![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বড় হওয়ার সাথে সাথে সব ভাল লাগা কেন যেন অপ্রিয় হয়ে উঠছে, যা ছেলেবেলা থেকে ঘৃণা করে আসছি তা অতিপ্রিয় হয়ে উঠছে।
ছেলেবেলায় যাদের মুখ অতিপ্রিয় ও শ্রদ্ধার ছিল তা এখন নর্দমার কীটের মতো মনে হয়।
যে বই পড়তে পড়তে ঘুমিয়েছি, ঘুমের ভিতর সপ্নে সেই বই নিয়ে আবার পড়তে বসেছি তা এখন দেখলে মুখ ভরে বমি উঠে আসে পেটের গভীর থেকে।
যে নারীকে দেখলে মনে হতো স্বর্গ থেকে পাঠানো হূর পরী তা আজ দেখলে মনে হয় নোংরা যৌনকামনায় ভরপুর।
যে আলো বাতাসে ছোটবেলা থেকে বড় হয়েছি তা আজ মনে হয় তাতে নিশ্বাস নিলে দম বন্ধ হয়ে আসে, বুকের ভিতর ইনফেকশনে বাসা বাধে।
যে সমাজ ব্যবস্থাকে আদর্শ সমাজ ব্যবস্থা বলে মনে হতো তা আজ মনে হয় শিশু নষ্টের কারখানা।
মসজিদের ইমামকে দেখলে মনে হতো বেহেস্তের প্রতিনিধি তা আজ হয়ে উঠেছে দোজখের সর্বোৎকৃষ্ট মানের লিডার।তার মুখ থেকে অঝরে ঝরা বাক্য মনে হতো চিরন্তন বাণী যা চিরদিন চলবে, আজ হয়ে উঠেছে ধর্মের নামে শুধু ভন্ডামো।
যে মানুষটিকে রাতে ঘরে না ফিরার কারনে ভাবতাম অফিসে কাজের চাপ খুব বেশি, তা আজ জানতে পারলাম নিজের বিছানা ফেলে অন্যের বিচানায় ঘুমায় নিয়মিত।
যে সমাজসেবক কে মনে করতাম সমাজের জন্য নিজকে বিলিয়ে দিচ্ছে তা আজ দেখছি সমাজ নষ্টের কারিগর।
যে খাদ্য খেয়ে বড় হয়েছি তা অাজ অখাদ্য মনে হয়।
যে মুখটা সবচে কাঙ্ক্ষিত ছিল তা আজ মনে হয় অনেক বড় অপ্রিয়।
যে পুকুরটায় ডুবসাতার খেলতাম তা আজ নোংরা নর্দমা হয়ে গেছে ।
যে গোলাপটির বাহ্যিক সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হতাম তা আজ এত সস্তা যে হাতে হাতে তার সৌরভ বিলিয়ে বেড়ায়।
যে মেয়েটিকে স্পর্শে কল্পনায় সপ্নে চেয়েছি সে আজ যৌতুকের দাবী মেটাতে রোজ মাতাল পেটুকের হাতে মার খায়। সব কিছু কেন যেন পচে যা, নোংরা হয়ে উঠে, দেখতে ইচ্ছে হয় না। চোখ নিজ থেকে বন্ধ হয়ে আসে।
ছোটবেলার সব কবিতা ছন্দ ভঙ্গ করে মিশে গেছে সাদা কাগজের সাথে, উপন্যাস হয়ে উঠেছে অপন্যাসে, সমস্ত নাটক চরিত্র হারিয়ে চরিত্রহীন হয়ে গেছে।
যাকে গ্রামের আদর্শ স্কুল মাস্টার জেনে আসছি সে নাকি রোজ রাতে বর্বরের মতো তার বউকে প্রহার করে, সকালে শিশুদের কে নীতি কথা শেখায়।
যে মেয়েটি খুব ছোট দেখেছিলাম স্কুলের বই নিয়ে বেড়ায় সে আজ পোয়াতি হয়ে হসপিটালের বিচানায় কাতরায়।
যে জমিতে ধান গম আলু পটল জন্মাত সেখানে আজ ঝুপঝাপ হয়ে উঠেছে, কয়েকটা মাতাল জুয়ারি গাজা চাষ করে।
যে কামারের হাতে ধান পাট কাটার যন্ত্র তৈরি হতো সেই কামারের হাতে আজ মানুষ কাটার যন্ত্র তৈরি হয়।
সমস্ত খারাপ নোংরা জিনিসগুলা ভাল নামের চাদর দিয়ে মোড়ানো থাকে যা আগে বুজতাম না।
মানুষের জন্মলগ্ন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কি ভাল কিছু নেই?
ঘিনঘিনে জন্মলগ্ন থেকে শুরু হয় সারা জীবন তা চলতে থাকে, মৃত্যুর পর পচতে পচতে তা মাটির সাথে মিশে শেষ হয়। পার্থিব জীবনটাই কি এমন- পচা, নোংরা, ঘৃণা, কান্না, হিংসা, অহংকার, মারামারি?
না সময়ের সাথে সাথে সব ভালকিছু পচে যা, নোংরা হয়ে উঠে ? ভালকিছুর স্থায়িত্ব কি খুব কম?
©somewhere in net ltd.