নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মোদি ভক্ত ! এটা জেনে আপনি দুঃখ পেলে আমি আনন্দিত হব।

গেছো দাদা

গেছো দাদা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের পোশাক শিল্প : মহম্মদ ইউনুস কি ভারতের বা মোদির হাতের পুতুল ?

১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:২৩

মোদীর ওপর গোসা করে মাটিতে খায় ভাত। হ্যাঁ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এইটাই হয়েছে। ভারত বাংলাদেশের পোশাক পণ্যের জন্য মালবাহী বিমানযোগে ট্র্যানশিপমেন্ট ফ্যাসিলিটি বন্ধ করে দেওয়াতে এমনিতেই পোশাক শিল্পের ওপর বড়সড় ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এখন মহম্মদ ইউনুস গোসা করে বলেছেন বাংলাদেশ এখন আর ভারত থেকে পোশাক শিল্পের জন্য সুতো আমদানি করবে না। বরং তারা নাকি ভিয়েতনাম ও চীন থেকে সুতো আমদানি করবেন। এখানে বলে রাখি যে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প চলে মূলত ভারত থেকে সুতো আমদানি করে। ভারত বাংলাদেশকে এই সুতো রপ্তানি এমনিতেই ধীরে ধীরে কমিয়ে দিত কারণ মোদী সরকার তো ভারতের পোশাক শিল্পকে বিশ্বের এক নম্বর স্থানে নিয়ে যাওয়ার রোড ম্যাপ তৈরি করে রেখেছিল। এখন দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির কারণে বাংলাদেশকে সুতো পাঠানো এক প্রকার বাধ্যতামূলক ছিল তাই এই এক নম্বরে যাওয়ার ব্যাপারে এইটা একটা সমস্যা তো ছিলই। উপরন্তু তুলো হলো কৃষিজাত পণ্য যা ইচ্ছে করলেই যত খুশি উৎপাদন করা যায় না। গত বছর বাংলাদেশে রাজনৈতিক কারণে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল তার জন্য সেদেশের অনেক বৈদেশিক অর্ডার ভারতে চলে এসেছিল। তাই বিশেষ করে খ্রিস্টমাসের কয়েকমাস আগে থেকেই ভারতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এত বেশি অর্ডার এসেছিল যে পোশাক শিল্পের কর্মীদের ব্যাপক ভাবে ওভারটাইম করতে হয়েছে। তখনই মোদী সরকার ভারতের যে পাঁচটি রাজ্যে পোশাক তৈরি হয় সেখানে এই সব কারখানার সম্প্রসারণের কাজ হাতে নিয়েছিল কারণ এখন থেকে এই বাড়তি অর্ডার প্রতি বছরই আসবে। অন্যদিকে উত্তর প্রদেশ সরকার লখনৌ দিল্লি জাতীয় সড়কের কাছেই একটি টেক্সটাইল পার্ক বানিয়ে সেখানে পরিকাঠামো তৈরির কাজ হাতে নিয়েছে যাতে করে বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে চলে আসা কোম্পানিগুলোকে সেখানে উৎপাদনের সুযোগ করে দেওয়া হয়। যোগী আদিত্যনাথের সরকার এমনিতেই উত্তর প্রদেশের জাতীয় সড়কের পাশে নতুন করে নয়টি বিমান বন্দর নির্মাণ করেছে এই রাজ্যকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কাজেই আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই উত্তর প্রদেশ হবে বাংলাদেশের গাজীপুরের মতো পোশাক শিল্পের একটি বড় রকমের ম্যানুফেকচারিং হাব। এই পরিকল্পনায় যে বাধা ছিল সেটি হলো বাংলাদেশকে সুতো পাঠানো। অর্থাৎ ভারত যা চেয়েছিল মহম্মদ ইউনুস সেটি করে দিয়ে ভারতের যে উপকার করলেন এতে যোগী কিংবা মোদীর তো জগাই মাধাইয়ের মতো উদ্বাহু হয়ে নৃত্য করার কথা। তাই ভারতের তরফ থেকে মহম্মদ ইউনুসকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানানো প্রয়োজন। কারণ ভারত এইটাই চেয়েছিল কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলে নিন্দার ভয়ে কিছুই করতে পারেনি। সেই কাজটা মহম্মদ ইউনুস নিজের বীরত্ব দেখানোর জন্য করে দিয়েছেন। ইউনুসের এই বীরত্বব্যঞ্জক সিদ্ধান্তের কারণে ভারতের পোশাক শিল্পের সম্প্রসারণের পথ আরো সুগম হয়েছে।

বিশ্বে পোশাক পণ্য রপ্তানি করে মূলত চারটি দেশ। চীন, বাংলাদেশ, ভারত ও ভিয়েতনাম। এর মধ্যে পরিমাণের দিক থেকে ভারতের স্থান হলো তৃতীয়। প্রথম স্থানে আছে চীন ও দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। এছাড়া পাকিস্তানের রপ্তানি বাণিজ্য মূলত হলো মূলত পোশাক। তবে সামাজিক নিরাপত্তার অভাব, অনুন্নত পরিকাঠামো, বিদ্যুৎ ঘাটতি ইত্যাদির কারণে পাকিস্তানের এই শিল্প প্রতিষ্ঠান যথেষ্ট উন্নতি করতে পারেনি। উপরন্তু পাকিস্তান হলো বিশ্বের একটি প্রধান ইসলামিক জঙ্গি তৈরির কারখানা। যার কারণে বিশ্বের অন্য কোন দেশ পাকিস্তানে এসে কোন শিল্প কারখানা গড়ে তোলে না। এমন কি পাকিস্তানের সর্বঋতুর বন্ধু চীনও পাকিস্তানে কোন ধরণের বিনিয়োগ করে না। তাই বৈদেশিক বিনিয়োগের অভাব এবং আধুনিক প্রযুক্তিগত দিক থেকে পিছিয়ে পড়া দেশটি পোশাক শিল্পে তেমন কিছু করে উঠতে পারছে না। এখন বাংলাদেশ হতে চলেছে পাকিস্তান। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের যে সামাজিক চিত্র সর্বত্র দেখা গিয়েছে সেখানে অমুসলমানদের জন্য জায়গাটি আদৌ নিরাপদ কি না তাই নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে সারা বিশ্বের বিনিয়োগকারীদের মনে। এই উন্মত্ত মব কালচারের কারণে কখন কি হয় বলা যায় না। তাই ভারতের রেমন্ডস সহ অন্য অনেক বিদেশি কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে তাদের কারখানা গুটিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। তাছাড়া শেখ হাসিনা সরকারের আমলে কিছুটা বন্ধুত্বের খাতিরে ভারত সরকার নিজেদের ক্ষতি করে বাংলাদেশকে কাঁচামাল পাঠিয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে গিয়ে ভারতের পোশাক শিল্পের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল এক সময়ে। কাঁচামালের অভাবে পর্যাপ্ত উৎপাদন করতে না পারায় হাজার হাজার কর্মী তাদের চাকরি খুইয়েছিলেন। তাই ভারতের পোশাক শিল্পের ব্যাপক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশে একটি ভারতবিরোধী সরকার। এরা ভারতীয় পণ্য বয়কট ইত্যাদি নিয়ে এত বেশি প্রচার চালিয়েছে যে এতে ভারতের লাভ হয়েছে প্রচুর। কারণ ভারত যদি পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দেয় তাহলে নিন্দাও তো করতে পারবে না। কারণ এটা তো ভারতীয় পণ্য বয়কটের ক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতা। এই সুযোগে ভারত সরকার নিজেদের পোশাক শিল্পের ব্যাপক উন্নয়নের একটি রূপরেখা তৈরি করে ফেলেছে। তাই ২০৩৫ সালের মধ্যে যে ভারত পোশাক শিল্পে চীনকে ছাড়িয়ে বিশ্বের এক নম্বর স্থান দখল করার পরিকল্পনা করেছে সেখানে মহম্মদ ইউনুস যে এইভাবে সহযোগিতা করবেন সেটা ভাবা যায়নি। এখন তো মনে হচ্ছে বাংলাদেশে মহম্মদ ইউনুস প্রধান উপদেষ্টা পদ পাওয়ায় ভারতের দুই হাতে লাড্ডু এসে গিয়েছে।

চীন, ভারত, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের পোশাক রপ্তানির প্রধান বাজার হলো আমেরিকা। তবে পোশাক রপ্তানি বাণিজ্যে চীনকে ঠিক প্রতিদ্বন্দ্বী বলা যায় না কারণ তারা যে ধরণের পোশাক রপ্তানি করে তা অন্য তিনটি দেশ রপ্তানি করে না। মূলত ক্রসেট করা পোশাক রপ্তানি করে চীন। তবে টেক্সটাইল রপ্তানির ক্ষেত্রে non-garment textile পণ্যের ক্ষেত্রে ভারতীয় পণ্যের বিশেষ নাম আছে। যেমন তোয়ালে, জানালা দরজার পর্দা, বিছানা চাদর ইত্যাদি। এই সব পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিতে ভারত যথেষ্ট অগ্রগামী। বিশ্বের অনেক দেশেই ভারতের নন গার্মেন্টস পণ্যের বড় বাজার রয়েছে। এমন কি কোন ধরণের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার না করে তুলোকে নরম করার পদ্ধতি ভারতের ট্রাইডেন্ট কোম্পানির গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন যা দিয়ে যে তোয়ালে তৈরি হয় তা উন্নত দেশগুলির বড় বড় হোটেলে ব্যাপক হারে বিক্রি হয়। এই ধরণের টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে বাংলাদেশ ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বী একেবারেই নয়। তবে পরনের পোশাকের ক্ষেত্রে তো অবশ্যই প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে ভারতীয় পোশাকের দাম কিছুটা বেশি কারণ এগুলো গুণমানে কিছুটা উন্নত। তাছাড়া ভারতে মজুরি বাংলাদেশের তুলনায় বেশি। তবে আমেরিকায় ট্রাম্প সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে দেশ আমেরিকার পণ্যের ওপর যতটা আমদানি শুল্ক অর্থাৎ তারিফ ধার্য করে সেই অনুপাতে সেই সব দেশের ওপর তারিফ লাগানো হবে। যার কারণে বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ, ভিয়েতনামের ওপর ৪৪ শতাংশ ও ভারতের ওপর ২৬ শতাংশ তারিফ ধার্য করেছে। তাই আমেরিকার বাজারে ভারতের যে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ রয়েছে তার থেকে ভারতের ওপর তারিফ লেগেছে কম। তাই বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামকে টেক্কা দিয়ে ভারত আমেরিকায় নিজেদের পণ্য আরো বেশি পরিমাণে বিক্রি করতে পারবে। তাছাড়া বাংলাদেশ ভারত থেকে সুতো কেনা বন্ধ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করায় ভারতের বাড়তি উৎপাদনের সমস্যা অনেকটাই মিটে গেছে।

মহম্মদ ইউনুস ভেবেছেন ভারত থেকে সুতো আমদানির ওপর ব্যান লাগিয়ে দেওয়ায় ভারতের লোকসান হবে। তিনি জানেন না যে কাঁচামাল রপ্তানি থেকে তৈরি পণ্য রপ্তানিতে লাভ হয় বেশি। উপরন্তু এতে করে দেশের মধ্যে কর্ম সংস্থানের সুযোগ ঘটে। ভারতে শ্রমিকের অভাব হবে না। ইউনুস বলছেন তিনি চীন থেকে সুতো নিয়ে আসবেন। তিনি জানেন না চীনের সুতো দিয়ে বাংলাদেশের কারখানা চলে না। এর আগেও চীন থেকে সুতো এনে পোশাক তৈরি করা হয়েছিল যা ইউরোপ আমেরিকায় বিক্রি হয়নি। সব জায়গার তুলো এক রকম হয় না। তাই ওই সুতো দিয়ে চীন হাতে বোনা ক্রসেট পোশাক রপ্তানি করে। সার্বিক দিক দিয়ে আমি এযাবৎ মহম্মদ ইউনুসের কোন ধরণের বুদ্ধিমত্তার পরিচয় কোথাও পাইনি। একটি রাষ্ট্র প্রধান হওয়ার মতো কোন যোগ্যতাই ওনার নেই। যিনি ক্ষমতা হাতে পেয়ে নিজের প্রদেয় আয়কর মকুব করে দেন এহেন চরিত্রের ব্যক্তির হাতে বাংলাদেশের অর্থনীতি মোটেই সুরক্ষিত নয়। তাই ভারত বিরোধীতার ফল বাংলাদেশীরা অবশ্যই পাবেন। যখন হুঁশ ঠিকানায় আসবে তখন মনে হবে অনেক দেরি হয়ে গেছে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:২২

এইযেদুনিয়া বলেছেন: ছবিটা মজার। মাটিতে ভাত খাবার উপমাটাও বেশ।

২| ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:০১

কামাল১৮ বলেছেন: তথ্য বহুল পোষ্ট।প্রতিটা কথায় যুক্তি আছে।
ভক্ত হওয়া কোন ভালো কাজ না।যুক্তি দিয়ে বিচার করুন।ভক্তি দিয়ে নয়।

৩| ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:০৫

কু-ক-রা বলেছেন: উহা (গেছো দাদা) বুদ্ধি প্রতিবন্ধি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.