নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মোদি ভক্ত ! এটা জেনে আপনি দুঃখ পেলে আমি আনন্দিত হব।

গেছো দাদা

গেছো দাদা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রম্য : বৌ এর জ্বালা !

১৪ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ২:০৫

সপ্তাহে চার দিন ভালো থাকা তো তিন দিন ঝগড়া। ঝগড়াটা আসলে আমার বৌয়ের সাথে। কারণটা সেরকম কিছুই না, আসলে আমার দুই বন্ধু; অয়ন আর অর্ণব। জীবনে এরকম দুটো বন্ধু থাকলে সংসারে আগুন লাগবেই। আমার বৌয়ের সাথে ঝগড়াটা শুরু হয় শনিবার রাত থেকে, রবিবার সারাদিন চলে, সোমবার রাত পর্যন্ত থাকে সে মেয়াদ। আমার বিবাহিত জীবনের সবে মাত্র তখন এক বছর। এদিকে বেড়েই চলছে সে অশান্তি। একদিন দুই বন্ধুকেই ডেকে বললাম,
-দেখ তোরা তোদের বৌ'কে নিয়ে প্রতি সপ্তাহে রেস্টুরেন্টে যাস, সিনেমা যাস, ঘুরতে যাস তাতে আমার কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু সেই ছবি ফেসবুক-হোয়াটস্যাপে দিস না। তোরা সরকারি চাকুরে। শনিবার, রবিবার দু দিন ছুটি পাস। আমার তো আর ছুটি থাকে না। চাইলেও সম্ভব নয়। এদিকে তোদের ওই ছবি ছাবলা দেখে আমার বৌ অশান্তি করছে। আমি কেন নিয়ে যাচ্ছি না, সেই নিয়ে। মাসে একদিন ঠিক আছে। কিন্তু প্রতি সপ্তাহে নিয়ম করে নিয়মিত,সম্ভব না ভাই।
ওরা হেসে বলল,
-তা আমাদের কি করার আছে? তুই তোর বৌকে না সামলে আমাদের বলছিস কেন?
-আরে তোরা বন্ধু। তোদেরকে বললে তোরা বুঝবি। বৌ কি ওসব বুঝবে?
আমার কথা শুনে অর্ণব বলল,
-বৌ'কে কন্ট্রোল করা শিখতে হয় বস। আমাদের দুজনেরই বৌ তো ওরকম না! আমাদের কিছু করার নেই। নিজেরটা নিজে সামলাও বস।
-কেন এরকম করিস বল তো? দেখ তোদের ভালোর জন্যই বললাম। শুনলে তোদের মঙ্গল, না শুনলেই বরং বিপদ বেশি তোদের।
এমন কথা শুনে হো হো করে হেসে উঠল দুজনেই। অয়ন বলল,
-দেখা যাক কার মঙ্গল আর কার অমঙ্গল। তবে আমরা প্রতি সপ্তাহেই ছবি পোস্টাব। যে যার ঝামেলা সে নিজেই সামলাক, কি বলিস অর্ণব?
অর্ণব দাঁত কেলাতে কেলাতে বলল,
-ঠিকই তো। কারো বাজে দাবী মানব না মানছি না।
আমি আর কথা বাড়াই নি।বললাম,
-ঠিক আছে।
তারপর থেকে তিন মাস অতিক্রান্ত। আমি আমার সংসারে শান্তি ফেরাতে সক্ষম হয়েছি। দিব্যি আনন্দে আছি। অথচ বৌকে নিয়ে সিনেমা,রেস্টুরেন্টে প্রতি সপ্তাহে যেতেও হচ্ছে না। বৌও আর ঝগড়া করছে না। কিন্তু দুই বন্ধুর সংসারে ততদিনে আগুন লেগে গেছে। ওরা ছবি পোস্ট করাও বন্ধ করে দিয়েছে।
ব্যাপারটা যা হলো তা বেশ মজারই। একদিন সকালেই দেখি দুই বন্ধু আমার বাড়িতে হাজির। রবিবার বলেই আমি বাড়িতে ছিলাম। আমার বৌ সেদিন বাপের বাড়ি গিয়েছিল। ওরা আসতেই দু কাপ কফি দুজনের হাতে ধরিয়ে দিলাম। অর্ণব বিষণ্ণ বদনে বলল,
-কী সব শুরু করেছিস বল তো?
অর্ণবের কথা শুনে আমি আকাশ থেকে পড়ার ভান করে বললাম,
-কেন আমি আবার কি করলাম?
-জানি আমরা ভুল করেছিলাম,তা বলে তুইও?
আমাদের ক্ষমা করে দে। দয়া করে তুই আর ছবি পোস্ট করিস না।
অয়ন মনমরা হয়ে বলল,
-তোর এই সব ছবি দেখে আমার বৌ বিরাট ঝামেলা করছে। আমি কেন তোর মত করছি না? বাড়িতে কাক পক্ষী পর্যন্ত বসতে পারছে না। পরশু রাতে কোনো রান্নাই করল না। শুকনো মুড়ি খেয়ে রাতটা কাটল আমার।
আমি হেসে বললাম,
-যার বৌ সে তো নিজেই কন্ট্রোল করবে। আমি কী করতে পারি তার জন্য?
দুজনেই বলল,
-ভাই সরি। আর কখনো আমাদের ভুল হবে না। প্লিজ তুই আর ছবি পোস্ট করিস না।
বললাম,
-ভবিষ্যতে ভেবে দেখব।
কি বলি বলুন তো! আমি তো কিছুই করি নি। ঘরে থেকে কয়েকটা ঘরের কাজ করেছি মাত্র,আর সেই ছবি, সেই ভিডিও পোস্ট করেছি শুধু। বৌ সেদিন ঘুমিয়ে ছিল। সকাল সকাল উঠে চায়ের কাপ হাতে বৌয়ের মুখে ধরলাম। ছবি তুলে পোস্ট করলাম ফেসবুকে। ক্যাপশনে লিখলাম,
'আমার হাতে চা না খেলে বৌয়ের ঘুমই ভাঙে না।' দুদিন পর দিলাম একটা ভিডিও। বৌয়ের কয়েকটা কুর্তি,শাড়ি নিয়ে ওয়াশ করছি। ক্যাপশনে লিখলাম, 'হাউস হ্যাজব্যাণ্ড হতেও হয়। বৌকে ভালোবাসা মানে শুধু সিনেমা দেখতে যাওয়াই নয়।' কিছুদিন পর আবার একটা ভিডিও দিলাম। ক্যাপশনে লিখলাম,'আমার অফিস ছুটির দিনে বৌয়েরও ছুটি। আজকের সব কাজ বাসন মাজা থেকে রান্না বান্না সব নিজের হাতেই করলাম।' নিজের সংসারে শান্তির জন্য করেছি, ওরা বলে কিনা আমি ওদের সংসারে আগুন লাগাচ্ছি। আমার দোষটা কোথায় বলুন তো? =p~

(সরজিৎ বাবু জানালেন!)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৩:২৪

কামাল১৮ বলেছেন: আনেক দিন পর।ইলেকশন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।

১৪ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:২৩

গেছো দাদা বলেছেন: হ দাদা !

২| ১৪ ই জুলাই, ২০২৪ সকাল ৯:৪১

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: ঠিক আছে।

১৪ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:২৪

গেছো দাদা বলেছেন: ওকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.