নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনে ধৈর্য ধারণ করতে হয়.....

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:২৫

এই পরশু দিন আব্বা যখন প্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক হিসাব নিচ্ছিলেন আমার কাছ থেকে। তিনি বলছিলেন কিছু কথা। তার চোখ দুটো লাল হয়ে উঠেছিল। আমি মাথা নিচু করে রইলাম। বাবার রক্তবর্ণ চোখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না।

এই শহরে কীভাবে অর্ধাহারে অনাহারে কাটিয়েছেন বছরের পর বছর। সুযোগ পেলেই আব্বা সেইসব দিনের কথা বলেন। বলতে বলতে অনেক সময় তার কণ্ঠ রোধ হয়ে আসে। তিনি বলতে দ্বিধা করেন না মোটেও। অনর্গল বলে যান।.....

একে একে চল্লিশটি বছর এক নাগারে অমানবিক পরিশ্রম করেছেন। আমাদের সকল আব্দার হয়তো মিটাতে পারেন নি। কিন্তু চেষ্টার ত্রুটি ছিল না তার।

আমার আব্বা আজ সফল মানুষ। অনেকের কাছে তিনি অনুকরনীয়। আমার কাছেও। যখনই ধৈর্য হারা হয়ে যাই, আব্বার কথা মনে করি। নতুনভাবে শুরু করি। নতুন প্রাণশক্তি ফিরে পাই।......

ভাবতে ভালো লাগে, আমার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাবিহীন আব্বা গত বছর যে পরিমান ট্যাক্স সরকারকে দিয়েছেন, তাতে প্রায় ৭৫ জন প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তার এক মাসের বেতন হয়েছে।

জানলে অবাক হবেন হয়তো, এক নাগারে কয়েক সপ্তাহ আমরা শুধু নিরামিষ খেয়ে কাটিয়ে দিয়েছি কোনো এক সময়। ডালের অভাবে চালভাজার গুড়ো দিয়ে ডাল রান্না করে খেয়েছি।...

মাত্র আটানা পয়সা বাস ভাড়া মারতে গিয়ে কন্ডাক্টরের চোখ কে ফাঁকি দিতে কতো কৌশল অবলম্বন করেছি। কতো......

অনেক বিয়ে বাড়িতে আমাদের জন্য খাবার জোটেনি। না খেয়ে চোখ মুছতে মুছতে বাসায় ফিরে এসেছি। আমার ছোট ভাইটি তখন অনেক ছোট। একদিন এক চাচতো ভাইর বিয়ের গাড়িতে জায়গা নেয়নি বলে ওকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়েছে জোর করে। ও কেঁদেছে অনেক। একটু ভালো খাবারের আশায় আমি ওকে রেখেই সেই বিয়েতে গিয়েছিলাম। আমার বয়স তখন দশ বছর। ওর ছিল পাঁচ।

আমার সেই ছোট ভাই এখন লন্ডনে পড়াশুনা করছে।......

....আজ কতো কতো বিশিষ্টজনের ছেলে মেয়ের বিয়ের কার্ড বাসার আনাচে কানাচে পড়ে থাকে...... অথচ যাবার ফুরসত মেলে না আমাদের। হা হা হা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.