![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....
১৯৬১ সাল। পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ার ঝাতবুনিয়া গ্রামে হতদরিদ্র মুজিবুর রহমান আর মরিয়ম বিবির ঘরে জন্ম হয়েছিল তাঁর। অথর্নৈতিক অসচ্ছলতাসহ নান প্রতিবন্ধকতা অষ্টম শ্রেণীর অধিক আর এগুতে দেয় নি তাঁকে। পড়াশুনা বন্ধ করে মোটর চালক হিসেবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ শুরু করে দিলেন একদিন।
১০ই নভেম্বর, ১৯৮৭। বর্তমানকার চিরশত্রু দুটি রাজনৈতিক দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগ একত্র হয়ে স্বৈরশাসক এরশাদের পতনের লক্ষ্যে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচির ঘোষনা করে। তাদের একমাত্র দাবী ছিল নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিয়ন্ত্রনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা।
সেই অবরোধ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ঢাকায় একটি মিছিলে অংশ নেন নূর হোসেন। প্রতিবাদ হিসেবে বুকে পিঠে সাদা রঙে লিখিয়ে নেন- "সৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক" ।
বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গাড়ির জানালার কাছে তার মাথাটা এনে বলেছিলেন, "আপা আপনি আমাকে দোয়া করুন, আমি গণতন্ত্র রক্ষায় আমার জীবন দিতে প্রস্তুত"
হুম গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছিলেন নূর হোসেন। গণতন্ত্রের জন্য নির্ধিদায় হেসে খেলে জীবন দিয়ে ছিলেন সেদিনের সেই ২৬ বছরের তরতাজা টগবগে এক যুবক।
তাদের মিছিলটি ঢাকা জিপিও-র সামনে জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি আসতেই পুলিশবাহিনীর গুলিতে কালো পিচের উপর লুটিয়ে পরেন নূর হোসেন।....তপ্ত পিচ নিমিষেই শুষে নেয় নূর হোসেনের তাজা রক্ত।
এরশাদ পদত্যাগ করেন।
পদত্যাগের পর তার জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সাথে একত্রে মহাজোট গঠন করে।
রক্তের দাগ তখনও শুকিয়ে যায় নি। তখনও বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছিল নূর হোসেনের তাজা রক্তের ভোটকা গন্ধ। জিরো পয়েন্টের কুৎসিত কাকগুলোর আত্মচিৎকার ফেটে পড়ছিল চারদিকে....। নূর হোসেন দূর আকাশে বসে বসে শুধু দীর্ঘশ্বাস ফেলছিলেন....।
জানি ফেলেন এখনও, সুগভীর দীর্ঘশ্বাস।
এরশাদ আছেন, এরশাদ থাকবেন। তার ক্ষয় নেই। তার লয় নেই। গণতন্ত্রের অন্তর্বাসের নিচেই যে তার বসবাস......
আমরা তার দীর্ঘায়ু কামনা করি...। গণতন্ত্রের অন্তর্বাসের নিচে তিনি দীর্ঘায়ু হোন.........
©somewhere in net ltd.