নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানা ও জানানোর জন্যই বেচে থাকা। জীবন তো শুধুই কিছু মুহূর্তের সমষ্টি।

জিএমফাহিম

জানা ও জানানোর জন্যই বেচে থাকা। জীবন তো শুধুই কিছু মুহূর্তের সমষ্টি।

জিএমফাহিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিটলার কি ভেজেটেরিয়ান ছিলেন ?

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩১



হিটলার মারা যাওয়ার ৭০ বছর পরও তার প্রোপাগান্ডা আজও আমাদের মাঝে জীবিত আছে আর একটা বড় নজির এটা। "হিটলার কিন্তু ভেজেটেরিয়ান ছিল" ভিগান লাইফস্টাইল মেনে চলার কারণে প্রায়ই এই কথা শুনতে হয় (যেন হিটলার ভেজেটেরিয়ান হওয়ায়, সেটা হওয়া পাপ হয়ে যাবে)।

( ১) নাৎসি জার্মানিতে হিটলারকে রীতিমত উপাসনা করা হত; অথচ তার কোন বক্তব্যে, কোন লেখায় ভেজেটেরিয়ানিজমকে প্রচার করার কোন উদ্যোগ নেই। তিনি কি জার্মানির এনিমেল ফার্মগুলো বন্ধ করেছিলেন? সেটাও করেননি। উল্টো সে সময়কার পরিবেশবাদি ও প্রাণীসংরক্ষণ সংস্থাগুলো বন্ধ করে দেয় মার্ক্সবাদ বিরোধী আইনের মাধ্যমে।

( ২) যদিও হিটলার অধিকাংশ সময় উদ্ভিজ খাবার খেতেন। কিন্তু তার অফিসিয়াল প্রধান বাবুর্চিদের লেখা বই থেকে জানা যায় যে তার প্রিয় খাবার গুলোর মধ্যে ছিল লিভারের ডাম্পলিং, হ্যাম আর ক্যেভিয়ার (সমুদ্রের মাছের ডিম)। এইসব খাওয়ার পর হিটলারকে ভেজেটেরিয়ান বলা যায় কি?

উল্লেখ্য যে, ভেজেটেরিয়ান কথাটার সংজ্ঞা নানা সময়ে নানাভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। আমাদের সমাজে ডিম, দুধের মত প্রাণীজ খাবার খেলেও সে ভেজেটেরিয়ান থাকে। নাগাল্যান্ড এর মত জায়গায় গিয়ে দেখবেন সেখানে মাছ খেলেও আপনি ভেজেটেরিয়ান। অনেক জায়গায় শুধু মাংস না খেলে আপনি ভেজেটেরিয়ান। যদিও হিটলারকে ভেজেটেরিয়ান বলা কোন সুস্থ সমাজের সংজ্ঞার সাথে যায় না। তাহলে কীভাবে ?

(৩) হিটলার অনেক চেষ্টা করেছে নিজেদের দেশের মানুষের কাছে ভালবাসা ও শ্রদ্ধার জায়গায় নিয়ে যেতে। হিটলারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আর প্রগাগান্ডা মন্ত্রী জোসেফ গোবেলস চেয়েছিলেন হিটলারকে সবার ভালবাসার পাত্র করতে। সেই সময় সবার ভালবাসার পাত্র কে ছিলেন ? মহাত্মা গান্ধি; সে ছিলেন ভেজেটেরিয়ান। জোসেফ হিটলারকে মহাত্মা গান্ধির মত মহান ও দরদী হিসেবে প্রচার করেছেন। নেট ঘাটলে কুকুর, হরিণের সামনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ফটোগ্রাফের অভাবও পাবেন না।

১৯৩৭ সালে নিউইয়র্ক টাইমস যখন হিটলারকে নিয়ে আর্টিকেল লিখে তখন তাকে ভেজেটেরিয়ান বলে; কিন্তু সেই আর্টিকেলেই তার শুকরের উরুর মাংস খাওয়ার কথার উল্লেখ আছে। টাইটেলের ভেজেটেরিয়ান কথাটি এখনো আমাদের কথায় রয়ে গিয়েছে।

( ৪) ইহুদিদের জন্য যে কনফ্রন্টেশন ক্যাম্প বানানো হয়েছে সেখানে প্রাণীদের ফার্ম, কসাইখানাও ছিল। মিত্র শক্তি এসে ক্যাম্প বন্ধ করেছে। কিন্তু সেই ফার্মগুলো আজও চলছে।

মোদ্দাকথা

জেনারেলাইজ করাটা জড় বুদ্ধির মানুষের স্বভাবত বৈশিষ্ট্য। পশ্চিমা জাতিবাদিরা সকল মুসলিমকে সমানভাবে মন্দ ভাবেই দেখে, মধ্যপ্রাচ্য বা আমাদের উপমহাদেশের গোঁড়া মুসলিমদের একটা বড় অংশ আবার ইহুদি সবাইকে একইভাবে মন্দ বলে। অথচ সকল ধর্ম, জাতি, বর্ণে ভাল ও মন্দ উভয়েরই নজর পাওয়া যায়।

ভেজেটেরিয়ানও সবার সমান কারণে হয় না। আর ভেজেটেরিয়ান আর ভিগান এক জিনিস না। ভেজেটেরিয়ান শুধু খাদ্যাভ্যাসের সাথে জড়িত। অনেকে স্বাস্থ্যগত কারণে ভেজেটেরিয়ান, অনেকে আধ্যাত্মিকতার চর্চার নামে। আমার ১০০% উদ্ভিজ খাদ্যাভাস মেনে চলা মানুষকে ভিগান বলে চালিয়ে দেয়া হয়। তাও বেঠিক। বহুত সেলেব্রেটি এক দিকে উদ্ভিজ খাবার খায় অন্যদিকে চামড়ার কাপড় পড়ে, সার্কাস-চিড়িয়াখানায় বিনোদন নেয়। এরা কোণভাবেই সংজ্ঞাগত ভিগান এর সাথে মানানসই না। কারণ ভিগান হচ্ছে "নুন্যতম নিষ্ঠুরতার মাধ্যমে বেচে থাকা" হিটলার মোটেই এটা ছিলেন না। ফলে তাকে ভিগান আলোচনায় নিয়ে আসা গণ্ডমূর্খতা।

আশা করি হিটলার সম্পর্কে সবার ধারনা স্বচ্ছ হবে। আর আরও গঠনমূলক ভিগান পক্ষে বিপক্ষের আলোচনা আমরা সামনে পাবো। সবাইকে ধন্যবাদ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হিটলার সম্পর্কে আরও কিছু জানা হলো।


ধন্যবাদ ভাই জিএমফাহিম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.