নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অপেক্ষার পালা শেষ-----

http://vutoo.blogspot.com

ফিউজিটিভ

জাতিসংঘের কোন এক সংস্থায় কর্মরত। [email protected]

ফিউজিটিভ › বিস্তারিত পোস্টঃ

খাদ্যাভাস বদলে ফেলুন...

১৮ ই আগস্ট, ২০০৮ সকাল ১০:৪৪

বাজারে জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। বিস্তর আলাপ আলোচনা চাপাবাজী হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। দাম মানুষের নাগালের মধ্যে রাখা হবে, প্রয়োজনে অবৈধভাবে দাম বাড়ানোর অপরাধীদের চিহ্নিত ব্যাবসায়ীদের ধোলাই দেয়া হবে ইত্যাদি ইত্যাদি প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বেড়েই চলেছে জিনিসপত্রের দাম। তবে আশার কথা হল কয়েকটা দ্রব্যের মূল্য কিন্তু তুলনামুলকভাবে বাড়েনি। তো চলুন দেখি কিভাবে বেশী দামী খাদ্যদ্রব্য কম খেয়ে বা অন্য খাদ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি করে মাসিক ব্যয় সমন্বয় করা যায়:



প্রথমেই সয়াবিনের কথা বলি। বর্তমান মুল্য মাত্র ১২৫ টাকা লিটার । যেখানে গত বছর ছিল মাত্র ৭০ টাকা। অনেক আশা ভরসা দেবার পরও এর দাম ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। অতএব কি করে সাশ্রয় করবেন? বিশেষ করে গৃহিনীগনদের বলছি - এখন থেকে ঢুস করে তেল ঢেলে ফেলা থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখবেন এই সয়াবীন এর ’স্বাস্থকর প্রতিটি ফোটা’। অতএব ফোটার হিসাবে তেল ঢালুন। বাজার থেকে একটা ড্রপার কিনে নিন। তারপর ড্রপার দিয়ে ভাজিতে দেড় ফোটা, ভর্তায় দুই ফোটা আর তরকারীতে চারফোটা - হিসাব করে দিন। ফোটায় ফোটায় খরচ করুন। আর গড়ে তুলুন ’মজবুত হৃদয়’। যদিও ফোটায় ফোটায় ঢালার ফলে হৃদয়ের সাইজ একটু ছোট হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। তবুও মজবুত হৃদয় বলে কথা। আর নব্য প্রেমিক প্রেমিকাগন একফোটা বুকে মালিশ করে হৃদয়টাকে আরো বেশী মজবুত করে প্রিয়তম বা প্রিয়তমার সাথে দেখা করতে যেতে পারেন। প্রেম ভালবাসাও বেশ মজবুত হবে আশা করা যায়।



এবার লবনের ব্যাপারে বলি। লবন আমাদের দেশী প্রডাক্ট। বঙ্গোপসাগরের পানি থেকে যেহেতু তৈরী করা হয় সেহেতু ফুরিয়ে যাবার কোন অবকাশ নেই; আর সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আমদানীরও কোন দরকার হবে না মনে হয়। অতএব বেশী করে লবন খেতে থাকুন। এক কেজি লবন মাত্র ১৭ টাকা। সপ্তাহে ৩/৪ কেজি করে লবন খান। ভাত তরকারীর বদলে লবন ভর্তা, লবনের ডাল, লবনের শরবত ইত্যাদি খেতে পারেন। দেড় গুন শক্তিসম্পন্য লবনগুলো খেয়ে মাসের খরচ প্রচন্ড রকম কমিয়ে ফেলতে পারেন সহজেই। তখন আর বউয়ের সাথে বাজী ধরে চুড়িও পড়তে হবে না; একদিনের জন্য আপনার দোকানের কর্মচারীকে ম্যানেজারও বানাতে হবে না। লবনের ভেতরটা বদলে ফেলার মত আপনার খাদ্যাভাসের ভেতরটাও বদলে ফেলুন। আর দলে দলে শ্লোগান তুলুন ’বেশী করে লবন খান অন্য খাবারের উপর চাপ কমান’।



মশুরীর ডাল - বর্তমান মুল্য ১১০ টাকা কেজি। কেজি দরে কেনার সাহস হারিয়ে ফেলেছেন অনেকেই। তাই ডালের বিক্রী দানার হিসাবে করা হলে ক্রেতাও আবার ডাল কিনতে উৎসাহী হবে আবার এতে সাশ্রয়েরও প্রচন্ড সম্ভাবনা। প্রতি ১০০০ দানা মাত্র ২ টাকা। যারা খাবেন তারাও হিসেব করে খেতে পারেন। সকালে ২০০ দানা। দুপুরে ও রাতে ৪০০ দানা করে। তিন বেলা ডাল ভাত খাওয়া কোন সমস্যাই হবে না। ব্যবসায়ীগনও ডাল দানার হিসেবে বিক্রী শুরু করতে পারেন। ’দানা দানা দানা এক নম্বর মশুর দানা’ ’সেরা জাতের দানা দিয়ে প্যাক করা’ ’ভাল জাতের বাছাইকৃত দানা দিয়ে তৈরী আমাদের শাশুড়ী ব্রান্ডের মশুরীর ডাল’। ইত্যাদি বিজ্ঞাপন তৈরী করতে পারেন। ’অপুষ্ট দানা হওয়াতে ওমুকের দানা আমাদের কম্পানি নেয়নি সেজন্য সে রেগে মেগে তমুকের রেডিও আছাড় দিয়া ভাইঙ্গা ফালাইছে’ - এ ধরনের প্রচন্ড দর্শকপ্রিয় টিভি এ্যাডও তৈরী করতে পারেন ডাল কোম্পানী গুলো। প্যাকেটের গায়েও লেখা যেতে পারে ’নেট কন্টেন্ট: ১০০০ দানা হোয়েন প্যাকড’। ২০০ ও ৪০০ দানার মিনি প্যাকও বাজারে ছাড়া যেতে পারে।



ডিম - ২৮ টাকা এক হালি ডিমের দাম। বাজারে গিয়ে চোখ কপালে উঠে। ব্রয়লারের ফার্মের মুরগীগুলোকে এখন আর হাসফাস করা সাধারন মুরগী মনে হয়না - সোনার ডিমপাড়া রাজ হাসের মত লাগে। সাশ্রয় করার জন্য ডিম এখন থেকে জোড়া হিসেবে বিক্রী শুরু করা যেতে পারে। ডিমের জোড়া ১৪ টাকা শুনতে অনেক কম শোনায়। ’ ও - ১৪ টাকা জোড়া? - ঠিক আছে আমাকে চার জোড়া দেন” - এভাবে কেনাবেচা শুরু করতে পারেন। তাছাড়া মুরগীদের বেশী করে ডিম পাড়ার ব্যপারে উৎসাহ দেয়া যেতে পারে। অতি উৎসাহীগন বাসায় একটা করে মুরগী পালন কর্মসুচী নিতে পারেন। ’বাচতে হলে জানতে হবে; বেশী ডিম পারতে হবে’। এই জাতীয় শ্লোগান দিয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে। তবে সতকর্তা স্বরুপ কৃত্রিম পদ্ধতিতে ডিম চাষের গবেষনা শুরু করা উচিত। কারন উদানীং মুরগীর ডিমের উপর ভরসা করা অনুচিত মনে করছেন অনেকেই। মুরগীদের বিশ্বাস নেই। ইদানীং এইডস রোগে মারা পড়তে শুরু করেছে মুরগী সমাজের সদস্যবৃন্দ। অথচ সবাই বলে কিনা বার্ড ফ্লু।



দুধের কথা আর কি বলব - ছোয়াই যাচ্ছে না ইদানীং! দাম ৪৫ টাকা লিটার। আগের দিনে শুনতাম গোয়ালা দুধে পানি মিশিয়ে বিক্রী করত। দুধ খাওয়ার সুবিধার্থে এখন দুধের দুটো ক্যাটাগরী করা যেতে পারে। দুই নম্বর ক্যাটাগরীর দুধ বানানোর প্রক্রিয়া হবে এরকম। প্রায় একলিটার পানিতে অল্প একটু দুধ মিশিয়ে তৈরী করা যেতে পারে এই দুই নম্বর ক্যাটাগরীর দুধ। আমাদের দেশের কিছু ব্যাবসায়ীগন যে প্রচন্ড আগ্রহী হবেন এতে কোন সন্দেহ নেই!



তবে একটা মাত্র দ্রব্য যেটা নিয়ে ভীষন আশাবাদি হওয়া যায়। সেটা হচ্ছে চিনি। বাজারে চিনির মুল্য ৩৬ টাকা কেজি মাত্র। এই একটা মাত্র খাদ্যই তুলনামুলক ভাবে কিছুটা সহনীয় পর্যায়ের দামে রয়েছে। চালের দাম যখন ১৮-২০ টাকা, তেলের দাম ৬০-৭০, দুধের দাম ২৪-২৬, ডিমের দাম ১২-১৪ টাকা ছিল তখনও চিনি এই দামেই বিক্রি হত। তবে আমরা কেন বেশী করে চিনি খাচ্ছি না? আমাদের উচিৎ এখন প্রত্যেক খাবার আইটেমে বেশী করে চিনি দেয়া। বিশেষ করে যে সমস্ত খাদ্য দ্রব্যের মুল্য চিনির চাইতে বেশী সেগুলোতে। যেমন চাল, আটা, দুধ, ডাল ইত্যাদি। বিশেষ করে ডালের মধ্যে আমাদের বেশী করে চিনি দিয়ে খাওয়া উচিৎ। ৪০০ দানা ডালে যদি আধাকেজি চিনি দেয়া হয় তো চিন্তা করুন কত চমৎকার একটি রেসিপি হয়ে যায়। তেমনি ভাতের মধ্যে, রুটির ভিতর বেশী বেশী চিনি দেয়া হলে সব আইটেমই খেতে মিষ্টি হবে। প্রতিদিনই ঈদের আমেজ পাওয়া যাবে। আর তারপর যখন দেখবেন চিনি খাওয়ার পর মাসের খরচ অনেকটাই কমে গেছে তখন নিজেরাই বলতে শুরু করবেন ’আমরা চিনি চিনি’!

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই আগস্ট, ২০০৮ সকাল ১০:৪৬

পূর্ব বলেছেন: ইডা দেকি গবেষণা!!!

২| ১৮ ই আগস্ট, ২০০৮ সকাল ১১:১০

মো: খায়রুল বাসার বলেছেন: আগে ছিলো মাছে-ভাতে বাংগালী, তারপর হলো ডাল-ভাতে ।
এখন হবে নুনে-(ভাতের যে দাম ! ) ।

৩| ১৮ ই আগস্ট, ২০০৮ সকাল ১১:২৩

রাঙা ঠোঁট বলেছেন: খালি চুমু খেয়ে দিন রাত পার করুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.