নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাবাজি, মূলা কতো বেচতাছো

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:৫২

কানশাটা উল্টে ভূড়ু কুচকালেন হাসান সাহেব। তারপও ঘাড় পিঠটা দেখলেন টিপে টিপে। একটু নরম মনে হচ্ছে। তারপরও ভালো। পাশের ডালাটার দিকে একটু আড়চোখে তাকালেন তিনি। একেবারে তাজা আর দেশিই মনে হচ্ছে। দামও অনেক হবে নিশ্চয়ই। কম করে হলেও পাঁচ শ' টাকা কেজি।
সর্বদিক বিবেচনা করলে তিনি যেটা দেখছেন, সেটিই ভালো। পূব পাশের বিল্ডিং দু'টোর ফাঁক গলে তেরছা ভাবে পড়া কড়া সূর্যের আলোতে কালারটাও একেবারে মন্দ লাগছে না। আজ ক'দিন ধরে রুই এর মাথা সোনামুখি মুগডাল দিয়ে খেতে ইচ্ছে করছে তার। রুই তো রুই-ই হোক তা বার্মিজ চাইনিজ কিংবা ইন্ডিয়ান। দেশি রুই-ই যে খেতে হবে এমন তো কোনও কথা নেই। তিনি চারশত চল্লিশ টাকা দিয়ে দুই কেজি ওজনের রুইটা কিনে ব্যাগে ভরে খুশি খুশি মনে তরকারির দোকনের দিকে হাঁটতে লাগলেন। মূলা তার বৃদ্ধ মায়ের পছন্দের তরকারি। মূলা দিয়ে মাকে আজ রুই মাছ খাওয়াবেন বলে মন স্থির করেছেন হাসান সাহেব।

"বাবাজি, মূলা কতো বেচতাছো ?"
"ষাইট ট্যাকা।"
"বলো কি!" মূলার দাম শুনে চমকে উঠলেন হাসান সাহেব। তার পকেটে মাত্র ষাটটি টাকাই আছে। পাঁচশত টাকার একটা নোট নিয়ে বাজারে এসেছিলেন। বেচে যাওয়া ষাট টাকা দিয়ে তাকে যে কোনো একটা তরকারি, এক কেজি লবন, কিছু কাঁচামরিচ, পাঁচ টাকার পাঁচফোঁড়ন আর পারলে একটু ধনেপাতাও কিনতে হবে।
হাসান সাহেব মাথা নিচু করে অন্য দোকানের দিকে গেলেন। চলতে চলতে হিসেব মেলাতে লাগলেন তিনি। চৌত্রিশ বছর একাউন্টেট হিসেবে চাকরি করেছেন। এই জীবনে অনেক জটিল জটিল হিসেব মিলিয়েছেন। আজ সামান্য কাঁচা বাজারের হিসেব মেলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে.....

হাঁটছেন আর মৃদু মৃদু হাসছেন হাসান সাহেব। যেই হাসিতে লুকিয়ে রয়েছে মধ্যবিত্ত জীবনের বিরাট রহস্য.........





মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.