![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
---আমি অতি উৎসাহী কিছু পুরুষ কে দেখেছি যারা তাদের বীর্যপাতের সফল প্রচারের মাধ্যমে নিজের পৌরুষত্বের অস্তিত্বের প্রকাশ করছে আর পুরুষের সাথে নারীর পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে।
---আমি অতি উৎসাহী কিছু নারী দেখেছি যারা নারী হওয়া সত্ত্বেও নারীত্বের অধিকারের দাবী না নিয়ে পুরুষের অধিকার প্রচার করতে ভালোবাসে।
---আমি কিছু লাজুক পুরুষ-নারী দেখেছি যারা মুখ ফুটে নিজের অধিকারের কথা বলতে পারে না লজ্জার কারণে কিন্তু ধুঁকে ধুঁকে মরে।
মিসেস ওয়াহিদারর নেতৃত্বে ''অপরাজেয় বাংলাদেশ'' নামের একটি সংগঠন থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশের নারীরা যেন খুব কম খরচেই নারীত্বের ব্যাপারগুলো পরিচর্যা করতে পারে। খুব সহজ বাংলায় বললে বাংলাদেশের দরিদ্র সকল নারীরা পিরিয়ডের সময় প্যাড ব্যাবহার নিশ্চিত করা যাতে করে তারা তাদের অধিকারের গল্প একটু সামনে নিয়ে যেতে পারে। এর থেকেই মূলত আলোচনার শুরু।
তারপর সে সংগঠন সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে এর সমর্থন করে প্রচারণা চালাতে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। তখন এক শ্রেণীর পুরুষ সমাজ বলে উঠলো নারীরা যদি প্রকাশ্যে তাদের পিরিয়ডের কথা বলতে পারে তাহলে আমরা কেন আমাদের বীর্যপাতের কথা বলতে পারবো না?
শুরু হল একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর নারী এবং একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর পুরুষের মাঝে সাইবার যুদ্ধ। সে যুদ্ধের অবস্থা এতটাই খারাপ দিকে যেতে থাকলো যে ঐ নির্দিষ্ট শ্রেণীর পুরুষেরা তাদের বীর্যপাত, স্বপ্নদোষ আরও কি কি নিয়ে যেন লেখা শুরু করলো আর সাথে নারীকে ধিক্কার দিয়ে যাচ্ছে। আর অন্য নারী পক্ষ তাদের সমস্যার কথাগুলো তুলে ধরে পুরুষদের তুলাধুনা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আর এক শ্রেণীর নারীরা বলতে চাচ্ছে, নারীত্বের ব্যাপার গুলো ভিতরেই রাখা উচিত। সেগুলো পুরুষের সামনে টেনে না আনাই ভালো।
এখানে আমরা দেখতে পেলাম একটি ইস্যু নিয়ে কয়েক শ্রেণীর মানুষের জন্ম হয়েছে, আর সৃষ্টি হচ্ছে নতুন মতামতের। কে কি বলল আমি সেদিকে যাবো না। আমি জাস্ট আমার মত করে কিছু বলার চেষ্টা করছি। ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
আচ্ছা এটা কত সাল? নিচ্ছয়ই ২০১৫!!!
ওকে ফাইন। বেশি না, আমরা জাস্ট ১০০ বছর আগে ফিরে যাই।
তার মানে আমরা ১৯১৫ সালের কথা বলছি।
আচ্ছা তখন নারীদের সাথে কেমন আচরণ করা হত?
--নারীরা শিক্ষিত হতে পারতো না।
--এটা মনে করা হত যে নারীরা কেবল রান্না করার জন্য জন্মেছে।
--এটা মনে করা হত যে নারীরা পুরুষের ভোগপণ্য ছিল।
--নারীদের মতামতের কোন মূল্য ছিল না।
আরও অনেক আছে তাই আর বেশি বললাম না।
তখন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নামের একজন নারী অগ্রদূত এসে নারী বিপ্লবের শুরু করে দিয়েছিলেন। যার ফলে নারী তার গণ্ডি থেকে অনেকটাই উপরে উঠতে পেরেছিল।
আচ্ছা কথা বলছিলাম কত সাল নিয়ে? নিশ্চয়ই ১৯১৫!!!
ওকে ফাইন। বেশি না, আরও ১০০ বছর আগে ফিরে যাই। তাহলে ১৮১৫!
তার মানে বর্তমান থেকে ২০০ বছর আগের কথা বলছি আমরা।
আচ্ছা তখন নারীদের সাথে কেমন আচরণ করা হত?
--কন্যা সন্তান জন্ম নিলে মানুষ পাপ মনে করতো।
--তখনও নারীদের দাস হিসেবে কেনাবেচা হত।
--নারীদের কে মানুষের কাতারে ধরা হত না।
--সতীদাহ প্রথার প্রচলন ছিল। যার মানে হচ্ছে কোন নারীর স্বামী মারা গেলে মৃত স্বামীকে পোড়ানর পাশাপাশি স্ত্রী জীবিত থাকলে তাকে সহ একসাথে পুড়িয়ে ফেলা হবে। তখন রাজা রামমোহন রায় সাহসী ভূমিকা নিয়ে নিজের ধর্মের বিরুদ্ধে গিয়ে এ সতীদাহ প্রথার প্রচলন বন্ধ করলেন। বিপ্লবের শুরুটা এভাবেই হয়েছে।
অনেকেই হয়তো জানতে চাইবেন সতীদাহ প্রথার সাথে বর্তমান নারীদের পিরিয়ডের সম্পর্ক কি? সম্পর্ক কোথায়, আমি অতটা গভীরে যাবো না। আমি শুধু বলবো আজ ২০১৫ সালে নারীরা যে ঠিকভাবে খেতে পারছে, ঠিকভাবে পড়াশুনা করতে পারছে, ঠিকভাবে নিজেদের অধিকারের কথা বলতে পারছে, পুরুষের অর্ধাঙ্গী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, তা রাতারাতি সম্ভব হয় নি।
বেগম রোকেয়া, রাজা রামমোহন রায় এর মত অনেক সাহসী মানুষের কারণে নারী আজ পশু হিসেবে চিহ্নিত না হয়ে ''নারী'' হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
আচ্ছা বলেন তো, নারী-পুরুষের সাথে হিজড়ার পার্থক্য কোথায়?
কয়েকদিন আগে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর এ বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। তখন ''নদী'' নামের এক হিজড়ার সাথে কথা হয়েছিলো। কথা প্রসঙ্গে তখন সে বলেছিল নারী-পুরুষ যা যা পারে হিজড়াও সব করতে পারে শুধুমাত্র সন্তান ধারণ করতে পারে না। আর এর একমাত্র কারণ হচ্ছে হিজড়াদের পিরিয়ড হয় না। কথাগুলো কখনোই বলতে চাচ্ছিলাম না কিন্তু কথা প্রসঙ্গে চলে আসছে, আমি সেজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।
যে সকল শ্রেণির পুরুষেরা নারীর পিরিয়ড এর সাথে পুরুষের বীর্যপাত এর তুলনা করতেছিলেন আর নারীকে তুলাধুনা করতেছিলেন তাদের কে নিয়ে কিছু বলার ভাষা আমার নেই। তারা তাদের লেভেল বুঝিয়েছে।
নারীরা তাদের অধিকার নিয়ে জন্মেছে। তাদের কিছু অধিকারের গল্প আছে, আছে তাদের সম্মান, আছে তাদের আত্মসম্মানবোধ আর সাতেহ আছে অনেক বেশি ভালোলাগা। অধিকারের গল্পগুলো অধিকারের অঙ্গনে থাকতে দেওয়া উচিত। তা নিয়ে কেউ খেলতে চাইলে খেলনা নামক সাপ হয়ে ঐ মানুষকে ছোবল দিতে বেশি সময় ও লাগবে না। আর তার পর থেকেই শুরু হবে অভিশাপের গল্প।
আজ এখন যে শিক্ষিত, সুন্দরী, আদর্শিক নারীদের দেখে পুরুষের প্রেম উতলে পড়ে, ভালোবাসা টুঁবুটুঁবু করে সে নারীরা একদিনেই নারী হয়ে উঠে নি। এর পেছনে শত সহস্র বিসর্জনের গল্প রয়েছে। রয়েছে বেগম রোকেয়া দের মত মহীয়সী নারীদের অগ্রভুমিকা। সেদিন যদি বেগম রোকেয়ারা নারীদের অধিকারের ব্যাপারে সচেতন না থাকতেন তাহলে নারীরা এতটা শিক্ষিত হতে পারতো না। যার ফলে পুরুষরা যদি নারীদের কে যেয়ে বলত ''আই লাভ ইউ'', তখন নারীরা বলত ''আমি ইংরেজি বুঝি না, আমাকে বুঝিয়ে বল"।
আজ যে সুন্দর নারীসমাজ দেখছেন তা আজ থেকে ২০০ বছর আগের প্রচেষ্টার ফসল। আবার আজ থেকে ২০০ বছর পর যে নারীসমাজ আসবে তা বর্তমান মানুষের চেষ্টার ফসল হবে। আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপানার আগামী প্রজন্ম কে আপনি কোথায় দেখতে চান? আপনার কন্যা, আপনার ভাতিজী, আপনার ভাগ্নি দের আপনি কোথায় দেখতে চান???
এখন সিদ্ধান্ত আপনার কাছে !!!
নারীদের পিরিয়ডের সাথে পুরুষের বীর্যপাতের তুলনা করবেন? নাকি
নারীদের এগিয়ে রাখার জন্য নিজের মানসিকতার উন্নতি করবেন !!!
নোটঃ (সত্যি বলতে কি আমি কখনও ভাবি নি যে একজন পুরুষ হয়ে আমাকে এ ধরনের বিষয় নিয়ে লিখতে হবে। আমি নারীর কাছ থেকে এ ধরনের লেখা আশা করেছিলাম কিন্তু দুঃখের বিষয় অনেক অপেক্ষা করা সত্ত্বেও কারো কাছ থেকে এ ধরনের লেখা পাই নি, তাই বাধ্য হয়ে আমাকেই লিখতে হল। তাই দুঃখ প্রকাশ করছি এ ধরেনর লেখার জন্য।)
---গোলাম রাব্বানী
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৬
প্রিয় বিবেক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫০
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
দুইটাতো আর এক জিনিস না।
যারা এই নিয়ে বিতর্ক করে তাদের মানসিক সুস্থতা কাম্য।
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৬
প্রিয় বিবেক বলেছেন: সেটাই ভাই।
৩| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৮
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন:
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৭
প্রিয় বিবেক বলেছেন: বুঝলাম।
৪| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৭
মাহমুদা আক্তার সুমা বলেছেন: সত্যি বলতে কি আমি কখনও ভাবি নি যে একজন পুরুষ হয়ে আমাকে এ ধরনের বিষয় নিয়ে লিখতে হবে। আমি নারীর কাছ থেকে এ ধরনের লেখা আশা করেছিলাম কিন্তু দুঃখের বিষয় অনেক অপেক্ষা করা সত্ত্বেও কারো কাছ থেকে এ ধরনের লেখা পাই নি, তাই বাধ্য হয়ে আমাকেই লিখতে হল। তাই দুঃখ প্রকাশ করছি এ ধরেনর লেখার জন্য।
পুরুষরা যদি নারীদের কে যেয়ে বলত ''আই লাভ ইউ'', তখন নারীরা বলত ''আমি ইংরেজি বুঝি না, আমাকে বুঝিয়ে বল"।
প্রশংসার ভাষা পাচ্ছি না।
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৮
প্রিয় বিবেক বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে। দোয়া করবেন।
৫| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩০
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন:
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪৫
প্রিয় বিবেক বলেছেন: কেন রে ভাই?
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:২৩
মাসুদ রানা মামুন বলেছেন: নারীর জাতি মায়ের জাতি,এদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সকলে একসাথে কাজ করে যেতে হবে