে হয়। এ পবিত্র রাতের ইবাদত-বন্দেগীর মর্যাদা সম্পর্কে পরিবারের সদস্যগণকেও উৎসাহ ও গুরুত্ব অনুধাবন করাতে হবে। শেষ রাতের দিকে পরিবারের সবাইকে আল্লাহর রহমত ও বরকতের অংশীদার হওয়ার জন্য জাগায়ে ইবাদত ও দু’আ-মুনাজাতে মশগুল করায়ে দিতে হবে যেন ছোট-বড় সকলেই রহমতের অংশ নিয়ে সৌভাগ্যবান হতে পারে। করণীয় আমলের সাথে কতগুলো বর্জনীয় বিষয়ও জড়িত থাকে। সে বিষয় বর্জন না করলে শবে বরাতের বরকত হতে মাহরূম হতে হয়। সফলতার পরিবর্তে ব্যর্থতা, রহমতের পরিবর্তে গযব, সওয়াবের পরিবর্তে আযাবই নসীব হয়। তাই এ রাতে অপব্যয় ও অপচয় না করে অযথা আতশবাজীতে অনর্থক অর্থ অপচয় না করে সে অর্থ কল্যাণকর কাজে বা ফকির-মিসকিনের মাঝে দান করে দেয়া অনেক সওয়াব ও বরকতের কাজ। প্রকৃতপক্ষে শবে বরাতের বৈশিষ্ট্য অনুষ্ঠানের আড়ম্বরতার মধ্যে নয়, বরং চরিত্রবলের সাধনার মাধ্যমে করুণাময়ের করুণা লাভের প্রয়াসই এর তাৎপর্য। সর্বস্ব সম্পূর্ণ করে নিঃশেষে আত্মনিবেদনের মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে ডাকাই এ পবিত্র রাতের প্রধান কাজ।



শবে বরাত মূলতঃ আল্লাহর ইবাদতের রাত, তাঁর রহমত ও পরম সৌভাগ্য তাঁর নিকট থেকে চেয়ে নেয়ার রাত। তাই এ রাতে এক মনে আল্লাহর ইবাদত করাই আমাদের একমাত্র কর্তব্য। কেননা এ রাতে নিজের গোনাহ বা পাপের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া হলে তিনি তা কবুল করেন। এ পবিত্র রাতে তাঁর রহমত অজস্রধারায় তাঁর বান্দাহদের ওপর বর্ষিত হতে থাকে। আসুন এ রাতে আমরা মুনাজাত করি, হে আল্লাহ আমাদের বরাত খুলে দাও এ পবিত্র রাতে, আমরা তোমার সাহায্য প্রার্থনা করছি, তুমি আমাদের সকল গুনাই মাফ করে দাও।



মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-৪

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে আগস্ট, ২০০৭ সকাল ৮:৩৩

নাজিল আযামী বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ ! খুব সুন্দর লিখেছেন । একটি প্রশ্ন মনে জাগল - আপনি কি মুসলিম ? তাহলে ছদ্দ নামটি এমন কেন ? আল্লাহপাক আপনাকে হেদায়েত করুন, আমাদের জ্ঞান বৃদ্ধি করে দিন ।

২| ২৭ শে আগস্ট, ২০০৭ সকাল ৮:৫২

বইপাগল বলেছেন: ডঃ ফচটাচ, আপনি যে শবে বরাত নিয়ে লিখেছেন ইসলামে আসলে সে ধরণের রাতের কোনো অস্তিত্ব নেই, এটা কোরআন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা সাহাবীদের থেকে প্রমাণিত নয়। এটা ইসলামে একটি নবপ্রথা বা বেদায়াত। ১

৩| ২৭ শে আগস্ট, ২০০৭ সকাল ৯:২০

আজাইরা বলেছেন: সহমত@বইপাগল
ইসলামে ই রাতের কোন অস্তিত্ব নেই । ।সিলামে জাল অথবা দুর্বল হাদীসের উপর ভিত্তি করে কোন ইবাদত করা যায় না । সবদিক থেকে প্রমাণ সাপেক্ষে এবং শক্ত ভিত্তির মাধ্যমেই ইসলামে সবকিছু প্রতিস্ঠিত, যা তথাকথিত শব ই বরাতে নেই । এ নিয়ে পরে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা আছে ।

৪| ২৭ শে আগস্ট, ২০০৭ সকাল ৯:৫০

ইলা বলেছেন: মাশাল্লাহ্ খুব ভাল কথা। তবে আমার ও প্রশ্ন সব -ই-বরাত নিয়ে। আমাদের মত ইসলাম সম্পর্কে যাদের জ্ঞান সীমিত তারা কী করবে? এই দ্বিধা দ্বন্দ থেকে মুক্তি পেতে চাই, মুক্তি পেতে চাই সেই মহান বিচার দিবসে ।

৫| ২৭ শে আগস্ট, ২০০৭ সকাল ১০:০০

দ্বীপবালক বলেছেন: [link|http://aburazin.wetpaint.com/page/

৬| ২৭ শে আগস্ট, ২০০৭ সকাল ১০:০০

দ্বীপবালক বলেছেন: উপরের লিংকটা ঘুরে আসুন।

৭| ২৭ শে আগস্ট, ২০০৭ সকাল ১০:৪৮

ফজলে এলাহি বলেছেন: ডঃ ফচটাট-
শবে বরাত নিয়ে লেখার প্রয়োজন বোধ করছি না, কেননা, ইতিমধ্যে দলীল সমৃদ্ধ ও অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ লেখা এসে গেছে। নীচের তিনটি লিংকগুলো দেখুন-
১) শবে বরাত - ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া (১ম কিস্তি)
২) শবে বরাত - ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া (২য় কিস্তি)
৩) শবে বরাত - ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া (৩য় ও শেষ কিস্তি)
................................
আপনার উল্লেখিত দলীলগুলোর প্রসঙ্গে আলোচিত অংশ এখানে তুলে দিলাম:
"আলী ইবনে আবী তালিব (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ "যখন শা'বানের মধ্য রাত্রি আসবে তখন তোমরা সে রাতের কিয়াম তথা রাতভর নামায পড়বে, আর সে দিনের রোযা রাখবে; কেননা সে দিন সুর্য ডোবার সাথে সাথে আল্লাহ তা'আলা দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন: ক্ষমা চাওয়ার কেউ কি আছে যাকে আমি ক্ষমা করে দেব। রিযিক চাওয়ার কেউ কি আছে যাকে আমি রিযিক দেব। সমস্যাগ্রস্থ কেউ কি আছে যে আমার কাছে বিমুক্তি চাইবে আর আমি তাকে উদ্ধার করব। এমন এমন কেউ কি আছে? এমন এমন কেউ কি আছে? ফজর পর্যন্ত তিনি এ ভাবে বলতে থাকেন"।
হাদীসটি ইমাম ইবনে মাজাহ তার সুনানে (১/৪৪৪, হাদীস নং ১৩৮৮) বর্ণনা করেছেন। আল্লামা বূছীরি (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) তার যাওয়ায়েদে ইবনে মাজাহ (২/১০) গ্রন্থে বলেনঃ হাদীসটির বর্ণনাকারীদের মধ্যে ইবনে আবি সুবরাহ হাদীস বানাতো। তাই হাদীসটি বানোয়াট।"
এ হাদীসটির সনদ সম্পর্কে আরো দেখতে পারেন নীচের লিংকে:
হাদীস শাস্ত্রের বিগত শতাব্দীর সবচেয়ে শক্তিশালী আলেম মরহুম নাসের আদ্-দ্বীন আল-বানী রাহিমাহুল্লাহর গবেষণায় হাদীসটি মওদুউ বা জাল হাদীস হিসেবে বিবেচিত হয়েছে

এ রাত সম্পর্কিত আরো হাদীসের তাখরীজ রয়েছে যেমন-
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু 'আনহা বর্ণিত হাদীস যা দ্বয়ীফ বা দুর্বল হাদীস
এটি এবং - এটিও দেখতে পারেন
======
আপনার ভুল ধরা আমার উদ্দেশ্য নয়; বরং আল্লাহ্ তা'আলার পক্ষ হতে আনীত দ্বীন ইসলাম যা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক পরিপূর্ণ রূপে আমাদের নিকট বর্তমান তার সঠিক অনুসরণের লক্ষ্যেই এই মন্তব্য।
দো'আ এই যে, আল্লাহ্ আমাদের সকলকে তাঁর দ্বীনকে সহীহ্ বা বিশুদ্ধভাবে মেনে চলার তৌফিক দান করুন। আমীন।

৮| ২৭ শে আগস্ট, ২০০৭ দুপুর ১:০৩

আন্ধার রাত বলেছেন: শব ই বরাতের পবিত্র রাতে অন্তরের গভীরতম স্হান থেকে আমার জন্য দোয়া করার আকুতি জানাচ্ছি।
আমি শারীরিক ও মানসিক দুদিকেই বিধ্বস্ত এবং বিপর্যের মুখে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.