![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মেডিক্যাল থ্রিলার লেখার প্রচেষ্টাঃ
ডোপামিন
মো: ফুয়াদ আল ফিদাহ
দরজায় জোরে নকের আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেল। উঠলাম না, যদিও জানি উঠিয়ে আমাকে ছাড়বেই। তাও চারটায় ঘুমাতে গিয়ে, ছয়টায় উঠতে কার মন চায়? আবার নক হল, এবারেরটাকে নক না বলে থাবা বলাই ভাল। আর শুয়ে থাকার সাহস পেলাম না। ভাবলাম, কেউ মারা টারা গেল না ত আবার?
ব্রাক্ষনবাড়িয়ার এই ক্লিনিকে এসেছি আজকে তিন দিল হল। এখানে এবার এই প্রথম। এত আগেই এখানে আসতে চাই নি। জানতাম ব্যস্ত হাসপাতাল, আমার পাঁচ বছরের বড় ভাইটাও এখানেই আসতেন। আমি সামলাতাম টাংগাইলের একটা ছোট হাসপাতাল, রোগী কম। চাপও কম। টাকাও কম। কিন্তু, এমন সুযোগ বার বার আসে না। তাই চলে এলাম।
এসেই বুঝলাম, খুব ব্যস্ত হাসপাতাল। এমনিতে ২৫ শয্যার, কিন্তু প্রায় সবসময় ভরা থাকে। এই হাসপাতালের মালিক কাম এম.ডি. রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। বিশেষ করে নিজের দল ক্ষমতায় আসায়, সে সব রকম সুবিধা পাচ্ছে। রোগীরা অধিকাংশই রাজনৈতিক নয়ত তথাকথিত ভি আই পি। এই দুই শ্রেণীর মানুষ আবার আমাদের, মানে 'সিম্পল' এম.বি.বি.এসদের ডাক্তার ত দূরে থাক, মানুষ বলেই মনে করে না। অবশ্য এটা যে শুধু এদের দোষ, তা না! টাংগাইলেও একই অবস্থা। আমার নিজের মেডিকেল - শের - ই - বাংলাতেও একই অবস্থা ছিল।
তার উপর, এবারে এসে দেখি, এম.ডি.নিজেই অসুস্থ হয়ে ভর্তি। এ্যাপেন্ডিক্সে ব্যথা। আমি যেদিন এসেছি, তার পরদিন অপারেশন হয়েছে। অবশ্য আগে থেকেই জানতাম, অপারেশন হবে। বলতে পারেন, ঝামেলা হবে জেনেই এসেছি।
টাকা - পয়সা ভালই দেয় এখানে। দিনে ৪০০০ টাকা, সেই সাথে অপারেশনে দাঁড়ালে ৫০০ আর এমনি রোগী দেখার জন্য ২০০ করে। টাংগাইলেরটায় কম ছিল। দিনে ২১০০ টাকা। আর বাড়তি কিছু পেতাম না। দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা ডিউটি করে এত কম টাকায় পোষাত না। কিন্তু, কি করব? আম্মু কিছুতেই দূরে পাঠাতে চান না। বিশেষ করে ভাইয়ার সেই ব্যাপারটা ঘটার পর থেকে একেবারেই না।
এইত গতকালও ফোন দিয়েছিলেন। আমি তাঁকে জানাইনি যে ব্রাক্ষণ বাড়িয়ায় এসেছি, তাও আবার ভাইয়ার আগের হাসপাতালেই। জানলে কিছুতেই আসতে দিতেন না। সিরাজগঞ্জ থেকে টাংগাইলেই যেতে দিতে চান না, ভয় পান।
টুকটাক কথা বার্তা হবার পর, আম্মু জিজ্ঞাসা করলেন, 'কবে আসবি?'
'এই ত আম্মু, তিন চার দিন পরেই। কেন?'
'তোর ভাইয়ার আবার শরীর খারাপ করেছে। ডাক্তারের কাছে নিতে হবে।'
মনটা খারাপ হয়ে গেল। আমার ভাইয়া খুব ভাল ছাত্র ছিলেন। বরিশালের শের - ই - বাংলা মেডিকেল কলেজ থেকে ঢাকা বোর্ডে তিন প্রফেশনাল পরীক্ষাতেই স্ট্যান্ড করেছিলেন। সবাই খুব পছন্দ করত। আমি যখন ভর্তি হই, তখন তিনি ইন্টার্ণশীপ করছিলেন। সব বড় বড় স্যারদের দেখতাম তাঁর প্রশংসা করতে, খুব গর্ব হত তাঁকে নিয়ে।
আমার সেই ব্রিলিয়ান্ট ভাইটি এখন মানসিক রোগী। ডাক্তারদের মতে, ডিপ্রশনে ভুগছেন। চাপ সইতে পারেন নি। মাঝে মাঝে ডিপ্রেশন খুব বেশী হয়ে যায়। তখন ঢাকায় নিয়ে ডা: কামালকে দেখাই। এত ব্রিলিয়ান্ট ছেলের এই অবস্থা আমার আম্মু আব্বুকে খুব কষ্ট দেয়।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম, 'আচ্ছা আম্মু। এসে নেই। নিয়ে যাব।'
দুই জনেরই কথা ফুরিয়ে গেল - এই বিষয়টি আমাদের পরিবারের সবার জন্যই খুব স্পর্শকাতর একটা বিষয়।
যাই হোক, সকালের কথায় ফিরে আসি। আগের দিন রাত রাত থেকেই এম.ডি. সাহেব বেশ জ্বালাচ্ছিলেন। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, লোক সমাগম ঠেকানো যাচ্ছিল না। হাসপাতালের কর্মচারী, বিশেষ করে নার্সদের খুব অপছন্দের লোক হলেও, এলাকায় দেখলাম ভালই পরিচিত। ওয়ার্ড বয়কে জিজ্ঞাসা করতে ইংগিত দিল আমাকে, 'ইয়া স্যার। হইছে কি, সুন্দরী নার্সরা থাকতে পারে না। আর প্রায় রাতেই এলাকার পোলাপাইনদের নিয়া বসে। বুঝলেন নি?'
বুঝলাম, একই সাথে দু:সচরিত্র আর নেশাখোর।
লোকটার ডায়াবেটিস ছিল। বয়স ৪৫। ইনসুলিন নিত। স্যাররা প্রথমে অপারেশন করতে ঢাকায় যেতে বলেছিলেন। কিন্তু সে, ঢাকায় এই অপারেশনের জন্য গেলে ত আমার হাসপাতালে রোগী আসবে না - এই কারণ দেখিয়ে নিজের হাসপাতালেই অপারেশন করায়। দুই সপ্তাহ ধরে রক্ত চাপ আর ডায়াবেটিস কন্ট্রোলে এনে, স্যাররা অপারেশন করেন।
প্রথম দিন কড়া এ্যান্সথেটিক পেয়ে ব্যাথা ভুলে ছিল। কিন্তু এখন ব্যথ্যার চোটে কাতরাচ্ছে। সারা দিন আমাকে জ্বালায় না। ঐ যে বললাম - সিম্পল এম.বি.বি.এস. দের কেউ ডাক্তার হিসেবেই গণ্য করে না। দিনের বেলায় সাধারণ কোন সমস্যা হলেও স্যারকে ডেকে পাঠায়। বেচারা স্যার দৌড়াতে দৌড়াতে আসেন। মায়াই লাগে, কিন্তু ভয়ে তিনি কিছু বলতে পারেন না। এখানেই ত তাঁর থাকতে হবে। জলে নেমে কুমিরের সাথে লেগে লাভ কি?
রাত হলেই আবার দৃশ্যপট ভিন্ন। আমি ছাড়া গতি নেই। যদিও গতি থাকলেই খুশি হতাম। এই লোকটা স্যারের একটা কথাও মানে না। এর এ্যাপেন্ডিক্স খুজে পেতে অনেক সময় লেগেছিল। না হলেও দিন দুয়েক না খাইয়ে রাখা উচিত ছিল। স্যালাইন ত চলছেই। কিন্তু না, খাবার জন্য নাকি কলিজা পুরে যাচ্ছে। পেট খাবার নেয়ার মত শক্ত না হতেই খাবার দিতে হল। এখন এই ব্যথ্যা।
গতকাল রাতে তিনবার ডেকেছে। তিনবার গিয়েছি। ডায়াবেটিস এর রোগী, যেহেতু ইনসুলিন নেয়, না খাইয়ে ত আর তা দেয়া যায় না। বাধ্য হয়েই খাওয়াতে হয়েছে। ফলাফল - আরও ব্যথ্যা।
এবারের ডাকটা মনে হল খুব বিশেষ কিছু। দরজা খুলতেই দেখলাম, ওয়ার্ড মাস্টার সামনে দাঁড়িয়ে। বলল, 'স্যার, তাড়াতাড়ি আসেন। মামুন স্যার কেমন করছে।' ওহ, বলা হয় নি। এই মামুন স্যার হচ্ছেন এম.ডি.।
দৌড়ে গেলাম ভি আই পি কেবিনে। নাইট শিফটের সিস্টার সাথী এরই মাঝে সেখানে উপস্থিত। কি হয়েছে জিজ্ঞাসা করলাম। এমন পরিস্থিতিতেও শান্ত দেখাল সিস্টারকে। বলল, 'স্যার, বিপি পাচ্ছি না।' রাত থেকেই বিপি, মানে রক্তচাপ একটু কম ছিল। বমি হচ্ছিল, হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছিল। স্যারকে ফোন করে বলায়, স্যার বলেছিলেন - 'এমন হতে পারে। অপারেশনের রোগী। ডায়াবেটিসটা একটু দেখে, কম হলে গ্লুকোজ স্যালাইন দিয়ে দিয়েন। আর একটা নরম্যাল স্যালাইন দিয়ে রাখেন।' রক্তে সুগার একটু কমই ছিল। তাই ২৫% গ্লুকোজ দিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন ত দেখছি রোগীর রক্তচাপই নেই।
জলদি সিস্টারকে সরিয়ে নিজে রক্তচাপ মাপলাম। ঢাকার বাইরে সিস্টারটা ডিপ্লোমা করা হয় না সাধারণত। শিখে শিখে কাজ করে। যদিও সিস্টার সাথী ডিপ্লোমা করা, তাও রিস্ক না নিয়ে নিজেই মেপে দেখি - আসলেই নেই। সিস্টারকে বললাম, 'রানিং করেন।' রানিং মানে স্যালাইনটাকে পুরাদমে চালিয়ে দেয়া। যেন রক্তচাপ বেড়ে যায়। আরও বললাম, 'একটা কটসন আনান, আর ডোপামিন।' কটসনও রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়, আমাদের ডাক্তারদের শেষ আশ্রয়স্থল, আর ডোপামিন হল রক্তচাপ পাওয়া যাচ্ছে না, এমন রোগীর জন্য খুবই কার্যকর একটা ঔষধ।
সিস্টার রানিং দিয়ে দিল, কিন্তু তাকিয়ে দেখি, খুব আস্তে আস্তে যাচ্ছে। বুঝতে পারলাম, খুব ছোট বাচ্চাদের যেটা দিয়ে ক্যানুলা (শিরাপথে সরাসরি ঔষধ পৌছাবার ব্যবস্থা) করা হয়, সেই সুই দিয়ে মামুন সাহেবকেও ক্যানুলা করা হয়েছে। তাড়াতাড়ি প্রেশার মেশিনটাকে নিয়ে স্যালাইনের ব্যাগের সাথে পেঁচালাম। একটু চাপ দিয়েছি কি দেই নি, ব্যাগ থেকে ছিটকে পানি বেরিয়ে এল। পাত্তা দিলাম না, সিস্টাররা অনেক সময় শক্ত প্লাষ্টিকের ব্যাগে এরকম ফুটো করে রাখে, এতে তাদের হিসেবে সুবিধা হয়। যদিও এই ব্যাগটা নরম প্লাষ্টকের ছিল - ফুটো করার কথা না। কিন্তু, সেই সময় এসব ব্যাপার কে খেয়াল করে? চাপ কমিয়ে দিলাম, স্যালাইন যাবার গতি একটু বাড়ল। আবার রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ পরীক্ষা করে দেখলাম। কম দেখে বললাম, 'আরেক হাতে ক্যানুলা করে গ্লুকোজটা চালিয়ে দিন।'
ডোপামিনের জন্য বসে আছি, এমন সময় নীচের ফার্মেসী থেকে খবর আসল - ডোপামিন নেই, শেষ। জলদি কাছে ধারে কোথাও থেকে আনতে বললাম। বললাম, ডোপামিন না পেলে একে বাঁচানো যাবে না। ফার্মেসীর ছেলেটাও অনেক দিন ধরে এখানে আছে, সে এমন ভুল কিভাবে করল বুঝতে পারলাম না। এম.ডি. এর নিজের ফার্মেসী। হয়ত মালিক অসুস্থ বলে ডোপামিনের অর্ডার দেয়া হয় নি।
ডোপামিন আসতে আসতে মূল্যবান আধা ঘন্টা পেরিয়ে গেল। করার কিছুই ছিল না। মারা গেলেন মামুন সাহেব। তার পরিবার হাসপাতালের উপরেই থাকত। পুরো সময়টা পাশে থেকে দেখছিল, তাই কথা বাড়াল না। আমি ডেথ সার্টিফিকেট লিখে দিলাম। ফিরে এসে শুয়ে পড়লাম বিছানায়। ঘুমের নিজেকে সুখী অতলে হারিয়ে যাবার ঠিক আগ মুহুর্তে মাথায় একটা চিন্তা খেলে গেল।
পরেরদিন কাটল উত্তেজনায়। আমি ধরে ফেলেছি। ফ্রিজ থেকে মামুন সাহেবের ইনসুলিনটা নিজের রুমে নিয়ে রাখলাম। তার পরিবারের সবাই লাশের দাফন - কাফন নিয়ে ব্যস্ত। রাত হলে ফার্মেসীর ছেলে, মাসুম আর সিস্টার সাথীকে রুমে ডাকালাম। ওরা রুমে এলে দরজা ভিজিয়ে দিয়ে এসে বললাম, 'সব গুলে বল, নাহয় বিপদে পরবে।'
মাসুমকে দেখে মনে হল ভূত দেখেছে, 'কি খুলে বলব, স্যার?'
আমি প্রায় খালি ইনসুলিনের ভায়ালটা দেখিয়ে বললাম, 'অপারেশনের আগের দিন কেনা ইনসুলিন শেষ কিভাবে? তোমার ফার্মেসীতে ডোপামিন নাই কেন? আর সিস্টার, শক্ত স্যালাইনে নাহয় আপনারা ফুটো করেন যাতে বাতাস ঢুকতে পারে। চিপসিয়ে না যায়, কিন্তু এই নরম ব্যাগে কেন?'
মাসুম আর সাথী, দুইজনেই বলে উঠল, 'স্যার, আমরা কিচ্ছু জানি না।'
'সত্যি বল, নাহয় পুলিশে খবর দিব।'
বলতে কি আর চায়! অনেকক্ষণ ধরে পুলিশের ভয় দেখিয়েই কাবু করা গেল না। শেষে যখন বললাম, এখনি মামুনের পরিবারকে জানাচ্ছি, তখন কাজ হল। সাথী কেঁদে উঠে বলল, 'স্যার। ওই কাজ করবেন না। আমাদের ত মারবই, আমাদের পরিবাররেই ছাড়ব না। আমি কইতাছি। চার বছর আগে আমার চাচাত বোন এইখানে কাজ করত। এই মামুন হারামজাদাটা অনেক বার কুপ্রস্তাব দিছে। আবার বোন খুব সুন্দরী ছিল, ভাল মেয়েও ছিল। রাজি হয় নাই। চাইর বছর আগে, আপনারি মত আরেক ডাক্তার আইছিল। সেই সময় মামুনের দল ক্ষমতায় ছিল না। লোকাল এক নেতার দূর সম্পর্কের মামা ভর্তি ছিল হাসপাতালে, হার্টের সমস্যা। তখনকার ডাক্তার স্যার বহুতবার কই্ছে ঢাকায় নিতে, এইখানে যন্ত্রপাতি নাই, কিছু নাই। তারা শুনে নাই। একদিন নাইটের আমার সেই বোন ডিউটি করতাছিল, এমন সময় সেই রোগী মারা যায়। স্যার বুকে চাপ দিয়ে অনেক চেষ্টা করছিল। বাঁচাইতে পারে নাই। তখন সেই নেতা আইসা স্যাররে গালি গালাজ করে। রোগী মাইয়া কয়, বুক চাইপ্যা মাইরা লাইছে। তখন থাপ্পড়ও মারে। মামুন আইসা এগুলা দেইখাও চুপ থাকে। পরে পুলিশ ডাকায়া সেই স্যাররে আর আমার বোনেরে ধইরা নিয়া যায়। পরেরদিন পেপারে আসে যে, আমার বোন নাকি সেই স্যারের সাথে প্রেম করত। সেই রাতে নাকি....'
কান্নায় ভেঙে পরে সাথী, মাসুমও কেঁদে ফেলে। আমি মুখ শক্ত করে বসে থাকি। কোন কথা বলি না। একটু পর নিজেকে সামলে নিয়ে সাথী বলে, 'পরে টাকা পয়সা দিয়ে তাদের ছাড়ায়া আনা হয়। আমার বোন লজ্জায় আত্মহত্যা করে। পরে শুনছি, মামুন হারামজাদা রাগ মিটানোর জন্য পত্রিকা ওয়ালারে এইগুলা কইছে। আমার চাচা চাচী খুব ভাল মানুষ। আমাদের সংসারে খুব সাহায্য করত। আমারে পড়াইছেও তারা। তাই, সুযোগ পাইয়া আর ছাড়ি নাই। আমি বারডেমেও কাজ করছি। ইনসুলিন ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানি। ওই খান থেকে ইনসুলিন নিয়ে অর্ধেক দিছি গ্লুকোজ স্যালাইনে। জানতাম, আপনি দিতে কইবেন। আর বাকী অর্ধেক দিছি নরমাল স্যালাইনে। সেই জন্যই ব্যাগ ফুটা।'
বুঝলাম, যে বুদ্ধি করে কাজ করেছে, তাতে মামুনকে বাচানো যেত না। বললাম, 'আর মাসুম? ডোপামিন?'
এবার মাসুমের পালা, 'স্যার। সাথীর সাথে আমার বিয়ের কথা হইতেছে। আর আমরা একি গ্রামেই থাকি। সবই জানি। আগে থেকেই এই সময় এমন কাম করার প্ল্যান আমরা কইরা রাখছিলাম। তাই, মামুন মিয়ার ভাইরে অপারেশনের দিন গিয়া কই, আমাগো ডোপামিন নাই, লাগব। হেই ব্যাটা আরেক নেশাখোর। না বুইঝাই কইল, ভাই সুস্থ হলে কিনিস। এখন কেনা লাগব না।'
কথা শেষ করে দুইজনেই দাঁড়িয়ে রইল, ভয়ে কাঁপছে। আমি মুখ তুলে ওদের দিকে তাকিয়ে বললাম, 'যাও। আমি ভেবে দেখি।'
ওরা চলে গেল। আমার ভেবে দেখা অনেক আগেই শেষ। মনে মনে আমি খুব খুশী। ওরা কিছু না করলে এমন কিছু আমাকেই করতে হত। কারণ? কারণ চার বছর আগের সেই ডাক্তার আমারই বড় ভাই। তাঁর মত ছাত্র এই অপমান সহ্য করতে পারে নি। কয়েক লাখ টাকা পুলিশকে দিয়ে আমার বাবা তাঁকে ছাড়িয়ে আনেন। এই টাকাটা যেন দিতে না হয়, সেই জন্যই মামুন ঐ অপবাদ দিয়েছিল। সেই থেকে শোধ নিতে আমি উদগ্রীব হয়ে ছিলাম। ভেবেছিলাম আগে কয়েকবার এখানে এসে বুঝে নিয়ে তারপর কিছু করব।
কপাল ভাল, আমাকে কিছু করতে হবে না। এই খানে আর আসতেও হবে না। হয়ত ভাইয়াও এবার...
২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:৪৮
শাহ্ ফখরুল ইসলাম আলোক বলেছেন: মেডিক্যাল থ্রিলারটি অসাধারণ! এমন বই আরো চাই।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:২৯
রেজাউর বিন ইসলাম বলেছেন: অসাধারণ !