নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জানা ও জানানোর জন্যই বেচে থাকা। জীবন তো শুধুই কিছু মুহূর্তের সমষ্টি।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমি আর কলেজ সময় থেকে বন্ধু ব্লগার মহিউদ্দীন রুবেল ডেল্টা এর সাথে ঘুরে আসলাম ড্রাগন রাজ্য ভুটান ও ভারতের দার্জিলিং জেলায় অবস্থিত কালিম্পং শহর। এই ব্লগ সিরিজে চেষ্টা করবো আমাদের ভ্রমন কাহিনি ও ভ্রমনে নানা সমস্যা ও পরিস্থিতি থেকে পাওয়া টিপসগুলোও পাঠকদের জানানোর।
পটভুমি
এর বছরের জুলাই মাসে আমার এক সহপাঠী বন্ধু সাবিকের সাথে ঘুরে আসি ভারতে। ব্লগার বন্ধু ডেল্টাও যদিও তখন একাএকা ভারত ভ্রমন করছিল, তার সাথে আমাদের মুলাকাত হয়নি। এমনকি একই সময় আমরা দিল্লিতে থাকার পরও দেখা করার মত পরিস্থিতি ছিল না। তাই ফেসবুকে বন্ধু ডেল্টা জানালো ভবিষ্যতে একসাথে ভ্রমন করার কথা। তখনই প্রথম ভুটানের চিন্তা মাথায় আসে। পরবর্তীতে দেশে ফিরার পর টাকা যোগাড় ও ভুটানের প্রস্তুতি নেয়া শুরু করি।
টিপসঃ বাইরের দেশে ভ্রমন করতে গেলে অবশ্যই ভ্রমন শুরু করার এক-দেড় মাস আগে থেকে সব পরিকল্পনা করে রাখা ভাল। আমরা আমাদের সব প্ল্যান একটি shared Google Doc ফাইলে রেখেছিলাম। যাই চিন্তায় আসতো সেটায় যোগ করতাম। নিম্নোক্ত ব্যাপারগুলো পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন নাঃ
১। কোথায় কোথায় ঘুরতে চান (Destinations)
২। ঘুরার জায়গায় কি কি স্থানে যাবেন (Points of Interest)
৩। কি কি ট্র্যাডিশনাল খাবার খাবেন (Foods and Drinks)
৪। কিভাবে ভ্রমন করবেন (Major Transporation)
৫। ঘুরার জায়গার অভ্যন্তরে কিভাবে ঘুরবেন (Minor Trasnporation)
৬। ভ্রমনের সময় কি কি লাগবে (Travel Elements)
৭। কি কি বিশেষ কাজ করবেন সেখানে (To dos)
৭। বাজেট
মৌলিক পরিকল্পনা
আমাদের পরিকল্পনা ছিল ভুটানের থিম্পু, পারো আর পুনাখা যাওয়ার। এরপর আসার সময় ভারতের কালিম্পং ঘুরে আসার। পুরো সফরটাই হবে সড়কপথে। আর ভ্রমনের ব্যাপ্তি হবে ৭-৮ দিন। বাজেট প্রায় ২০ হাজার টাকা।
ভারতের হাই কমিশনের ভোগান্তির কারনে আমাদের সফর পরে ছোট হয়ে দাঁড়িয়েছিল; থিম্পু, পারো আর কালিম্পং এ। লেগেছিল ৪ দিন। খরচ হয়েছিল সাড়ে ১২ হাজার টাকা।
ভিসা
সড়কপথে ভুটান যাওয়ার জন্য ভারত হয়ে যেতে হবে। সেজন্য লাগে ভারতের ট্রানজিট ভিসা।
আমাদের পরীক্ষা ছিল এই মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত। আমাদের ইচ্ছা ছিল পরীক্ষার মাঝেই আমরা ভারতের হাই কমিশনে ভিসার জন্য আবেদন করবো। ট্রানজিট ভিসায় কোন সমস্যা হয় না, তাই নিজেরাই ইন্টারনেটে ফর্ম পুরন করে দরকারি নথিসহ হাজির হই ভারতের হাই কমিশনে। বন্ধু ডেল্টা আবেদন করে ৩০ তারিখ আর আমি করি ৩১ তারিখ। সাধারনত ট্রানজিট ভিসা এক সপ্তাহের মধ্যে দিয়ে দেয়, তাই ধারনা ছিল পরীক্ষা চলাকালীন সময়েই আমরা পাসপোর্ট ফিরত পেয়ে যাবো (ভিসাসহ বা বাদে) ।
টিপসঃ ট্রানজিট ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদন করা লাগে আর আবেদনপত্র প্রিন্ট করে সেটার সাথে ঢাকা থেকে বুরিমারি যাওয়ার বাসের টিকেট, প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ডের কপি, বিদ্যুৎ বিলের কপি, ব্যাংক ইনডোরসমেন্ট (আমি ৩৫০ ডলার করেছিলাম), পাসপোর্ট এর কপি, জাতীয়পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধনের কপি ইত্যাদি লাগে।
অনলাইনে ফর্ম ফিলআপ করা খুবই সহজ। নিজেরা ফর্ম ফিলআপ করে প্রিন্ট করুন। দালালের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা খরচ করার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজনীয় নথি ও আবেদনপত্রের প্রিন্টসহ হাই কমিশনে যান।
ভারতের হাই কমিশন, ভোগান্তির সমার্থক শব্দ
আমি সময়মত ভিসা পেয়ে গেলেও বন্ধু ডেল্টার পাসপোর্ট ফিরত দেয়নি। তাদের জিগ্যেস করার পর তারাও কিছু বলতে পারে না। আমরা প্রতিদিন ব্যাগ নিয়ে হাই কমিশনের সামনে বসে থাকতাম। আর মধ্যে আমাদের ১৭০০ টাকা গচ্চা গিয়েছে কারন ভিসা আবেদনের সময় বাসের টিকেট দেয়া লাগে, আর বাসের টাইম চলে যাওয়ার পরও তারা পাসপোর্ট ফিরত দিচ্ছিল না। ডেল্টা প্রতিদিন দুপুর ৩টা থেকে হাইকমিশন বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত সেখানে বসে থাকতো, কবে ফিরত দিবে সেই আশায়। তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করার পরও কোন লাভ হয়নি। বরং শুনতে হয়েছে "আর কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসেনি"। অথচ প্রতিদিনই ভোগান্তি ও খারাপ আচরনের স্বীকার অনেক মানুষকে দেখেছি।
বলতে বলতে ১৫ তারিখ এসে পরবো। ভাবছিলাম শিক্ষা হয়েছে আর জীবনেও ভারতের কাছে ট্রানজিট ভিসার জন্য আবেদন করবো না। ঠিক তখনই ডেল্টার ফোনে এসএমএস আসে যে ভিসা পেয়ে গিয়েছে; পাসপোর্ট যাতে হাই কমিশনে গিয়ে ফিরত নেয়।
টিপসঃ যদিও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে বলছি না, তবে চেষ্টা করবেন ভুটানের ভিসা আগে লাগিয়ে নিতে তাহলে ভোগান্তিতে পরার সম্ভাবনা কম থাকে। অথবা একসাথে আবেদন করুন; একসাথে ভিসা না পাওয়ার জন্য এটাও একটা কারন হতে পারে। আমরা এখনো জানি না কেন তারা এখন ঝামেলা করলো, তবে বারবার নিজেদের দিকেই আঙ্গুল দিচ্ছিলাম। আর যদি আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান হয়ে থাকেন তাহলে একেবারে বিমানপথেই চলে যান। খরচ ১২-১৮ হাজার টাকার বেশি মনে হয় পড়বে না।
যাত্রা শুরু
ডেল্টা এমএমএস এ খবর দিল ভিসা পাওয়ার কথা। ভাবলাম পেয়ে যখন গিয়েছিল স্থান ও সময় কমিয়ে ঘুরে আসি। তাই সাথে সাথে ব্যাগ নিয়ে গাবতলীর দিকে রওনা দেই। একটি বাসে তখনই টিকেট কিনে রওনা দেই লালমনিরহাট জেলার বুরিমারিতে। ১৫ তারিখ রাত ৮টা ৩০ এ বাস যাত্রা শুরু করে; আর নিচের ছবিটা সকাল ১১টার। বাংলাদেশ পাড়ি দিয়ে ভারতের চেংড়াবান্দায়।
আরও পড়ুন
ড্রাগন রাজ্য ভুটানে গোপী-বাঘা (পর্ব-২)ঃ ২৯ ঘণ্টার সফর > ঢাকা থেকে থিম্পু
ড্রাগন রাজ্য ভুটানে গোপী-বাঘা (পর্ব-৩)ঃ থিম্পু সফর
২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪২
স_লামিসা বলেছেন: ভারতের "ভিসা সংক্রান্ত" জটিলতার কথা অনেক বছর ধরেই শুনছি।
জেনে মর্মাহত হলাম, অবস্থার কোন ধরনের উন্নতি নেই।
অনেক আগ্রহ আর কৌতূহল নিয়ে, পরবর্তি পর্বের অপেহ্মায় থাকলাম।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫১
জিএমফাহিম বলেছেন: স্টুডেন্ট ভিসায় ভারত যাওয়ার জন্য এক ছেলে তার বড় ভাইএর সাথে মেহেরপুর থেকে এসেছিল। আর্থিকদিক থেকে খুব একটা সচ্ছল না। ঢাকায় পরিচিতও কেউ নাই। হাই কমিশন ভিসা দিতে দেরি করছে তাই ক্লাস মিস হয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় সস্তা হোটেলে; খেয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে হাইকমিশনের শুভদৃষ্টির আশায়। মেডিক্যাল ভিসার প্রার্থীদেরও দেখলাম। ট্রানজিট ভিসারও অনেককে। এইসব দেখে খুবই খারাপ লেগেছে। অভিযোগও করেছি সচেতন নাগরিক হিসেবে। এরপরও কবে যে সব ঠিক হবে।
৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:০৯
মহিউদ্দীন রুবেল ডেল্টা বলেছেন: লিখতে থাকুন। সংগে আছি ভ্রমণে ও ভ্রমণকাহিনীতে।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৩৩
জিএমফাহিম বলেছেন:
৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:১০
স_লামিসা বলেছেন: হুমম।
বিষয়টি গুরুতর সমস্যার দিকেই ধাবিত হচছে।
তবে একই পরিস্থিতির ঠিক ভিন্ন চিত্র, ভরতে অবস্থিত বাংলাদেশ এর হাইকমিশন গুলোতে।
আমরা আশা করতে পারি, এর থেকে ভারতীয় বা যে কোন হাইকমিশন বা এম্বেসি অনুপ্রাণিত হতে পারে।
LETS THINK POSITIVE.
৫| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৪৯
সাহা স্বরূপ বলেছেন: খরচের বিষয়টা উল্লেখ করাতে ভাল হয়েছে । আমিও ঘুড়তে যাবার আগ্রহ পেলাম .
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:১০
জিএমফাহিম বলেছেন: খরচের ব্যাপারগুলো মুলত দ্বিতীয় পর্ব থেকে শুরু। এখানে শুরু ভারতের ট্রানজিট ভিসার খরচ আছে, যেটা ৬০০ টাকা। আর কোন খরচ নাই।
৬| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৫৬
অদৃশ্য বলেছেন:
শুরু করলাম... প্রথম পর্বটা কিছুটা হলেও মনখারাপের, কেননা আপনার প্ল্যান থেকে অনেক কিছুই কাটছাঁট করতে হয়েছে... যাক তারপরেও তো হয়েছে... না হলে এই শুরুটাতো হতোনা আর আমরাও বঞ্চিত হতাম...
শুভকামনা...
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:০৩
জিএমফাহিম বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০২
প্রামানিক বলেছেন: চলুক সাথে আছি।