নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাম্যবাদ জিন্দাবাদ.. সামহোয়্যার অনেক ব্লগ জিন্দাবাদ..

ফুলচন্দন

ফুলচন্দন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালবাসা কি কপালে নাই,,,,,,,

০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৮

হঠাৎ করেই পেছন ফিরে তাকালো
সাথী । আমি তাড়াতাড়ি দেয়ালের
আড়ালে লুকিয়ে গেলাম। কিছুক্ষন
এদিক-ওদিক তাকিয়ে আবার হাঁটা শুরু
করল সে।
.
বেশকিছুক্ষন ধরে ফলো করছি সাথীকে।
আমার হাতে একগাদা গোলাপ।
প্রতিজ্ঞা করেছি আজ যে কোন
উপায়েই এগুলো সাথীকে দিয়ে মনের
কথাটা বলে দিব।
.
আবার ওর পিছন পিছন হাঁটা শুরু করলাম।
হাঁটতে হাঁটতে একটা কানাগলিতে
উপস্থিত। এমন সময় সাথী আবার ফিরে
তাকালো।
দেখে ফেলল!! না দেখে উপায়ও কি?
লুকাবার যে কোন পথ নেই!!
.
: কি ব্যাপার চন্দন ভাইয়া?
-- না, কিছু না তো!!
: কিছু না হলে পিছন পিছন ঘুরছেন কেন?
যা বলার বলে ফেলুন? আর হাতে এগুলো
কি?
আমি আমতা আমতা করে বললাম, "
আসলে, আমি তোমাকে......."
: আমি তোমাকে কি? ( ধমকের সুরে
বলে উঠল রিয়া)
.
সাথীর কন্ঠস্বর শুনে আমার সাহস আবার
তলানীতে ঠেকল।
মনে মনে আবার নিজেকে সাহস
দিলাম, " আজ নেহি তো, কাভি
নেহি।"
.
চোখ দুটো বন্ধ করে এক নিঃশ্বাসে
বলে ফেললাম," সাথী আমি তোমাকে
ভালোবাসি।" বলে গোলাপগুলো
বাড়িয়ে দিলাম।
.
: কি? তাহলে আপনার এই মতলব?
নিজেকে কখনো দেখেছেন আয়নায়?
চুল কতগুলো শজারুর কাটাঁর মত। গলায়
মোটা চেইন, প্যান্টে জোড়া-তালি,
মনে হয় কোন গ্যাংস্টারের দলনেতা!!
.
-- সাথী আমি তোমাকে সত্যিই খুব
ভালোবাসি।
: ও তাই! তাহলে আগে নিজেকে
পরিবর্তন করুন। নিজেকে একটু সভ্য
বানান। আর এগুলো কি?? বাসি ফুল
নিয়ে ভালোবাসার প্রস্তাব দিতে
এসেছেন? ফুলগুলোতো আজই নষ্ট হয়ে
যাবে? তার চাইতে প্লাষ্টিকের ফুল
আনতেন? এই আপনার ভালোবাসা........
.
আমি সাথীর হাত ধরে বললাম," please,
accept me..। আমি তোমার জন্য সব করব....
please, accept me......."
***
→এই চন্দন? কি হয়েছে? এমন করছিস
কেন?
.
আরে!! এতো দেখি মায়ের হাত ধরে
আছি? সাথী কোথায়?? এতক্ষন তাহলে
স্বপ্ন দেখছিলাম। যাক বাবা বাঁচা
গেল!! স্বপ্নে reject করেছে, বাস্তবে
তো নয়।
.
-- এই চন্দন, তোর কি হয়েছে রে? ঘুমের
মধ্যে বিড়বিড় করছিস?
: না, মা কিছু না! হয়তো স্বপ্ন
দেখছিলাম।
-- হয়েছে, এবার ঘুম থেকে উঠ।
বাজারে যেতে হবে।
.
মা চলে গেলে সাথীকে নিয়ে
আবার ভাবতে বসলাম।
সাথী আমাদের সামনের বাসায়
থাকে। এবার এইচ.এস.সি দিয়েছে।
দেখতে খুব একটা খুব একটা আহামরি
সুন্দরী না হলেও, চেহারায় খুব একটা
মায়া আছে।
ওরা আমাদের পাড়ায় এসেছে
বছরখানেক হলো। ওকে দেখার পর
থেকেই ভালো লেগে যায়। সেই
থেকে আজ অনেক চেষ্টা করেছি মনের
কথা বলার, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাহস করে
আর বলা হয়নি।
.
না অনেক হয়েছে! আজকে এর একটা
বিহিত করতেই হবে।
.
মনস্থির করে ফেললাম, আজই সাথীকে
বলে দিব। মুখ ধুয়ে তৈরি হতে
লাগলাম। চুলগুলো স্পাইক করতে যাবো,
হঠাৎ স্বপ্নের কথা মনে পড়ল!!
.
গলার চেইনটা খুলে রাখলাম, ভদ্র একটা
লুক নিয়ে তৈরি হলাম। বের হতে
যাবো এমন সময় আবার মায়ের ডাক,
→ কিরে, বাজারে যাবি না?
-- না, আজকে বাজারে যেতে পারবো
না? কাল যাবো......
→ তাহলে একেবারে কালকেই ভাত
খাবি!!
-- চলবে......?
.
বাসা থেকে বের হয়ে এলাম। পেছনে
তাকালে দেখতে পেতাম মায়ের
অবাক করা দৃষ্টি, কারণ আমাকে তো
কখনো এইরুপে দেখেনি!!
.
দোকান থেকে ৭টা প্লাষ্টিকের
গোলাপ কিনে গলির মুখে দাঁড়িয়ে
রইলাম। প্লাষ্টিকের কেনার পেছনেও
স্বপ্নের হাত আছে। এই গোলাপ নষ্ট
হবেনা কখনো।
.
বেশকিছুক্ষন পর দেখলাম সাথী আসছে।
আমিও এগোতে যাবো এমন সময় দেখি
আমাদের পাড়ার কালু (ভাল নাম মনি)
সাথীর সামনে গিয়ে দাড়াঁল। তার
হাতে কিছু ফুলও দেখা যাচ্ছে। কি
ব্যাপার, কি হচ্ছে এসব??!!
.
কালু ফুলগুলো সাথীকে দিল। এরপরই
কালুর গালে সাথীর হাত পড়ার
আওয়াজ। বুঝতে পারলাম কালু নিশ্চয়ই
সাথীকে প্রপ্রোজ করেছে, তাই
বেচারার এই দশা!!
হয়েছে। আজ আর আমার হিরোগিরি বা
রোমিওগিরি কোনটাই চলবে না!!
কেটে পড়াই ভালো।
.
: চন্দন ভাই! একটু এদিকে আসুন তো......
.
এই যা! সাথী ডাকছে.........
কি আর করা,গেলাম তার কাছে। কালু
তখনও দাঁড়িয়ে, বেচারা হতভম্ব অবস্থায়
আছে এখনো। মনে মনে বললাম, বেটা
হয়তো আমার চড়টাই তোর কপালে
জুটেছে!!
.
: চন্দন ভাই, দেখুন না....এই ছেলেটা
আমাকে প্রপোজ করতে আসছে। কি সব
আজে বাজে ছেলে আপনাদের
পাড়ায়!!,

-- কি রে কালু!! এমন করলি কেন? ও তো
তোর ছোট বোনের মতই।
.
কালু কিছু না বলে হা করে আমাদের
কথা গিলছে, চড় খেয়ে বেচারার
বাকশক্তি হয়তো সাময়িক লোপ
পেয়েছে।
.
কালুকে উদ্দেশ্য করে সাথী বললো, "
চন্দন ভাইকে দেখো। উনি কত ভালো!!
এতদিন এখানে আছি কখনো আমাকে
ঐসব নজরে দেখে নাই। সবসময় আমার বড়
ভাইয়ের মত থেকেছে। রোমিও হতে
আসেনি। উনার মত ভাই পাওয়া অনেক
মুশকিল।"
.
হায় হায়!! সাথী কি বলে এসব!!

ভাইয়া.....আমাকেশেষ পর্যন্ত ভাইয়া
বানিয়ে দিল!!
.
: তো ভাইয়া, প্লাষ্টিকের ফুল নিয়ে
কোথায় যাচ্ছেন?
-- বাসায় নিয়ে যাচ্ছি, ফুলদানিতে
দিব.....
: ও, আচ্ছা। চলি তাহলে ভাইয়া।
ভালো থাকবেন.....
.
সাথী চলে যেতে লাগল। আর আমি
অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম। আর
কালু , সেতো আপাতত মানসিক ভাবে
বিপর্যস্ত!!
.
কি থেকে কি হয়ে গেল! এসেছিলাম
রোমিও হতে, বানিয়ে দিল ভাইয়া।
বাংলালিংকের বিজ্ঞাপনের
ডায়ালগটা মনে পড়ে গেল......
.
" এ জগতে হায়, কে ভাইয়া হতে চায়!!"
.
না, কি ভাবছি এসব! ভাইয়া কেন হব?
আবার চেষ্টা করতে হবে। পরবর্তী
মিশনে নামার আগে পূর্ণ প্রস্তুতি
নিতে হবে। ভাবছি আমাদের পাড়ার
লাভগুরু রাজা ভাইয়ের কাছে যাবো।
দেখি উনি কোন নতুন ফর্মুলা দিতে
পারেন কিনা..................!!!!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.