নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভদ্রলোকের চোখ দুটো কেঁপে কেঁপে উঠছিল।

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৬

ভদ্রলোক বলছিলেন। আমি শুনছিলাম। আমি শুনছিলাম, তাঁর কিছু হাহাকার ভরা দু:খগাঁথার গল্প। হাসপাতালের ওয়েটিং রুমে আমাদের পরিচয়। দুজনার বয়সের ব্যবধান অনেক। তবুও একেবারে বন্ধুর মতো করে জীবনের পরতে পরতে জমে থাকা কিছু রোদনভরা গল্প বলছিলেন আমায়।

ভদ্রলোকের চোখ দুটো কেঁপে কেঁপে উঠছিল।

আমি শুনছিলাম, হুম আমি শুনছিলাম। একজন পিতার আর্তনাদের গল্প। জীবনের সমস্ত উপার্জন উজাড় করে যে সন্তানদের মানুষ করেছিলেন, আজ কেউই তার খোঁজ রাখে না। বড় ছেলেটা আলাদা সংসার করছে বারো তের বছর হলো। ভালো একটা চাকরিও করে। মেঝোটা সেপারেট হলো প্রায় সাত বছর হতে চলল।

ছোটটা একটা নিকৃষ্ট মানের গাঁধা। থার্ড ইয়ারে উঠতেই কোনো এক মেয়ের প্রেমে পড়ে তার হাত ধরে নিরুদ্দেশ হয়েছে। তার খোঁজ নেই। বেঁচে আছে, নাকি মরে গেছে কেউই জানে না।.... .ভদ্রলোক দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। পৃথিবীতে প্রেম কি শুধু একটা মেয়েতেই আছে রে গর্দভ! আর কোথাও নেই! কোথাও নেই!

ভদ্রলোকের দু:খ হয়। ফাঁকা লাগে। বড় হালকা লাগে। ছোটটার শোকে তার মা প্রায় আধাপাগল হয়ে বসে আছে। ফ্যাল ফ্যালে উদাস চোখে চেয়ে থাকে। স্ত্রীর কথা মাঝে মাঝে ভাবেন ভদ্রলোক। পাগল যদি হতে হয়, তবে পুরোপুরিই হয়ে যাক না। তখন আর নিজের কোনো ক্ষোভ থাকবে না। আর যদি তাই না হয়, তবে তাকেও একটু বুঝুক। একটু বোঝার চেষ্টা করুক তাকে!

এইতো গত রাতে কথা। হঠাৎ বাথরুমের কাছে কিছু একটা পড়ে যাবার শব্দ শুনলেন তিনি। এ্যাটাচড বাথরুম নয়। রুম থেকে একটু দূরে। অন্ধকারে হাতড়ে বাতিটা জ্বালিয়ে দেখলনে, মেঝেতে কাৎ হয়ে পড়ে আছে তার আধপাগল স্ত্রী। খানিক রাগ হলো। আবার স্ত্রীর জন্য মায়াও হলো। বেচারি একটা। একদম বেচারি।

তারপর থেকেই হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে...... আর তিনি বাহিরে ওয়েটিং রুমে বসে।


© হাবিবুর রহমান জুয়েল


মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.