নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপাতত চোরকে বলিওনা চোর /\\ জেনো রাত্রীর শেষেই ভোর।

গুরুভাঈ

কি লেইকপো!

গুরুভাঈ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফিলিংস'টাই আসল.......

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:০৭

ফিলিংস'টাই আসল.......



১। গ্রামীনফোনের একটা এ্যাড চললো বেশ কয়দিন। মেয়েটি পা ভেংগে হাসপাতালে অনেকদিন। তাই তার খোলা আকাশও দেখা হয়না অনেকদিন। মেয়েটির এক বন্ধু একটি রিস্কি বুদ্ধি কাজে লাগালো। বন্ধুটি কিছু উড়ন্ত বেলুনের সাথে তার থ্রিজি সংযোগের মোবাইল ফোনটি বেধে ভিডিও কল দিয়ে বেলুন গুলো উড়িয়ে দিলো আকাশে.... বেলুন আকাশে উড়ছে... মেয়েটি তার থ্রিজি সংযোগের মোবাইলে খোলা আকাশ লাইভ দেখে দুধের সাধ ঘোলে মিটাচ্ছে....

তো এই এ্যাড দেখে আমি আমার এক বন্ধুকে বললাম, "এইটা জিপি'র সিম'এর এ্যাড না হয়ে কোনো মোবাইল সেটের এ্যাড হওয়া লাগতো। আরে থ্রিজি'তে মোবাইলেই যদি আকাশ দেখবে তাইলে টেকা খরচ কইরা কিলোবাইট-মেগাবাইট খরচ করার কি দরকার? মোবাইলে আকাশের ভিডিও ছাইরা দিলেই তো হয়?!!"

বন্ধু চোখ গোল গোল কইরা কইলো, "মিয়া আপনে একটা কাঠ খোট্টা, আকাশ ভিডিওতে দেখলো নাকি থ্রিজি কলে দেখলো সেইটা বেপারনা, বেপার হইলো ফিলিংস.... এইখানে বান্ধুবির প্রতি বন্ধুর ফিলিংসটাই আসল...."



২। আফ্রিকার অবিংসবাদি নেতা ম্যান্ডেলা মারা গেলেন। তার জন্য সারা পৃথিবী শোকাতুর। আমিও শোকাহত। সারা বিশ্ব থেকে অনেক গন্যমান্য নেতা, মন্ত্রি, প্রেসিডেন্ট গিয়েছিলেন শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। আমাদের প্রেসিডেন্ট সাহেব ও গিয়েছিলেন। সারা পৃথিবী শোকাহত, আমিও শোকাহত, একটু পরপর বিবিসি আলজাজিরা তে লাইভ দেখছি স্টেডিয়াম থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত শেষকৃত্য অনুষ্ঠান। স্টেডিয়াম ভর্তি নানান বর্নের নানান লোক। এই সব লোকদের হাতের পতাকা দোলানো, নাচ এবং মুখের হাসি দেখে মনে হচ্ছিল সাউথ আফ্রিকা ফুটবলে বিশ্বকাপ জিতেছে। ব্যাপারটা খারাপ লাগলো আমার কাছে। পাশের জনকে বললাম, "এইটা কোন ধরনের শোক প্রকাশ বোঝলাম না! নাইচা, গাইয়া, পতাকা দোলায়া শোক প্রকাশ করতেচে?!"

পাশের জন বললো, "নাচ, গান, পতাকা দোলানো কোনো ব্যাপার না। ব্যাপারটা হইলো ফিলিংস। নাচুক, গান গাক মনের ভিতর ঠিকি শোক আছে। আর শোকের কারনেই এমন এলোমেলো নাচতেছে, গাইতেছে। ফিলিংসটাই আসল।"



৩। গত বছরের শেষ দিকে আমার এক বন্ধুকে নানান টোপ টাপ মাইরা তার আর্জেন্ট পাস বানাইলাম। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের চাইতে এক হাজার টাকা বেশি দিয়া বাংলাদেশ বিমানের ঢাকা-কাঠমন্ডু-ঢাকা টিকিট কাটাইলাম এমন এক সময়ে যখন রিজেন্ট এয়ারওয়েজ বড় রুই মাছ কিনার দামে থাইল্যান্ড, মালায়শিয়া, সিংগাপুরের টিকিট বিক্রি করতেছিলো। বন্ধু বেজার আমার উপর। যেখানে থাইল্যান্ড, মালায়শিয়া, সিংগাপুরে যাওয়া যাচ্ছে নেপালের বিমান ভাড়ার প্রায় অর্ধেক দামে সেখানে কেন নেপালের মত একটা গরীব দেশে সে যাবে তার মাথায় ঢুকছেনা। নেপালের রুপির আবার বাংলাদেশের টাকার চাইতে মান কম। ঘ্যানর ঘ্যানর, প্যানর প্যানর ফ্লাইটের আগের দিন পর্যন্ত তার চলছেই। বিমানের কাঠমন্ডু ল্যান্ডিং টাইম দুপুর দুইটায়, আমি কেমনে কেমনে জানি মুখস্ত করে ফেলছিলাম ঢাকা থেকে প্লেন ছাড়ার টাইম দুপুর দুইটা। আমার বন্ধু কয়েক কাঠি সরেশ, সে প্রসিদ্ধ ঢিলা কম্পানীর ম্যানেজার জন্য মনে করচে, বিমানের ঢাকা ছাড়ার টাইমে বিকাল চারটায়। সব কাজে ও লেট করে এই জন্য আমি সময় হাতে রেখে বলছি, বিমান ছাড়ার টাইম দুপুর দুইটায় যাতে সে লেট করলেও প্রোবলেম না হয়। আমার চিন্তা ছিলো যেহেতু বন্ধুর প্রথম বিমান জার্নী তাই ১২টার দিকে এয়ারপোর্টে যেয়ে ঘুরঘুর করবো, ২টার দিকে বিমানে উঠবো। ১১টা থেকে তাকে ফোন দেয়া শুরু করলাম। সে গেছে বনানী ট্রাভেল ব্যাগ কিনতে!! সে আসলো দুপুর সাড়ে বার টায়। সিএনজি করে এয়ারপোর্ট যেতে আমাদের ৩০ মিনিট লাগার কথা। সিএনজি করে রওনা দিলাম। বসুন্ধরার গেটের সামনের রাস্তায় সে সিএনজি ড্রাইভারকে বলছে, "মামা একটা বড় ডিপার্টমেন্টাল স্টোর দেইখা দাড়ায়েন তো পেস্ট কেনা লাগবে।" কড়মড় চোখে তাকায় দিলাম ধমক, কইলাম এয়ারপোর্টে পেস্ট কিনতে পাওয়া যায় ঐখানে কিনতে। আমার কড়মড় চোখ দেখে সিএনজি আর থামালো না, কিন্তু পথে আরও তিনবার আমাকে প্রশ্ন করলো, আসলেও এয়ারপোর্টে পেস্ট কিনতে পাওয়া যাবেতো??

এয়ারপোর্টে ঢুকে দেখি বাংলাদেশ বিমানের কাউন্টার খালি-মহাখালী... কোথাও কেউ নাই। বিমান ছাড়ার টাইম লেখা আছে দুপুর একটা, আর তখন সময় দুপুর ১টা ১০ মিনিট!!

দুইজনে দুই টিকিটের জন্য দুই হাজার টাকা গচ্চা দিয়ে পরদিনের ফ্লাইট কনফার্ম করলাম এয়ারপোর্টের বিমান এয়ারলাইন্সের কাউন্টার থেকে। ফিরতে পথে বন্ধুর আবার ঘ্যানর ঘ্যানর, প্যানর প্যানর "নেপাল কেন যাবো বুঝতে পারছিনা। ঐখানকার লোকজন আমাদের মতনি গরীব, পোশাক আশাক, দালান কোঠা, গাড়ি ঘোড়া সব আমাদের দেশের মতনি। এর চাইতে মিয়া থাইল্যান্ড, মালায়শিয়া নাইলে সিংগাপুর যাইতাম!!" আমি কইলাম, "থাইল্যান্ড, মালায়শিয়া কিংবা সিংগাপুরের গাড়ি ঘোড়া কি মিয়া আকাশ দিয়া চলে?? ঐগুলাও বিদেশ, নেপালও বিদেশ। প্রথম বিদেশ যাত্রা যাই দেখবেন অবাক হয়া দেখবেন। হাত দিয়া কিছু খাইতেচে, পায়ে হাটতেচে এগুলাও অবাক হয়া দেখবেন। দেখার মধ্যে যেন অবাক ভাবটা থাকে মূল কথা হইলো ফিলিংস। ধনি-গরীব দেশ ব্যাপার না, ব্যাপার হইলো ফিলিংস"।



৪। সম্প্রতি ভারত একটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। আমি মনে করি সারা বিশ্বে ভারত সিনেমার জন্য বিখ্যাত। শৈলি এবং কলা'র পারফেক্ট কম্বিনেশন পাবেন ভারতীয় সিনেমায়। মূল কথা হলো তাদের সিনেমায় ফিলিংসটা ব্যাপকভাবে থাকে। তাই প্রতি সিনেমায় থাকে কাহীনির সাথে দারুন দারুন গান ও নৃর্ত্য। কাহীনি থাকে বাস্তবতা সংস্লিশ্ট। কিন্তু এবার সেই ভারতীয় সিনেমায় এবার আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অন্যভাবে এসেছে। বলতে হয় বিশ্রীভাবেই এসেছে। আমরা আশা করব ঐ সিনেমার আমাদের মুক্তিযু্দ্ধ ভিত্তিক ভুল ব্যাখ্যাগুলো বাদ দেবে। সাংস্কৃতিক সুষ্ঠতা বজায় রাখবে। এবং সর্বোপরি বাংলার ১৬কোটি+ বাংগালীর দেশপ্রেমের ফিলিংস'এর প্রতি সম্মান জানাবে। রক্তে কেনা স্বাধীনতা, কারও দয়ার দান নয়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.