নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কারো কাছে নেই কোন অভিমানের দেনাপাওনা, নেই কোন কষ্টের হিসাব, তবুও লুকিয়ে থাকা হাহাকার পরম যতনে আগলে রাখি-- প্রথম পাওয়া চিঠির মত, আমি এই রকমই বন্ধু ।

জিএম হারুন -অর -রশিদ

আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম

জিএম হারুন -অর -রশিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পিতৃঋণ-১১

০৭ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৫১


আমার কেরানী বাবা আমার জন্মের পর,
সংসারে আমাদের কিছুটা ভালো রাখার জন্য,
অফিস ছুটির পরও
-দুটো টিউশনি শেষে রাত করে বাড়ি ফিরতেন।
এমনকি উনার অফিস ছুটির দিনগুলোতেও,
নিউমার্কেটের দুটো শাড়ির দোকানের হিসাবের খাতা মিলিয়ে দিতেন সারাদিন ধরে।

শৈশবে আমি আমার বাবাকে খুব কমই দেখেছি বাড়িতে।
উনি কখন বের হতেন আর কখন ঘরে ফিরতেন,
বলতেও পারতাম না ঠিকমতো।

বাবা মারা যাবার পর,
মার কাছ থেকে আমাদের এই সত্য ইতিহাস শোনার পর,
আমার জীবন পুরোপুরি বদলে গেছে।
আমি এখন অফিস পাড়ায় ঘুরে ঘুরে স্বল্প বেতনের কেরানীদের সাথে ভাব জমানোর চেষ্টা করি।
তাদের গল্পগুলোতে শুধু ‘নাই আর নাই’ এর লজ্জিত হাহাকারের ধুলো।
সেই হাহাকারের ধুলো বুকে মেখেই বাড়ি ফিরি,
আর তাদের জীবনের মাঝে আমার বাবার জীবন খুঁজি।

বাবার এই পরিশ্রমের ইতিহাস জানার পর এখন মনে হয়,
আমার বাবা ছিলেন একজন প্রাচীন ‘সংসারের শ্রমদাস’।

ছুটির দিন আসলেই মনে হয়,
আমার মৃত বাবা বোধ হয় সংসারে আমাদের কিছুটা ভালো রাখার জন্য,
এখনো সারাদিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করছেন।

আমি যথেষ্ট ‘আরাম প্রিয় মানুষ’ হওয়ার পরও,
এখন প্রতিটি ছুটির দিনেই বাবার কবরে চলে যাই।
সারাদিন কবরের পাশে বসে থাকি,
রাত করে বাড়ি ফিরি,
যদি বাবার কোন পরিশ্রমে হাত লাগাতে পারি।

মার কাছ থেকে এই ইতিহাস শোনা ঠিক হয়নি আমার,
আমি নিশ্চিত,
এই জীবনে আমি আর কখনোই একটিও ছুটির দিনের দেখা পাবোনা।
————————
রশিদ হারুন
০৭/০৮/২০২০

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: বড় বেদনাদায়ক কবিতা।

০৭ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৩৮

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ভালো থাকুন সব সময়
ধন্যবাদ
শুভকামনা রইল

২| ০৭ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:১২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার কবিতা পড়ার পর আমার চোখ ভিজে আসছে। একজন সত্যিকারের বাবা ছিলেন আপনার বাবা, যার সাথে আমার বাবার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের শতভাগ মিল পাই। আপনার বাবার মাহাত্ম্যকে তুলে ধরতে গিয়ে আপনি নিজেও নিজের অজান্তে আপনার মাহাত্ম্যের পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে দিলেন। বাবার প্রতি এমন শ্রদ্ধাবোধ ও কৃতজ্ঞতাবোধ খুব কম দেখা যায়।

এই যে আপনি লিখেছেন, বাবাকে খুবই কম দেখেছেন, এ জিনিসটা উপলদ্ধির মধ্যেই বাবার সার্থকতা এবং সন্তানের মাহাত্ম্য নিহিত। অনেক সন্তান, এমনকি স্ত্রীও এটাকে নেগেটিভলি দেখে, যেহেতু তিনি বাড়িতে তেমন সময় দিচ্ছেন না। অথচ, এ সংসারের জন্যই তিনি উদয়াস্ত বাইরে পড়ে থাকছেন, এ ব্যাপারটা অবলীলায় ভুলে যান।

আপনার লেখাও সাবলীল।

শুভ কামনা রইল।

০৭ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৪২

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ
অনেক ভালো থাকুন
আপনার বাবার জন্য প্রার্থনা রইল

৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৪৮

ওমেরা বলেছেন: সব বাবারাই এরকম, স্ত্রী, সন্তানকে একটু সুখে রাখার জন্য কত পরিশ্রম করেন তবে আপনি আপনার পিতার কষ্টটাকে যে ভাবে উপলদ্ধি করতে পেরেছেন কিছু সন্তানেরা হয়ত সেটা পারে না ।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ।

০৭ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৪৩

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন:
ধন্যবাদ
অনেক ভালো থাকুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.