নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কারো কাছে নেই কোন অভিমানের দেনাপাওনা, নেই কোন কষ্টের হিসাব, তবুও লুকিয়ে থাকা হাহাকার পরম যতনে আগলে রাখি-- প্রথম পাওয়া চিঠির মত, আমি এই রকমই বন্ধু ।

জিএম হারুন -অর -রশিদ

আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম

জিএম হারুন -অর -রশিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ এই শহরের মন খারাপ

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:২৪


আজ এই শহরের মন খুবই খারাপ
যে বৃষ্টি কথা দিয়েছিলো আজ চৌরাস্তার মোড়ে ঝরবে,
সেই বৃষ্টি কাঁদতে কাঁদতে মেঘের মাঝে ঘুমিয়ে আছে লজ্জায়,
চৌরাস্তার ট্রাফিক সিগ্যনালের লাল বাতিগুলোরও মন খারাপ,
কেউ তাকিয়েও দেখছে না তার হালকা লাল আলেকে,
তীব্র এক অবহেলাবোধে সে মন খারাপের হলুদ হয়ে যাচ্ছে যখন তখন,
ল্যাম্পপোষ্টগুলো নিসংগ বোধ করছে,
কেউ তার গায়ে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে ও দেখছে না,
সবচেয়ে অপরাধে ভুগছে বেওয়ারিশ কুকুরগুলো
তারা শুধু চিৎকার করে রাতের স্তব্ধতাকে বিরক্ত করেছে,
আর এই শহরের মানুষগুলো প্রতীক্ষায় আছে নতুন খবরের আশায়,
আর পুরোনো খবর ভুলে যাওয়ার অপেক্ষায়।

গ্রামের যে মেয়েটি স্বপ্ন দেখেছিলো
বড় হয়ে একদিন শহর দেখবে,
সে সবুজ ধান ক্ষেতের আইল ধরে হাটতে হাটতে,
প্রেমিকের কাছে শহরের গল্প শুনে শিহরিত হতো,
আর মনে মনে ভাবতো ,
শহর তাকে একদিন ডাকবে।

শহর তাকে ডেকেছিলো,
প্রেমিক বলেছিলো,“চলো শহরে পালাইয়া বিয়ে করি”
তারপর রাতের গাড়ীতে শহরে নেমেছিলো তারা,
শহরে নামার পরই একটি প্রায় খালি বাসে উঠেছিলো,
একসময় বাসটি শহরের মাঝদিয়ে বাতাসের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছিলো।

মেয়েটি রাতের শহরের ল্যাম্পপোষ্টের নিয়ন আলো দেখে প্রেমিক’কে বলেছিলো
“এতো সুন্দর আলো,
মনে হয় এক একটা চাঁদ ঝুইল্লা আছে”
মেয়েটি শহর দেখতে গিয়ে এতোই মুগ্ধ হয়েছিলো যে রাতের আলোতে চেহারায় স্বপ্ন খেলছিলো,
আর ছেলেটি সেই মুগ্ধতায় নিজেকে বাংলা ছবির নায়ক ভাবছিলো।

বাসের সব আলো কখন নিভেছে,
দরজা জানালা বন্ধ হয়েছে তারা খেয়ালই করলো না,
যখন বুঝলো ততক্ষনে মেয়েটির শরীরে রাতের শহরের কিছু সাপ ছোবল দিচ্ছিলো,
আর ছেলেটি নিজের জীবন বাঁচাতে
চুপ হয়ে সেই ছোবল গুনছিলো।

বাসের সিটে শুয়ে থেকে মেয়েটি বাসের ছাদের দিকে তাকিয়ে শুধু ভাবছিলো,
“রাইতের শহর যদি এতো সুন্দর হয়,
দিনের শহর না জানি কতো সুন্দর!!”
তারপর অনন্তকাল পরে সাপদের বিষ দেওয়ার ক্ষমতা যখন শেষ হলো,
তখনই মেয়েটির শহরও দেখা শেষ,
বাসটি চৌরাস্তার মোড়ে চলন্ত অবস্হা দুজনকে ফেলে চলে গেলো,
কিছু বেওয়ারিশ কুকুর শুধু চিৎকার করে তাদের মৃত্যুকে ভয় দেখানোর বৃথা চেষ্টা করেছিলো।

এই মৃত্যুর সাক্ষী এই শহর,
সাক্ষী এই ট্রাফিক সিগ্যনালের বাতিগুলো,নিসংগ ল্যাম্পপোষ্টগুলো,
আর বেওয়ারিশ কুকুরগুলো,
ছেলে আর মেয়েটির রক্তের দাগ মুছে দেওয়ার জন্য এই শহর রাতেই বৃষ্টিকে অনুরোধ করেছিলো,
এই লজ্জার দাগ এই শহর দিনের আলো ফুটার আগেই মুছতে চেয়েছিলো,
কিন্ত্তু বৃষ্টি ঝরলো না কষ্টে।

শুধু এই শহরের মানুষের জন্য একদিনের একটি খবর বের হলো,খবর পড়ে তারা মনে মনে বললো,
“এভাবে রাতের বেলায় কোনো মেয়ে মানুষ বের হয় শহরে,
প্রচন্ড বোকা”
তারপর পরদিনই সবাই ভুলে গেলো পুরাতন খবর,
শুধু বেওয়ারিশ কুকুর গুলো অপরাধে ভুগছে।
——————————
রশিদ হারুন
২৪/১৯/১৮

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৭:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: দৌড় দে, দৌড় দে
সময় থাকতে দৌড় দে,
মাথায় একখান গামছা বাইন্ধা
যেমনে পারস দৌড় দে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.