নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাঙালিদের সিরিয়াস ব্যাপার হলেই সাধুর দাড়ি ধরে টানাটানি।
এখানে 'প্রস্রাব করিবেন না।' কেন বাবা ? সাধু ভাষা না লিখলে কি ধারা অন্যদিকে প্রবাহিত হতো ?
সাধু বাংলা বাঙালির মজ্জায়। একটু সিরিয়াস ব্যাপার হলেই সাধুর দাড়ি ধরে টানাটানি।
'রাস্তা বন্ধ। কাজ চলিতেছে।' যেন কাজ চলছে লিখলে কাজ আর হবেই না।
কিংবা 'আগামীকল্য আমাদের সংঘের বার্ষিক সভা ভানুবাবুর বাটীতে বিকাল পাঁচ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হইবে।' আমি ছেলেবেলায় ভাবতাম, বাটিতে কী করে সভা হবে? ওইটুকু তো সাইজ। লোকে বসবে কোথায়? ভানুবাবুর বাটি কত বড়? আহাম্মক কি গাছে ফলে!
এই যে ব্যাটা পটা। মাইক নিয়ে চেঁচিয়ে যাচ্ছে, 'যাহারা যাহারা মহাষ্টমীর অঞ্জলি দিতে ইচ্ছুক তাহারা তাহারা অবিলম্বে মণ্ডপে চলিয়া আসুন।'
সাধুর এই মহামারীর জন্য দায়ী বোধহয় স্কুলশিক্ষা। আমাদের সময় পই পই করে বলা হত, 'ভাষা দিয়ে লেখ।' ভাষা দিয়ে মানে কঠিন ভাষা দিয়ে। যার ভাষা যত কঠিন, তার নম্বর তত বেশি।
বানানেও তাই। সব 'ঈ-কার'। জ্যোতিভূষণ চাকী লিখেছেন, কোনও ছাত্র যদি 'বাড়ি' লেখে তা হলে স্কুলে নির্ঘাত সেই বাড়ি মেরামত হয়ে হবে 'বাড়ী।' এখনও তেমন হয় কি না, জানি না।
সবচেয়ে কাহিল অবস্হা বিয়ের ও শ্রাদ্ধের কার্ডের। বাঙালির পোশাকআশাক, খাবারদাবার---কত কী বদলে গেল।
কিন্তু বিয়ে ও শ্রাদ্ধের চিঠির ভাষা সেই এক। 'মদীয় বাসভবন' থেকে *'সাধনোচিত ধামে গমন'*--এর রাস্তা যে কণ্টকাকীর্ণ তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
এর সঙ্গে 'আশীর্বাদ করতঃ' এবং 'প্রজাপতি ব্রহ্মার আশীর্বাদে স্নাত' যদি হন, তা হলে তো পোয়া বারো।
বিয়ের চিঠির ভাষা একটু বদলাতে যান, সমাজপতিরা টিকি নাড়বেন। যেন সাধুভাষায় না-লিখলে বিবাহবিচ্ছেদ অনিবার্য।
ভাষার মৌলবাদ অতি সাংঘাতিক। কোথায় যেন পড়েছিলাম, 'আমার কনিষ্ঠ ভ্রাতুষ্পুত্রের পঞ্চম পুত্র শ্রীমান অঘোরকান্তির সহিত পূর্বতন কুষ্টিয়া জেলা নিবাসী (অধুনা গঙ্গাবক্ষে নিমজ্জিত)...।' বোঝো।
এই কার্ড লিখবেন বলেই বোধহয় ভদ্রলোক এতদিন বেঁচে ছিলেন।
আমার বিয়ের কার্ড লেখার সময় আমি আমার এক অকৃতদার রিটায়ার্ড স্কুল মাস্টার ধরনীজ্যেঠুর কাছে পরামর্শ চেয়েছিলাম। জ্যেঠু বলল, *'ল্যাখ, আমি অমুক তারিখে বিয়া করমু। সইন্দ্যাবেলায় আমাগো বাড়িত আইয়া দুগা ডাইল-বাত খাইয়া যাইবেন*।'
এই বিপ্লবটা করতে পারলে নিজেকে চে গেভারা ভাবতাম। কিন্তু পারিনি। অগত্যা ওই আশীর্বাদ করতঃ...।
বাড়ির দলিল কোনওদিন পড়েছেন? আমি একবার পড়ার চেষ্টা করেছিলাম। দু'লাইন পড়ার পর মনে হল..এখন থাক, পরে পড়ব। আজও সময় করে উঠতে পারিনি।
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:০৩
গেছো দাদা বলেছেন: কঠিন, বড্ডো কঠিন !
২| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৪১
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বড়ই সৌন্দর্য।
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:০৪
গেছো দাদা বলেছেন: হ বাই ।
৩| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৮:০২
কামাল১৮ বলেছেন: যতই চেষ্টা করি সফল হতে পারি না।সাধুর দাড়ি আর আমার মোচ পেঁচ লেগেই যায়।
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:১১
গেছো দাদা বলেছেন: তাহলে অসাধু হওয়াই ভালো। কি বলেন ?
৪| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:৩২
নূর আলম হিরণ বলেছেন: সাধু ভাষায় বেশিক্ষণ বলতে ও লিখতে পারিনা, ্যাচ লাগিয়া যায় এই মন্তব্যেও লেগে গেছে।
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:১২
গেছো দাদা বলেছেন: হা হা হা।
৫| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:০২
বাকপ্রবাস বলেছেন: মাঝে মাঝে সাধুটা বেশ ভালই লাগে, কিন্তু অনবরত সাধু হলে আর রূচেনা, বদ হজম হয়ে যায়
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:১৪
গেছো দাদা বলেছেন: তাহলে অসাধু হয়ে গেলেই তো হয় !!
৬| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:১৬
শাহ আজিজ বলেছেন: কদিন হল মন মেজাজ ভাল যাইতেছিল না , আজিকে তোমার লেখা পড়িয়া কিঞ্চিত সুখ অনুভব করিতেছি ।
ধন্যবাদ তোমায় গেছো ।
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:১৪
গেছো দাদা বলেছেন: শুকরিয়া শুকরিয়া ।
৭| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩০
বিজন রয় বলেছেন: আপনি এত রম্য পান কই?
বড্ড মজা লাগে।
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:১৬
গেছো দাদা বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা।
৮| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: সাধু ভাষায় লেখালেখি করা অনেক কঠিন। চেষ্টা করেছি। ফেল মেরেছি।
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:০৩
গেছো দাদা বলেছেন: সত্যিই কঠিন।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৩২
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: সাধু ভাষা তো ভালোই লাগে। যদিও কঠিন লাগে কিছুটা।