নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফজলে রাব্বি জেমস

ফজলে রাব্বি জেমস › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভর্তিযুদ্ধ :সন্তানের সামর্থ্যের সীমাও বুঝতে হবে

২১ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:১৭

“আমার জীবনের আর ১২ দিন বাকি আছে, সরি আম্মু-আব্বু।” এই লাইনটি আমার ফেসবুক নিউজফিড থেকে নেওয়া। যে ছেলেটি কথাগুলো লিখেছে সে এবারের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছু একজন শিক্ষার্থী। আশানুরূপ প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ হচ্ছে না, শেষ পরীক্ষাটাও সন্নিকটে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই তার এমন বক্তব্য। দেশের অনেকগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েরই ভর্তি পরীক্ষা শেষ। বাকিগুলোও শেষের পথে। এমন সময় একজন শিক্ষার্থীর এমন মন্তব্যের বিপরীতে আমাদের অবস্থান কেমন হবে? বিষয়টাকে খুব সহজেই আমরা এড়িয়ে যেতে পারি ক্ষণস্থায়ী আবেগের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে। তবে বিষয়টা কিন্তু এত হালকা নয়। কোনো একটা দুর্ঘটনা ঘটার পরেই সেটা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়। তার আগে সেগুলো আমরা আমলে নেই না। কিন্তু ক্ষতি যা হবার ততক্ষণে হয়ে যায়। আমরা জানি শুধু প্রত্যাশা করতে। কিন্তু সেই প্রত্যাশার বিপরীতে তার সামর্থ্যের সীমাটাও তো বুঝতে হবে।

আমরা অভিভাবকরা সবসময়ই চাই আমার সন্তানটি বা আমার ভাইটি বা বোনটি সবার থেকে সেরা হবে। হ্যাঁ, প্রত্যাশা আমাদের সবারই থাকবে, আর বড় আশাই মানুষকে বড় হওয়ার রাস্তা তৈরি করে দেয়। কিন্তু এটাও তো আমাদের বুঝতে হবে যে প্রতিযোগিতায় সবাই প্রথম হয় না। এখন এই ভর্তিযুদ্ধে আমার পরিবারের কেউ যদি তার আশানুরূপ জায়গায় চান্স না পায় তবে তাকে আমরা কীভাবে গ্রহণ করব সেটাই মূল বিষয়। আর এই সময়টাতে শিক্ষার্থীর তার কাছের মানুষদের কাছ থেকে মানসিক সাপোর্ট সব থেকে বেশি দরকার। আমরা করি তার উলটোটা। হয়তো সরাসরি তাকে কিছু বলি না কিন্তু আমাদের আচরণে যে পরিবর্তন আসে সেটা সরাসরি বলার থেকেও বেশি ক্ষতিকর। যেই বাবা তাঁর হোস্টেলে থাকা ছেলেকে ক’দিন আগেও দিনে দুইবার করে ফোন করতেন, তাঁকে দেখা যায় হয়তো ছেলের খোঁজখবরই নেওয়া বাদ দিয়ে দিয়েছেন। কেউ বা মেয়ের জন্য ভালো পাত্রের সন্ধান শুরু করে দিয়েছেন। সবাই এমনটি করে না। কিন্তু কেউ করে না এই কথাটিও কিন্তু সত্য নয়। আর অভিভাবকদের এই মানসিকতাই মারাত্মক বিপদের কারণ হতে পারে শিক্ষার্থীর জীবনে। একদিকে চোখের সামনে দেখতে হচ্ছে নিজের স্বপ্নের মৃত্যু আর তখন সেই চাপ আরো কয়েকগুণ বেড়ে যায় প্রিয়জনদের প্রত্যাশার ব্যাপারটা যখন সামনে আসে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের তাদের সন্তানকে বোঝাতে হবে সেই সময়ে তার জন্য কী কী ভালো সুযোগ অপেক্ষা করছে। কোনো পেশাকেই ছোট করে না দেখে অবশিষ্ট জায়গাগুলোতে কোন বিষয়ে ক্যারিয়ার গঠন করলে কী কী সুযোগ তার জন্য ভবিষ্যতে অপেক্ষা করছে সেটা বোঝাতে হবে। আমাদের দেশে যে পরিমাণ শিক্ষার্থী এবছর এইচএসসি পাস করেছে তার তুলনায় দেশের সব সরকারি-বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে স্নাতক পর্যায়ে পড়ার জন্য যে পরিমাণ আসন রয়েছে তা বেশিই, কম নয়। এই বিষয়টাই শিক্ষার্থীকে বোঝাতে হবে, সাফল্য আর কিছু নয়, যে আমি যেখানেই পড়ি না কেন আমি যদি আমার সর্বোচ্চটা সেখানে দিতে পারি সেটাই সাফল্য



লেখাটি আরও প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০১৪, “দৈনিক ইত্তেফাক” পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতায় (পৃষ্ঠা-৮) । সেখান থেকে পড়তে ক্লিক করুণ

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.