নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মোদি ভক্ত ! এটা জেনে আপনি দুঃখ পেলে আমি আনন্দিত হব।

গেছো দাদা

গেছো দাদা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রম্য : ফ পা !!

১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৯

যারা ফ পা কি জানেন না, তাঁদের জানাই এটি আদতে ফরাসী; faux pas। মানে ভুল জায়গায় ভুলভাল আচরণ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘটনাটা ঘটে অজান্তে।

এই ধরুন বিলাতী সমাজে গালে চুমু খাওয়া নেহাত জলভাত, কিন্তু সেই একই কাজ মেট্রো রেলে করলে তা ফ পা। বিলাতে কারও বাড়ি যাবার সময় রেড ওয়াইন নেওয়া ভদ্রতা, আবার সেই ওয়াইনই ফরাসী বাড়িতে উপহার হিসেবে নিয়ে যাওয়া মানে " তোমার বাড়ির মদ অতি জঘন্য বাপু, তাই আমি নিজেরটা নিজে নিয়ে এসেছি"... মানে ফ পা।

ইংলন্ডে লোকের দিকে পা উঠিয়ে বসা তেমন দোষের কিছু না, কিন্তু এক কাজ করে সায়েব বিদ্যাসাগরকে চটিয়ে দিয়েছিলেন। তিনিও উলটো সায়েবের দিকে চটিসুদ্ধ পা উঠিয়ে বুঝিয়ে দেন এসব ফ পা এখানে চলবে না।

মিলিটারিতে একবার এক শিখ আর এক তামিলে দারুণ মারামারি। এ গল্প বাবার নিজের চোখে দেখা। তামিল নাকি শিখকে মা তুলে গাল দিয়েছে। পরে দেখা গেল ও হরি! তামিলে " তেরিমা" মানে " বুঝেছ?" আর শিখের বেলা সেটা বিশাল ফ পা। কেরালার লোকেরা যেমন হ্যাঁ বলতে দুই দিকে ঘাড় নাড়ে। ফলে আমার কেরালিয়ান বন্ধুরা হ্যাঁ বলছে, নাকি না, তা বুঝতে বেশ কিছুদিন সময় লেগেছিল। বুড়ো আঙুল দেখানো সারা বিশ্বজুড়ে বেশ ভাল, কিন্তু ইরানে তা চরম অপমান। আমার ইরাণী বন্ধু হাসান ইজাদি বলেছিল, এমন কি মাঝের আঙুল দেখানোর চেয়েও। আমি একদিন বুড়ো আঙুল দেখানোতে সে কি বিপদ!! ( আচ্ছা, ওখানকার মানুষরা ফেবুতে লাইক করে না?)....

ধান ভানতে এত শিবের গীত গাইলাম, কারণ একবার নিজেই এক বিশাল ফ পা- তে পড়ে গেছিলাম। দিল্লিতে বাঙালীরা এমনিতেই তাঁদের হিন্দির জন্য বিখ্যাত। হিন্দি শুনেই বাঙালী বোঝা যায় শতকরা নব্বই ভাগ ক্ষেত্রে। সব শব্দের শেষে কারণে অকারণে " হ্যায়" বলা বাঙালীর চরিত্রের দোষ। নিজের কানে শুনেছি একজন রিকশাওয়লাকে বলছে " থামিয়ে থামিয়ে, মুঝে হিয়াঁহি গিড়না হ্যায়" কিংবা চিড়ে কিনতে গিয়ে " দুধ সে খানা হ্যায় অ্যায়সা চিড়িয়া দিজিয়ে" বলেছে এক সিনিয়র দাদা। মাদুরের দোকানে গিয়ে অর্ডার দিয়েছে " সোনে কা শতরঞ্চ" দিজিয়ে
( মানে শোবার জন্য শতরঞ্চি চাই).... এমন অনেক আছে।

আসল গল্পে আসি। এক বাঙালী সিনিয়র দাদা নতুন রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট হয়েছে। হস্টেল পায়নি... ঠিক করেছে বাইরে ইন্দ্রপুরীতে থাকবে ঘর ভাড়া নিয়ে। আমি সঙ্গে গেছি। একের পরে এক বাড়ি দেখছি। একটাও পছন্দ হচ্ছে না। শেষে এক বাড়িতে গেলাম। তখন সন্ধ্যে হয়ে গেছে। আমরাও ক্লান্ত। বাড়ির মালকিন তাঁর নতুন সুন্দরী বৌমাকে দায়িত্ব দিলেন আমাদের ঘর দেখানোর। তিনি জানালেন উপরে একটা ভাড়া দেবার মত ঘর আছে, নিচে একটা। আমরা আগে দোতলায় ঘুরে এলাম। মোটামুটি।

সিঁড়ি দিয়ে নেমেই দেখি বৌটি দাঁড়িয়ে। তাঁকে দেখে সেই দাদা একগাল হেসে বললে " ভাবিজি, হাম নে আপকা উপর দেখ লিয়া, আব নিচে দিখাইয়ে...." =p~

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




সামাজিক ফ পা নিয়ে বেশ ক্লাসিক একটি আলোচনা ।
তাইতো কথায় বলে
একজনের বুলি আরেক জনের কাছে তা গালি
সেটা আরো বেশী প্রকট হয় যদি তা ভিন্ন দেশে
ও পরিবেশে ঘটে ।

আধুনিক ফ পা এর আরো অনেক শত শত প্রকার আছে
যা সত্যিই অনেকের কাছে খুবই বিরক্তিকর এমনকি
না বুঝেই প্রচন্ড রাগান্বিত হয়ে অনেক উল্টা সিধা
কাজও করে ফেলতে পারে । যেমনটি দেখা গেল
নীচের ছবিতে ।

১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

গেছো দাদা বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৭

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: দারুন লিখোছেন। উপভোগ্য।

১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৩

গেছো দাদা বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.