![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ক’দিন ধরিয়া একটি কথা শুনিতেছিলাম যে আমাদের প্রাণপ্রিয় শিবিরের ভ্রাতৃবৃন্দ নাকি বৃক্ষরোপন কর্মসূচি হাতে লইয়াছে। ইহা লইয়া অহেতুক তর্ক-বিতর্ক কম হয় নাই। সেই বিতর্কে সঙ্গত কারনে কেহ তাহাদের পক্ষে, কেহ বিপক্ষে তাহাদের সুদৃঢ় অবস্থান গ্রহন করিয়াছেন আবার কেহ বেচারা গাছের কি দোষ বলিয়া সেই গাছ বড় হইলে তাহার মেওয়া ভক্ষনের জন্য গোফে তৈল মর্দন শুরু করিয়া দিয়াছে।
শিবিরের ভ্রাতৃগন হঠাৎ করিয়া আমাদের ছাত্রসমাজদিগকে আছ-সালাত কায়েমের পূন্যকার্যে বিরতি দিয়া হঠাৎ বৃক্ষ লইয়া কেন মাতিয়া উঠিল সেইটা লইয়া বোধ করি তেমন উল্লেখযোগ্য গবেষনা হয় নাই। তবে কেহ যদি আগা-পাশ-তলা না ভাবিয়া এই সিদ্ধান্তে উপনিত হইয়া আত্মপ্রসাদে ভুগিতে থাকেন যে ইহারা ভাল হইয়া গিয়া সুকর্মে মতি হইয়াছে, আমার পক্ষে তাহাদিগের প্রতি অর্বাচিন আক্ষা দেয়া ছাড়া উপায়ান্তর থাকে না। ইহার পিছনের সেই গূঢ় উদ্দেশ্য লইয়াই আজ কিঞ্চিত আলোচনার নিমিত্তে লেখনী ধারন করিয়াছি।
আমাদের ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভ্রাতৃগন পুস্তকে বর্ণিত শান্ত-সুবোধ ও ভাল ছেলের সংগায় একেবারে আদর্শবাদী। রহিম ভাল ছেলে বলিলে আমাদের মধ্যে যেই ধরনের ভাব হয়, তাহারা সেই রকমের ভাল ছেলে। পুস্তকে বর্ণিত রহিম যেই রকম করিয়া “প্রাতঃকালে নিদ্রাভঙ্গ করতঃ প্রাক ভোর ছালাত আদায় করিতে মক্তবে গমনান্তে ছালাত আদায় করতঃ তথায় মৌলভী ছাহেবের নিকট উচ্চস্বরে ছিপাড়ার পাঠ গ্রহনান্তে বাটিতে আসিয়া আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নিকট শুকর গুজার করতঃ বিদ্যালয়ের পুস্তকাদিতে মনোনিবেশ করে। অতঃপর বিদ্যালয়ের সময় সমাগত হইলে রহিম পুস্তকাদি সাজাইয়া গোসলে বাহির হইয়া তিন ফরজ পালন করতঃ সঠিক নিয়মে গোসল সম্পন্ন করিয়া আহার কার্য সম্পন্ন করে। ইহার পর রহিম ঈমানের অঙ্গমতে পরিচ্ছন্ন বস্ত্র গাত্রে ধারন করতঃ উত্তমরূপে তৈল মর্দনপূর্বক কেশবিন্যাশ করিয়া পুস্তকাদি বগলে চাপাইয়া বিদ্যালয়ের পানে ধাবিত হয়”, আমাদের শিবিরের ভ্রাতৃগনও সেই রকম করিয়া ভাল ছেলে। তাহারা সদা সর্বদা অন্যান্য মুমিনবান্দাদিগকে ভাল কথা বলিয়া তাহাদের দেলে স্থান লাভ করিয়া থাকে। তাহারা নিয়মিত পাঁচওয়াক্ত ছালাত কেবল আদায় করিয়া ক্ষান্ত হয় না, অন্যান্য বেনামাজী বালকদিগের সম্মুখে মহান আল্লাহ তা-আলার মহিমামন্ডিত বরকতের চিত্র তুলিয়া ধরিয়া ছালাত আদায়ে বাধ্য করে। আর কেহ অবাধ্য হইলে তাহাদের জন্য আল্লাহ বর্ণিত শাস্তি প্রদান করিয়া তাহাদের নেকের পাল্লা ভারী করতঃ মহান আল্লাহ তা-আলার শুকরগুজার করিয়া শান্তি লাভ করে।
আমাদের এই নেকভ্রাতৃগন, প্রতিটা সামাজিক কার্যে সবার অগ্রে গমন করে(গমন করিয়া চলিয়া যায় পাঠ করিতে চাইলে আমার কোনরূপ আপত্তি নাই)। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে নবাগত অনুজ শিক্ষার্থী ভ্রাতৃদেগের কাফের, বিধর্মী ও নাস্তিকদেগের নিকট হইতে রক্ষা করাকেও তাহারা তাহাদিগের পবিত্র দায়িত্ব বলিয়া সানন্দে স্বস্কন্ধে তুলিয়া লইতে ছাড়ে না। এই নবীন শিক্ষার্থীদৃন্দ শিবিরের অগ্রজ ভ্রাতৃবৃন্দের মুখনিসৃত বচনে মস্তিষ্ক প্রক্ষালনপূর্বক তাহাদিগের সংগঠনে যোগদান করতঃ ইসলামের মহান আদর্শের সহিত সামিল হইয়া পড়ে।
শিবিরের ভ্রাতৃবৃন্দ ইসলামের মহান আদর্শের অনুসারী বিধায় তাহারা জিহাদের একনিষ্ঠ অনুসারী। এবং জিহাদের প্রথা হিসাবে তাহারা তাহাদের সহিত ভিন্নমত পোষনকারী শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অন্যান্য ব্যাক্তিবিশেষদিগকে উপর্যুপুরী শাস্তি প্রদান করা হইতে কদাচ পিছপা হয় না। আদিকালে যেইরকম তলোয়াড় সহযোগে জিহাদ সম্পন্ন হইত, তাহারাও সেইরকম জিহাদের অনুসারী হইবার মানসে ছুরি বঁটি, দা, প্রভৃতি ধারালো অস্ত্র ব্যাবহারপূর্বক প্রতিপক্ষ অথবা শত্রুদিগের হস্ত-পদের রক্তকনিকা প্রবাহকারী নালিকা কাটিয়া দিয়া তাহাদিগকে শহীদ মর্যাদাদানে কুন্ঠিত হয় না।
তাহাদের কঠোর ভাবে স্বপত্নী ব্যাতিত নারীসংগ লাভে বিরত থাকার বিধান থাকায় তাহাদের কোন সুস্থ যৌনাভ্যাস গড়িয়া না ওঠায় অত্যাধিক তাড়নায় তাহারা তাহাদের অনুজ ভ্রাতৃদিগের সহিত তাড়না চরিতার্থ করিয়া থাকে। এইরূপভাবে তাড়না চরিতার্থ করিতে তাহাদের ইসলাম হইতে পতিত হইবার কোনরূপ ভীতি নাই, কারন ইসলামের জন্মস্থান আরবীয় দেশে তাহাদের ধর্মিয় ভ্রাতৃবৃন্দ এইরূপেই তাড়না চরিতার্থ করিয়া স্বজাতীকে খাঁটি মুসলমান বলিয়া প্রমাণ করিয়া থাকে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ করা যাইতেছে যে তথা কথিত নাস্তিক এবং বিধর্মী কাফেরগন ক্রমশ বলশালী হইয়া পরিতেছে। আর তাহারা আমাদের শিবিরের ভ্রাতৃদিগের দেলে সংসয়ের বীজ বুনিয়া তাহাদের স্ব স্ব বিবেকের দংশনে গুনাহগার ভাবিয়া পীড়িত হইতেছেন। জোর পূর্বক আছ-ছালাত কায়েমের নিমিত্তে নির্বিচারে মানবকুলের হস্ত-পদের রক্তনালিকা কর্তন, ভিন্নমত পোষনকারীদিগের নির্বিচারে হত্যা, পাকিস্তান নামক ইসলামী রাষ্ট্রের ভাঙ্গন রোধের নিমিত্তে লুন্ঠন, হত্যা, ধর্ষন প্রভৃতিতে সহায়তা দান করতঃ দেশের পন্ডিতবর্গকে হত্যা, নারী বিহীন ব্রহ্মচর্য পালন, ইত্যাদি ইত্যাদি করিয়াও তাহারা সম্ভবতঃ ধারনা লাভ করিয়াছে যে তাহারা আল্লাহ রাব্বুল আল-আমীনের প্রিয় বান্দা হইয়া যথেষ্ঠ নেকী লাভ করিতে ব্যর্থ হইয়াছে। তাই তাহারা বর্তমানে হন্তদন্ত হইয়া বৃক্ষরোপনে মত লাভ করিয়া তাহাদের নেকী বৃদ্ধির প্রয়াস পাইতেছে। কারন বিবিধ হাদীসে বর্ণিত রহিয়াছে যে বৃক্ষ রপন কারী অশেষ নেকী লাভ করিবেক, উপরন্তু বৃক্ষের মেওয়া ও ফলাদী যদি তষ্কর কর্তৃক অপহরনপূর্বক তাহা সেই তষ্করের তৃপ্তিলাভে সহায়তা করিয়া থাকে, তাহা হইলে তাহারও সমুদয় নেকী বৃক্ষরোপনকারীর ভান্ডারে জোগ হইবেক। এমতাবস্থায় আমাদের শিবিরের ভ্রাতৃবৃন্দ বৃক্ষরোপন করতঃ কী বিপুল পরিমান নেকী লাভ করিতে যাইতেছেন, তাহা অনুমান করা আমাদিগের সাধ্যাতীত।
তাই যাহারা তাহাদের রোপনকৃত বৃক্ষের মেওয়া ভক্ষন নিমিত্তে গোফে তৈলমর্দন করতঃ অপেক্ষা করিতেছেন, তাহাদের দ্বিতীয়বার চিন্তা করিতে অনুরোধ জানানো জাইতেছে!!!
২| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪১
এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
অনেক কষ্ট করিয়া এই প্রবন্ধটি আমাকে পড়িতে হয়াছিল। তার পরও তেমন কিছুই আগা -মাথা বুঝিতে পারিলাম না।
সম্ভবত প্রবন্ধটি সাধু ভাষায় লিখিত ইহাও একটি কারন হইতে পারে।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৭
বিলুনী বলেছেন: এ জন্যেই বিষ বৃক্ষ নামে একটি কথা চালু অাছে বাজারে । শিবির ভা্তৃবৃন্ধ বিগত দিনে রাজপথের চারিদিকে যে পরিমান বৃক্ষ নিধন করেছেন তাতে করে তিনাদের চিত্ত হয়েছে ভারাক্রান্ত । তাই করিতে প্রায়চিত্ত তিনারা বৃক্ষ রোপনে হয়েছেন মত্ত , এটা নি:সন্দেহে ভাল কাজ সকলে বলেন আলহামদুলিল্লাহ ।
কিন্ত কথা হলো রাজপথের জ্বালাও পুড়াও আন্দোলন হতে অশেষ পুণ্য হাছিল করার পর বেরসিক পুলিশের দাবরানী খেয়ে ঝোপে ঝারে নিভৃতে দির্ঘদিন ঝপতপ করে প্রাপ্ত সিদ্ধিজ্ঞানে পরিপুর্ণ হয়ে শিবির ভ্রাতৃরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে সব বৃক্ষ করে যাচ্ছেন রোপন এবং তাদের অগনিত ভ্রাতৃবৃন্ধ তাতে ক্ষনে ক্ষনে এসে পানি সিঞ্চন করে যে ভাবে সেগুলিকে ফলবান করছেন তাকে পরিহার করবেন কিভাবে সেটাই এখন ভাবেন !!!!