নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাকিস্তানী দালাল, শিবির, জামাতী, ভারতীয় দালালদের ঘৃনা করি । ছাত্রলীগকে ও পছন্দ করি না তাদের বর্তমান কর্মকান্ডের জন্য ।

। নিজের লেখার প্রতিভা নাই, সময় ও নাই, তাই কপি /পেস্ট মারি । ভুলেও মাইন্ড করবেন না । আমাকে শরম দিবেন না

ছাত্তির ইন্জিনিয়ার

আমার উপর থেকে ব্যান না তুললে আমি কাইন্দা দিমু ।।।

ছাত্তির ইন্জিনিয়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

পেয়িং গেস্ট

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৫৭

আমি তাদের পেয়িং গেস্ট। নিতান্ত দরিদ্র ছাড়া কেউ পেয়িং গেস্ট পোষে না। তাদের অবস্থাও এক। কর্তা রিকশা চালিয়ে পাচটি কন্যাসহ সংসারটিতে ভরণ-পোষণ করতে নিত্য গলদঘর্ম হয়ে বাড়ি ফেরেন বলেই স্ত্রী পেয়িং গেস্ট পোষেন। নিজেদের কোনো ছেলে নেই বলে পেয়িং গেস্ট হিসেবে আসা ছেলেগুলোকে তারা নিজের ছেলের মতোই আদর-সমাদর করেন। আমিও তার ব্যতিক্রম নই।



তাদের বড় মেয়ে বিবাহিতা। তবে কাপুরুষ স্বামীটি তাকে ছেড়ে চলে গেছে।



মেজ মেয়ে স্বামী-সংসার নিয়ে ভালোই আছে। তবে তার রিকশাচালক স্বামী মাঝে মধ্যে বিভিন্ন বাহানায় শ্বশুরালয়ে তুলে রাখে স্ত্রীকে।



সেজ মেয়েটি ইন্টারমিডিয়েটে পড়ছে। চমৎকার রূপ-যৌবন তার। প্রথম দর্শনেই তরুণদের বুকে ঝড় তোলার মতো অবয়বধারী এ মেয়েটি মাঝে মধ্যে আমার রুমের দিকে উকি মেরে কি যেন দেখে।



আমি টের পাই।



চতুর্থ মেয়েটি ক্লাস সিক্স আর পঞ্চমটি ক্লাস ফাইভের ছাত্রী।



তারা আমাকে ভাইয়া ডাকে।



আমি তাদের হোমওয়ার্ক করাই। অফিস থেকে ফেরার সময় মাঝে মধ্যে তাদের জন্য দুই-চার টাকার কিছু কিনে নিয়ে আসতাম।



এসব হাতে পেয়ে তাদের খুশির অতিশয্যে আমি অনেক সময় অভিভূত হয়ে পড়ি।



একদিন বেতন পেয়ে ফেরার সময় পুরো পরিবারের জন্য বিশ টাকার ঝালমুড়ি এনে দিলাম ক্লাস ফাইভে পড়-য়া পঞ্চম মেয়ের হাতে।



সে নিজেদের ঘরের দিকে চলে যাওয়ার পর আমি আমার রুমে প্যান্টি-শার্ট ছাড়ছি। হঠাৎ কারো হাটার শব্দে পাশ ফিরে তাকিয়ে আমি অবাক হলাম।



কলেজ পড়-য়া মেয়েটি এক প্লেট ঝাল-মুড়ি নিয়ে আমার রুমে দাড়িয়ে।



এই প্রথম আমার ঘরে তার আগমন।



এসব কার জন্য? প্রশ্ন করি আমি।



আপনার জন্য।



এগুলো তো শুধুই আপনাদের জন্য।



আপনি কি আমাদের পরিবারের কেউ নন?



অবশ্যই। কিন্তু আমি তো বাজারে খেয়ে এসেছি।



সেটা তো আমরা দেখিনি।



এখন আমি খেতে পারবো না। প্লিজ! এসব নিয়ে আপনি এখন যান। আমি ফ্রেশ হবো।



আপনি ফ্রেশ হোন বা যাই হোন, আপনাকে না খাইয়ে আমি বের হচ্ছি না।



ব্যাপারটা আমার কাছে কিঞ্চিৎ বাড়াবাড়ি লাগলো। তাকে রুমে রেখে কৌশলে আমি বেরিয়ে যাওয়ার চিন্তা করছিলাম।



ব্যাপারটা কিভাবে যেন বুঝে গেল সে। ত্বরিত দরোজাটা বন্ধ করে পিঠ দিয়ে চেপে রাখে।



এখন দরজা খুলতে যাওয়ার অর্থ হলো তার শরীরের সঙ্গে আমার শরীরের ধস্তাধস্তি, দলাই-মলাই, কতো কি!



আমি সুবোধ বালক হলাম। বললাম, দিন, খাচ্ছি।



কিন্তু প্রথম চামচ সেই খাইয়ে দেবে আমাকে।



বাধা দিলাম না।



আমাকে খাইয়ে দরজা খুলে বের হচ্ছিল সে। কিন্তু এ কি! এলাকার বখাটে এবং প্রতাপশালী মাস্তানটি সামনে দাড়িয়ে। রক্ত চোখ করে আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিল সে।



আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ়।



দাত কিড়মিড় করে আচমকা গর্জে ওঠে তার খসখসে কণ্ঠ।



দুজনে এতোক্ষণ ভেতরে কি করেছ?



আমরা স্বামী-স্ত্রী মিলে যা ইচ্ছা তাই করেছি। সেটার কৈফিয়ত আপনাকে দিতে হবে নাকি! কলেজ পড়-য়া মেয়েটি ঝামটা দিল।



সেই মুহূর্তে যুৎসই উত্তর বোধ করি আর ছিল না।



আমার অনিশ্চিত পরিণতির আশংকা কেটে যায় তার উপসি'ত বুদ্ধির কারণে।



ঘর থেকে বের হলাম। আমার সেই মুহূর্তের স্ত্রীর উদ্দেশে বলি, মাথা খারাপ হয়েছে তোমার? ভাইজানের ওপর খেপছ কেন? এলাকার বড় ভাই হিসেবে তোমার-আমার বিয়ের খবরটা তাকে জানানো উচিত ছিল। জানাওনি বলেই আজ আদর্শ বড় ভাইয়ের মতো তিনি তোমার ভালো-মন্দ বিচার করে দুজনকে সন্দেহ করছেন।



এবার তার উদ্দেশে বলি, ভাইজান, সে ছেলেমানুষ, ক্ষমা করে দেবেন তাকে।



আমার কথায় বিগলিত হয়ে যায় সে। আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে সে বললো, সরি, না জেনে আপনাকে সন্দেহ করলাম। ভালো থাকুন দুজন সব সময়।







পেশাগত কারণে এর কিছুদিন পর অন্যত্র চলে যেতে হয় আমাকে। পেয়িং গেস্ট হিসেবে আমার কাছে তাদের পাওনা পরিশোধ না করেই চলে যাওয়ার সময় তাদের মহত্ত্ব দেখলাম আরেকবার।



মমতাময়ী মা বললেন, তুমি অনেক বড় হও, টাকার চিন্তা করো না। আমাদের ছেলে নও তুমি। অথচ আমি ঠিকই জানি, রিকশা না চালালে আজ রাতের খাবারও জুটবে না কারো মুখে।



তবু পাষাণের মতো বেরিয়ে যাই আমি।



তারপর নতুন কর্মস'লের প্রথম বেতন পেয়েই ছুটে যাই।



আমাকে পেয়ে আনন্দে কেদে ফেলে সবাই। ছোট দুজন এক সঙ্গে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে থাকে আমার গাল, কপাল, মাথায়। বলতে থাকে, ভাইয়া, আর আপনাকে যেতে দেবো না। আপনি চলে গেলে আমাদের কান্না পায়!



এ পরিবারটিতে অনেক কিছু নেই। প্রতিটি ভাতের জন্য সবার মাথার ঘাম পায়ে পড়ে। তবে সুখের কলকাকলি আছে। নেই শুধু একটা ছেলে, একটা ভাই।



আমি মনসি'র করি, সময় পেলেই ছুটে আসবো এই মমতাময়ী মায়ের কোলে। এই পাগল বোনগুলোর কাছে।



তাদের মায়া-মমতা আমাকে এতোটা গ্রাস করে ফিরে যাওয়াই দুঃসাধ্য হয়ে দাড়ায়। তবু পাষণ্ডের মতো বের হতে হয় বিকেল পার করে সন্ধ্যা সাতটায়।



শীতকালের এ সময়টাতে গন্তব্যের উদ্দেশে ঘর থেকে বের হই। বাড়ির গেইট পার হই। রাস্তায় এসে জ্যোস্নাময় পরিবেশে আরেকবার পেছনে তাকাই। এ কি!



সেজ মেয়েটিও চলে এসেছে আমার পেছন পেছন।



বললাম, আপনি? আপনি এতোটুকু চলে এলেন যে!



এতোক্ষণ পর্যন্ত বোধ করি কান্নাটাকে চেপে রেখেছিল সে। এবার সশব্দে কাদতে কাদতে জড়িয়ে ধরলো আমাকে। তার চোখের পানি আমার বুক ভিজে যাচ্ছিল।



বললাম, এতো ইমোশনাল হচ্ছেন কেন? রাস্তায় মানুষ চলাচল করছে। তারা দেখলে কি ভাববে?



আমার বুক থেকে মুখ না তুলেই সে বললো, কেন ইমোশনাল হচ্ছি, তুমি কিছু বোঝো না? রাস্তায় মানুষে দেখলে কি হবে? সবাই জানে তোমার-আমার বিয়ে হয়ে গেছে। তোমাকে আমি যেতে দেবো না। যদি যাবেই তাহলে আমাকে নিয়ে যাও।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:২৮

ডরোথী সুমী বলেছেন: একটু অদ্ভুত ধরনের গল্প, তবে অবাস্তব নয়! ভাল লেগেছে।

২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৫

অপ্রচলিত বলেছেন: বাহ বাহ, বেশ লিখেছেন তো। গল্পে মুগ্ধপাঠ আর আপনার জন্য একগুচ্ছ প্লাস। +++++++++++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.