নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
'তিলেখচ্চর' ঠিক ওর উপযুক্ত বিশেষণ নয়, তিলেখচ্চরের সুপারলেটিভ ডিগ্রী
যদি কিছু থাকে তবে সেটাই ছিলো প্রদীপের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তুখোড় মেধার
অধিকারী প্রদীপ ছিলো আমার স্কুলের সহপাঠী। কলেজেও দুবছর একসাথে পড়েছি।
তারপর ও মেডিক্যাল পড়তে যাওয়ার পর থেকেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। আবার যোগাযোগ
হোলো আমি কোলকাতায় এসে একটা আস্তানা কিনে একটু গুছিয়ে বসার পর। তা সে
প্রায় বছর পঁচিশেক আগের কথা। আমার বাড়ি থেকে দুটো বাস স্টপ পরেই ওর
চেম্বার। আরও দু জায়গায় চেম্বারে বসে। জমাটি প্র্যাকটিস। দেখা করলাম
একদিন, বাড়িতেও গেছিলাম এক রবিবারে। সুখের সংসার।
একদিন বিকেলে ওর কাছে যেতে হোলো ফ্ল্যাটের এক মাসিমাকে নিয়ে। মাসিমা
অবিবাহিত ছোট ছেলের সঙ্গে একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন। খুবই মিশুকে
ভালো মানুষ ছিলেন উনি। খাস বাঙাল ভাষায় সর্বদা কথা বলতেন। খুব ভালো
রান্না জানতেন। আমার স্ত্রীকে উনি অনেক রান্না শিখিয়ে দিয়েছিলেন।
একদিন বিকেলে অফিস থেকে ফিরবার পর ফ্ল্যাটের দারোয়ান আমাকে বললো মাসিমার
কাছে একটু যেতে। গিয়ে দেখি উনি সমানে হেঁচকি তুলছেন দুপুর থেকে। কিছুতেই
থামছেনা। চোখমুখ লাল হয়ে গেছে, খুবই কষ্ট পাচ্ছেন। ওনার ছেলে ক'দিনের
জন্য কোথাও ট্যুরে গেছে। আমিই ওনাকে নিয়ে প্রদীপের কাছে গেলাম। চেম্বারে
অনেক রুগীর ভিড়, কিন্তু আমি বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে এক পেশেন্ট বেরোবার
পরে ওনাকে নিয়ে প্রদীপের চেম্বারে ঢুকলাম।
সব শুনে প্রদীপ জিজ্ঞাসা করলো - "তোর আপন মাসিমা?"
- "না, ফ্ল্যাটতুতো মাসিমা।"
- "ঠিক আছে। মাসিমা আপনি ওই বেডে একটু শুয়ে পরুন।"
মিনিট দুয়েক বুকে পিঠে চোঙ্গা লাগিয়ে আর পেট টিপে একটু দেখে ও গম্ভীর
ভাবে বললো - "মাসিমা, আপনিতো দেখছি দু মাসের গর্ভবতী।" এই বলে ও আমার
দিকে আড়চোখে তাকিয়ে একটু মুচকি হেসে বেরিয়ে গিয়ে দরজাটা টেনে দিয়ে কোথায়
চলে গেলো।
আমি হতভম্ব ! মাসিমারও কথাটা হৃদয়ঙ্গম করতে দু চার সেকেন্ড সময় লাগলো।
তারপর তিড়িং করে উঠে বেডে বসলেন আর ....
- "কি কইলি তুই আবাগির ব্যাটা, বেজন্মার জাত? আমি গভ্যবতী? আমি
গব্ববতী হইলে তুইও গব্ববতী, তোর বাপও গব্ববতী। আমার তিন কুড়ির উপরে বয়স,
আমার বড় মাইয়ার ঘরের নাতনির বাচ্চা হইবো দুই মাস বাদে আর তুই কস কিনা আমি
গব্ববতী!! আমার সোয়ামী গত হইছে সাত বচ্ছর, আমি সাত্বিক বেধবা বামনী, তিনবেলা পূজাপাঠ না কইরা আমি জলস্পস্য পয্যন্ত করিনা আর তুই কস কিনা আমি
গভ্যবতী!!!"
আমি প্রমাদ গুনলাম। মাসিমা হেঁচকি তোলা দুরস্থান, শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার কথা পর্যন্ত ভুলে গেছেন, অনর্গল লাভাস্রোত নির্গত হচ্ছে জ্বালামুখ দিয়ে,
চোখমুখ লাল। প্রদীপই বা এটা কি ডায়াগনোসিস করলো? গেলোই বা কোথায়?
মাসিমাকে বলতে গেলাম - "মাসিমা একটু শান্ত হন, দেখুন..."
বন্দুকের নল এবার আমার দিকে ঘুরলো। - "তুই চুপ কর ছ্যামড়া। এইডা কোন
কুলাঙ্গারের কাছে আমার লইয়া আইছস? কৈর থন ডাগদারী শিখছে এই উজবুগে?
জম্মের আগেই এইডারে গভ্যপাত করায় নাই ক্যান হ্যার বাপ মায়ে?"
বেগতিক দেখে আমি বাইরে গিয়ে দেখি প্রদীপ পরের পেশেন্টের সিম্পটম লিখছে ভিজিটরস রুমে বসে। আমি কাছে গিয়ে বললাম - "প্রদীপ এটা তুই কি বললি বলতো?"
মুখ না তুলে লিখতে লিখতেই প্রদীপ জিজ্ঞাসা করলো - "এখনো কি উনি হেঁচকি তুলছেন?"
আমি সত্যি কথাই বললাম - "না, হেঁচকি দূরে থাক, তোর চোদ্দ গুষ্টি ছাড়া উনি
আর কিছুই তুলছেন না এখন।"
- "তাইলে তুই ওনাকে নিয়ে ওপাশের দরজা দিয়ে বেরিয়ে বাড়ি চলে যা। আমাকে যেন
দেখতে না পায়।"
( সংগৃহীত )
৩০ শে জুন, ২০২৪ বিকাল ৩:৫২
গেছো দাদা বলেছেন: কি জানি !
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে জুন, ২০২৪ রাত ২:৩১
কামাল১৮ বলেছেন: এর পর হেঁসকি বন্ধ হয়ে গেলো।এটাতো টাটকা চিকিৎসা।ডাক্তারী চিকিৎসা একটা আছে নিশ্চয়।