নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গাজী মুহাম্মদ শওকত আলী

গাজী মুহাম্মদ শওকত আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ন্যায়নিষ্ঠ শাসক ও নাগরিকের দায়িত্ব

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪০

ন্যায়নিষ্ঠ শাসক ও নাগরিকের দায়িত্ব
গাজী মুহাম্মদ শওকত আলী

শাসকের দায়িত্ব সম্পর্কে আল কুরআন:- শাসকের প্রতি সুরা আন নাহলের ৯০ নম্বার আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ হচ্ছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছে তোমরা ন্যায়বিচার ও ইহসান করো’। সুরা হুজরাতের ৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করছেন, ‘তোমরা ইনসাফ করো, নিসন্দেহে আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালোবাসেন’।

শাসক বা বিচারক সম্পর্কে হাদিস:- ন্যায়বিচারক বা শাসক সম্পর্কে সহীহ আল বুখারী ও মুসলিম শরীফের হাদিসে; ‘হযরত আবু হুরায়রাহ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (স) বলেছেন, ‘কঠিন হাশরের দিনে যখন মহান আল্লাহ তায়ালার আরশের ছায়া ব্যতীত আর কোথাও কোন ছায়া থাকবে না তখন মাত্র সাত শ্রেণীর মানুষ আল্লাহ তায়ালার আরশের নিচে ছায়া পাবে তাদের মধ্যে প্রথম হচ্ছে, ন্যায়পরায়র শাসক বাদশা বা বিচারক, দ্বিতীয়, ঐ যুবক যে মহান আল্লাহ তায়ালার ইবাদতের মাঝে বর্ধিত হয়েছে, তৃতীয়ত:, ঐ ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সংগে সংযুক্ত থাকে, চতুর্থ, ঐ দু‘ব্যক্তি যারা আল্লাহরই জন্য পরস্পরকে ভালোবাসে, আল্লাহরই জন্য পরস্পর মিলিত হয় এবং আল্লাহরই জন্য পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়, পঞ্চম, ঐ ব্যক্তি যাকে অভিজাত বংশের কোন সুন্দরী রমণী কুকাজে প্রস্তাব করে জবাবে সে বলে আমি আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করি, ষষ্ঠ, ঐ ব্যক্তি যে গোপনে দান করে, এমনকি তার ডান হাত কি দান করে তার বাম হাত তা জানে না; সপ্তম, ঐ ব্যক্তি যে এককী নিভৃতে আল্লাহকে স্মরণ করে দু‘চোখের অশ্রু ঝরায়’। মুসলিম শলীফের হাদিসে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূল (স) বলেছেন, নিশ্চয়ই যারা ইনসাফ ও ন্যায়বিচার করে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে তারা নূরের মিম্বরে আসন গ্রহণ করবে। এরা হচ্ছে এমন লোক যারা তাদের বিচার ফয়সালার ক্ষেত্রে পরিবার-পরিজনের ব্যাপারে এবং যেসব দায়-দায়িত্ব তাদের ওপর অর্পণ করা হয় সেসব বিষয়ে ন্যায়পরায়নতা ও সুবিচার করে’। মুসলিম শরীফের অপর হাদিসে হযরত ইয়াদ ইবনে হিমার (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (স) বলেছেন, জান্নাতের অধিকারী হবে তিন শ্রেণীর লোক, প্রথমত: ন্যায়বিচারক বা শাসক, যাকে তাওফিক দান করা হয়েছে; দ্বিতীয়ত: কোমল হ্যদয় ও নরম দিল লোক যার অন্তরে প্রত্যেক আত্মীয়-স্বজন ও মুসলিম ভাইদের প্রতি অতিশয় কোমল ও নরম আর তৃতীয়ত: যে লোক শরীর ও মনের দিক থেকে পুতপবিত্র, নিষ্কলুষ চরিত্রের অধিকারী ও সন্তান বিশিষ্ট তথা সংসারী’।

মুসলিম শরীফের অপর একটি হাদিসে হযরত আউফ ইবনে মালিক (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (স) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে ভালো শাসক বা কর্ণধার হচ্ছে তারা-যাদেরকে তোমরা বালোবাসো এবং তারাও তোমাদেরকে ভালোবাসে। তোমরা তাদের জন্য দোয়া করো, তারাও তোমাদের জন্য দোয়া করে। অপর দিকে মন্দ ও নিকৃষ্ট শাসক হচ্ছে তারা যাদেরকে তোমরা ঘৃণা করো আর তারাও তোমাদের ঘৃণা করে’।

নাগরিকদের দায়িত্ব সম্পর্কে আল কুরআন:- সুরা আন নিসার ৫৯ নম্বর আয়াতে নাগরিকদের প্রতি আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ করছেন, “হে ইমানদারগণ ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্র করো আর আনুগত্য করো রাসূলের ও তোমাদের মধ্যে কর্তত্বশীল ব্যক্তির”। এখানে কর্তৃত্বশীল ব্যক্তি বলতে দেশের শাসক ন্যায়বিচারক বা ইসলামী আন্দোলনের নের্তৃত্বকে বুঝানো হয়েছে।

নাগরিকদের দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে হাদিস:- সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফের হাদিসে হযরত ইবনে উমর (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (স) বলেছেন, প্রত্যেক মুসলমানের ওপর শাসকের ও নেতার কথা শ্রবণ করা ও আনুগত্য করা অবশ্য কর্তব্য যা তার পছন্দ হোক বা অপছন্দ হোক। যতক্ষণ না আল্লাহর নাফরমানী আদেশ দেয়া হয়। আল্লাহর নাফরমানীর আদেশ দেয়া হলে তা শ্রবণ করা ও আনুগত্য করা যাবে না’। সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফের আরো একটি হাদিসে হযরত ইবনে উমর (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূল (স) এর নিকট শ্রবণ ও আনুগত্য করার ওপর বাইয়াত গ্রহণ করতাম; তখন তিনি আমাদের বলতেন, ঐ সব বিষয়ে তোমাদের প্রত্যেকের আনুগত্য করা ফরজ, যেগুলো তোমরা করতে সক্ষম’। সহীহ আল বুখারীর অপর হাদিসে হযরত আনাস (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (স) বলেছেন, তোমরা শ্রবণ করো ও তার আনুগত্য করো যদিও তোমাদের ওপর কোন হাবশী গোলামকেও শাসক নিয়োগ করা হয় এবং তার মাথা দেখতে আঙ্গুরের মতোই হোক না কেন’।

অতএব, ন্যায়বিচারক বা ভালো শাসকের পারিবারিক বা কোন দলীয় পরিচয় থাকবে না। বিচারক বা শাসক হবেন জনপদের বা দেশের সকল জনগণের জন্য কল্যাণকামী, ন্যায় প্রতিষ্ঠা, ইনসাফ ও ইহসান প্রতিষ্ঠাকারী। অপর দিকে নাগরিকদের দায়িত্ব হচ্ছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যের সাথে সাথে জনপদের বা দেশের ন্যায়পরায়ন শাসক বা বিচারকের আনুগত্য করা। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যের মধ্যে থেকে দেশে আইন মেনে চলা, বিশৃংখ্যলা সৃষ্টি না করা। কোথাও কোন অসমাজস্য দেখা দিলে তা আইনানুগ পন্থায় ও কৌশলে তা দুর করার চেষ্টা করা।


মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.