![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....
...ও যখন চলে গিয়েছিল- বেশ অবাক হয়েছিলাম, বেশ...। এই পৃথিবীতে মানুষ এতটা সহজে বিশ্বাস ভেঙে দিতে পারে, যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না। বুকের ভেতরটা পোড়তে লাগলো ভীষণ। দিনের পর দিন। মাসের পর মাস। নির্ঘুম রজনি কাটতে লাগলো। খাওয়া দাওয়া এক প্রকার বন্ধ। বাঁচার জন্য যেটুকু প্রয়োজন শুধু সেটুকুই চলছিল।
কথাবার্ত একপ্রকার পাক্কাই ছিল। আমরা পালিয়ে যাবো কোনোও এক অজানার উদ্দেশে। জানতাম সিদ্ধান্তটা অনেক কঠিন ছিল- তবুও নিয়ে ছিলাম। ভালোবেসে ছিলাম বলে। ভেবে ছিলাম, জীবনে যত কষ্টই হওক মেনে নিবো। যত বাঁধাই আসুক অতিক্রম করবো। তবুও বেঁচে থাকবে আমাদের ভালোবাসা। চির অমলিন অম্লান করে আমাদের ভালোবাসাকে আগলে রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ছিল হৃদয়জুড়ে....।
অবশেষে পারি নি। একদিন হঠাৎ করেই একটি ফোন এলো। খবরটা শুনার পর ফুটপাতের উপরই বসে পড়লাম। মনে হলো একটি সূচালো তীরের ফলা উড়ে এসে বুকের গভীরে বিঁধেছে আমার।
অঝর ধারায় জল গড়িয়ে পড়ছে আমার দু'চোখ দিয়ে। আগামী কাল সকালে ওর বিয়ে। কিভাবে কি হয়েছে তার কিছুই জানতে পারি নি আমি। সব কিছু ফেলে রাতের অন্ধকারে ছুটে গেলাম। যেভাবে হওক ওকে নিয়ে পালিয়ে যাবো।.....
সেদিন বৃষ্টি ছিল। ঝুম বৃষ্টি। আকাশে মেঘের গর্জন ছিল। একটা মাঝ-বয়সি সুপারি গাছ শিকড় থেকে আলগা হয়ে মেইন লাইনের তারের উপর হেলান দিয়ে পড়ে ছিল। দলাপাকানো ভারী আাঁধারে চারদিক ঢেকে ছিল।
সেই গাঢ় অন্ধকারের বুক ছিড়ে ছিড়ে হাঁটছিলাম আমি। একবুক আশা নিয়ে হাঁটছিলাম আমি।..
অজানা আশঙ্কায় বুকটা দুরু দুরু কাঁপছিল। চুপচুপে ভেজা শরীর নিয়ে কাদা-মাটির উপর দ্রুত পা ফেলে ফেলে হাঁটছিলাম।
বৃষ্টি থামছিল না কিছুতেই। থামছিল না আকাশে মেঘের গুড়ুম গুড়ুম গর্জনও। বাঁশঝাড়ের বাঁশগুলো একে অপরের উপর আচড়ে পড়ছিল। কড়ই আর রেন্ডি গাছের ভাঙ্গা ডালপালাগুলো এলোমেলোভাবে পড়েছিল।
কাছের কোনো বাড়ি থেকেই ভেসে আসছিল মরা-কান্না। এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে এই ঝড় আর ঝুম বৃষ্টির রাতে বিদায় নিয়েছিল হয়তো কেউ একজন।
পোড়া চোখ দুটো দিয়ে অনবরত জল গড়িয়ে পড়ছিল আমার। বানের জলের মতো ধেয়ে আসা নোনা-জল বৃষ্টিজলের সাথে মিলে মিশে একাকার।
কিছু একটা বিধে ডান পা-টা রক্তাক্ত হয়েছিল। হাঁটু দুটো ক্রমশ অবশ হয়ে আসছিল। সেই ঝড়ের রাতে, সেই ঝুম বৃষ্টির রাতে, জমাটবাধা গাঢ় অন্ধকারের বুক ছিড়ে ছিড়ে সবকিছু ধুমড়ে মুচড়ে ছুটে চল ছিলাম।
কিন্তু পারি নি....। আমি পারি নি। শূন্য হাতে আমাকে একাকীই আবার ফেরত আসতে হয়ে ছিল।..
তারপর তিনটি বছর কেটে গেল।.. একে একে তিনটি বছর।
একদিন ফোন এলো ওর। ফুঁফিয়ে ফুঁফিয়ে কাঁদছে শুধু। আমার কান্না আসছিলো না কিছুতেই। অথচ ওর বিয়ের পর প্রায় মাস ছয়েক এক প্রকার অচেতনই ছিলাম।....
সেদিন কান্না আসছিল না কিছুতেই আমার। কেন না ততোদিনে দু:খ আর হতাশা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে ছিলাম আমি।
... জানতে চাইলাম, কেমন আছ?
কান্না ভেজা কণ্ঠে বলল- ও ভালো নেই। একদম ভালো নেই।
আমি দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম।.... হাড় কাঁপানো গভীর এক দীর্ঘশ্বাস।.....
....ওর বিয়ে হবার পরের তিনটি বছর আমি কায় মনে চেয়েছিলাম ও ভালো থাকুক। নামাজের পর মহান আল্লাহ তালার কাছে দোয়া করেছি- ও ভালো থাকুক। ভালোবাসার মানুষটি ভালো থাকবে- এর চেয়ে আনন্দের এর চেয়ে ভালো লাগার আর কি হতে পারে আর?....
কিন্তু কেন যেন ও ভালো ছিল না। সে কথা বিধাতাই ভালো বলতে পারবেন। কথায় আছে "মন ভাঙ্গা আর মসজিদ ভাঙ্গা সমান অপরাধ"- হয়তো সে অপরাধে অপরাধী ছিল ও বিধাতার কাছে।
আমি সারাক্ষণ মনমরা হয়ে বসে থাকতাম- আর ভাবতাম। এই পৃথিবীতে কি করে পারে মাুনষ!! রমনা কিংবা সোহরাওয়ার্দীর নরম দুর্বা ঘাসের উপর শুয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। দুচোখের কোণ বেয়ে তপ্ত অশ্রু গড়িয়ে কানের লতি বেয়ে ঘাসের উপর পড়তো শুধু। পাখি হয়ে ওড়ে যেতে ইচ্ছে হতো কখনও কখনও...।
আমাদের সেই জোছনা রাতগুলোই বেশি পীড়া দিতো.... বাঁধানো পুকুর ঘাটে বসে গল্প করতে করতে রাত শেষ হয়ে কখন যে ভোর চলে আসতো- টেরই পেতাম না একদম। হায় স্মৃতি......
আসলে হঠাৎ পাওয়া যে কোনেও আঘাতই সামলে নেয়া কষ্টকর। আমার বাবা তার এক বন্ধু পরামর্শে আমাকে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট এ নিয়ে গিয়ে ছিলেন। ওষুধ পত্র খেলাম কিছু দিন। গাদা গাদা ঘুমের ওষুধ আরকি...।
আমি তখন অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি। টি এস সি তে সাইকো থেরাপি নিতে গেলে ক্লিনিক্যাল সাইকোলোজি ডিপার্টমেন্ট এর এক আপু আমার কথা শুনে নিজেই কেঁদে ফেললেন। বেচারি একটা। হা হা হা।
.....সবার ধারণা ছিল আমি সুইসাইড করবো। কিন্তু না। সবার ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণিত করে ঘুরে দাঁড়িয়েছি আমি। নিজের সাথে নিজে লড়েছি। নিজেকে নিজে বুঝিয়েছি। কেউ একজন যদি আমাকে ছাড়া সুখি হতে পারে তবে হওক। তাতে দোষের কি! আমিও নিজেকে নিয়েই নিজে সুখি হবো একদিন.....
কিন্তু কষ্টটা তখন লেগেছে বেশি, যখন জানতে পারলাম ও সুখে নেই। ওর চোখের কোণে জল জমা থাকে সবসময়। ওকে সাপোর্ট দিলাম। মানসিক সাপোর্ট। যেটা খুব বেশি প্রয়োজন ছিল সে সময়। কেন না ও তখন ফুট ফুটে একটা কণ্যা সন্তানের মা।.....
সুখে না থাকুক। অন্তত ওর সংসারটা টিকে আছে এখনও। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কিই বা হতে পারে আমার জন্য!!....
শেষ কথা: ঘুরে দাঁড়াও। বাঁচতে শিখো।...
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:০৫
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: হা হা হা
২| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:৫০
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ভুল না বুঝলে একটা কথা বলি,টাইটেলের কাহিনীর মিল কিন্তু খুজে পেলাম না।। আশা করেছিলাম ব্যর্থতার হতাশা থেকে মুক্তির কিছু পদ্ধতি থাকবে,নেই। তাহলে??
বোঝার ভুল হলে ক্ষমা করবেন।।
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:০৭
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: এডিট করা হয়েছে। কিছু অংশ যোগ করা হয়েছে। আবার পড়ে দেখতে পারেন..।
৩| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:৪৩
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: যথেষ্ঠ আবেগ নিয়ে লেখা তবু কেন যেন মনে হচ্ছে কিছু কিছু অংশে বাস্তবতার ছায়া।।
কেউ একজন যদি আমাকে ছাড়া সুখি হতে পারে তবে হওক। তাতে দোষের কি! আমিও নিজেকে নিয়েই নিজে সুখি হবো একদিন.....এরকমই শপথ থাকা উচিৎ।।আর এটা নিয়ে এগিয়ে গেলে হতাসাটা কেকে যাবে অনেকখানিই।।
৪| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:২৩
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: হুম তাই.... ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:১১
ইরফান মাহ্মুদ বলেছেন: ভাই গভীর রাত এ এবাভে emotional করে দিলেন/